নির্বাচনকমিশন

পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে তৃতীয় দফার এবং কেরালা, তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে শান্তিপূর্ণভাবে বিধানসভা নির্বাচন শেষ হয়েছে

Posted On: 06 APR 2021 6:54PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ৬ এপ্রিল, ২০২১

 

কেরালা, পুদুচেরি, তামিলনাড়ু রাজ্যে এবং আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় দফায় মোট ৪৭৫টি বিধানসভা আসনে ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৫৩৮টি বুথে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটারদের সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলার কথা বিবেচনা করে বুথের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। 

এদিন পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় দফায় ৩১টি এবং আসামে তৃতীয় দফায় ৪০টি বিধানসভা আসনে ভোট নেওয়া হয়। কেরালায় ১৪০, তামিলনাড়ুতে ২৩৪ এবং পুদুচেরিতে ৩০টি আসনে ভোট নেওয়া হয় এদিন। তৃতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গে মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ১০,৮৭১টি। পশ্চিমবঙ্গে এই দফায় মোট ভোটদাতার সংখ্যা ৭৮ লক্ষ ৫২ হাজার ৪২৫। রাজ্যে তৃতীয় দফার ভোটে সাধারণ পর্যবেক্ষক ছিলেন ২২ জন। পুলিশ পর্যবেক্ষক ৭ এবং হিসেব পর্যবেক্ষক ৯ জন ছিলেন। বিকেল ৫টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ৭৭.৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। অন্যদিকে, কেরালায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৬৯.৯৫ শতাংশ, তামিলনাড়ুতে ৬৪.৯২ শতাংশ, পুদুচেরিতে ৭৭.৯০ শতাংশ এবং আসামে ৭৮.৯৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। 

অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহজ ভাবে নির্বাচন সুনিশ্চিত করার জন্য দেশের নির্বাচন কমিশন বিশেষভাবে সক্ষম, প্রবীণ নাগরিক, যাঁদের বয়স ৮০ বছরের বেশি, কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি এবং প্রয়োজনীয় চাকরিতে নিযুক্ত রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করেছে। ভোটারদের সুবিধার্থে যথোপোযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর জন্য পর্যবেক্ষকরা তৃণমূল স্তরে পর্যবেক্ষণ চালিয়েছেন। তৃতীয় দফায় পশ্চিমবঙ্গে ৬৪,০৮৩ জন বিশেষভাবে সক্ষম ভোটদাতা ছিলেন। এই দফায় রাজ্যে ৮০ বছরের বেশি বয়সী ভোটদাতার সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২৬ হাজার ১৭৭ জন। 

সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে রাজনৈতিক দল/প্রার্থীর এজেন্টদের উপস্থিতিতে সমস্ত ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটগুলি প্রথম স্তরের পরীক্ষা চালানো হয়। এই প্রথম স্তরের পরীক্ষা চলাকালীন ইভিএম এবং ভিভিপ্যাটগুলিতে মকপোল করা হয়। এই মকপোলের সময় প্রার্থীর এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন। নিয়ম অনুযায়ী মকপোলের সময় প্রতিটি ইভিএম-এ অন্ততপক্ষে ৫০টি করে ভোট দেওয়া হয়। মকপোলের শেষে ইভিএম-এর ফলাফাল ভিভিপ্যাটের স্লিপের সঙ্গে মিলেছে কিনা তা পোলিং এজেন্টদের দেখানো হয়। 

নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ভোটকেন্দ্রগুলিতে নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে উত্তেজনাপ্রবণ বুথ সহ ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সরাসরি পর্যবেক্ষণ এবং ওয়েবকাস্টিং-এর ব্যবস্থা করা হয়। নির্বাচন কমিশন, মুখ্যনির্বাচনী আধিকারিক, উপ-নির্বাচনী আধিকারিক, পর্যবেক্ষকরা সরাসরি এই ওয়েবকাস্টিং দেখেন এবং ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির ওপর নজরদারি চালান। 

কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) কর্মী সহ পুলিশ আধিকারিকরা আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যার কারণে প্রিসাইডিং আধিকারিকের প্রয়োজন না হলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। কমিশনের সুনির্দিষ্ট নির্দেশ অনুযায়ী ভোটগ্রহণের সময়ের ৪৮ ঘন্টা আগে এবং পরে যে বিধানসভা আসনে ভোট হচ্ছে, সেই কেন্দ্রে বহিরাগতদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। এই নির্দেশিকা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। 

৬ এপ্রিল পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলা ৫টি রাজ্যে ৯৪৭.৯৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে নগদ অর্থ, মদ, মাদকদ্রব্য ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির বিভিন্ন স্থানে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের মোট ১৯টি এয়ার ইন্টেলিজেন্স ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। ৬ এপ্রিল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে নগদ ৪০.২৭ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। 

নির্বাচনের সময় আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় দ্রুত অভিযোগ জানানোর জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশন একটি নাগরিক কেন্দ্রিক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন - সি ভিজিল অ্যাপ নিয়ে এসেছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যথার্থ স্থানের বিবরণ দিয়ে অভিযোগ জানানো যাবে। ক্ষেত্রিয় পর্যায়ে তথ্য যাচাইয়ের ১০০ মিনিটের মধ্যে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে। এপর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ১৪৬টি আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ জমা পড়েছে সি ভিজিল অ্যাপের মাধ্যমে। এরমধ্যে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬৪৭টি মামলার নিষ্পত্তি করা হয়েছে। 

৫টি রাজ্যের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পানীয় জল, শৌচালয়, আলোর ব্যবস্থার মত ন্যূনতম সুবিধা রাখা হয়েছে। এমনকি বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের জন্য হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়াও প্রবীণ নাগরিক ও বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছোনোর জন্য পরিবহণের বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কোভিড-১৯ সুরক্ষাবিধি অনুসরণ করা হয়েছে। ভোটার ও নির্বাচন আধিকারিকদের সুরক্ষার জন্য ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে থার্মাল স্ক্যানিং, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ফেস মাস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কঠোরভাবে কোভিড-১৯ বিধি মেনে চলা হয়েছে। 

নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্পন্ন করতে একটি বিস্তৃত সুরক্ষা পরিকল্পনা করেছে। শান্তিপূর্ণ, ভয়-ভীতি মুক্ত ও নিরাপদ পরিবেশে ভোট দানের জন্য স্থানীয় পুলিশবাহিনীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীকেও মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটারদের বিশেষত সমাজে দুর্বল শ্রেণীর লোকেদের মনে আশ্বাস যোগাতে বিভিন্ন স্থানে রুটমার্চও চলেছে। 

ভারতে নির্বাচন কমিশন আজ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নির্ভিক অংশগ্রহণের জন্য সকল ভোটারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। বিশেষকরে বিশেষভাবে সক্ষম, প্রবীণ নাগরিকদের এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালনে নিযুক্ত কর্মী, নিরাপত্তাকর্মী, পর্যবেক্ষক, বিশেষ পর্যবেক্ষক এবং এই মহামারী পরিস্থিতে নিরাপদে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য গণমাধ্যম সহ সকল পক্ষের সক্রিয় সহযোগিতা এবং গঠনমূলক অংশিদারিত্বের আহ্বান জানানো হয়েছে। 

নির্বাচন সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য কমিশনের ওয়েবসাইট eci.gov.in এবং ট্যুইটার হ্যান্ডেল @SpokespersonECI&@ECISVEEP দেখার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। 

 

CG/SS/AS/



(Release ID: 1710100) Visitor Counter : 181