প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ যথোচিতভাবে ব্যবহারের জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিতে সরকার চারটি দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে : প্রধানমন্ত্রী
ভারতের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের ক্ষমতা ও প্রাণবন্ত চরিত্রের প্রশংসা করছে সারা বিশ্ব : প্রধানমন্ত্রী
ভারত ওষুধ ও চিকিৎসার সরঞ্জাম তৈরির কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানোর ওপর কাজ করবে : প্রধানমন্ত্রী
Posted On:
23 FEB 2021 12:29PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাজেটের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহারের ওপর আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তব্য রেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ বছরের বাজেটে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ অভূতপূর্ব। আর এর থেকে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকার প্রতিফলিত।
শ্রী মোদী এই প্রসঙ্গে গত বছর মহামারীর কারণে যে সঙ্কট দেখা দিয়েছিল সেটি উল্লেখ করেছেন। এই সঙ্কট কাটিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচানোয় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এর জন্য কৃতিত্ব যৌথভাবে সরকারি এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের বলে তিনি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কয়েক মাসের মধ্যে দেশে ২ হাজার ৫০০টি পরীক্ষাগার গড়ে তোলা হয়েছে। আর এভাবেই দৈনিক ১২টি নমুনা পরীক্ষা থেকে ২১ কোটি নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মহামারীর বিরুদ্ধে কিভাবে লড়াই করতে হয় সেই শিক্ষা করোনা দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা মোকাবিলা করার জন্য দেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে। আর তাই স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে।
তিনি বলেছেন, চিকিৎসা সরঞ্জাম থেকে ওষুধপত্র, ভেন্টিলেটর থেকে টিকা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে নজরদারি চালানোর পরিকাঠামো, চিকিৎসক থেকে মহামারী রোগ বিশেষজ্ঞ সব ক্ষেত্রের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে দেশ যেকোন স্বাস্থ্য সংকটে ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারে।
আত্মনির্ভর সুস্থ ভারত প্রকল্পের এটিই আসল অনুপ্রেরণা। এই প্রকল্পে একটি আধুনিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে যেখানে গবেষণা থেকে নমুনা পরীক্ষা ౼ সবকিছুরই ব্যবস্থা থাকবে। এর ফলে দেশের সব ক্ষেত্রে ক্ষমতা বাড়বে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়টি বিবেচনা করে স্থানীয় প্রশাসনগুলি মোট ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি পাবে। অর্থাৎ সরকার শুধুমাত্র রোগ চিকিৎসার জন্যই বিনিয়োগ করছে না, ভারতে স্বাস্থ্য পরিচর্চার সুবিধা যাতে দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ নিতে পারেন সেটি নিশ্চিতও করা হচ্ছে। সরকার তাই স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে। একই সঙ্গে এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগও গড়ে উঠবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনা মহামারীর সময়ে ভারতের স্বাস্থ্য ক্ষেত্র তার অভিজ্ঞতা এবং মেধার ক্ষমতা দেখিয়েছে, তার ফলে সারা বিশ্ব ভারতের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ক্ষমতা ও প্রাণবন্ত চরিত্র উপলব্ধি করেছে। যে সম্মান এবং আস্থা দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্র সারা বিশ্বের কাছ থেকে অর্জন করেছে তা যাতে ভবিষ্যতেও বজায় থাকে আমাদের সেই দিকটি মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেছেন বিশ্বজুড়ে ভারতীয় চিকিৎসক, নার্স, প্যারা-মেডিকেল কর্মী, ওষুধ ও টিকার চাহিদা বহুগুণ বাড়বে। ভারতীয় চিকিৎসা শিক্ষার ব্যবস্থার দিকে সারা বিশ্ব নজর রাখবে এবং এদেশে ডাক্তারি পড়ার জন্য বিদেশী ছাত্রছাত্রীরা প্রচুর পরিমাণে আসবেন।
শ্রী মোদী বলেছেন, ভেন্টিলেটর এবং মহামারীর সময়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যাতে দেশে তৈরি করা যায়, আমরা সেই লক্ষ্যপূরণ করেছি। এই সামগ্রীগুলির আন্তর্জাতিক চাহিদা বেড়েছে।
তিনি অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বে স্বল্পমূল্যে কিভাবে চিকিসা সরঞ্জাম তৈরি করা যায় সেটি নিয়ে তাঁরা যাতে চিন্তাভাবনা করেন। পূর্বতন সরকার উদ্যোগ না নিলেও বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রকে পৃথক পৃথকভাবে বিবেচনা না করে একটি সর্বাঙ্গীন উদ্যোগ নিয়েছে আর তাই শুধু চিকিৎসার করার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সকলের সুস্বাস্থ্যের দিকটি বিবেচনা করা হচ্ছে। এ কারণে, খালি চিকিৎসা নয় সুস্থতার দিকটিকেও বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, রোগ প্রতিরোধ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা পর্যন্ত একটি সর্বাঙ্গীন ও সুসংহত প্রয়াস নেওয়া হয়েছে।
সরকার ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির জন্য চারটি দীর্ঘমেয়াদী কৌশল গ্রহণ করেছে।
প্রথমটি হল রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থ থাকার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তোলা। স্বচ্ছ ভারত অভিযান, যোগ, সঠিক সময় চিকিৎসা এবং গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের যত্ন করা এর অঙ্গ।
দ্বিতীয়টি হল দরিদ্রতম মানুষদের জন্য সস্তায় যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এরজন্য আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী জন ঔষধী কেন্দ্রের মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় বিষয়টি হল স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যুক্ত ব্যক্তিদের মানোন্নয়ন ও বিস্তার ঘটানো। গত ৬ বছর ধরে এইমস-এর মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দেশজুড়ে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ গড়ে তোলা হচ্ছে।
চতুর্থ বিষয়টি হল, বিভিন্ন বাধা দূর করার জন্য সক্রিয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া। দেশের আদিবাসী অধ্যুষিত এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে মিশন ইন্দ্রধনুষ চালু করা হয়েছে। দেশ থেকে যক্ষ্মা নির্মূল করার জন্য ভারত ২০২৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে। সারা বিশ্বে এর সময়কাল নির্ধারিত হয়েছে ২০৩০ সাল। অর্থাৎ ভারতে ৫ বছর আগেই যক্ষ্মা নির্মূল করা হবে। যক্ষ্মা এবং অন্যান্য সংক্রমিত ব্যাধির মতোই করোনা ভাইরাসকে প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। যক্ষ্মা প্রতিরোধেও মাস্ক পড়া এবং দ্রুত সংক্রমণ চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
করোনা মহামারীর সময় আয়ুষ ক্ষেত্রের উদ্যোগেরও প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞানসম্মত গবেষণার জন্য আমাদের আয়ুষ পরিকাঠামো দেশকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। চিরাচরিত ওষুধ ও মশলাপাতির প্রভাব সারা বিশ্ব উপলব্ধি করেছে। কোভিড-১৯এর মোকাবিলায় টিকার সঙ্গে এগুলিও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি ঘোষণা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভারতে চিরায়ত ওষুধের ওপর একটি আন্তর্জাতিক কেন্দ্র গড়ে তুলবে।
স্বাস্থ্য পরিষেবার সুবিধা যাতে সকলে পেতে পারেন এবং কম খরচে চিকিৎসার বিষয়টির ওপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। এই লক্ষ্যপূরণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আরও বেশি করে ব্যবহার করতে হবে। ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এর ফলে সাধারণ মানুষ তাদের সুবিধা অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা পাবেন। আত্মনির্ভর ভারতের জন্য এই পরিবর্তনগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রী মোদী বলেছেন, যদিও ভারত এখন বিশ্বের ওষুধের ভান্ডার হয়ে উঠেছে কিন্তু কাঁচামালের জন্য এখনও বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হয় যা আমাদের শিল্পের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক নয়। এর ফলে দরিদ্র মানুষদের সস্তায় ওষুধ ও স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে প্রচুর সমস্যা হয়।
এবারের বাজেটে আত্মনির্ভরতার জন্য ৪টি প্রকল্পের কথা ঘোষণা হয়েছে।
উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহ প্রকল্পকে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য বড় বড় পার্ক তৈরি করা হচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জেলা হাসপাতাল, জটিল অসুখের চিকিৎসা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নজরদারির জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার ও টেলি-মেডিসিনের প্রয়োজন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি স্তরে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দরিদ্রতম ব্যক্তি বা যাঁরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করেন তাঁরা সকলে যেন যথাযথ চিকিৎসা পান সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আর এ কারণে কেন্দ্র, রাজ্য সরকারগুলি ও স্থানীয় প্রশাসনকে একযোগে কাজ করতে হবে।
পিএমজেএওয়াই এবং সরকারি পরিক্ষাগারগুলিতে সরকারি, বেসরকারী অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বেসরকারী ক্ষেত্রগুলি সাহায্য করতে পারে। জাতীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশন, ডিজিটাল স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যাদি ব্যবস্থাপনা সহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এই অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা সম্ভব।
***
CG/CB/NS
(Release ID: 1700204)
Visitor Counter : 317
Read this release in:
English
,
Urdu
,
Marathi
,
Hindi
,
Assamese
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Kannada
,
Malayalam