স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক
আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রের চতুর্থ বার্ষিকী উদযাপনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে পৌরোহিত্য করলেন ডাঃ মনসুখ মান্ডভিয়া; লক্ষাধিক আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দিলো
১৮ থেকে ২২শে এপ্রিল লক্ষাধিক আযুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রে ব্লক স্তরে স্বাস্থ্য মেলার আয়োজন করা হবে, ১৭ই এপ্রিল হবে যোগাভ্যাস; এই সব মেলায় যক্ষা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের পরীক্ষা করা হবে, দেওয়া হবে ওষুধ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা, টেলি-চিকিৎসা পরামর্শও দেওয়া হবে
ডাঃ মনসুখ মান্ডভিয়া আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মানবসম্পদের নীতি-নির্দেশিকা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং ভারতীয় জনস্বাস্থ্য বিষয়ক মানগুলির নির্দেশিকা প্রকাশ করলেন; কথা বললেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে
"স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে দেশ এখন প্রতীকি সমাধান থেকে সম্পূর্ণ সমাধানের পথে অগ্রসর হয়েছে" : ডাঃ মনসুখ মান্ডভিয়া
"সুস্থ নাগরিকরাই একটি সুস্থ সমাজ গঠন করেন এবং সুস্থ সমাজই গড়ে তোলে একটি সুস্থ জাতি" : ডাঃ মনসুখ মান্ডভিয়া
"আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলি দেশজুড়ে সুলভ চিকিৎসা পরিষেবা সকলের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসছে" - ডাঃ ভারতী প্রবীণ পাওয়ার
Posted On:
16 APR 2022 1:51PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১৪ এপ্রিল, ২০২২
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাঃ মনসুখ মান্ডভিয়া আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলির চতুর্থ বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেছেন। এক লক্ষেরও বেশি আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র, বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী, রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির পদস্থ আধিকারিকরা, বিভিন্ন হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী ও উন্নয়ন সহযোগীরা এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেন।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টেলি-চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের ওপর জোর দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, "উন্নয়নের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা এখন স্বাস্থ্য সেবা ক্ষেত্রে প্রতীকি সমাধান থেকে সম্পূর্ণ সমাধানের পথে এগিয়ে চলেছি, টেলি-চিকিৎসা পরিষেবা তারই এক নিদর্শন। প্রধানমন্ত্রী যেরকম ভেবেছিলেন, ঠিক সেইরকম ভাবেই ই-সঞ্জিবনী, সুলভ চিকিৎসা পরিষেবাকে সকলের নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছে। অনেক রাজ্যের মানুষই এর উপকারিতা বুঝতে পেরে স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার এই ডিজিটাল পদ্ধতির দ্বারস্থ হয়েছেন। যেভাবে এই পরিষেবা দ্রুত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে, তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। এই উদ্ভাবনী ডিজিটাল মাধ্যমটি ব্যবহার করে প্রতিদিন রোগীরা চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পাচ্ছেন। বর্তমানে কিছু স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রে মুখের ক্যান্সার, স্তনের ক্যান্সার এবং সার্ভিকাল ক্যান্সারের মত গুরুতর রোগও সনাক্ত করা হচ্ছে। এরফলে, একদিকে যেমন রোগ দ্রুত ধরা পড়ছে, তেমনি রোগীরাও দ্রুত চিকিৎসার সুবিধা পাচ্ছেন। সুস্থ নাগরিকরাই একটি সুস্থ সমাজ গঠন করেন এবং সুস্থ সমাজই গড়ে তোলে একটি সুস্থ জাতি। আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলি হল সেই লক্ষ্যে এক পদক্ষেপ।"
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা মানুষজনের কাছে টেলি-চিকিৎসা পরিষেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবা সকলের নাগালের মধ্যে পৌঁছতে পারে। রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির উচিত চিকিৎসা হাবগুলির সঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলির সংযোগ সাধনে সচেষ্ট হওয়া। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের আওতায় ১৮ থেকে ২২ এপ্রিল দেশজুড়ে ব্লক স্তরে আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলিতে স্বাস্থ্য মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। ১৭-ই এপ্রিল দিনটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে যোগাভ্যাসের জন্য। নাগরিকরা যাতে এই সব স্বাস্থ্য মেলায় যোগ দিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে পারেন, সেজন্য সব রাজ্য/ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে এই ব্যাপারে সচেতনতা অভিযান চালানোর আহ্বান জানান তিনি। এই সব স্বাস্থ্য মেলায় যক্ষা, সার্ভিকাল ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং মুখের ক্যান্সারের মত রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থাও থাকছে। এর সুবিধা নিতে প্রতিটি রাজ্য ও নাগরিকদের এইসব মেলায় সক্রিয় ভাবে যোগদানের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ চারটি পুস্তিকার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছেন। আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মানবসম্পদের নির্দেশিকা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ক্যাডারের নির্দেশিকা এবং ভারতীয় জনস্বাস্থ্য মান নির্দেশিকা।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ ভারতী প্রবীণ পাওয়ার বলেন, দেশজুড়ে বর্তমানে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৪৪০টিরও বেশি স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র মানুষের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছে। এরফলে, একজন ব্যক্তির থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গড় দূরত্ব ৩০ মিনিটে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, "আজ আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয় হল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর দেখানো পথ অনুসরণ করে আজ আমরা দেশবাসীকে তাদের বাড়ির কাছে সমস্ত প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে পারছি, অথচ এরজন্য তাদের ওপর কোন আর্থিক চাপ পড়ছে না। গর্ভবতী মহিলা, সদ্যোজাত শিশু, কিশোর-কিশোরী, প্রবীণ নাগরিক - সকলেই স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলির থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুবিধা ভোগ করছেন। শুধু তাই নয়, দিব্যাঙ্গরাও যাতে এর পরিষেবা নিতে পারেন, সেজন্য স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রের পরিকাঠামোগুলিকে বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি দেশবাসীর কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছে এবং জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি ২০১৭-র প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে।"
নীতি আয়োগের সদস্য ডাঃ ভি কে পল বলেন, রোগমুক্ত ভারত গড়ার লক্ষ্যে টেলি-চিকিৎসা পরিষেবা এক প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিই হল আমাদের দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কারণ, স্থানীয় মানুষজনের স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজন হলে তারা সবার আগে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই যান। আগে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে মূলত মা ও শিশুর চিকিৎসার ওপর জোর দেওয়া হত, কিন্তু এখন সবাই সার্বিক স্বাস্থ্য পরিষেবার আওতায় এসেছেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব শ্রী রাজেশ ভূষণ জানান, সরকার চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে দেড় লক্ষ আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। এরমধ্যে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৪০০ কেন্দ্র ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গেছে এবং এক লক্ষেরও বেশি কেন্দ্র ই-সঞ্জিবনী পোর্টালে নথিভুক্ত হয়েছে। জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতে সর্বজনীন স্বাস্থ্যের যে কথা বলা হয়েছে তা বাস্তবে রূপায়িত করতে সরকার এবং স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলি সর্বতো প্রয়াস চালাচ্ছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, এই সব কেন্দ্রে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ডায়গনেস্টিক পরিষেবা দেওয়া হয়, নাগরিকরা তাদের নিজেদের এলাকাতেই এইসব কেন্দ্র থেকে উচ্চমানের পরিষেবা পান। কেবল চিকিৎসা পরিষেবাই নয়, এই সব কেন্দ্রগুলি থেকে অন্য নানা ধরণের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রকল্প ও কর্মসূচির সুবিধাও পাওয়া যায়। এতে নাগরিকদের মধ্যে সুস্থতা ও ভাল থাকার ধারণা ছড়িয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির অক্লান্ত প্রয়াসের জন্য তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।
আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলির চতুর্থ বার্ষিকী উদযাপন সম্পর্কে :
২০১৭ সালের জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি অনুসারে ভারত সরকার ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশে দেড় লক্ষ আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্র গড়ে তোলার ঘোষণা করে এবং এজন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা হয়।
গ্রামীণ ও শহুরে এলাকায় থাকা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির উন্নয়ন ঘটিয়ে সেগুলিকে সার্বিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের উপযোগী করে তোলা হয়, যাতে নাগরিকরা সবাই তাদের বাড়ির কাছাকাছি বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা পান। আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলি সীমাবদ্ধ স্বাস্থ্য পরিষেবার বদলে সার্বিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে এক বৃহৎ পদক্ষেপ। এখানে প্রচারমূলক, প্রতিরোধমূলক, নিরাময়মূলক, পুনর্বাসনমূলক এবং উপশমকারী স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হয়। রোগ কেন্দ্রিকতার পরিবর্তে এর দৃষ্টিভঙ্গী সুস্থতা কেন্দ্রিক। এখানে সমাজের সবার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। 'সকলের জন্য স্বাস্থ্য'-এর প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা এটি।
আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলিতে যোগাভ্যাস - ১৭ই এপ্রিল ২০২২ :
আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের আওতায় প্রতিটি আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রে ১৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখটিকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে যোগাভ্যাসের জন্য। ওই দিন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার সমন্বয়কে যোগের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
ব্লক স্বাস্থ্য মেলা - ১৮ই এপ্রিল থেকে ২২শে এপ্রিল ২০২২ :
১৮ই এপ্রিল ২০২২ থেকে আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্য ও সুস্থতা কেন্দ্রগুলিতে স্বাস্থ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলার অন্তত একটি ব্লকে এই মেলা চলবে। প্রতিটি ব্লকে একদিনের স্বাস্থ্য মেলা হবে। প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিটি ব্লক এই কর্মসূচির আওতায় আসবে।
স্বাস্থ্য পরিষেবার মহানির্দেশক ডাঃ সুনীল কুমার, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব ডাঃ মনোহর আগনানি, যুগ্ম সচিব শ্রী বিশাল চৌহ্বান, যুগ্ম সচিব ডাঃ হরমিত সিং, যুগ্ম সচিব ডাঃ অশোক বাবু সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিক এবং রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধিরা এই ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
CG/SD/SKD/
(Release ID: 1817489)
Visitor Counter : 465