Energy & Environment
ভারতের ক্রমবর্ধমান সবুজায়ন
Posted On:
24 OCT 2025 18:56 PM
২৪ অক্টোবর ২০২৫
GFRA 2025 অনুসারে মোট বনাঞ্চলের হিসাবে বিশ্বে ভারতের অবস্থান নবম, বার্ষিক বনাঞ্চল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তৃতীয়
FAO অনুসারে কার্বন শোষণের ক্ষেত্রে বিশ্বে ভারতের স্থান পঞ্চম
---
মূল বিষয়বস্তু
GFRA 2025 অনুযায়ী মোট বনাঞ্চলের দিক থেকে ভারত বিশ্বের নবম স্থানে উন্নীত হয়েছে
বার্ষিক নেট বনাঞ্চল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের তৃতীয় স্থানে রয়েছে
২০২১–২০২৫ সময়কালে ভারতের বনাঞ্চল প্রতি বছর ১৫০ এমটি CO₂ শোষণ করেছে, ফলে FAO-এর মূল্যায়নে ভারত বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ কার্বন শোষক দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে
বৈশ্বিক বনাঞ্চলের পরিমাণ প্রায় ৪.১৪ বিলিয়ন হেক্টর, যা পৃথিবীর স্থলভাগের প্রায় ৩২%
১৯৯০–২০০০ সময়কালের তুলনায় বার্ষিক নীট বনক্ষয়ের হার ১০.৭ মিলিয়ন হেক্টর থেকে ২০১৫–২০২৫ সময়ে কমে ৪.১২ মিলিয়ন হেক্টরে এসে ঠেকেছে
ভূমিকা
ভারত বৈশ্বিক বন পরিসংখ্যানে এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে
ফুড এন্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (FAO)-র হিসাবমতো ভারতে ক্রমবর্ধমান সবুজ পদচিহ্ন
GFRA 2025 অনুসারে মোট বনাঞ্চলের হিসাবে বিশ্বে ভারতের অবস্থান ৯ম, বার্ষিক বনাঞ্চল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৩য়
FAO অনুসারে কার্বন শোষণের ক্ষেত্রে বিশ্বে ভারতের স্থান ৫ম
---
মূল বিষয়বস্তু
GFRA 2025 অনুযায়ী মোট বনাঞ্চলের দিক থেকে ভারত বিশ্বের নবম স্থানে উন্নীত হয়েছে।
বার্ষিক নেট বনাঞ্চল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের ৩য় স্থানে রয়েছে।
২০২১–২০২৫ সময়কালে ভারতের বনাঞ্চল প্রতি বছর ১৫০ এমটি CO₂ শোষণ করেছে, ফলে FAO-এর মূল্যায়নে ভারত বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ কার্বন শোষক দেশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী বনাঞ্চলের পরিমাণ প্রায় ৪.১৪ বিলিয়ন হেক্টর, যা পৃথিবীর স্থলভাগের প্রায় ৩২%।
১৯৯০–২০০০ সময়কালের তুলনায় বার্ষিক নেট বনক্ষয়ের হার ১০.৭ মিলিয়ন হেক্টর থেকে ২০১৫–২০২৫ সময়ে কমে ৪.১২ মিলিয়ন হেক্টরে নেমে এসেছে।
ভূমিকা
ভারত বৈশ্বিক বন পরিসংখ্যানে এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন গত ২২ অক্টোবর, ২০২৫-এ (FAO)-র গ্লোবাল ফরেস্ট রিসোর্সেস অ্যাসেসমেন্ট (GFRA) ২০২৫ অনুযায়ী, ভারত মোট বনাঞ্চলের দিক থেকে নবম স্থানে উন্নীত হয়েছে (পূর্বে ১০-ম স্থানে ছিল)। একই সঙ্গে, বার্ষিক নীট বনাঞ্চল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভারত তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে।
FAO রাষ্ট্র সংঘের একটি বিশেষ সংস্থা, যা ক্ষুধা দূরীকরণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের (বিশেষত বনসম্পদ) সুস্থায়ী ব্যবস্থাপনায় বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেয়। GFRA হল, FAO-র নিয়মিত মূল্যায়ন, যা বিশ্বের বনসম্পদের অবস্থা, পরিবর্তন, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরবরাহ করে।
GFRA 2025: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ভারত
বৈশ্বিক বনাঞ্চল:
GFRA 2025 অনুযায়ী, বিশ্বের মোট বনাঞ্চল প্রায় ৪.১৪ বিলিয়ন হেক্টর, যা পৃথিবীর মোট স্থলভাগের ৩২%, অর্থাৎ প্রতি ব্যক্তির জন্য গড়ে ০.৫ হেক্টর বন।
ভারতের বনাঞ্চল প্রায় ৭২,৭৩৯ হাজার হেক্টর, যা বৈশ্বিক মোটের প্রায় ২%।
ইউরোপে বিশ্বের সর্বাধিক বনাঞ্চল রয়েছে (২৫%), অন্যদিকে, দক্ষিণ আমেরিকায় বনাঞ্চলের অনুপাত সর্বোচ্চ (মোট ভূমির ৪৯%)।
বিশ্বের মোট বনাঞ্চলের ৫৪% মাত্র পাঁচটি দেশে কেন্দ্রীভূত - রুশ ফেডারেশন, ব্রাজিল, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন।
গ্লোবাল ফরেস্ট রিসোর্সেস অ্যাসেসমেন্ট (GFRA)
GFRA হল একমাত্র বৈশ্বিক মূল্যায়ন যা প্রতিটি দেশের সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এতে বন দুটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে -
প্রাকৃতিকভাবে পুনর্জন্ম হওয়া বন ও রোপিত বন
এর মধ্যে প্রাথমিক বন - যেখানে শুধুমাত্র স্থানীয় প্রজাতি থাকে - প্রাকৃতিকভাবে পুনর্জন্ম হওয়া বনের একটি উপশ্রেণী। অন্যদিকে, রোপিত বনের মধ্যে প্ল্যান্টেশন ফরেস্ট (যেমন রাবার বাগান) এবং অন্যান্য রোপিত বন অন্তর্ভুক্ত।
ভারতে রোপিত বন সম্প্রসারণে সাফল্য
বাঁশের বন:
সারা বিশ্বে বাঁশ বনাঞ্চল প্রায় ৩০.১ মিলিয়ন হেক্টর, যার মধ্যে ২১.২ মিলিয়ন হেক্টর (৭০%) এশিয়ায় অবস্থিত, এবং এর মধ্যে ১১.৮ মিলিয়ন হেক্টর ভারতের দখলে। ১৯৯০ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে বিশ্বে বাঁশের বন ৮.০৫ মিলিয়ন হেক্টর বৃদ্ধি পেয়েছে, যার বড় অংশই চীন ও ভারতের অবদান।
রাবার বাগান (Rubber Plantations):
রাবার বাগানের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বে পঞ্চম স্থানে, প্রায় ৮৩১ হাজার হেক্টর রাবার চাষ রয়েছে।
ভারতে কৃষি-বনায়ন
ভারত ও ইন্দোনেশিয়া মিলে এশিয়ার প্রায় ১০০% কৃষি-বনায়ন এলাকা ধারণ করেছে, যা প্রায় ৩৯.৩ মিলিয়ন হেক্টর।
বিশ্ব তালিকায় ভারত ও ইন্দোনেশিয়া একত্রে ৭০% কৃষি-বনায়ন এলাকা (মোট ৫৫.৪ মিলিয়ন হেক্টর) দখল করে আছে।
বনক্ষয় ও নীট পরিবর্তন
১৯৯০–২০২৫ সময়কালে ভারত নিট বন বৃদ্ধির রিপোর্ট করেছে, অর্থাৎ বন সম্প্রসারণ বনক্ষয়ের চেয়ে বেশি হয়েছে। এটি মূলত বনায়ন প্রকল্প ও পুনরুদ্ধার উদ্যোগের ফল।
ভারত ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী কাঠ সংগ্রহে ৯% অবদান রেখেছে এবং এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
FAO বিশ্লেষণ: ১৯৯০–২০২৫ সময়কালের বন নির্গমন ও শোষণ প্রবণতা
বৈশ্বিক চিত্র:
২০২১–২০২৫ সময়ে বিশ্বের বনসমূহ প্রতি বছর ৩.৬ বিলিয়ন টন (Gt) CO₂ শোষণ করেছে।
একই সময়ে বন রূপান্তরজনিত নির্গমন ছিল ২.৮ Gt CO₂, যার ফলে শোষণ প্রভাবে আংশিকভাবে ক্ষতিপূরণ হয়েছে।
ফলে মোটের ওপর বনভূমি প্রতি বছর ০.৮ Gt CO₂ বায়ুমণ্ডল থেকে অপসারণ করেছে।
ইউরোপ ও এশিয়ায় এই শোষণ সর্বাধিক ছিল — যথাক্রমে ১.৪ Gt CO₂ ও ০.৯ Gt CO₂ প্রতি বছর।
ভারতের অর্জনসমূহ
২০২১–২০২৫ সময়কালে ভারতের বনসমূহ প্রতি বছর ১৫০ মিলিয়ন টন (Mt) CO₂ অপসারণ করেছে।
ফলে, ভারত বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ কার্বন শোষক দেশের মধ্যে স্থান পেয়েছে।
এশিয়ার বনসমূহ, যার মধ্যে ভারতও অন্তর্ভুক্ত, প্রতি বছর ০.৯ Gt CO₂ শোষণ করেছে এবং বননিধন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
ভারতের বন অবস্থা ও পরিবর্তন (ISFR 2023 অনুযায়ী)
মোট বনাঞ্চল: ৭,১৫,৩৪৩ বর্গ কিমি (দেশের ভৌগোলিক এলাকার ২১.৭৬%)
বৃহত্তম বনাঞ্চলযুক্ত রাজ্য: মধ্যপ্রদেশ (৭৭,০৭৩ বর্গ কিমি), অরুণাচল প্রদেশ (৬৫,৮৮২ বর্গ কিমি), এবং ছত্তিশগড় (৫৫,৮১২ বর্গ কিমি)
ম্যানগ্রোভ বন: ৪,৯৯২ বর্গ কিমি, প্রধানত আন্দামান ও নিকোবর, গুজরাট, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ: ভারতে ১০৬-টি জাতীয় উদ্যান, ৫৭৩-টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ১১৫-টি সংরক্ষণ রিজার্ভ এবং ২২০-টি কমিউনিটি রিজার্ভ রয়েছে।
ভারতের সরকারি উদ্যোগসমূহ বনাঞ্চল বৃদ্ধির জন্য
১. বাজেট বরাদ্দ (2025–26)
MoEFCC-এর বরাদ্দ ₹৩,৪১২.৮২ কোটি টাকা, যা ২০২৪–২৫ সালের তুলনায় ৯% বৃদ্ধি।
মোট বরাদ্দের ৯৬% (₹৩,২৭৬.৮২ কোটি) রাজস্ব ব্যয়ে ব্যবহার করা হবে।
২. ন্যাশনাল মিশন ফর আ গ্রীন ইন্ডিয়া (GIM)
শুরু: ফেব্রুয়ারি ২০১৪, জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন কর্মপরিকল্পনার (NAPCC) অধীনে।
লক্ষ্য: ৫ মিলিয়ন হেক্টর নতুন বন ও গাছের আচ্ছাদন বৃদ্ধি এবং আরও ৫ মিলিয়ন হেক্টর বন/অবনমিত ভূমির গুণমান উন্নয়ন।
উপকারিতা: জীববৈচিত্র্য, জল সম্পদ ও কার্বন সঞ্চয় বৃদ্ধি, প্রায় ৩০ লক্ষ বননির্ভর পরিবারের জীবিকা উন্নয়ন।
৩. ন্যাশনাল অ্যাফরেস্টেশন প্রোগ্রাম (NAP)
উদ্দেশ্য: অবনমিত বনাঞ্চল ও সংলগ্ন এলাকার পুনর্জন্ম।
প্রয়োগ কাঠামো: রাজ্য পর্যায়েরূপায়নকারী সংস্থার মধ্যে রয়েছে, State Forest Development Agency (SFDA), বিভাগীয় পর্যায়ে Forest Development Agency (FDA) এবং গ্রাম পর্যায়ে Joint Forest Management Committees (JFMCs)।
মিশন লাইফ (Mission LiFE – Lifestyle for Environment)
রাষ্ট্র সংঘের পরিবেশ সমাবেশ সুস্থায়ী জীবনধারার ওপর Mission LiFE-এর ভিত্তিতে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
MeriLiFE Portal: ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক উদ্যোগকে উৎসাহিত করে সুস্থায়ী জীবনযাপন প্রচারে চালু হয়েছে।
"এক পেড় মা কে নাম" উদ্যোগ: নিজের মা বা মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে গাছ লাগানোর এক আবেগময় আহ্বান।
উপসংহার
বৈশ্বিক বনতথ্য স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, একদিকে যেখানে কিছু দেশে বননিধন হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে বনায়নের মাধ্যমে বনাঞ্চল দ্রুত বাড়ছে। ভারত মোট বনাঞ্চলের ক্ষেত্রে নবম স্থানে উন্নীত এবং বার্ষিক নীট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে স্থিতি তার দৃঢ় জাতীয় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
বন সম্প্রসারণ, সুস্থায়ী বন ব্যবস্থাপনা ও গ্রিন ইন্ডিয়া মিশনের মতো কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভারত পরিবেশ সংরক্ষণ ও বিশ্বব্যাপী জলবায়ু ক্ষেত্রে সদর্থক পদক্ষেপে তার অঙ্গীকার দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র: গ্লোবাল ফরেস্ট রিসোর্সেস অ্যাসেসমেন্ট (GFRA) ২০২৫, যেটি ২২ অক্টোবর ২০২৫-এ প্রকাশিত হয়েছে। এই মৃল্যায়ন অনুসারে ভারত মোট বনাঞ্চলের দিক থেকে নবম স্থানে উন্নীত হয়েছে (পূর্বে ১০ম স্থানে ছিল)। একই সঙ্গে, বার্ষিক নীট বনাঞ্চল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভারত তৃতীয় স্থানটি ধরে রেখেছে।
FAO রাষ্ট্র সংঘের একটি বিশেষ সংস্থা, যা ক্ষুধা দূরীকরণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের (বিশেষত বনসম্পদ) সুস্থায়ী ব্যবস্থাপনায় বৈশ্বিক প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেয়। GFRA হল, FAO-র নিয়মিত মূল্যায়ন, যা বিশ্বের বনসম্পদের অবস্থা, পরিবর্তন, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরবরাহ করে।
GFRA 2025: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ভারত
বিশ্বব্যাপী বনাঞ্চল:
GFRA 2025 অনুযায়ী, বিশ্বের মোট বনাঞ্চল প্রায় ৪.১৪ বিলিয়ন হেক্টর, যা পৃথিবীর মোট স্থলভাগের ৩২%, অর্থাৎ প্রতি ব্যক্তির জন্য গড়ে ০.৫ হেক্টর বন।
ভারতের বনাঞ্চল প্রায় ৭২,৭৩৯ হাজার হেক্টর, যা গোটা বিশ্বের মোটের প্রায় ২%।
ইউরোপে বিশ্বের সর্বাধিক বনাঞ্চল রয়েছে (২৫%), অন্যদিকে দক্ষিণ আমেরিকায় বনাঞ্চলের অনুপাত সর্বোচ্চ (মোট ভূমির ৪৯%)।
বিশ্বের মোট বনাঞ্চলের ৫৪% মাত্র পাঁচটি দেশে কেন্দ্রীভূত - রুশ ফেডারেশন, ব্রাজিল, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন।
গ্লোবাল ফরেস্ট রিসোর্সেস অ্যাসেসমেন্ট (GFRA)
GFRA হল, একমাত্র বৈশ্বিক মূল্যায়ন যা প্রতিটি দেশের সরকারি তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এতে বন দুটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে -
প্রাকৃতিকভাবে পুনর্জন্ম হওয়া বন ও রোপিত বন
এর মধ্যে প্রাথমিক বন - যেখানে শুধুমাত্র স্থানীয় প্রজাতি থাকে - প্রাকৃতিকভাবে পুনর্জন্ম হওয়া বনের একটি উপশ্রেণি। অন্যদিকে রোপিত বনের মধ্যে প্ল্যান্টেশন ফরেস্ট (যেমন রাবার বাগান) এবং অন্যান্য রোপিত বন অন্তর্ভুক্ত।
ভারতে রোপিত বন সম্প্রসারণে সাফল্য
বাঁশের বন:
বিশ্বব্যাপী বাঁশের বনাঞ্চল প্রায় ৩০.১ মিলিয়ন হেক্টর, যার মধ্যে ২১.২ মিলিয়ন হেক্টর (৭০%) এশিয়ায় অবস্থিত, এবং এর মধ্যে ১১.৮ মিলিয়ন হেক্টর ভারতের দখলে। ১৯৯০ থেকে ২০২৫-এর মধ্যে বিশ্বে বাঁশের বন ৮.০৫ মিলিয়ন হেক্টর বৃদ্ধি পেয়েছে, যার বড় অংশই চীন ও ভারতের অবদান।
রাবার বাগান (Rubber Plantations):
রাবার বাগানের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বে পঞ্চম স্থানে, প্রায় ৮৩১ হাজার হেক্টর রাবার চাষ রয়েছে।
ভারতে কৃষি-বনায়ন
ভারত ও ইন্দোনেশিয়া মিলে এশিয়ার প্রায় ১০০% কৃষি-বনায়ন এলাকা ধারণ করে, যা প্রায় ৩৯.৩ মিলিয়ন হেক্টর।
বৈশ্বিক স্তরে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া একত্রে বিশ্বের ৭০% কৃষি-বনায়ন এলাকা (মোট ৫৫.৪ মিলিয়ন হেক্টর) দখল করে।
বনক্ষয় ও নীট পরিবর্তন
১৯৯০–২০২৫ সময়কালে ভারত নেট বন বৃদ্ধির রিপোর্ট করেছে, অর্থাৎ বন সম্প্রসারণ বনক্ষয়ের চেয়ে বেশি হয়েছে। এটি মূলত বনায়ন প্রকল্প ও পুনরুদ্ধার উদ্যোগের ফল।
ভারত ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী বৈশ্বিক কাঠ সংগ্রহের ৯% অবদান রাখে এবং এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
FAO বিশ্লেষণ: ১৯৯০–২০২৫ সময়কালের বন নির্গমন ও শোষণ প্রবণতা
বৈশ্বিক চিত্র:
২০২১–২০২৫ সময়ে বিশ্বের বনসমূহ প্রতি বছর ৩.৬ বিলিয়ন টন (Gt) CO₂ শোষণ করেছে।
একই সময়ে বন রূপান্তরজনিত নির্গমন ছিল ২.৮ Gt CO₂, যা শোষণ প্রভাবকে আংশিকভাবে ক্ষতিপূরণ করেছে।
ফলে মোটের ওপর বনভূমি প্রতি বছর ০.৮ Gt CO₂ বায়ুমণ্ডল থেকে অপসারণ করেছে।
ইউরোপ ও এশিয়ায় এই শোষণ সর্বাধিক ছিল — যথাক্রমে ১.৪ Gt CO₂ ও ০.৯ Gt CO₂ প্রতি বছর।
ভারতের অর্জনগুলি
২০২১–২০২৫ সময়কালে ভারতের বনসমূহ প্রতি বছর ১৫০ মিলিয়ন টন (Mt) CO₂ অপসারণ করেছে।
ফলে, ভারত বিশ্বের শীর্ষ ৫ কার্বন শোষক দেশের মধ্যে স্থান পেয়েছে।
এশিয়ায় বনসমূহ, যার মধ্যে ভারতও অন্তর্ভুক্ত, প্রতি বছর ০.৯ Gt CO₂ শোষণ করেছে এবং বননিধন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
ভারতে বনস্থিতি ও পরিবর্তন (ISFR 2023 অনুযায়ী)
মোট বনাঞ্চল: ৭,১৫,৩৪৩ বর্গ কিমি (দেশের ভৌগোলিক এলাকার ২১.৭৬%)
বৃহত্তম বনাঞ্চলযুক্ত রাজ্য: মধ্যপ্রদেশ (৭৭,০৭৩ বর্গ কিমি), অরুণাচল প্রদেশ (৬৫,৮৮২ বর্গ কিমি), এবং ছত্তিশগড় (৫৫,৮১২ বর্গ কিমি)
ম্যানগ্রোভ বন: ৪,৯৯২ বর্গ কিমি, প্রধানত, আন্দামান ও নিকোবর, গুজরাট, মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ: ভারতে ১০৬-টি জাতীয় উদ্যান, ৫৭৩-টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ১১৫-টি সংরক্ষণ রিজার্ভ এবং ২২০-টি কমিউনিটি রিজার্ভ রয়েছে।
বনাঞ্চল বৃদ্ধির জন্য সরকারি উদ্যোগসমূহ:
১. বাজেট বরাদ্দ (2025–26)
MoEFCC-র বরাদ্দ ₹৩,৪১২.৮২ কোটি টাকা, যা ২০২৪–২৫ সালের তুলনায় ৯% বৃদ্ধি।
মোট বরাদ্দের ৯৬% (₹৩,২৭৬.৮২ কোটি) রাজস্ব ব্যয়ে ব্যবহার হবে।
২. ন্যাশনাল মিশন ফর আ গ্রীন ইন্ডিয়া (GIM)
শুরু: ফেব্রুয়ারি ২০১৪, জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন কর্মপরিকল্পনার (NAPCC) অধীনে।
লক্ষ্য: ৫ মিলিয়ন হেক্টর নতুন বন ও গাছের আচ্ছাদন বৃদ্ধি এবং আরও ৫ মিলিয়ন হেক্টর বন/অবনমিত ভূমির গুণমান উন্নয়ন।
উপকারিতা: জীববৈচিত্র্য, জল সম্পদ ও কার্বন সঞ্চয় বৃদ্ধি, প্রায় ৩০ লক্ষ বননির্ভর পরিবারের জীবিকা উন্নয়ন।
৩. ন্যাশনাল অ্যাফরেস্টেশন প্রোগ্রাম (NAP)
উদ্দেশ্য: অবনমিত বনাঞ্চল ও সংলগ্ন এলাকার পুনর্জন্ম।
প্রয়োগ কাঠামো: রাজ্য পর্যায়ে State Forest Development Agency (SFDA), বিভাগীয় পর্যায়ে Forest Development Agency (FDA) এবং গ্রাম পর্যায়ে Joint Forest Management Committees (JFMCs)।
মিশন লাইফ (Mission LiFE – Lifestyle for Environment)
রাষ্ট্র সংঘের পরিবেশ সমাবেশ সুস্থায়ী জীবনধারার ওপর Mission LiFE-এর ভিত্তিতে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
MeriLiFE Portal: ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত উদ্যোগকে উৎসাহিত করে সুস্থায়ী জীবনযাপন প্রচারে চালু হয়েছে।
"এক পেড় মা কে নাম" উদ্যোগ: নিজের মা বা মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে গাছ লাগানোর এক আবেগময় আহ্বান।
উপসংহার
বিশ্বব্যাপী বনতথ্য স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, একদিকে যেখানে কিছু দেশে বননিধন হ্রাস পাচ্ছে, অপরদিকে বনায়নের মাধ্যমে বনাঞ্চল দ্রুত বাড়ছে। ভারতের মোট বনাঞ্চলের ক্ষেত্রে নবম স্থানে উন্নতি এবং বার্ষিক নীট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে স্থিতি তার দৃঢ় জাতীয় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
বন সম্প্রসারণ, সুস্থায়ী বন ব্যবস্থাপনা ও গ্রিন ইন্ডিয়া মিশনের মতো কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভারত পরিবেশ সংরক্ষণ ও বিশ্বব্যাপী জলবায়ু ক্ষেত্রে সদর্থক পদক্ষেপে তার অঙ্গীকার দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র:
Press Information Bureau:
- https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2181416
- https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=1894898
- https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=1941073
- https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2088477
- https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2086742
- https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2115836
- https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2107821
- https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2041462
Ministry of Environment, Forest and Climate Change (MoEFCC), Government of India:
9. https://moef.gov.in/uploads/pdf-uploads/English_Annual_Report_2024-25.pdf
10. https://moef.gov.in/green-india-mission-gim
Ministry of External Affairs:
11. https://www.mea.gov.in/press-releases.htm?dtl%2F38161%2FThe_3rd_Voice_of_Global_South_Summit_2024
Food and Agriculture Organizationof the United Nations / Global Forest Data:
12. https://www.fao.org/newsroom/detail/global-deforestation-slows--but-forests-remain-under-pressure--fao-report-shows/en
13. https://www.fao.org/home/en/
14. https://www.fao.org/forest-resources-assessment/en/
15. https://openknowledge.fao.org/server/api/core/bitstreams/2dee6e93-1988-4659-aa89-30dd20b43b15/content/FRA-2025/forest-extent-and-change.html#forest-area
16. https://openknowledge.fao.org/server/api/core/bitstreams/2dee6e93-1988-4659-aa89-30dd20b43b15/content/cd6709en.html
17. https://openknowledge.fao.org/server/api/core/bitstreams/12322cae-5b20-4be2-927a-72a86fd319e9/content
18. https://www.fao.org/4/ae352e/AE352E11.htm
Download in PDF
*****
SSS/SS/.....
(Factsheet ID: 150431)
Visitor Counter : 1
Provide suggestions / comments