প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী শিলং-এ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে ভাষণ দিয়েছেন


এই বৈঠক উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সূচনা করল

কেন্দ্রীয় সরকার ‘লুক ইস্ট’ নীতিকে পরিবর্তন করে ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিকে গ্রহণ করেছে, এখন নতুন নীতি হল উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য প্রথমে কাজ করা ও দ্রুত কাজ করা ౼’ অ্যাক্ট ফাস্ট ফর নর্থ ইস্ট’ ও ‘অ্যাক্ট ফার্স্ট ফর নর্থ ইস্ট’

প্রধানমন্ত্রী উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের ৮টি স্তম্ভ নিয়ে আলোচনা করেছেন

জি২০ গোষ্ঠীর বৈঠকগুলির সাহায্যে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, সংস্কৃতি এবং সম্ভাবনাকে তুলে ধরার সুন্দর সুযোগ তৈরি হবে

Posted On: 18 DEC 2022 1:01PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৮  ডিসেম্বর, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ শিলং-এ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে ভাষণ দিয়েছেন। এই বৈঠক উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের সূচনা করল। ১৯৭২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরিষদের উদ্বোধন করা হয়। 

উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে পরিষদের অবদানের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই সংস্থার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপনের সময়কালেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা এক সমাপতন। শ্রী মোদী বলেন, তিনি উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যকে অষ্টলক্ষ্মী হিসেবে বর্ণনা করে থাকেন। বৈঠকে শ্রী মোদী  উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের ৮টি স্তম্ভ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই ৮টি স্তম্ভ হল শান্তি, শক্তি, পর্যটন, ফাইভ জি যোগাযোগ ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ, ক্রীড়া এবং সম্ভাবনা। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রবেশ পথ উত্তর পূর্বাঞ্চল। তাই উত্তর পূর্বাঞ্চল সমগ্র অঞ্চলের উন্নয়নের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সম্ভাবনার কথা উপলব্ধি করে ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপাক্ষিক মহাসড়ক এবং আগরতলা-আখাউরা রেল প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার ‘লুক ইস্ট’ নীতিকে পরিবর্তন করে ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতিকে গ্রহণ করেছে, এখন নতুন নীতি হল উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য প্রথমে কাজ করা ও দ্রুত কাজ করা ౼ অ্যাক্ট ফাস্ট ফর নর্থ ইস্ট ও অ্যাক্ট ফার্স্ট ফর নর্থ ইস্ট। এই অঞ্চলের শান্তি উদ্যোগের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, বেশ কয়েকটি শান্তিচুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়াও আন্তঃরাজ্য সীমান্ত চুক্তিগুলি কার্যকর হয়েছে। ফলস্বরূপ উগ্রপন্থী কার্যকলাপের হার যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে। 

ভারতকে সম্পূর্ণ কার্বন নিঃসরণ মুক্ত করার উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চল জলবিদ্যুৎ শক্তির কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। এই অঞ্চলে বিভিন্ন উদ্যোগ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত হবে। যার ফলে শিল্পায়ন হবে এবং আরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পর্যটনের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের টানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকরা এই অঞ্চলের প্রতি আকৃ্ষ্ট হচ্ছেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য পর্যটন সার্কিট শনাক্ত করে এই অঞ্চলের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। দেশের ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উত্তর পূর্বাঞ্চলে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ আরও কাছাকাছি আসবেন। এইসব ছাত্রছাত্রীরা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের দূত হিসেবে কাজ করবেন। 

উত্তর পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দীর্ঘ কয়েক দশকের বকেয়া থাকা সেতুগুলির নির্মাণ এখন শেষ হয়েছে। গত ৮ বছরে এই অঞ্চলে বিমান বন্দরের সংখ্যা ৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬। ২০১৪ সালের আগে উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থার  ৯০০টি উড়ান ছিল। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৯০০য় পৌঁছেছে। প্রথমবারের মতো বেশ কয়েকটি উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার মানচিত্রে স্থান পেয়েছে। এই অঞ্চলের জল পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও প্রসারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের পর উত্তর পূর্বাঞ্চলে জাতীয় সড়কের পরিমাণ ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পিএম ডিভাইন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এরফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পরিকাঠামো নির্মাণের প্রকল্পগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে গতি পেয়েছে। সরকার অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের প্রসার ঘটানোর মধ্য দিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলে ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে চাইছে। ফাইভ জি পরিকাঠামো ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার বিষয়টি উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, এর ফলে আগামীদিনে স্টার্টআপ সংস্থা গড়ে তোলার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও পরিষেবা ক্ষেত্রের প্রসার ঘটবে। কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর পূর্বাঞ্চলের আর্থিক বিকাশের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কার্যকর করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। 

এই অঞ্চলের কৃষিকাজের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজের মধ্য দিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চল অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। কৃষি উড়ানের মাধ্যমে কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছেন। ভোজ্য তেল- অয়েল পাম কর্মসূচিতে তিনি উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানান। ভৌগলিক কারনে উত্তর পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা দেখা দেয় তা নিরসনে এখানকার কৃষকদের ড্রোন ব্যবহারের ওপর তিনি গুরুত্ব দেন।  

ক্রীড়া ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের অবদানের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের প্রথম ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি উত্তর পূর্বাঞ্চলে নির্মাণ করছে। ফলস্বরূপ, এই অঞ্চলের খেলোয়াড়দের নানা ভাবে সহায়তা করা সম্ভব হবে। সরকারের টপস্ কর্মসূচিতে এখানকার বহু ক্রীড়াবিদ উপকৃত হয়েছেন। এছাড়াও ৮টি রাজ্যে ২০০টির বেশি খেলো ইন্ডিয়া কেন্দ্র গড়ে তোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে জি২০ গোষ্ঠীর সভাপতি হিসেবে ভারতের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের সকল প্রান্ত থেকে মানুষ আসবেন এই অঞ্চলের বৈঠকগুলিতে যোগ দিতে। জি২০ গোষ্ঠীর বৈঠকগুলির সাহায্যে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, সংস্কৃতি এবং সম্ভাবনাকে তুলে ধরার সুন্দর সুযোগ তৈরি হবে । 


PG/CB/NS



(Release ID: 1884603) Visitor Counter : 119