প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

দ্বিতীয় ‘খেলো ইন্ডিয়া’ জাতীয় শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Posted On: 26 FEB 2021 1:45PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

নমস্কার!

 

গুলমার্গের এই সুন্দর উপত্যকায় এখন যতই শীতল হাওয়া বয়ে যাক, আপনাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা, আপনাদের প্রাণশক্তির উষ্ণতা প্রত্যেক ভারতবাসী অনুভব করতে পারেন, আর এখন তাঁরা তা দেখছেন। আজ থেকে ‘খেলো ইন্ডিয়া’ শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে। এটা আন্তর্জাতিক শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ভারতের প্রভাবশালী উপস্থিতির পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরকে এই ক্রীড়ার একটি প্রধান হাব করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটা অত্যন্ত বড় পদক্ষেপ।  আমি জম্মু-কাশ্মীর তথা সারা দেশ থেকে আসা সমস্ত খেলোয়াড়দের অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।

 

দেশের ভিন্ন ভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাগত সমস্ত খেলোয়াড়গণ, ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ভাবনাকে আপনারা  সর্বদাই শক্তিশালী করছেন। আমাকে বলা হয়েছে , এবার এই শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধি শীতকালীন ক্রীড়ার প্রতি সারা দেশে ক্রমবর্ধমান ঝোঁক, ক্রমবর্ধমান উৎসাহকে তুলে ধরছে। গতবার জম্মু-কাশ্মীরের টিম এই প্রতিযোগিতায় অসাধারণ প্রদর্শন করেছিল। আমার ধারণা,  এবারও বাকি টিমগুলি জম্মু-কাশ্মীরের প্রতিভাবান টিমের পক্ষ থেকে আরও বেশি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে আর সারা দেশ থেকে আসা শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়রা জম্মু-কাশ্মীরের খেলোয়াড়দের দক্ষতা এবং সামর্থ্যকে দেখবেন এবং তাঁদের থেকে শিখবেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, খেলো ইন্ডিয়ার শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার এই অভিজ্ঞতা উইন্টার অলিম্পিক্সের পোডিয়ামে ভারতের গৌরব বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক সুফলদায়ক হবে।

 

বন্ধুগণ,

 

গুলমার্গে শুরু হতে চলা এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে প্রমাণ হয় যে জম্মু-কাশ্মীর শান্তি ও উন্নয়নের নতুন উচ্চতাগুলি স্পর্শ করার জন্য কতটা তৎপর। এই জাতীয় পর্যায়ের শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা জম্মু-কাশ্মীরে একটি নতুন ক্রীড়া ব্যবস্থা বিকশিত করার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে। জম্মু ও শ্রীনগরে দুটি খেলো ইন্ডিয়া ‘সেন্টার অফ এক্সেলেন্স’ আর ২০টি জেলায় খেলো ইন্ডিয়া সেন্টার যুব খেলোয়াড়দের অনেক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। এই ধরনের কেন্দ্র এখন সারা দেশের প্রত্যেক জেলায় খোলা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই আয়োজনের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের পর্যটনও নতুন প্রাণশক্তি, নতুন উৎসাহ পাবে। আর আমরা এটাও দেখছি যে করোনার ফলে যত সমস্যা এসেছিল সেগুলিও ধীরে ধীরে ফিকে হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

খেলাধূলা নিছকই একটি হবি কিংবা টাইম পাস নয়। খেলাধূলা থেকে আমরা টিম স্পিরিট শিখি। হেরে গেলে নতুন পথ খুঁজি। জিতলে সেই জয়ের পুনরাবৃত্তি করতে শিখি, সঙ্কল্প গ্রহণ করি। খেলাধূলা প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনকে গড়ে তোলে, তাঁর জীবনশৈলীকে সুচারুভাবে গড়ে তোলে। খেলাধূলা আত্মবিশ্বাস বাড়ায় যা আত্মনির্ভরতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

 

বন্ধুগণ,

 

বিশ্বের কোনও দেশ যে শুধুই অর্থনৈতিক এবং সামরিক শক্তি দিয়ে বড় হয়ে ওঠে তা নয়, এর আরও বেশ কিছু দিক আছে। একজন বৈজ্ঞানিক তাঁর ছোট্ট একটি উদ্ভাবনের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে তাঁর দেশের নাম উজ্জ্বল করে তোলে। এরকম আরও অনেক ক্ষেত্র রয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত সুচারুভাবে, সঙ্ঘবদ্ধভাবে আজ খেলাধূলা এমন একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে যা আজকের বিশ্বে দেশের ছবি বদলে দেয়, দেশের শক্তির সঙ্গে বিশ্ববাসীকে পরিচয় করায়। বিশ্বের অনেক ছোট ছোট দেশ শুধু খেলার জন্য বিশ্বে তাদের পরিচয় গড়ে তুলেছে। সেই খেলায় তাদের বিজয়ের মাধ্যমে গোটা দেশকে প্রেরণা এবং প্রাণশক্তিতে ভরপুর করে তোলে। আর সেজন্য খেলাধূলাকে শুধুই হার-জিতের প্রতিযোগিতা বলা যায় না। খেলাধূলা শুধুই পদক এবং ক্রীড়ানৈপুণ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর একটা আন্তর্জাতিক রূপও রয়েছে। ক্রিকেটের ক্ষেত্রে তো ভারত একথা প্রায়ই অনুভব করে, কিন্তু এটা সমস্ত আন্তর্জাতিক খেলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এই দূরদৃষ্টি নিয়েই বিগত বছরগুলিতে দেশের ক্রীড়া ব্যবস্থায় ব্যাপক সংস্কারসাধন এবং আধুনিকীকরণ হচ্ছে।

 

‘খেলো ইন্ডিয়া’ অভিযান থেকে শুরু করে অলিম্পিক পোডিয়াম প্রকল্প পর্যন্ত একটি সংহত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। তৃণমূল স্তর থেকে প্রতিভাগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের সবচাইতে বড় মঞ্চে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকার ক্রীড়া পেশাদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। প্রতিভা চিহ্নিতকরণ থেকে শুরু করে দল নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতাই সরকারের অগ্রাধিকার। যে খেলোয়াড়রা সারা জীবন ধরে দেশের মান-সম্মান বৃদ্ধি করেছেন, তাঁদেরকে আমরা আগের থেকে অনেক বেশি করে সম্মানিত করছি, আর তাঁদের অভিজ্ঞতা দিয়ে যাতে নতুন নতুন খেলোয়াড়রা ঋদ্ধ হয়, উপকৃত হয় - এটাও সুনিশ্চিত করা হচ্ছে।

 

বন্ধুগণ,

 

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতেও ক্রীড়াকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আগে ক্রীড়াকে শুধুই এক্সট্রা কিউরিকুলার অ্যাক্টিভিটি মনে করা হত। এখন খেলাধূলাকে পাঠক্রমের অঙ্গ করে তোলা হয়েছে। খেলাধূলার ক্ষেত্রে গ্রেডিংও ছেলেমেয়েদের মার্কশিটে যুক্ত হচ্ছে। এটা খেলাধূলার জন্য এবং আমাদের ছাত্রছাত্রীদের জন্য অনেক বড় সংস্কার। বন্ধুগণ, দেশে আজ ক্রীড়াক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা সংস্থান এবং ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে। অর্থাৎ, এখন এই দেশে ভাবার সময় এসেছে ক্রীড়া-বিজ্ঞান এবং ক্রীড়া ব্যবস্থাপনাকে আমরা স্কুলস্তরে কিভাবে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। এটা আমাদের যুব সম্প্রদায়ের জন্য উন্নত কেরিয়ারের সুযোগ গড়ে  তুল তো সাহায্য ধরবেই, পাশাপাশি বিশ্ব ক্রীড়া অর্থনীতিতে ভারতের অংশীদারিত্বও বাড়াবে।

 

আমার প্রিয় নবীন বন্ধুগণ,

 

যখন আপনারা ‘খেলো ইন্ডিয়া’ শীতকালীন জাতীয় প্রতিযোগীতায় নিজেদের প্রতিভা দেখাবেন, তখন এটাও মনে রাখবেন যে আপনারা নিছকই একটি খেলার অংশ নন, আপনারা সকলে আত্মনির্ভর ভারতের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। আপনারা মাঠে যে দক্ষতা দেখান তা বিশ্বে ভারতের সম্মান বৃদ্ধি করে। সেজন্য যখনই আপনারা মাঠে নামবেন, তখন ভারতভূমিকে নিজেদের মনে আর আত্মাকে সামনে রাখবেন। এর ফলে আপনাদের খেলাই নয়, আপনাদের নিজস্ব ব্যক্তিত্বও অনেক বেশি উন্নত হবে। যখনই আপনারা খেলার মাঠে নামেন, তখন বিশ্বাস করুন, আপনারা একা থাকেন না। ১৩০ কোটি দেশবাসী আপনাদের সঙ্গে থাকে।

 

আরেকবার আপনারা এই অসাধারণ পরিবেশে এই খেল মহোৎসবকে প্রাণভরে উপভোগ করুন আর দক্ষতাও দেখান। আমি আপনাদের প্রতি আরও অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমি মাননীয় মনোজ সিনহাজি, মাননীয় কিরেন রিজিজুজি, অন্যান্য সমস্ত অভ্যাগত, আয়োজকবৃন্দ এবং জম্মু-কাশ্মীরের জনগণকে এই সুন্দর আয়োজনের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

 

ধন্যবাদ!!

 ***

 

 

 

CG/SB/DM



(Release ID: 1701125) Visitor Counter : 116