প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী শহীদ দিবসে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে বিপ্লবী ভারত গ্যালারির উদ্বোধন করেছেন


“আমি বাংলার মানুষের কাছে অনুরোধ করবো, তাঁরা যেন বীরভূমে হিংসাত্মক ঘটনায় যারা যুক্ত এবং যারা এইসব অপরাধীদের মদত দিচ্ছে তাদের কখনোই ক্ষমা না করেন”

“আজ দেশ তার ইতিহাস সম্পর্কে জানছে, তার অতীতকে শক্তির উৎস হিসেবে দেখছে”

“নতুন ভারত আজ বিদেশ থেকে তার ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনছে, আগে প্রাচীন পুরাকীর্তিগুলি বিদেশে চোরাচালান করা হতো, যেন এগুলির কোন মূল্যই নেই”

“বিপ্লবী ভারত গ্যালারির মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যকে রক্ষা করার বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার প্রমাণিত হয়”

“ঐতিহ্যশালী পর্যটনের বিস্তারে দেশজুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে”

“ভারত-ভক্তির শাশ্বত অনুভূতি, একতা ও ভারতের সংহতিকে আজও আমরা অগ্রাধিকার দিই ”

“আত্মপ্রত্যয়, আত্মনির্ভরতা, প্রাচীন যুগের পরিচিতি এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নই হল ভারতের নতুন ভাবনা , যেখানে দায়িত্ববোধ সবথেকে বেশি গুরুত্ব পায়”

“বিপ্লব, সত্যাগ্রহ এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের সৃজনশীল ভাবনা জাতীয় পতাকার গেরুয়া, সাদা ও সবুজের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়”

“নতুন ভারতের জন্য গেরুয়া দায়িত্ববোধ ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতিনিধিত্ব করে, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস স

Posted On: 23 MAR 2022 7:51PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লী, ২৩   মার্চ, ২০২২

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে বিপ্লবী ভারত গ্যালারির উদ্বোধন করেছেন। অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল শ্রী জগদীশ ধনকর ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি উপস্থিত ছিলেন। 

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের শুরুতেই বীরভূমে হিংসাত্মক ঘটনার যারা শিকার হয়েছেন, সেই মানুষদের প্রতি তাঁর সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি আশা করেন এ ধরণের জঘন্য অপরাধের সঙ্গে যারা যুক্ত রাজ্য সরকার তাদের শাস্তি দেবে। “আমি বাংলার জনগণের কাছে অনুরোধ করবো বীরভূমে হিংসাত্মক ঘটনায় যারা যুক্ত এবং যারা এইসব অপরাধীদের মদত দিচ্ছে তাদের আপনারা কখনোই ক্ষমা  করবেন না”।  

শহীদ দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভগৎ সিং, রাজগুরু এবং শুকদেবের আত্মবলিদান  দেশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে আমাদের  অনুপ্রেরণা যোগায়। 

“আমাদের অতীতের ঐতিহ্য বর্তমানকে পথ দেখায়। এর মধ্য দিয়ে উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আর তাই আজ দেশ তার ইতিহাস সম্পর্কে জানছে, তার অতীতকে শক্তির উৎস হিসেবে বিবেচনা করছে”। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ নতুন ভারত বিদেশ থেকে তার ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনছে, আগে প্রাচীন পুরাকীর্তিগুলি এমনভাবে বিদেশে চোরাচালান করা হতো, যেন সেগুলির কোন মূল্যই ছিল না। ২০১৪ সালের আগের দশকে ভারতে মাত্র এক ডজনের মতো ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি ফিরিয়ে আনা হয়েছে, কিন্তু গত ৭ বছরে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২২৫।  

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “নির্ভীক সুভাষ”-এর পর কলকাতার সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্যের মুকুটে আর একটি পালক যুক্ত হলো౼ বিপ্লবী ভারত গ্যালারি। বিপ্লবী ভারত গ্যালারির মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যকে রক্ষা করার বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার প্রমাণিত হয়।

রাজ্যের ঐতিহ্যশালী স্থাপত্যগুলি যেমন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, গ্যালারি, মেডকাফে হাউসের মতো স্থাপত্যগুলির সংস্কারের কাজ প্রায় শেষের দিকে। শ্রী মোদী বলেন, “আমাদের সংস্কৃতি ও সভ্যতার এই প্রতীকগুলি দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যাতে আগের মতোই অনুপ্রাণিত করে, তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঐতিহ্যশালী পর্যটনের বিস্তারে দেশজুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। স্বদেশ দর্শনের মতো বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ঐতিহ্যশালী পর্যটন বা হেরিটেজ ট্যুরিজমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ডান্ডি অভিযানের স্মারক, জালিয়ান ওয়ালাবাগের স্মারকের সংস্কার, স্ট্যাচু অফ ইউনিটি, দীনদয়াল স্মারক, বাবাসাহেব স্মারক, ভগবান বীরসা মুন্ডা মেমোরিয়াল, অযোধ্যা ও কাশীর ঘাটগুলির সৌন্দর্যায়ন অথবা ভারতের সর্বত্র মন্দিরগুলির সংস্কারের মতো উদ্যোগ নেওয়ার ফলে ঐতিহ্যশালী পর্যটনের আরও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী পরাধীন অবস্থায় থাকার সময় ত্রিধারার মাধ্যমে দেশে স্বাধীনতা এসেছে। এই ধারাগুলি হল বিপ্লব, সত্যাগ্রহ এবং জনসচেতনতা। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকার তিনটি রঙের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, জাতীয় পতাকার তিনটি রঙ ত্রিধারাকে প্রতিনিধিত্ব করে। বিপ্লব, সত্যাগ্রহ এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের সৃজনশীল ভাবনা জাতীয় পতাকার গেরুয়া, সাদা ও সবুজের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। গেরুয়া রঙ বিপ্লবের, সাদা রঙ সত্যাগ্রহের, সবুজ রঙ দেশের মানুষের সৃজনশীল ভাবনার প্রতীক। নতুন ভারতের জন্য গেরুয়া দায়িত্ববোধ ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতিনিধিত্ব করে, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস সাদা রঙের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়, সবুজ পরিবেশ সংরক্ষণের  আর নীল রঙের চক্র দেশের মহাসাগরীয় অর্থনীতির প্রতিনিধিত্ব করে।  

প্রধানমন্ত্রী ঐক্যের বন্ধনের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলন বিভিন্ন অঞ্চল, ভাষা ও সম্পদকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশাত্মবোধকে জাগ্রত করেছে। “ভারত-ভক্তি শাশ্বত অনুভূতি, একতা ও ভারতের সংহতি আজও আমাদের কাছে অগ্রাধিকার পায়। আপনার রাজনৈতিক দর্শন যাই হোক না কেন, আপনি যে রাজনৈতক দলেরই সদস্য হোন না কেন ভারতের একতা ও অখন্ডতার সঙ্গে যদি কেউ আপোষ করেন তাহলে তা  স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে প্রতারণা করার সামিল হয়।” 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা নতুন ভারত গড়ার পথে এগিয়ে চলেছি। আত্মপ্রত্যয়, আত্মনির্ভরতা, প্রাচীন যুগের পরিচিতি এবং ভবিষ্যতের উন্নয়নই হল ভারতের নতুন ভাবনা ,  যেখানে দায়িত্ববোধ সবথেকে বেশি গুরুত্ব পায়”

আজ ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বা ৩০ লক্ষ কোটি টাকার পণ্য সামগ্রী রপ্তানীর ফলে দেশ যে মাইল ফলক অতিক্রম করেছে সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন,  “ভারতের ক্রমবর্ধমান রপ্তানী আমাদের শিল্প, আমাদের অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ, আমাদের উৎপাদন দক্ষতা এবং আমাদের কৃষি ক্ষেত্রের শক্তির প্রতীক”।

এই গ্যালারিতে স্বাধীনতা সংগ্রামে বিপ্লীদের ভূমিকা এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তাঁদের সশস্ত্র প্রতিরোধের বিভিন্ন ঘটনার ছবি স্থান পেয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল ধারার সঙ্গে যুক্ত ঘটনাগুলি তুলে ধরার ক্ষেত্রে এ ধরণের প্রয়াস আগে কখনও দেখা যায়নি। নতুন এই গ্যালারির উদ্দেশ্য হলো ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত স্বাধীনতা আন্দোলেনের সার্বিক চিত্র এবং বিপ্লবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা দর্শকদের জানানো। 

এছাড়াও স্বাধীনতা সংগ্রাম- রাজনৈতিক নানা ঘটনাবলী ও বুদ্ধিজীবিদের মাধ্যমে কতটা প্রভাবিত হয়েছে সে সম্পর্কেও এখান থেকে ধারণা পাওয়া যাবে। গ্যালারিতে বিপ্লবী আন্দোলনের সূচনা, বিপ্লবী নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে গঠিত সংগঠন, আন্দোলনে বিস্তার, আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন, নৌ বিদ্রোহের প্রভাব সহ বিভিন্ন ঘটনাবলী তুলে ধরা হয়েছে। 

 

CG/CB/NS



(Release ID: 1808977) Visitor Counter : 166