কৃষিমন্ত্রক

কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী কেন্দ্রীয় কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিভাগ / ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের কাজ পর্যালোচনা করেন


শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমার আইসিএআর-কেভিকে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কৃষকদের প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন

Posted On: 23 APR 2020 8:55PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি ২৩ এপ্রিল, ২০২০

 



 কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী, শ্রী নরেন্দ্র সিং তোমার আজ এখানে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা বিভাগ এবং ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (আইসিএআর) কর্মপদ্ধতি পর্যালোচনা করেন। তিনি ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এবং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের (কেভিকে) নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে প্রযুক্তির ব্যবহার পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি সর্বাধিক সংখ্যক কৃষকের কাছে প্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছানোর উপর জোর দিয়েছেন।

ভারতীয় কৃষি গবেষণা পর্ষদ ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ১২৩৪টি ফসলের বৈচিত্র্য এবং ৩৪৫টি উদ্যানজাত বৈচিত্র্যের উদ্ভাবন করেছে। ভারতীয় কৃষি গবেষণা পর্ষদ উদ্ভাবিত অনেক ফসল বৈচিত্র্য এবং প্রযুক্তি সম্প্রতি বিদেশি মুদ্রা অর্জন করছে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা  রাখছে। ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এবং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র বিভিন্ন সরকারি বিশেষ প্রচার অভিযান – যেমন, কৃষি কল্যাণ অভিযান, জলশক্তি অভিযান, বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং আন্তর্জাতিক মহিলা দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

দেশের ১১২ উচ্চাভিলাষী জেলায় কৃষি কল্যাণ অভিযান (কেকেএ) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখনও অবধি কৃষি কল্যাণ অভিযানের দুটি ধাপ সম্পন্ন হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে  ১১.০৫ লক্ষ কৃষককে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র প্রদত্ত প্রশিক্ষণ এবং কৃষকের জমিতে ৫০০০ এরও বেশি পরীক্ষামূলক অগ্রণী প্রদর্শনীর আয়োজন। তৃতীয় ধাপে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য প্রায় ১৭ লক্ষ কৃষককে বিভিন্ন কৃষিবৈচিত্র্য বিষয়ে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল  জল সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে দেশের কৃষকদের সংবেদনশীল ও সংহত করে তুলতে জলশক্তি অভিযান চলাকালীন সময়ে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র ৪৬৬টি মেলার আয়োজন করেছে। এগুলিতে দুই দফায় প্রায় ৩.১৪ লক্ষ কৃষক এবং বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী অংশ নিয়েছে। বৃক্ষরোপণ অভিযানের আওতায় ৭.১ লক্ষেরও বেশি গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে, এই উৎসবের নেতৃত্ব দেন ৩৪ জন সংসদ সদস্য, ৫০ জন বিধায়ক এবং ২০০০ জন অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও কর্মকর্তা।

ভারতীয় কৃষি গবেষণা পর্ষদের  নতুন প্রযুক্তি বিকাশের প্রচেষ্টা একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এই প্রচেষ্টাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। সেজন্যে উন্নত গুণমানের ফসল রোপণ উপকরণ এবং বিভিন্ন উন্নত জাতের বীজ, পাশাপাশি মাছের পোনা এবং গৃহপালিত দেশীয় পশুর উন্নত মানের বীর্য এবং শাবক সর্বাধিক কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলিতে ১৪ লক্ষ কুইন্টালেরও বেশি বীজ এবং ২৪২৫ লক্ষ রোপণ সামগ্রী উত্পাদিত হয়েছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আরও ৫১২ লক্ষ উন্নত গুণমানের ফলমূল ও শাকসব্জির রোপণ সামগ্রী উৎপাদন করেছে। এই বীজ এবং রোপণ উপকরণ কৃষকদের খুব নামমাত্র মূল্যে সরবরাহ করা হয়। কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলি ২০১৪-১৯ সময়কালের মধ্যে কৃষকদের মোবাইল ফোনে ২..৮৫ কোটি অ্যাগ্রোআডভাইজারি পোস্ট করেছে।

২০১৪-১৯ সালের মধ্যে ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল পশুর রোগনির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ৬৬টি প্রতিষেধক এবং রোগনির্ধারক উদ্ভাবন করেছে। ভারতে প্রথমবারের মতো ২০১৪ সালে ১৮৪টি নিবন্ধিত দেশীয় প্রজাতির প্রজননের গেজেট বিজ্ঞপ্তি করা হয়েছে যা দেশীয় প্রজাতিগুলির সুরক্ষা এবং প্রচারে সহায়তা করবে। পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলে গত পাঁচ বছরে ২৫০০ টির বেশি জলে ডোবানো খাঁচায় মাছের উত্পাদনের জন্য উন্মুক্ত-সমুদ্রের খাঁচা প্রজনন প্রযুক্তি জনপ্রিয় করে তোলা হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ মাছের জীবনের বিভিন্ন পর্যায় / ফিনফিশ প্রজাতির জন্য ২২টি সুলভ খাবার তৈরি করা হয়েছে। ভারতীয় কৃষি গবেষণা পর্ষদ রাজ্যগুলি এবং কৃষি, সহযোগিতা ও কৃষক কল্যাণ বিভাগের সঙ্গে যৌথ প্রয়াসে কৃষকদের মেশিন বিতরণ এবং শস্যের অবশিষ্টাংশের  ব্যবস্থাপনার জন্য কাস্টম হায়ারিং সেন্টারগুলিকে সহায়তা করেছে। ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে শস্যের অবশিষ্টাংশ জ্বালিয়ে পরিবেশ দূষণের ঘটনা ৫২ শতাংশ কমেছে।

ভারতীয় কৃষি গবেষণা পর্ষদ সক্রিয়ভাবে কোভিড-১৯ অতিমারির ফলে কৃষকদের মানসিক উদ্বেগ নিরসনের চেষ্টা করেছে। ১৫টি আঞ্চলিক ভাষায় ৫.৪৮ কোটি কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে । কোভিড -১৯ অতিমারির মোকাবিলায় আরোগ্য সেতু মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহারের জন্য প্রায় ৪২ লক্ষ কৃষকের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছিল,এর মধ্যে ৪.৩৩ লক্ষ কৃষক অ্যাপটি ডাউনলোড করেছেন। ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর তিনটি প্রতিষ্ঠান এনআইএইচএসএডি ভোপাল, আইভিআরআই ইজতনগর, এবং এনসিআর অন ইকুইনস, হিসারকে মানুষ ও চিড়িয়াখানার প্রাণীদের শরীরে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। আজ পর্যন্ত ১৫৬১টি নমুনা এই প্রতিষ্ঠানগুলি দ্বারা পরীক্ষা করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী, শ্রী নরেন্দ্র সিং ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল-র কাজের প্রশংসার পাশাপাশি তাঁদের উদ্যোগকে সর্বাধিক সংখ্যক কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়া, গবেষণার সমস্যাগুলি সমাধান করা এবং গবেষণা ও সম্প্রসারণ ব্যবস্থা জোরদার করার উপর জোর দেন। তিনি বিশেষভাবে নানা বৈচিত্রের কৃষিপণ্য উৎপাদনে মনোনিবেশ, জল-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে নিবিড় গবেষণা, আলু প্রক্রিয়াকরণ ও রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাতের বিকাশ, সেরা বাছাই এবং তাদের ফলনের প্রচারের জন্য কেভিকে-এসএইচজি মডেলের জনপ্রিয়করণের জন্য কৃষি-স্টার্টআপ সম্পর্কিত একটি সম্মেলনের আয়োজন করার প্রস্তাব রেখেছেন। মডেলটি জনপ্রিয় করতে গণসচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রিন্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য চেয়েছেন। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী উচ্চ শিক্ষাসহ কৃষিতে তথ্য প্রযুক্তি সরঞ্জামের সর্বাধিক ব্যবহার এবং ই-প্রকাশনা প্রচারের উপরও জোর দেন। শ্রী তোমার মাটি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং মাটি পরীক্ষার বিষয়ে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রকে অগ্রণী ভুমিকা নেওয়ার উপর জোর দেন। বীজকে প্রধান ইনপুট বলে স্বীকৃতি দিয়ে তিনি বীজের সহজলভ্যতার জন্য একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করার পরামর্শ দেন।

পর্যালোচনা সভায় দুই রাজ্যমন্ত্রী, শ্রী পুরুষোত্তম রূপালা এবং শ্রী কৈলাশ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল-এর সচিব  ডঃ ত্রিলোচন মহাপাত্র এবং উভয় সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকটি সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে এবং ফেস মাস্কের নিয়ম অনুসরণ করে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল-এর অধীনে ১০২টি ইনস্টিটিউট এবং প্রতিটি জেলায় একটি করে ৭১৮টি কৃষি বিকাশ কেন্দ্র রয়েছে। বিগত বছরগুলিতে কৃষকদের কাছে ভারতীয় কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এবং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রগুলির সহায়তা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

                                                                                                                                                  
 


CG/SB


(Release ID: 1617840) Visitor Counter : 315