প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

২০২২-এর ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন


“চাপমুক্ত হয়ে উৎসবের মেজাজে পরীক্ষায় বসুন”

“প্রযুক্তিকে সুযোগ হিসেবে দেখুন, চ্যালেঞ্জ হিসেবে নয়”

“জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা হয়েছে; দেশজুড়ে এব্যাপারে মানুষের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে”

“বিংশ শতাব্দীর শিক্ষা ব্যবস্থা ও ধ্যান-ধারণা একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের উন্নয়নের যাত্রাপথ নির্ধারণ করতে পারে না; তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিজেদের বদলাতে হবে”

“শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের অপূর্ণ স্বপ্ন ছাত্রছাত্রীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না; ছেলেমেয়েদের নিজেদের স্বপ্ন অনুযায়ী চলতে দেওয়া দরকার”

“উৎসাহিত করার জন্য কোনও ইঞ্জেকশন বা সূত্র নেই; পরিবর্তে নিজেকে জানুন এবং যা আপনার ভাল লাগে তা নিয়েই কাজ করুন”

“আপনি যে কাজ করে আনন্দ পান তাই করুন, কেবলমাত্র তা থেকেই সবচেয়ে ভালো ফল পেতে পারেন”

“আপনারা বিশেষ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছেন; হ্যাঁ, অনেক বেশি প্রতিযোগিতা যেমন রয়েছে, তেমনই সুযোগও রয়েছে”

“মেয়েরা পরিবারের শক্তি, আমাদের নারীশক্তি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদেরকে বিকশিত করছে, এটা দেখার চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে”

“অন্যদের মধ্যে যে গুণাবলী রয়েছে তার প্রশংসা করার ক্ষমত

Posted On: 01 APR 2022 1:56PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১ এপ্রিল, ২০২২
 
‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানের পঞ্চম সংস্করণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে তালকাটোরা স্টেডিয়ামে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময়ের আগে তিনি ছাত্রছাত্রীদের পক্ষ থেকে আয়োজিত একটি প্রদর্শনীও ঘুরে দেখেন। এই উপলক্ষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, শ্রীমতী অন্নপূর্ণা দেবী, ডা. সুভাষ সরকার, ডঃ রাজকুমার রঞ্জন সিং ও শ্রী রাজীব চন্দ্রশেখর এবং বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী ও তাদের পিতা-মাতারা ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অত্যন্ত হাসি-খুশি ও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে আলাপচারিতায় অংশ নেন।
 
এই উপলক্ষে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে মতবিনিময়ের পর এবার নবীন প্রজন্মের বন্ধুদের কাছে সরাসরি ভাষণ দিতে পেরে খুশি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ তাঁর একটি অত্যন্ত প্রিয় অনুষ্ঠান। তিনি বলেন, আগামীকাল নববর্ষ ‘বিক্রম সম্ভত’ শুরু হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি আসন্ন বিভিন্ন উৎসবের জন্য ছাত্রছাত্রীদের শুভেচ্ছা জানান। ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানের পঞ্চম সংস্করণে প্রধানমন্ত্রী একটি নতুন প্রথার সূচনা করেন। তিনি বলেন, যে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর তিনি সরাসরি দিতে পারবেন না, তা ‘নমো অ্যাপ’-এ ভিডিও, অডিও অথবা টেক্সট ম্যাসেজের মাধ্যমে দেওয়া হবে। 
 
এই অনুষ্ঠানে প্রথম প্রশ্ন করেন দিল্লির খুশি জৈন। ভাদোদরার কিনি প্যাটেল পরীক্ষা সম্পর্কিত মানসিক উত্তেজনা ও চাপ সম্পর্কে জানতে চান। প্রধানমন্ত্রী জবাবে তাদের চাপ না নেওয়ার কথা বলেন। তিনি জানান, এবারই তারা প্রথম পরীক্ষায় বসছেন না। প্রকৃতপক্ষে তারা বহুবার পরীক্ষায় বসেছেন। আগের পরীক্ষাগুলির অভিজ্ঞতা আসন্ন পরীক্ষাগুলি থেকে তাদের চাপমুক্ত হতে সাহায্য করবে। তিনি আরও বলেন, পড়াশোনার সময় কিছু ক্ষেত্রে হয়তো ঘাটতি থাকে, কিন্তু সে ব্যাপারে চিন্তিত না হয়ে তাদের প্রস্তুতির সামর্থ্যের দিকটির ওপর গুরুত্ব  দেওয়া উচিত।  দৈনন্দিন জীবনের মতো স্বাভাবিক ও খুশির মেজাজেই থাকতে হবে। অন্যদের অনুকরণ করে কোন কিছু  করার কোনও অর্থ নেই । নিজের রুটিন অনুযায়ী নিজেকে চলতে হবে এবং হালকা মেজাজে নিজের কাজ করে যেতে হবে।
 
কর্ণাটক মাইসুরুর ছাত্র তরুণ, প্রধানমন্ত্রীকে পরবর্তী প্রশ্ন করে। সে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চায়, ইউটিউবের মতো মনোসংযোগে বিঘ্ন ঘটানোর মতো অনেক উপাদান থাকা সত্ত্বেও কিভাবে অনলাইনে পড়াশোনা চালানো সম্ভব। দিল্লির সাহিদ আলি, তিরুবনন্তপুরমের কির্থানা, কৃষ্ণগিরির এক শিক্ষক চন্দ্র চুড়েশ্বরনও একই প্রশ্ন করেন। প্রধানমন্ত্রী জবাবে বলেন, অনলাইন বা অফলাইন পদ্ধতিতে পড়াশোনার সঙ্গে সমস্যার বিষয়টি জড়িয়ে নেই। তিনি বলেন, অফলাইন পদ্ধতিতেও মনোনিবেশে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তিনি আরও বলেন, তাই অনলাইন বা অফলাইন পদ্ধতি নয়, সমস্যার বিষয়টি নিহিত রয়েছে মানসিকতায়। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অফলাইনই হোক বা অনলাইন, মাথার মধ্যে যখন পড়াশোনার বিষয় থাকবে তখন কোনও কিছুই পড়ুয়ার মনোসংযোগে বিঘ্ন ঘটাতে পারবে না। নতুন প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটবে এবং ছাত্রছাত্রীদেরকেও পঠনপাঠনের নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার পদ্ধতিকে সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে, চ্যালেঞ্জ হিসেবে নয়। অনলাইন একজন পড়ুয়ার অফলাইনে শিক্ষার মান বাড়াতে পারে। এ সম্পর্কে তিনি ধোসা বানানোর দৃষ্টান্ত দেন। তিনি বলেন, যে কেউ অনলাইন থেকে ধোসা বানানো শিখতে পারেন, কিন্তু তার প্রাক-প্রস্তুতি ও বানানোর পদ্ধতি অফলাইনে নিজেকে হাতেই করতে হয়। তিনি বলেন, ভার্চ্যুয়াল জগতে থাকার তুলনায় নিজেকে নিয়ে চিন্তা করা ও নিজের মধ্যেই থাকার অপার আনন্দ রয়েছে। 
 
হরিয়ানার পানিপথ থেকে শিক্ষিকা সুমন রানি জানতে চান, নতুন শিক্ষানীতি কিভাবে ছাত্রছাত্রীদের এবং বৃহত্তর অর্থে সমাজের ক্ষমতায়ন ঘটাবে। তিনি একইসঙ্গে এটাও জানতে চান, কিভাবে এই শিক্ষানীতি নতুন ভারতের পথ প্রশস্ত করবে। মেঘালয়ের পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলার শীলাও একই প্রশ্ন করেন। প্রধানমন্ত্রী জবাবে বলেন, এটা জাতীয় শিক্ষানীতি, নতুন শিক্ষানীতি নয়। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বিস্তারিত  আলাপ-আলোচনা ও বিশদে চিন্তাভাবনা করার পর জাতীয় শিক্ষানীতির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি সম্পর্কে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা করা হয়েছে। সারা দেশ থেকেই মানুষ এ সম্পর্কে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, সরকার এই নীতি প্রণয়ন করেনি। আসলে সাধারণ মানুষ, ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারাই এই নীতি প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, আগে শারীরশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিষয়টি এক্সট্রা-কারিক্যুলার অ্যাক্টিভিটিজ বা পাঠ্যক্রম বহির্ভূত বিষয় হিসেবে দেখা হত, কিন্তু এখন শারীরশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিষয়টিকে মূল শিক্ষা ব্যবস্থার অঙ্গ করা হয়েছে এবং ধীরে ধীরে তা স্বীকৃতিও পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিংশ শতাব্দীর শিক্ষা ব্যবস্থা ও চিন্তাভাবনা একবিংশ শতাব্দীতে দেশের উন্নয়নের পথ নির্ধারণ করতে পারে না। তিনি বলেন, আমরা যদি সময়ের সঙ্গে নিজেদেরকে বদলাতে না পারি, তাহলে আমরা অন্যদের থেকে পিছিয়ে যাব এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ব। জাতীয় শিক্ষানীতিতে একজন তার পছন্দের বিষয় নিয়ে পঠনপাঠন চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কারণেই জাতীয় শিক্ষানীতিতে দক্ষতার বিষয়টিকে যুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে বিষয় পছন্দ করার যে সুযোগ রয়েছে তার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির কার্যকর রূপায়ণ হলে তা নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাবিত নতুন প্রযুক্তি রূপায়ণে তিনি সারা দেশের বিদ্যালয়গুলিকে অভিনব পন্থাপদ্ধতি খুঁজে বের করার অনুরোধ জানান।
 
উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের রোশনি জানতে চায়, কিভাবে সে পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে পরিবারের প্রত্যাশা পূরণ করবে। সে আরও জানতে চায়, বাবা-মায়ের কথা অনুযায়ী সে শিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুগম্ভীর এক বিষয় হিসাবে  দেখবে নাকি উৎসবের মেজাজে  নিজের পঠনপাঠন চালিয়ে যাবে। পাঞ্জাবের ভাতিন্ডা থেকে কিরণপ্রীত কউর একই প্রশ্ন করেন। এই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকে নিজেদের স্বপ্ন ছাত্রছাত্রীদের ওপর না চাপিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীরা তাদের স্বপ্ন অনুযায়ী চলবে, এটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি প্রত্যেক পিতা-মাতা ও শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বলেন, প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর মধ্যেই বিশেষ কিছু সক্ষমতা রয়েছে এবং তা খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এ সম্পর্কে তিনি ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের সক্ষমতার বিষয়গুলিকে খুঁজে বের করার এবং তা অবলম্বন করে আস্থার সঙ্গে এগিয়ে চলার পরামর্শ দেন। দিল্লির বৈভব কানৌজিয়া জানতে চান কিভাবে সে নিজেকে উৎসাহিত করবে এবং বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও কিভাবে সাফল্য অর্জন করবে। ওড়িশার এক অভিভাবক, সুজিত কুমার প্রধান, জয়পুরের কোমল শর্মা এবং দোহা থেকে অ্যারন ইবেন একই প্রশ্ন করেন। প্রধানমন্ত্রী এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, উৎসাহিত করার কোনও সূত্র বা প্রচলিত পন্থাপদ্ধতি নেই, পরিবর্তে নিজের ভালো দিকগুলি খুঁজে বের করুন এবং কি আপনাকে খুশি করতে সাহায্য করে তা নিয়েই কাজ করুন। তিনি ছাত্রছাত্রীদেরকে বলেন, সেই বিষয়গুলিকে খুঁজে বের করতে যেগুলি তাদের স্বাভাবিকভাবেই অনুপ্রাণিত করে। এ সম্পর্কে তিনি ছাত্রছাত্রীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, তাদের আশেপাশের অন্যান্য শিশু, দিব্যাঙ্গদের ওপর নজর রাখতে কিভাবে তারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে চলেছে। 
 
তেলেঙ্গানার খাম্মাম থেকে অনুষা বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকারা যখন তাকে কোনও একটি বিষয় সম্পর্কে বোঝান, তখন সে তা মনে রাখতে পারে কিন্তু, কিছু সময় পর সে তা ভুলে যায়। কিভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে। ‘নমো অ্যাপ’-এর মাধ্যমে গায়ত্রী সাক্সেনাও স্মৃতিশক্তি এবং উপলব্ধি করার ক্ষমতা সম্পর্কে একই প্রশ্ন করেন। প্রধানমন্ত্রী এর জবাবে বলেন, কোনও বিষয় যদি গভীর মনোযোগ দিয়ে শেখা যায় তবে তা ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। তিনি প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে পঠনপাঠনের সময়ে সজাগ থাকার পরামর্শ দেন। পড়াশোনার ক্ষেত্রে সজাগ থাকলে  শেখা ও দীর্ঘ সময় তা মনে রাখাঁ সহজ হয়।   প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবসময় বর্তমানে থাকতে হবে। যে বর্তমানে থাকে এবং বর্তমান পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণ ভাবে বোঝে, সে-ই জীবনের কাছে সবথেকে বেশি পায়। স্মৃতিশক্তির পরিচর্যা করে তা আরো বাড়ানোর প্রয়াসের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দুশ্চিন্তামুক্ত মানসিক পরিস্থিতি, স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে।  
 
ঝাড়খণ্ডের শ্বেতা কুমার বলে, সে রাতে পড়াশোনা করতে পছন্দ করে কিন্তু তাকে দিনের বেলাতে লেখাপড়া করতে বলা হয়। ‘নমো অ্যাপ’-এর মাধ্যমে রাঘব যোশীও লেখাপড়ার জন্য সঠিক সময় সম্পর্কে জানতে চান। প্রধানমন্ত্রী এ সম্পর্কে বলেন, একজনের প্রচেষ্টার পরিণতি এবং সময় কিভাবে ব্যয় হচ্ছে তার মূল্যায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ। পরিণাম বা ফলাফলের ওপর বিশ্লেষণ করার অভ্যাস শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সেই বিষয়ের ওপর বেশি সময় দিই যা আমাদের কাছে সহজ ও আগ্রহের। তাই, আপনি যে কাজ করে আনন্দ পান তাই করুন, কেবল তাহলেই তা থেকে ভালো পরিণাম মিলতে পারে।
 
জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুর থেকে এরিকা জর্জ জানতে চান, যাঁরা প্রকৃতপক্ষেই জ্ঞানসমৃদ্ধ কিন্তু কোনও কারণে তাঁরা সঠিক পরীক্ষায় বসতে চান না – এঁদের বিষয়ে কি করা যেতে পারে? গৌতম বুদ্ধ নগরের হরিওম মিশ্রা জানতে চান কিভাবে তারা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার চাপ সামলাবেন এবং বোর্ডের পরীক্ষার পড়াশোনাও চালিয়ে যাবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা – একথা ঠিক নয়। তিনি আরও বলেন, যদি কোনও ছাত্র পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পুরো সিলেবাস নিয়ে পঠনপাঠন করে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া অসম্ভব নয়। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, অ্যাথলিটদের খেলাধূলার জন্য প্রশিক্ষিত করা হয়, প্রতিযোগিতার কথা মাথায় রেখে নয়। আপনারা বিশেষ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করছেন। হ্যাঁ, এখন অনেক বেশি প্রতিযোগিতা যেমন রয়েছে, তেমনই সুযোগও রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ছাত্রছাত্রীদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাকে তাদের জীবনের সেরা উপহার হিসেবে গণ্য করার পরামর্শ দেন।
 
গুজরাটের নবসারি থেকে অভিভাবক সীমা চেতন দেশাই প্রধানমন্ত্রী কাছে জানতে চান, সমাজ ব্যবস্থা কিভাবে গ্রামাঞ্চলের শিশুকন্যাদের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। একটা সময় ছিল যখন শিশুকন্যাদের লেখাপড়াকে উপেক্ষা করা হত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, মেয়েদের উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা না গেলে কোনও সমাজেরই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই, আমাদের কন্যাদের সুযোগ-সুবিধা ও ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। এখন মেয়েরা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে এবং সমাজের মানসিকতায় এই পরিবর্তন আসাকে স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর সময়কালে সংসদে সর্বাধিক সংখ্যায় মহিলা প্রতিনিধিত্ব রয়েছে, যা ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি। কন্যারা পরিবারের শক্তি। আমাদের নারীশক্তি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের বিকশিত করছে, এটা দেখার চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
 
দিল্লির প্রতিভা রাও জানতে চায়, পরিবেশের সুরক্ষায় পরবর্তী প্রজন্ম কি অবদান রাখতে পারে। চৈতন্য জানতে চায় কিভাবে সে তার শ্রেণীকক্ষ ও পরিবেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে। প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ধন্যবাদ দেন এবং দেশকে নির্মল করে তুলতে তাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আজকে যে পরিবেশের সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছি তার পেছনে আমাদের পূর্বসূরীদের অবদান রয়েছে। একইভাবে, আমাদেরকেও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আরও উন্নত পরিবেশ তৈরি করে যেতে হবে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা তখনই সম্ভব হবে যখন সাধারণ মানুষ সক্রিয় অবদান রাখবেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাঁর নিজ কর্তব্য পালন করতে হবে। সঠিক সময়ে টিকা নেওয়ার জন্য তিনি ছাত্রছাত্রীদের প্রশংসা করেন। 
 
পরিশেষ প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা ছাত্রছাত্রীদের কাছে ডেকে তাদের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, অন্যদের মধ্যে যে গুণাবলী রয়েছে তা উপলব্ধি করার ক্ষমতা গড়ে তুলুন এবং তাঁদের কাছ থেকে শিখুন। তিনি আরও বলেন, আমাদের ঈর্ষার পরিবর্তে শেখার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। জীবনে সাফল্যের জন্য এ ধরনের মানসিকতা অত্যন্ত জরুরি বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। 
 
‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানের গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ এই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যখন তিনি কথা বলেন তখন এটা উপলব্ধি করেন যে তাঁর বয়স ৫০ বছর কমে গেছে। আমি এই প্রজন্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আপনাদের থেকে জানার ও শেখার চেষ্টা করছি। আমি যখনই আপনাদের সাথে যুক্ত হই তখন আমি আপনাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নের এক টুকরো ছবি পাই। সেই অনুযায়ী আমি আমার জীবনকে পাল্টানোর চেষ্টা করি। তাই এই কর্মসূচি আমাকে এগিয়ে চলতে সাহায্য করছে। নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করতে ও সঠিক দিশায় এগিয়ে চলতে আমাকে সময় দেওয়ার জন্য আমি আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই।
 
CG/BD/DM/


(Release ID: 1812664) Visitor Counter : 219