তথ্যওসম্প্রচারমন্ত্রক

আসুন, ভারতের সমন্বয়মূলক বৈচিত্র্যের ‘সিনেমাটিক ক্যালাইডোস্কোপ’-এর অঙ্গ হয়ে উঠুন : ৫২তম ইফি-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী


“সরকারের উদ্দেশ্যই হল ভারতকে বিশ্ব সিনেমার হাব করে তোলা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সিনেমাপ্রেমীদের পছন্দের গন্তব্য করে তোলা” : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর

Posted On: 20 NOV 2021 6:23PM by PIB Kolkata
মুম্বাই, ২০ নভেম্বর, ২০২১
 
এই প্রথমবার একাধিক নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে ৫২তম ভারত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (ইফি)-এর আজ সূচনা হয়েছে। গোয়ার পানাজিতে ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই চলচ্চিত্র উৎসবের সূচনা হয়।
 
চলচ্চিত্রপ্রেমীদের স্বাগত জানিয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, গোয়া তার ৬০তম স্বাধীনতার বার্ষিকী উদযাপন করছে। অন্যদিকে, সারা দেশ স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন করছে। তিনি বলেন, ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর এই সময় সেই সুযোগ এনে দিয়েছে, আমরা যখন স্বাধীনতার শতবার্ষিকী উদযাপন করব তখন যেন দেশকে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে আমরা যাতে সমবেতভাবে দৃঢ় সঙ্কল্প গ্রহণ করতে পারি। অমৃতকালের এই সময় ভারতীয় চলচ্চিত্রেও এক অভিনব সুযোগ তৈরি করছে। সেইসঙ্গে, সমস্ত আঞ্চলিক ভাষায়, সমস্ত প্ল্যাটফর্মে তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।
 
মন্ত্রী আরও বলেন, এই বিষয়গুলিকে বিবেচনায় রেখে এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে সারা বিশ্বের চলচ্চিত্র নির্মাতা ও বিভিন্ন ভাবধারার ছবি প্রদর্শিত হবে। এবারের উৎসবে এমন অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এই প্রথম। ইফি-তে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলিকে সামিল করা হয়েছে যাতে তারাও নিজেদের শিল্পনৈপূণ্য তুলে ধরতে পারে।
 
এবারের ইফি-তে নতুন প্রযুক্তির পাশাপাশি কলাকুশলী ও শিল্প সংস্থাগুলিকেও একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের এক মঞ্চ প্রদান করা হচ্ছে।
 
এবারেই প্রথম ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত পাঁচটি দেশের সিনেমা উৎসবে দেখানো হবে। এজন্য ব্রিকস চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। মন্ত্রী আরও বলেন, ৫২তম ইফি-তে দেশ-বিদেশের ৩০০টিরও বেশি সিনেমা দেখানো হবে। এর মধ্যে প্রায় ৭৫টি দেশের ১৪৮টি সিনেমা রয়েছে।
 
দেশ যখন ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এর সঙ্গে ৭৫তম স্বাধীনতার বার্ষিকী উদযাপন করছে, তখন ৭৫ জন তরুণ প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতাকেও ইফি-র বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তরুণ এই প্রতিভাবানদের নাম আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঘোষণা করা হয়েছে। বিশেষ এই উদ্যোগ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, এই প্রথম আমরা স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে ৭৫ জন তরুণ প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতাকে স্বীকৃতি জানাচ্ছি এবং তাঁদের উদ্বুদ্ধ করছি। বিচারকমণ্ডলী প্রতিভাবান এই ৭৫ জন তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাকে তাঁদের মেধা ও পারদর্শীতার নিরিখে মনোনয়ন করেছেন।
 
শ্রী ঠাকুর আরও জানান, তরুণ প্রতিভাবান এই ৭৫ জন চলচ্চিত্র নির্মাতার মধ্যে একজন এমন রয়েছেন যাঁর বয়স কেবল ১৬। এঁরা সকলেই দেশের ছোট ছোট শহর ও গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন।
 
ইফি সম্পর্কে সরকারের বিভিন্ন প্রগতিশীল ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, এই চলচ্চিত্র উৎসবকে কেবল একটি অনুষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রাখার কোনও পরিকল্পনা নেই, বরং স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপনের সময় ইফি-র ভূমিকা কি হবে তা নির্ধারণ করাই এখন সরকারের লক্ষ্য।
 
ভারতকে প্রযোজনা-পরবর্তী বিষয়বস্তু প্রণয়নের ক্ষেত্রে মহাশক্তিধর দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্যই হল, চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভারতকে এক অন্যতম গন্তব্যে পরিণত করা এবং আঞ্চলিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলির প্রসার ঘটানো। এই কাজে আমরা আমাদের দক্ষ যুব সম্প্রদায়ের মেধাকে সদ্ব্যবহারের চেষ্টা করছি। আমাদের লক্ষ্যই হল, ভারতকে বিশ্ব সিনেমার হাব করে তোলা, যা চলচ্চিত্র ও উৎসবের এক অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠবে।
 
মন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের বিভিন্ন কাহিনী বিশ্ব দরবারে তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সিনেমা জগতকে আকৃষ্ট করতে পারে। তিনি চলচ্চিত্র শিল্পক্ষেত্রে বিরাট কর্মসংস্থানের সুযোগের কথাও উল্লেখ করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা যখন চলচ্চিত্রের বিষয়বস্তু প্রণয়নে ডিজিটাল যুগে অগ্রসর হচ্ছি তখন এটা ভুললে চলবে না যে চলচ্চিত্র অনুরাগীদের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও এই ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের বড় সুযোগ রয়েছে। দেশে যোগাযোগ, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের এক অনন্য সংমিশ্রণ ‘সিনেমাটিক ইকো-সিস্টেম’ বা সিনেমার অনুকূল গন্তব্য হিসেবে ভারতকে বিশ্ব আঙ্গিনায় তুলে ধরেছে। আজ ভারতীয়রা ভারতের কাহিনী লিখছেন ও নির্ধারণ করছেন।
 
সিনেমাপ্রেমীদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, দেশ-বিদেশের সমস্ত চলচ্চিত্র নির্মাতারা বিশ্বের বৃহত্তম এই গণতন্ত্রে যে সহযোগিতামূলক বৈচিত্র্য রয়েছে তার অঙ্গ হয়ে উঠতে পারেন। মন্ত্রী সহযোগিতামূলক এই বৈচিত্র্যকে ‘সিনেমাটিক ক্যালাইডোস্কোপ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, আমাদের লক্ষ্যই হল চলতি দশক ও তার পরেও ভারতকে সিনেমার অন্যতম গন্তব্যে পরিণত করা, যেখানে ১০০ কোটির বেশি ভারতবাসীর প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা সমানভাবে প্রতিফলিত হবে।
 
সত্যজিৎ রায় লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার জয়ী হলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতা মার্টিন স্করসি এবং হাঙ্গেরির চলচ্চিত্র নির্মাতা ইস্তেভান জাবোকে শ্রী ঠাকুর অভিনন্দন জানান। ২০২১-এর ভারতীয় চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব পুরস্কার জয়ী ‘ড্রিম গার্ল’ হেমা মালিনীকে শ্রী ঠাকুর অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, কয়েক দশক ধরে হেমা মালিনী তাঁর শিল্পকর্ম দিয়ে চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মন জয় করেছেন। বিশিষ্ট গীতিকার এবং সিবিএফসি-র চেয়ারপার্সন শ্রী প্রসূন যোশীকে এবারের চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব পুরস্কারে সম্মানিত হওয়ার জন্য মন্ত্রী অভিনন্দন জানান।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভাগীয় প্রতিমন্ত্রী ডঃ এল মুরুগন বলেন, আমাদের চলচ্চিত্রের কলাকুশলীরা প্রবাদপ্রতীম হিরোদের জীবন্ত করে তুলেছেন এবং আমাদের সংস্কৃতির মূল্যবোধগুলিকে শ্বাশত রেখেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সুদক্ষ নেতৃত্বে সরকারের উদ্দেশ্যই হল চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারতকে আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে গড়ে তোলা। এই লক্ষ্যে আমরা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সহায়তায় বিশেষ সহায়তা কার্যালয় শুরু করছি।
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রকের সচিব শ্রী অপূর্ব চন্দ্র বলেন, ইফি দেশের বৃহত্তম ও সেরা চলচ্চিত্র উৎসব। গত পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সমৃদ্ধ এই পরম্পরা অটুট রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ইফি ভারত ও বিশ্ব সিনেমার সেরা ছবিগুলি প্রদর্শনের এক অনন্য মঞ্চ। তিনি আরও জানান, কোভিড-১৯ মহামারী সত্ত্বেও এবারের চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য ৯৬টি দেশ থেকে ৬২৪টি সিনেমা পাওয়া গিয়েছে। ভারতীয় প্যানোরামা বিভাগে ১৮টি আঞ্চলিক ভাষায় এবার ৪৪টি সিনেমা দেখানো হবে। এর মধ্যে ডিমাসা ভাষায় তৈরি হওয়া একটি সিনেমাও রয়েছে। এবারের উৎসবে ১২টি ছবির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার, সাতটি ছবির ইন্টারন্যাশনাল প্রিমিয়ার এবং ৬৪টি ছবির ন্যাশনাল প্রিমিয়ার হবে। এথেকেই ইফি-র ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব প্রতিফলিত হয়। কোভিড-১৯-এর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমরা এবারের চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছি বলে শ্রী চন্দ্র জানান। মন্ত্রকের সচিব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিরাট সংখ্যায় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের একত্রিত হওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে বলেন, দেশ ছয় মাসের মধ্যে প্রায় ১১৬ কোটি কোভিড-১৯ টিকার ডোজ দিয়ে এক অনন্য মাইলফলক অর্জন করেছে।
 
 
CG/BD/DM/


(Release ID: 1773608) Visitor Counter : 232