কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা

গ্রামীণ ভারতের উন্নয়নে ঐতিহাসিক গতি আনতে প্রধানমন্ত্রীর পৌরোহিত্যে মন্ত্রিসভার বৈঠক

Posted On: 03 JUN 2020 5:04PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ৩ জুন, ২০২০

 



প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বেশ কিছু যুগান্তকারী এবং ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আসবে এবং দেশের কৃষকদের কল্যাণে সহায়ক  হবে।


নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আইনে ঐতিহাসিক সংশোধনী:

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আজ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আইনে ঐতিহাসিক সংশোধনীতে অনুমোদন দিয়েছে। এটি কৃষিক্ষেত্রে যুগান্তরকারী এবং কৃষকদের আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে এক দূরদর্শী পদক্ষেপ।


প্রেক্ষাপট:

ভারতে যখন বেশিরভাগ কৃষিপণ্য উদ্বৃত্ত হয়ে পড়েছে, তখন খাঁড়ার মতো ঝুলে থাকা  নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আইনের দরুণ কৃষকরা ফসলের সঠিক দাম পাচ্ছিলেন না। এমনকি ফসল হিমঘরজাত করা, প্রক্রিয়াকরণ এবং রপ্তানি ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল।বিশেষ করে পচনশীল পণ্যের ব্যাপক উৎপাদনের ফলে কৃষকদের বহু  ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছিল। পর্যাপ্ত প্রক্রিয়াকরণের সুবিধা না মেলায় প্রচুর ফসল নষ্ট হচ্ছিল।


উপকারিতা:

নিত্য প্রয়োজনীয় আইনের সংশোধনীর মাধ্যমে ডাল, তৈলবীজ, ভোজ্য তেল, পেঁয়াজ এবং আলুর মতো পণ্যগুলিকে প্রয়োজনীয় পণ্যের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া  হয়েছে। এতে এই ধরনের পণ্যের ওপর বাণিজ্যক ক্ষেত্রে  অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের হস্তক্ষেপের  আশঙ্কাও দূর হবে।


উৎপাদন, অধিগ্রহণ, স্থানান্তরণ, বিতরণ এবং সরবরাহের স্বাধীনতার ফলে অর্থনীতির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কমবে এবং কৃষিক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আরও সহজ হয়ে যাবে। এটি হিমঘর এবং খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলের আধুনিকীকরণে সহায়তা করবে।


গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষা:

সরকার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে  উদারীকরণের পরিবেশ তৈরি করার সময় গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো পরিস্থিতিতে যাতে এই ধরনের খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, সংশোধনীতে তার সংস্থান রয়েছে। রপ্তানিকারকদের রপ্তানির চাহিদার কথা মাথায় রেখেই মজুত ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের যেমন ব্যবস্থা রয়েছে, তেমনই কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ যাতে নিরুৎসাহিত না  হয়, তাও সুনিশ্চিত করা হয়েছে।


এই সংশোধনীতে দামের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কৃষক এবং গ্রাহক উভয়েরস্বার্থই বিবেচনা করা হয়েছে। এতে প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি হবে এবং  সংরক্ষণের সুবিধার  জন্য  কৃষিপণ্য অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে।


কৃষিক্ষেত্রে বাধামুক্ত বাণিজ্য:

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা "কৃষি পণ্য  ব্যবসা ও বাণিজ্য সংক্রান্ত (প্রচার ও সুবিধার্থে) অধ্যাদেশ, ২০২০" অনুমোদিত হয়েছে।


প্রেক্ষাপট:

ভারতের কৃষকরা আজ তাঁদের কৃষিপণ্য বিপণনে বিভিন্ন বিধি-নিষেধের সমস্যায় ভুগছেন। বিজ্ঞাপিত এপিএমসি বাজার সীমার বাইরে কৃষকদের পণ্য বিক্রয়ে বিধি-নিষেধ রয়েছে। তাই, কৃষকরা কেবল রাজ্য সরকারগুলির কাছে নিবন্ধীকৃত লাইসেন্সধারীদের কাছেই তাঁদের পণ্য বিক্রি করতে পারেন। এছাড়াও, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন এপিএমসি আইনের প্রচলনের কারণে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কৃষিপণ্যের অবাধ সরবরাহে বাধা রয়েছে।


উপকারিতা:

এই অধ্যাদেশ কৃষক এবং ব্যবসায়ীদের কৃষিপণ্য ক্রয় এবং বিক্রয়ের স্বাধীনতা এনে দেবে। বাধাহীনভাবে আন্তঃরাজ্য এবং রাজ্যের মধ্যে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বাণিজ্যে সাহায্য করবে। এটি দেশের মধ্যে নিয়ন্ত্রিত কৃষিক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।


কৃষকদের কাছে পছন্দসই বাজার বাছার ক্ষেত্রে সুযোগ এনে দেবে এই অধ্যাদেশ। একইসঙ্গে, কৃষিপণ্য বাজারজাত করার খরচ যেমন কমাবে, তেমনই ফসলের তাঁরা ভালো দামও পাবেন। কৃষকরা উদ্বৃত্ত ফসল ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন। অন্যদিকে, ক্রেতারাও প্রয়োজন অনুসারে কম দামে কৃষিপণ্য কিনে গুদামজাত করতে পারবেন। এই অধ্যাদেশ বৈদ্যুতিন বাণিজ্যিক লেনদেনের সুযোগ এনে দেবে।


‘এক দেশ এক কৃষি বাজার’:

এপিএমসি বাজার সীমার বাইরে কৃষকদের বাণিজ্য ক্ষেত্রে সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। কৃষকদের ভালো পারিশ্রমিক পেতে সহায়তা করবে এবং অতিরিক্ত ব্যবসার সুযোগ করে দেবে।


এটি অবশ্যই ‘এক দেশ এক কৃষি বাজার’ তৈরির পথ সুগম করবে এবং আমাদের কঠোর পরিশ্রমী কৃষকদের সোনার ফসল ফলানোর ভিত গঠনে  সাহায্য করবে।


প্রক্রিয়াকারী,সংযোগ রক্ষাকারী, পাইকারি, বড় ধরনের খুচরো ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে সংযুক্ত করে কৃষকদের  ক্ষমতা বৃদ্ধি:

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ‘কৃষকদের (ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা) মূল্য সুনিশ্চিতকরণ এবং খামার পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তি অধ্যাদেশ, ২০২০’-তে অনুমোদন দিয়েছে।



প্রেক্ষাপট:

ভারতীয় কৃষিক্ষেত্রে অনেক কৃষিপণ্যই আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। অনেক ক্ষেত্রেই উৎপাদন ও বাজারের অনিশ্চয়তা রয়েছে। এটি কৃষকদের ক্ষেত্রে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। ফসল উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণ - উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা দেখা দেয়।


উপকারিতা:

এই অধ্যাদেশটি কৃষকদের কোন প্রকার শোষণের ভয় ছাড়াই বড় খুচরো ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুযোগ করে দেবে। এই ধরনের ব্যবসার ক্ষেত্রে কৃষকদের অংশীদার করার ক্ষমতা প্রদান করবে। এটি কৃষকদের ঝুঁকি অনেক কমাবে। কৃষককে আধুনিক প্রযুক্তি এবং আরও ভালো সরঞ্জাম প্রদানে সাহায্য করবে। এতে কৃষকদের বিপণন ব্যয় হ্রাস পাবে এবং আয় বাড়বে।


এই অধ্যাদেশটি ভারতীয় কৃষিপণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলে ধরতে সাহায্য করবে। একইসঙ্গে, বেসরকারি ক্ষেত্রের বিনিয়োগকে আরও আকৃষ্ট করে তুলবে। কৃষকরা উচ্চমানের কৃষির জন্য প্রযুক্তি এবং পরামর্শ পাবেন।


কৃষকরা মধ্যস্থতাকারীকে দূরে সরিয়ে রেখে সরাসরি বিপণনে যুক্ত হতে পারবেন যার ফলে, ফসলের উপযুক্ত দাম পাবেন। এই অধ্যাদেশটি কৃষকদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা সুনিশ্চিত করবে।


সরকার কৃষককল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ:

আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসেবে কৃষি এবং সহযোগী ক্ষেত্রে গতি আনতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা, কৃষি-ইনফ্রা প্রকল্পের সাহায্যে অর্থ সরবরাহের সুবিধা, প্রধানমন্ত্রী মৎস্যসম্পদ যোজনা এবং মৎস্যজীবীদের জন্য অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ, পশুর মুখ ও পায়ের খুঁড়ের রোগ প্রতিরোধে প্রতিষেধক, ভেষজ চাষের প্রসার, মৌমাছি পালন ইত্যাদি ক্ষেত্রে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।


পিএম-কিষাণ-এর মাধ্যমে ৯.২৫ কোটি কৃষক পরিবার উপকৃত হয়েছেন। এই লকডাউনের মধ্যেও তাঁদের জন্য ১৮,৫১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার আওতায় লকডাউনের মধ্যেও ৬,০০৩.৬ কোটি টাকার দাবি পরিশোধ করা হয়েছে।


এই পদক্ষেপগুলি ভারতের কঠোর পরিশ্রমী কৃষকদের কল্যাণসাধনের জন্যই গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার কৃষকদের কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

 



CG/SS/DM


(Release ID: 1629186) Visitor Counter : 543