রাষ্ট্রপতিরসচিবালয়
ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী রাম নাথ কোবিন্দের জামাইকা সফর
Posted On:
17 MAY 2022 11:57AM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৭ মে, ২০২২
ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী রাম নাথ কোবিন্দ ১৫ই মে ২০২২ সন্ধ্যায় জামাইকার রাজধানী কিংস্টনে নর্মান ম্যানলি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। জামাইকার গভর্নর জেনারেল মাননীয় স্যর প্যাট্রিক অ্যালেন, জামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাঁকে স্বাগত জানান। রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অফ অনারও দেওয়া হয়। ভারতের কোনও রাষ্ট্রপতির জন্য এটিই প্রথম জামাইকা সফর এবং ভারত ও জামাইকার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের এটি ৬০তম বছর।
গতকাল ১৬ই মে, ২০২২ রাষ্ট্রপতি তাঁর জামাইকা সফর শুরু করেন কিংস্টনের ন্যাশনাল হিরোস পার্কে মার্কাস গারভির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে। এরপর, তিনি যান জামাইকার গভর্নর জেনারেলের সরকারি আবাস কিংস হাউসে। গভর্নর জেনারেল এবং রাষ্ট্রপতির মধ্যে আলোচনাকালে রাষ্ট্রপতি গভর্নর জেনারেল’কে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানান। তথ্য প্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট বিষয়, চিকিৎসা এবং ঔষধ তৈরি, ক্রীড়া ও শিক্ষা এবং পর্যটন শিল্পে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বিষয়ে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কোভিড-১৯ এর বাধা থাকা সত্ত্বেও ভারত ও জামাইকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে, তথ্য প্রযুক্তি ও তথ্য প্রযুক্তি সহায়ক পরিষেবা, চিকিৎসা ও ঔষধ ক্ষেত্রে, শিক্ষা, পর্যটন, কৃষি ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রগুলিতে আরও অধিক সহায়তার সুযোগ রয়েছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে দু’দেশের সহযোগিতার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভারত জামাইকার সঙ্গে এই বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও দক্ষতা ভাগ করে নিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমাদের এই উন্নয়নমূলক সহায়তা দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার উপর দৃঢ় প্রোথিত, স্বতঃপ্রণোদিত এবং সহযোগী দেশের জাতীয় অগ্রাধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ইন্ডিয়া টেকনিকাল অ্যান্ড ইকনমিক কো-অপারেশন (আইটিইসি) প্রকল্পের অধীনে উচ্চ মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রদত্ত বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জামাইকা’তে দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পেরে আমরা খুশি। আইটিইসি প্রকল্পে আসন সংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হচ্ছে।
এরপর, রাষ্ট্রপতি জামাইকা হাউসে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দুই নেতার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিষেবা, স্বাস্থ্য, রেলওয়ে এবং পরিবহণ ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক স্তরে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, পরিষেবা ও অর্থনীতি ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিপুল সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে জামাইকার আগ্রহের বিষয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জামাইকার কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শাখা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে জামাইকার আগ্রহকে ভারত স্বাগত জানায়।
সুষমা স্বরাজ ইন্সটিটিউশন ফর ফরেন সার্ভিস (এসএসএফএসআই) এবং জামাইকার বিদেশ ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রকের মধ্যে রাষ্ট্রপতি ও জামাইকার প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতাপত্রের মাধ্যমে এসএসএফএসআই-তে জামাইকার কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ লাভে সুবিধা হবে।
এরপর, রাষ্ট্রপতি কিংস্টন শহরে আম্বেদকর এভিনিউ – এর উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে জামাইকার স্থানীয় সরকার ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী ডেসমন্ড ম্যাকেনজি, কিংস্টন শহরের মেয়র এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি জানান, ডঃ ভীমরাও আম্বেদকরই প্রথম সংবিধানে অত্যাচারিত শ্রেণীর মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে প্রগতিশীল আদর্শের কথা বলেন। অসাম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে তিনি মানুষকে সচেতন ও এ বিষয়ে কাজ করতে উৎসাহিত করেন।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, জামাইকার সঙ্গে ডঃ আম্বেদকরের সম্পর্ক বিষয়ে প্রশ্ন জাগতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ডঃ আম্বেদকর বা মার্কাস গারভির মতো মণীষীরা কোনও একটি দেশ বা জাতির সীমায় সীমাবদ্ধ নন। সাম্যের জন্য তাঁদের বাণী এবং সবরকমের অসাম্য মুছে ফেলার জন্য তাঁদের আবেদন বিশ্বব্যাপী সাড়া জাগায়। ডঃ আম্বেদকরের বাণী ভারত ও জামাইকাতে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
জামাইকার হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভস্ – এর বিরোধী দলনেতা মার্ক গোল্ডিং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন। দ্বিপাক্ষিক ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক যোগাযোগ ও দু’দেশের নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়।
সন্ধ্যায় কিংস্টনের হোপ বোটানিক্যাল গার্ডেনে রাষ্ট্রপতি ভারত – জামাইকা মৈত্রী বাগানের উদ্বোধন করেন এবং জামাইকার ফার্স্ট লেডি, লেডি অ্যালেনের উপস্থিতিতে একটি চন্দন গাছের চারা রোপণ করেন।
এর পর, রাষ্ট্রপতি জামাইকায় বসবাসরত ভারতীয় এবং ফ্রেন্ডস্ অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত সংবর্ধনাসভায় অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জামাইকায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রী মাসাকুই রাংসাং।
অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, জামাইকা ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক যোগাযোগের শিকড় গভীরে প্রোথিত এবং বহুমুখী। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সংযোগ সেতু হিসাবে কাজ করছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। জামাইকাতে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের অবদান সর্বোচ্চ স্তরে স্বীকৃত হচ্ছে, এটি আমাদের কাছে গর্বের বিষয়।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ভারত স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পালন করছে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের মাধ্যমে। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের আরও বেশি করে এই অনুষ্ঠানে যোগদান করতে রাষ্ট্রপতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ডিজিটাল ইকনমি, নয়া প্রযুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভৃতি বিষয়ে অগ্রগণ্য দেশের ভূমিকা পালন করার লক্ষ্যে আমরা প্রয়াস চালাচ্ছি। এই নতুন ভারতে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের যোগদান করার বহুল সুযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সাহায্য প্রার্থনা করছি, যাতে লক্ষ লক্ষ বাড়িতে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির আলো জ্বলে ওঠে।
এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি জামাইকা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে ক্রিকেট খেলার সামগ্রী প্রদান করেন। অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিলি হেভেন জামাইকার তরফ থেকে এই উপহার গ্রহণ করেন।
SC/SB
(Release ID: 1826027)
Visitor Counter : 1247