মানবসম্পদবিকাশমন্ত্রক

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, হ্যাকাথন গ্র্যান্ড ফিনালে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেছেন

Posted On: 01 AUG 2020 8:37PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ২ অগষ্ট, ২০২০

 

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, ২০২০র স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনের চূড়ান্ত পর্ব অর্থাৎ গ্র্যান্ড ফিনালেতে শনিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন।

 

স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনঃ-

 স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনে চূড়ান্ত পর্যায়ে বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, দেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা কাজ করে চলেছে। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার পাশাপাশি, তথ্য, ডিজিটাইজেশন এবং ভবিষ্যতের উন্নত প্রযুক্তির বিষয়ে ভারতের চাহিদাগুলি এর মাধ্যমে পূরণ করা হচ্ছে। একবিংশ শতাব্দীর দ্রুত পরিবর্তনের বিষয়টিকে স্বীকৃতি দিয়ে দেশের কার্যকরী ভূমিকা পালন করার জন্য নিজেকে দ্রুত পরিবর্তন করা অত্যন্ত প্রয়োজন। দেশের জন্য উদ্ভাবন, গবেষণা, পরিকল্পনা, উন্নয়ন এবং শিল্পদ্যোগের প্রয়োজনীয় পরিবেশ গড়ে তোলা দরকার বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো আধুনিক এবং মেধাবীদের জন্য সুযোগ তৈরি করার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

জাতীয় শিক্ষানীতিঃ-  

জাতীয় শিক্ষানীতির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, একবিংশ শতাব্দীর যুব সম্প্রদায়ের ভাবনা, চাহিদা, আশা–আকাঙ্খার বিষয়গুলি বিবেচনা করে এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এটি শুধুমাত্র কোনো নীতির খসড়া নয়, এর মাধ্যমে ১৩০ কোটির বেশি ভারতবাসীর চাহিদা প্রতিফলিত হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। শ্রী মোদী বলেছেন, আজকের দিনেও অনেক শিশু মনে করে যে বিষয়গুলিতে তাদের কোনো উৎসাহ নেই, সেগুলির উপর ভিত্তি করে তাদের মূল্যায়ন করা হয়। বাবা – মা, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের কারণে চাপ তৈরি হওয়ায় শিশুরা অনেক সময় অন্যের বাছাই করা বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করতে বাধ্য হয়। এর ফল এটাই দাঁড়ায় যে, বিপুল সংখ্যক  উচ্চশিক্ষিত মানুষ,  যে বিষয়গুলি নিয়ে পড়াশুনা করেছেন, সেগুলি তাদের কোন কাজে লাগছে না। ’ এই নতুন শিক্ষানীতিতে  ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় নিয়ম মেনে পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । এর ফলে শিক্ষার উদ্দেশ্য এবং বিষয়বস্তু – দুটিরই পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োগমূলক শিক্ষা লাভের উপর গুরুত্ব দেওয়ার জন্য শিক্ষন পদ্ধতি, গবেষণা ও উদ্ভাবনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের নিজস্ব পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে ফলপ্রসূ এবং বিস্তৃত একটি ব্যবস্থাপনার গড়ে তোলা যাবে।     

ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই হ্যাকাথন তোমাদের কাছে প্রথম সমস্যা নয়, যেটা তোমরা সমাধান করবার চেষ্টা করবে একইভাবে এটা তোমাদের জন্য শেষ সমস্যাও নয়। তিনি  চান তরুণ প্রজন্ম, তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিক । এগুলি হল – জানার ইচ্ছে, প্রশ্ন করা এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা। শ্রী মোদী বলেছেন, কেউ যখন কোনো কিছু সম্পর্কে জানতে পারে, তখন তার প্রশ্ন করার ক্ষমতা তৈরি হয়। আর ভারতের নতুন শিক্ষানীতি সেই ভাবনার প্রতিফলনেই তৈরি হয়েছে। শ্রী মোদী বলেছেন, স্কুলব্যাগের বোঝা থেকে নজর সরিয়ে আমাদের এখন স্কুলের বাইরের দিকেও তাকাতে হবে। এর সাহায্যেই জীবনে শিক্ষা লাভের সুবিধে  পাওয়া সম্ভব। নিছক মুখস্থ করার থেকে অভ্যেস থেকে বেড়িয়ে এসে নানা জটিল বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতা তৈরি হবে।    

 

শিক্ষার অধিকারঃ-

বাবা সাহেব আম্বেদকরের বক্তব্য উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সকলের শিক্ষার প্রতি অধিকার থাকতে হবে। নতুন শিক্ষানীতি তাঁর সেই ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তৈরি করা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি, শিক্ষার অধিকারের উপর গুরুত্ব দিয়েছে ౼তাই প্রাথমিক স্তরে শিক্ষালাভের  জন্য জোর দেওয়া হয়েছে। শ্রী মোদী বলেছেন, ২০৩৫ সালের মধ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ যেন ৫০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী পায়, তার জন্য ‘গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও’ বাড়ানো হবে। তিনি আরো বলেছেন, এই শিক্ষানীতিতে চাকুরী প্রার্থীর পরিবর্তে কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী তৈরির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।   

 

আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনায় সংযোগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্বঃ-  

শ্রী মোদী বলেছেন, এই শিক্ষানীতি স্থানীয় বিষয়ের উপর যেমন গুরুত্ব দিচ্ছে, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হচ্ছে। শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভারতে ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ভারতীয় যুব সম্প্রদায় আন্তর্জাতিক মানের বিষয়ে জানার সুযোগ পাবেন, আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিযোগিতা করার ক্ষেত্রে প্রস্তুতি নিতেও তাদের সুবিধে হবে। ভারতকে আন্তর্জাতিক স্তরের শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে দেশে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরিতে এই শিক্ষানীতি সাহায্য করবে।

 

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণটি পড়ার জন্য নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুনঃ-

https://pib.gov.in/PressReleseDetail.aspx?PRID=1642977

 

এর আগে শনিবার সকালে নতুন দিল্লিতে অনলাইনের মাধ্যমে চতুর্থ স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন সফটওয়্যার ২০২০র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক। দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী সঞ্জয় ধোতরে, উচ্চশিক্ষা সচিব শ্রী অমিত খারে, এআইসিটিই-র চেয়ারম্যান অধ্যাপক অনিল সহস্রবুদ্ধে, মুখ্য উদ্ভাবন আধিকারিক ড. অভয় জেরে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক, সর্বভারতীয় কারিগরি শিক্ষা পর্ষদ (এআইসিটিই), পারসিসটেন্ট সিস্টেমস এবং আইফোরসি এই হ্যাকাথনের আয়োজন করেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেছেন, এবছরের প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বে সাড়ে ৪ লক্ষের বেশি ছাত্র-ছাত্রী যোগ দিয়েছিলেন। যা অভূতপূর্ব। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশে নাগরিকদের মধ্যে  ডিজিটাল ব্যবধান দূর করতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্ন দেখেন। দেশে ডিজিটাল সাক্ষরতা বাড়ানোর জন্য একটি গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান কোভিড – ১৯ মহামারীতে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সুফল আমরা সকলেই অনুভব করেছি। মন্ত্রী আরো জানিয়েছেন,  বিশ্বে উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার এটি সবথেকে বড় আয়োজন। সাড়ে ৪ লক্ষের বেশি ছাত্র-ছাত্রী, ২০০০এর বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১০০০এর বেশি পরামর্শদাতা, ১৫০০র বেশি মূল্যায়নকারী ৭০টির বেশি সমস্যার সমাধানে প্রথম পর্বে এই হ্যাকাথনে যোগ দিয়েছিলেন। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক, রাজ্য সরকারের দপ্তর ও বেসরকারী শিল্প   সংস্থাগুলি তাদের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য এই হ্যাকাথনে এসেছে। আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এই হ্যাকাথনের মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভোকাল ফর লোকাল ভাবনাকে বাস্তবায়িত করা হবে। শ্রী পোখরিয়াল জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ৩৭টি দপ্তর, ১৩টি রাজ্য সরকার এবং ২০টি শিল্প সংস্থার মোট ২৪৩টি সমস্যা এখন ১০,০০০ জন অংশগ্রহণকারী দ্বিতীয় পর্বে  সমাধান করবে। ৩ জন করে   প্রথম পুরস্কার বিজেতা ১ লক্ষ টাকা,  দ্বিতীয় পুরস্কার বিজেতা ৭৫,০০০ টাকা এবং  তৃতীয় পুরস্কার বিজেতা ৫০,০০০টাকা পুরস্কার পাবেন। এই নয় জনকে পুরষ্কার দেবার পাশাপাশি  প্রতিটি সমস্যার সমাধানের জন্য ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।

শ্রী ধোতরে জানিয়েছেন, এই হ্যাকাথনের মধ্য দিয়ে উদ্ভাবনের ক্ষমতা গড়ে উঠবে এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের মানসিকতা তৈরি হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয় স্তরে অটল টিংকারিং ল্যাবের সুবিধা পাচ্ছে। ঐসব পরীক্ষাগারে তৈরি হওয়া ধারণাগুলিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে এই হ্যাকাথন  সাহায্য করবে। মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওষুধ তৈরির আরেকটি হ্যাকাথন খুব শীঘ্রই শুরু হবে।  

উচ্চশিক্ষা সচিব শ্রী অমিত খারে জানিয়েছেন, অনলাইনের মাধ্যমে এবারের হ্যাকাথন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থায় বর্তমানে অনলাইনের প্রয়োগ বাড়ানো হয়েছে। স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনের সাফল্যের পর ভারত – পর্তুগাল হ্যাকাথন এবং ভারত – আসিয়ান হ্য়াকাথন শুরু হতে চলেছে। লকডাউনের সময় আমাদের দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা আইডিয়াথন এবং সমাধান প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছিল।

অধ্যাপক সহস্রবুদ্ধে জানিয়েছেন, নতুন শিক্ষানীতির মধ্যদিয়ে সর্বাত্মক গবেষণা ও উদ্ভাবন সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করা হবে। ড. অভয় জেরে এই অনুষ্ঠানে বলেছেন, প্রশাসনিক কাজের সুবিধের জন্য বিভিন্ন ছোট ছোট শহরে এখন হ্যাকাথন আয়োজনের সংস্কৃতি গড়ে উঠছে। এপর্যন্ত অনুষ্ঠিত হ্যাকথনগুলির জন্য ৩৩১টি প্রটোটাইপ তৈরি হয়েছে। ১৯টি স্টার্টআপ সংস্থা কাজ শুরু করেছে, ৭১টি স্টার্টআপ সংস্থা গড়ে ওঠার প্রক্রিয়া চলছে। এই হ্যাকাথনগুলির মাধ্যমে ৩৯টি সমস্যার সমাধান হয়েছে। ৬৪টি সমস্যার সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে। এইভাবে স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন দেশে স্টাটআপ সংস্থা গড়ে তোলা এবং উদ্ভাবনের সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করছে।  

 

 

CG/CB/SFS


(Release ID: 1642989) Visitor Counter : 215