অর্থমন্ত্রক

কোভিড-১৯ এর কারণে উদ্ভুত শ্লথ অবস্থার মোকাবিলায় আর্থিক নীতি

Posted On: 20 SEP 2020 2:06PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

 

 

কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সরকার এই প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য একগুচ্ছ আর্থিক নীতি গ্রহণ করেছে। আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজ ১২ই মে ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১০ শতাংশের সমতুল -২০ লক্ষ কোটি টাকার এই বিশেষ আর্থিক এবং সর্বাঙ্গীন প্যাকেজ ব্যবসা বাণিজ্য এবং বিনিয়োগকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে মেক-ইন-ইন্ডিয়া কর্মসূচীকে রূপায়ণ করাও এর উদ্দেশ্য। রাজ্য সভায় আজ এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে এই তথ্য জানিয়েছেন অর্থ ও কর্পোরেট বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর।

আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজের আওতায় যে সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে :

(১) খাদ্য, রান্নার গ্যাসের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রবীণ নাগরিক, বিধবা, ভিন্নভাবে সক্ষম, মহিলা জনধন অ্যাকাউন্ট হোল্ডার, কৃষকদের অ্যাকাউন্টে নগদ অর্থ পাঠানো; স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য বীমার ব্যবস্থা, এমজিএনআরইজিএ কর্মীদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধি, নির্মাণ কর্মীদের সহায়তা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ঋণ দান, ইপিএফ-এ টাকা জমা দেওয়ার পরিমাণ হ্রাস, প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ রোজগার অভিযানের আওতায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের ব্যবস্থা।

(২) অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ (এমএসএমই)-এর জন্য ঋণ আদায় নিশ্চিত করার উদ্দেশে কোনো জামানত ছাড়াই ঋণদানের ব্যবস্থা, যে সব অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ সংস্থা সঙ্কটের সম্মুখীন তাঁদের জন্য বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির জন্য মূলধনের যোগান দেওয়া – এর সাহায্যে নন ব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গৃহ ঋণ দাতা সংস্থা, অতি ক্ষুদ্র আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য করা,  এমএসএমই-গুলিকে মূলধনের যোগান দেওয়া, কৃষকদের সহজে ঋণ দান, পিএম স্বনিধি প্রকল্পে রাস্তার হকারদের ঋণ ইত্যাদি।

(৩) বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাপনা – কর জমা দেওয়া সহ বিভিন্ন নথি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ পিছিয়ে দেওয়া, জরিমানামূলক সুদের হার কমানো, বকেয়া জিএসটি জমা দেওয়া, সরকারের সংগ্রহ নীতির পরিবর্তন, এমএসএমই-গুলির বকেয়া দ্রুত মেটানো, এমএসএমই-র জন্য ঋণ খেলাপী নিয়ম সহজ করা।

(৪) আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের আওতায় পরিকাঠামোগত বিভিন্ন সংস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রকে বিভিন্ন নিয়মের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করা, এমএসএমই-র সংজ্ঞা পরিবর্তন, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাগুলির নতুন নীতি, কয়লা খনির বাণিজ্যিকীকরণ, প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশ ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি, শিল্পের জন্য জমির ব্যবস্থা/ল্যান্ড ব্যাঙ্ক তৈরি এবং শিল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রদান, সামাজিক পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে তহবিল বাড়ানো, নতুন বিদ্যুৎ রাজস্ব নীতি এবং এই ক্ষেত্রের সংস্কার জন্য রাজ্যগুলিকে উৎসাহদান।    

 

মন্ত্রী জানিয়েছেন, আর্থিক দিক থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রথাগত এবং প্রথা বহির্ভূত বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট বিরূপ পরিস্থিতির মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছে। পলিসি রেট কমানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের পর থেকে অর্থনীতিতে মূলধনের যোগান নিশ্চিত করার জন্য ৯,৫৭,০০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

শ্রী ঠাকুর জানিয়েছেন, আর্থিক বাজারে মূলধনের যোগান দিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক এবং নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবস্থা নিয়েছে। মূলধনের যোগান বৃদ্ধি, ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন বাড়ানো এবং আর্থিক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। পয়লা মে কৃষি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ঋণের জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা ঘোষণা করা হয়েছে। ঋণদাতা সংস্থাগুলিকে পয়লা মার্চ থেকে ৩১শে আগস্ট – এই ৬ মাস মোরাটোরিয়ামের সুবিধে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ঋণদাতা সংস্থাগুলির সুবিধে হয়েছে।

গৃহীত পদক্ষেপগুলি সঠিকভাবে রূপায়িত হচ্ছে কি না সে বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে -

(১) প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ প্যাকেজের আওতায় ৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪২ কোটি দরিদ্র মানুষ ৬৮,৮২০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন।

(২) এমএসএমই সহ বিভিন্ন ব্যবসার ক্ষেত্রে ঋণ আদায় নিশ্চিত করার জন্য জামানত ছাড়াই ৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং নন ব্যাঙ্কিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য আংশিক ঋণ নিশ্চয়তা প্রকল্প ২.০-তে ৪৫,০০০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

(৩) নন ব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গৃহ ঋণ দাতা সংস্থা, অতি ক্ষুদ্র আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য ৩০,০০০ কোটি টাকার বিশেষ মূলধন প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।

(৪) নাবার্ডের মাধ্যমে ৩০,০০০ কোটি টাকার অতিরিক্ত আপৎকালীন কার্যকর মূলধনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থ বর্ষে রাজ্য সরকারগুলি ৩ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ ঋণ নিতে পারবে।

(৫) টিডিএস/টিসিএস –এর হার কমিয়ে ৫০,০০০ কোটি টাকার মূলধনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। লকডাউনের সময়ে সরকারের বিভিন্ন সহায়ক নীতির ফলে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে নানান নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে ৮ কোটি শিল্প সংস্থার উন্নতি নজরে এসেছে। ই-ওয়ে বিল, খরিফ শস্যের বীজ বপণ, বিদ্যুতের ব্যবহার, রেলের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণ, যাত্রী বাহী গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে।    

 

 

CG/CB/SKD


(Release ID: 1657113) Visitor Counter : 263