খনিমন্ত্রক

প্রতিযোগিতা, মূলধন, অংশগ্রহণ এবং প্রযুক্তির জন্য কয়লা ও খনি শিল্পকে খুলে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল ভারত : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 18 JUN 2020 5:24PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লী, ১৮ জুন, ২০২০

 

 

            প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৪১টি কয়লা ব্লকের বাণিজ্যিক উত্তোলনের জন্য নিলাম প্রক্রিয়ার সূচনা করেছেন। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের আওতায় কেন্দ্র যে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল, আজকের এই কর্মসূচি তারই অঙ্গ। ফিকির সঙ্গে সহযোগিতায় কয়লা মন্ত্রক এই কয়লা খনিগুলির নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। কয়লা খনিগুলিকে বন্টন করার জন্য দুটি পর্যায়ে বৈদ্যুতিন প্রক্রিয়ায় নিলাম করা হবে।   

 

            প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এই উপলক্ষ্যে বলেন, ভারত কোভিড-১৯ মহামারীর সমস্যাকে অতিক্রম করবে এবং দেশ এই সংকটময় অবস্থাকে সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে রূপান্তরিত করবে। তিনি বলেন, কিভাবে আত্মনির্ভর হওয়া যায় এই সংকট থেকে দেশ সেই শিক্ষালাভই করেছে। আত্মনির্ভর ভারতের অর্থ আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমানো, যারফলে আমদানির জন্য ব্যয় করা বিদেশী মুদ্রার সাশ্রয় সম্ভব হবে। ভারতকে তার দেশের অভ্যন্তরেই সম্পদের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে আমদানির ওপর নির্ভর করতে না হয়। আমরা এখন যা যা আমদানি করি ভারতকে সেইসব পণ্যের সবথেকে বড় রপ্তানীকারক দেশ হয়ে উঠতে হবে।  

 

             প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে সব দিক দিয়ে আত্মনির্ভর করে তুলতে প্রতিটি ক্ষেত্র, প্রতিটি পণ্য ও প্রতিটি পরিষেবাকে নিয়ে সর্বাঙ্গীনভাবে চিন্তাভাবনা করে কাজ করতে হবে। শ্রী মোদী বলেন, আজ জ্বালানী ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার জন্য দেশ এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই কর্মসূচীর বাস্তবায়নের ফলে শুধুমাত্র কয়লা খনি শিল্পেরই সংস্কার হবেনা, এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, আজ আমরা শুধুমাত্র কয়লা খনিগুলির বাণিজ্যিকিকরণের জন্য নিলামের সূচনাই করলাম না, বহু দশক ধরে কয়লা ক্ষেত্রে যে লকডাউন চলছিল সেটিকে তার থেকেও মুক্ত করলাম। 

 

            তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তর কয়লা ভান্ডার এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা উৎপাদক দেশ  হওয়া সত্ত্বেও আমরা বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা আমদানিকারী দেশ- আর এটাই ভারতের ভাগ্যের পরিহাস। শ্রী মোদী বলেন, দশকের পর দশক ধরে এই পরিস্থিতিই চলে আসছিল এবং কয়লা শিল্প౼খোলা মুখ ও বদ্ধমুখ খনির মধ্যেই আবর্তিত হচ্ছিল। এই শিল্পকে প্রতিযোগিতা এবং স্বচ্ছতা থেকে সরিয়ে রাখায় বড় সমস্যা তৈরি হয়েছিল౼ যে কারণে কয়লা শিল্পে বিনিয়োগ হত না এবং এর দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতো।  

 

            প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে কয়লা শিল্পের উন্নতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রতিযোগিতা, মূলধন, অংশগ্রহণ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার কয়লা ও খনি শিল্পে বাড়ানোর জন্য এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে- এই শিল্পকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। বেসরকারী খনি শিল্পের সংস্থাগুলি যাতে মূলধনের সমস্যায় না পড়ে তারজন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, পর্যাপ্ত  খনিজ সম্পদ এবং খনি শিল্প ছাড়া আত্মনির্ভরতা আসবেনা, কারণ আমাদের অর্থনীতিতে এই দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।   

 

            প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংস্কারগুলির মধ্যে দিয়ে কয়লা উৎপাদন এবং পুরো কয়লা শিল্প আত্মনির্ভর হয়ে উঠবে। এখন কয়লার জন্য বাজার খুলে দেওয়া হল। ফলে যেকোন শিল্প তাদের চাহিদা অনুযায়ী কয়লা কিনতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংস্কারের ফলে শুধু কয়লা শিল্পই নয় ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, সার এবং সিমেন্ট শিল্পও উপকৃত হবে। এরফলে বিদ্যুৎ-এর উৎপাদনও বাড়ানো যাবে।  

 

            শ্রী মোদী বলেন, খনিজ শিল্পে সংস্কারের ফলে কয়লা খনির ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়েছে। কারণ কয়লা খনিগুলি লোহা, বক্সাইট এবং অন্যান্য ধাতব পদার্থের খনি এলাকার কাছাকাছি অবস্থিত। তিনি বলেন, কয়লা খনির বাণিজ্যিকিকরণের জন্য যে নিলাম প্রক্রিয়া আজ শুরু হল তাতে সংশ্লিষ্ট সব শিল্পই উপকৃত হবে। রাজ্য সরকারগুলি আরও রাজস্বপাবে এবং দেশে প্রচুর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এরফলে প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।    

 

            কয়লা শিল্পের সংস্কারের ফলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মধ্য দিয়ে পরিবেশের প্রতি ভারতের যে দায়বদ্ধতা তা কোনোভাবেই অবহেলিত হবেনা। তিনি বলেন, ‘কয়লা থেকে গ্যাস তৈরির জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। তারফলে পরিবেশ রক্ষা পাবে। এই উৎপাদিত গ্যাস, পরিবহন ও রান্নার কাজে যেমন ব্যবহৃত হবে পাশাপাশি ইউরিয়া, ইস্পাত ও নির্মাণ শিল্পের বিকাশ ঘটাবে।’ শ্রী মোদী বলেন, সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ কোটি টন কয়লাকে গ্যাসে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এরজন্য চারটি প্রকল্পকে চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। তিনি বলেন, কয়লা শিল্পের সংস্কারের ফলে পূর্ব ও মধ্য ভারত, আমাদের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকা উন্নয়নের স্তম্ভ হয়ে উঠবে। এই এলাকাগুলিতে অনেক উচ্চাকাঙ্খী জেলা রয়েছে যারা প্রগতি এবং সমৃদ্ধির অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। শ্রী মোদী বলেন, দেশের ১৬টি উচ্চাকাঙ্খী জেলায় প্রচুর কয়লা মজুত রয়েছে। কিন্তু এই অঞ্চলের লোকেরা এর থেকে যথাযথভাবে উপকৃত হতে পারেননি। এখানকার লোকেরা কাজের জন্য বহু দূরের শহরে যেতে বাধ্য হন।  

 

            প্রধানমন্ত্রী বলেন, খনি শিল্পের বাণিজ্যিকিকরণের পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে পূর্ব ও মধ্য ভারত উপকৃত হবে। স্থানীয় মানুষ তাঁদের বাড়ির কাছেই কাজের সন্ধান পাবেন। তিনি বলেন, সরকার কয়লা উত্তোলন ও পরিবহনের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর থেকেও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হবে।

 

কেন্দ্রীয় কয়লা ও খনি মন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ যোশী এই পদক্ষেপকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন,  ভারতের জ্বালানীর চাহিদা প্রতি বছর ৫% হারে বৃদ্ধি পায়। দেশের সব ধরণের জ্বালানীর প্রয়োজন। কয়লা দেশের ৫০% জ্বালানীর চাহিদা মেটায়। এই ক্ষেত্রে কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড এতদিন প্রধান ভূমিকা পালন করে এসেছে।

 

কয়লা মন্ত্রকের সচিব শ্রী অনিল কুমার জৈন বলেছেন, কয়লা শিল্পের শৃঙ্খল মুক্ত করা হল। এখন থেকে শুধু সরকার বা নির্বাচিত কর্পোরেট সংস্থার সিদ্ধান্তে এই শিল্প চলবে না। কয়লা খনি শিল্পের বাণিজ্যিকিকরণের ফলে কয়লা খনি এবং কয়লার ব্যবসা এখন উৎসাহী শিল্পোদ্যোগীদের নাগালে চলে এলো।

 

ফিকির সভাপতি ডঃ সঙ্গীতা রেড্ডি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে কয়লা খনির বানিজ্যিকিকরণের দেশের জ্বালানীর চাহিদা মেটানো যাবে, আমদানীর উপর নির্ভরতা কমবে, এই শিল্পের আধুনিকীকরণ হবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে উঠবে।“

 

বেদান্ত গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান শ্রী অনিল আগরওয়াল এবং টাটা সন্স-এর চেয়ারম্যান শ্রী এন চন্দ্রশেখরন এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

 

 

CG/CB


(Release ID: 1632371) Visitor Counter : 164