উপ-রাষ্ট্রপতিরসচিবালয়

নতুন শিক্ষানীতির লক্ষ্য ভারতকে এক বিশ্বব্যাপি জ্ঞান শক্তি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা : উপরাষ্ট্রপতি

Posted On: 17 NOV 2020 2:27PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লী, ১৭ নভেম্বর, ২০২০
 
    উপরাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেছেন, নতুন শিক্ষানীতির লক্ষ্য ভারতকে এক বিশ্বব্যাপি জ্ঞান শক্তি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে দেশকে আরও একবার "বিশ্বের গুরু" হিসেবে তুলে ধরা। এই লক্ষ্য পূরণেই নতুন শিক্ষানীতির ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। উপরাষ্ট্রপতি বলেন, নতুন শিক্ষানীতি প্রাচীন ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে অনুপ্রেরণায় তৈরি করা হয়েছে। এরমধ্যে ব্যক্তিত্ব বিকাশের দিকটির ওপর বিশেষ জোর  দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন শিক্ষানীতি ভারতীয় শিক্ষাকে সামগ্রিক, বহুপাক্ষিক এবং ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে চাই। 
 
    আগরতলায় ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি)এর ১৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের ভার্চুয়াল  ভাষণে আজ একথা জানান তিনি। শ্রী নাইডু বলেন, প্রাচীন শিক্ষা ব্যবস্থা সর্বদা আমাদেরকে প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এবং সমস্ত জীবকূলকে সম্মান করতে শিখিয়েছে। তিনি বলেন,  আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল ব্যবহারিক, স্বাস্থ্যকর এবং জীবনের পরিপূরক।
 
    উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে জ্ঞান ও উদ্ভাবনের এক সমৃদ্ধ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শ্রী নাইডু বলেন, ভারতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একাধিক বিষয়ের ওপর গবেষণা করা উচিত। একইসঙ্গে শিল্প এবং অন্যান্য অনুরূপ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় স্থাপন করার প্রয়োজন রয়েছে। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসগুলিকে সৃজনশীলতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা প্রয়োজন বলেও তিনি জানান। 
 
    প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম দেশের যুবদের বড় স্বপ্ন দেখার পরামর্শ দিতেন। সেকথা স্মরণ করে উপরাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা অর্জনের জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। শ্রী নাইডু বলেন, ‘আপনি যদি নির্বাচিত পথ থেকে সরে না গিয়ে নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেন তবে সফল হবেন।’
 
    তিনি শিক্ষার্থীদের বছরের পর বছর ধরে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন। উপরাষ্ট্রপতি বলেন শিক্ষার্থী, গবেষক ও শিক্ষাবিদরা কখনোই থেমে থাকতে পারেন না। তাদের নিয়মিত শিখতে হবে, নিজেদেরকে আপডেট করতে হবে এবং প্রতিদিন নতুন নতুন ভাবনা-চিন্তা নিয়ে আসতে হবে। যে আরও ভালো শিখবে, সেই এই পরিবেশে মানিয়ে নিয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। 
 
    শ্রী নাইডু  আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি, এনআইটি এবং অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির একবিংশ শতাব্দীর প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে তাদের শিক্ষা দানের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার সময় এসেছে। এমনকি শিক্ষকদেরও নতুন শিক্ষাগত দক্ষতা অর্জন করা দরকার। শ্রী নাইডু দারিদ্রের অবসান, কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, দূষণ ও অন্যান্য রোগ প্রতিরোধের মতো সমস্যা মোকাবিলায় আন্তঃশৃঙ্খল পদ্ধতি অবলম্বনের ওপর জোর দেন। উপরাষ্ট্রপতি বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থাকে গবেষণা প্রকল্পগুলি চিন্থিত করে সিএসআর-এর মাধ্যমে আর্থিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। জ্ঞান পরিচালিত সমাজ গঠনের জন্য গবেষণায় সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি অত্যন্ত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি। 
 
    দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ যুব সম্প্রদায়। উপরাষ্ট্রপতি এই যুবশক্তিকে কাজে লাগানো এবং তাদের মধ্যে উদ্যোক্তা বৃদ্ধির জন্য সঠিক ইকো-সিস্টেম গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এইসময় ভোকাল ফর লোকালের বিষয়ে অনুপ্রেরণা জোগাতে যুবদের প্রতিভা ও দক্ষতা বিকাশের বিশেষ সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, যুবদের শুধু চাকরিপ্রার্থী হিসেবে নয়, চাকরিদাতা হিসেবে পরিণত করার ক্ষেত্রে এনআইটি আগরতলার মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে।
 
    উপরাষ্ট্রপতি এক্ষেত্রে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন যে, এনআইটি আগরতলা পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে ‘মডেল ভিলেজ’ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েছে। গ্রামীণ ভারতবর্ষে যেসব সমস্যা রয়েছে তা বোঝার জন্য শিক্ষার্থীদের কিছুটা সময় গ্রামে কাটানোর পরামর্শ দেন তিনি। কৃষিকে দেশের মৌলিক সংস্কৃতি হিসেবে অভিহিত করে তিনি কৃষিকাজকে একটি কার্যকরী লাভজনক বিষয়ে পরিণত করার আহ্বান জানান।
 
    ‘বসু্ধৈব কুটুম্বকম’ এবং ‘ভাগ করে নেওয়া ও যত্নশীল’-এর মতো ভারতের মহান সভ্যতার মূল্যবোধ বিষয়ের কথা শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে শ্রী নাইডু বলেন, 'ভাগ করে নেওয়ার মধ্যে দিয়েই জীবনে আরও বেশি সুখ পাওয়া যায়'। তাই শিক্ষার্থীদের এই মূল্যবোধকে জীবনের অঙ্গ হিসেবে বেছে নেওয়ার আহ্বান জানান। 
 
    উপরাষ্ট্রপতি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভারতের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য সম্পর্কে প্রচার চালিয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান সমৃদ্ধ করতে বলেন। মানুষকে প্রকৃতি-বান্ধব হওয়া প্রয়োজন। এর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আরও ভালো একটি ভবিষ্যতের জন্য প্রকৃতি রক্ষা এবং সংস্কৃতি বিষয়ে প্রচারের প্রয়োজন। তিনি প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। শ্রী নাইডু ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট র‌্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (এনআইআরএফ)-এর অধীনে ১০টি সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এনআইটি আগরতলা স্থান পাওয়ার জন্য উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও ব্যাক্ত করেন।
 
    এদিনের ভার্চুয়াল সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এনআইটি আগরতলা বোর্ড অফ গভর্নরসের চেয়ারম্যান ডঃ সুভাষচন্দ্র সতী, অধিকর্তা অধ্যাপক এইচ কে শর্মা, রেজিস্ট্রার ডঃ গবিন্দ ভার্গভ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ যোগ দেন।
 
***
 
 
CG/SS/NS

(Release ID: 1673447) Visitor Counter : 222