অর্থমন্ত্রক
জিএসটি কর ব্যবস্থাকে আরও সরল করে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন
Posted On:
01 FEB 2021 1:36PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
কাস্টম ডিউটি কাঠামোর সরলীকরণ এবং দেশে উৎপাদিত সামগ্রীর জন্য আরও সুযোগ এনে দিতে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেটে অপ্রত্যক্ষ কর সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন আজ সংসদে বাজেট পেশ করার সময় এই তথ্য জানিয়েছেন।
বাজেটে মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিগত কয়েক মাস ধরে রেকর্ড পরিমাণে জিএসটি রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে। জিএসটি ব্যবস্থা সরলীকরণের জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জিএসটিএন – এর ক্ষমতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। যারা কর ফাঁকি দিচ্ছে এবং ভুয়ো বিল তৈরি করছে, তাদের শনাক্ত করতে বিস্তারিত মূল্যায়ন ও কৃত্রিম মেধার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। এদের শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সংসদকে আশ্বস্ত করে মন্ত্রী জানিয়েছেন, জিএসটি ব্যবস্থার সরলীকরণ এবং কর কাঠামোর বিভিন্ন অসঙ্গতি দূর করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
কাস্টম ডিউটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী জানিয়েছেন, এর মাধ্যমে দুটি বিষয়ের ওপর নজর রাখা হয়েছে। দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহ দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক মূল্য-শৃঙ্খলে ভারতের অংশীদারিত্ব ও রপ্তানি বৃদ্ধির কাজে সাহায্য করা হচ্ছে। এখন কাঁচামালের যোগান আরও সহজ করে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাজেটে এ বছর ৪০০টি কাস্টম ডিউটি ছাড়ের বিষয়ে পুনর্মূল্যায়নের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী পয়লা অক্টোবর থেকে নিবিড় পরামর্শ চালানো হবে। তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, কাস্টম ডিউটি’তে নতুন কোনও ছাড়ের বিষয়টি ৩১শে মার্চ পর্যন্ত বৈধ থাকবে। এরপর, যেদিন থেকে এই নিয়ম চালু হয়েছে, তার পরবর্তী দু’বছর এই নিয়ম মেনে চলার ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রী চার্জার সহ মোবাইল টেলিফোনের কিছু কিছু সরঞ্জামের উপর থেকে ছাড় প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখন থেকে এইসব সামগ্রীর জন্য মাত্র ২.৫ শতাংশ হারে কর নেওয়া হবে। নন্-অ্যালয়, অ্যালয় এবং স্টেনলেস স্টিলের উপর কাস্টম ডিউটি কমানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১শে মার্চ পর্যন্ত স্টিলের স্ক্র্যাপের উপর ডিউটি ছাড়ের প্রস্তাবও বাজেটে রাখা হয়েছে। তামার স্ক্র্যাপের ক্ষেত্রে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২.৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
হস্তচালিত বস্ত্রের ক্ষেত্রে কাঁচামালের উপর শুল্ক সরলীকরণের জন্য মন্ত্রী জানিয়েছেন, নাইলন চেনের জন্য পলিয়েস্টারের মতো একই হারে শুল্ক দিতে হবে। নাইলন চিপ, নাইলনের তন্তু এবং ক্যাপ্রোল্যাপটামের জন্য শুল্কের হার কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে, বস্ত্র শিল্প; অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলি লাভবান হবে। সোনা ও রূপার উপরও কাস্টম ডিউটিতে সরলীকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সৌরশক্তি উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত সেল এবং প্যানেল দেশে উৎপাদনে উৎসাহ দিতে একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। সোলার ইনভার্টারের জন্য ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ এবং সোলার লন্ঠনের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাজেট ভাষণে মন্ত্রী দেশে ভারি শিল্পের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সরঞ্জামের উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেছেন। টানেল বোরিং মেশিনের জন্য এখন আর কোনও ছাড় থাকছে না। এর জন্য কাস্টমস্ ডিউটি ৭.৫ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। এর কোনও যন্ত্রাংশ আনতে হলে তার ওপর ২.৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এছাড়াও, যানবাহনের যন্ত্রাংশের উপর ১৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য হয়েছে।
অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের সুবিধার জন্য বাজেটে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্যের উপর যে ছাড় ছিল, তাতে সরলীকরণ করা হয়েছে। রপ্তানিকারকদের বস্ত্র, চর্ম এবং হস্ত শিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী রপ্তানি করতে বিশেষ উৎসাহ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। একইসঙ্গে, চর্মজাত কিছু সামগ্রীর উপর ছাড় তুলে নেওয়া হয়েছে এবং তৈরি গয়নার পাথরের উপর কাস্টম শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।
কৃষকদের সুবিধার্থে অর্থমন্ত্রী তুলোর উপর ১০ শতাংশ এবং র সিল্ক ও সিল্ক ইয়ার্নের উপর ১৫ শতাংশ কাস্টাম শুল্ক বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে, কৃত্রিম ইথাইল অ্যালকোহলের উপর ছাড়ও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বাজেটে মন্ত্রী কৃষি পরিকাঠামো ও উন্নয়ন সেস কয়েকটি সামগ্রীর উপর বসানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। সোনা, রূপা, অ্যালকোহল, অপরিশোধিত পাম তেল, অপরিশোধিত সোয়াবিন, অপরিশোধিত সূর্যমুখী তেল, আপেল, কয়লা, লীগনাইট, বিশেষ সার, কাবলি ছোলা, ছোলা এবং তুলোর উপর এই সেস বসানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এর ফলে, যাতে গ্রাহকদের উপর অতিরিক্ত বোঝা না চাপে, সেদিকটিও বিবেচনা করা হয়েছে। পেট্রোলের উপর লিটার পিছু ২ টাকা ৫০ পয়সা এবং ডিজেলের উপর লিটার পিছু ৪ টাকা হারে সেস বসানো হবে। এছাড়াও, বেসিক এক্সাইজ ডিউটি এবং বিশেষ অতিরিক্ত এক্সাইজ শুল্ক পেট্রোল ও ডিজেলের উপর থেকে কমানো হচ্ছে, যাতে গ্রাহকদের উপর অতিরিক্ত বোঝা না চাপে। ব্র্যান্ডেড নয়, এ ধরনের পেট্রোল ও ডিজেলের উপর বেসিক এক্সাইজ ডিউটি যথাক্রমে লিটার পিছু ১ টাকা ৪০ পয়সা ও ১ টাকা ৮০ পয়সা ধার্য হবে। এছাড়াও, বিশেষ অতিরিক্ত এক্সাইজ শুল্ক বাবদ পেট্রোল ও ডিজেলের উপর যথাক্রমে লিটার পিছু ১১ টাকা ও ৮ টাকা নেওয়া হবে। মন্ত্রী এফটিএ’র অপব্যবহার বন্ধ করতে ২০২০ সালে টুর্যান্ট কাস্টম ইনিশিয়েটিভ বাতিলের কথা উল্লেখ করেছেন।
***
CG/CB/SB
(Release ID: 1694179)
Visitor Counter : 256