PIB Headquarters
ভারতের প্রতিবন্ধী অধিকার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার
प्रविष्टि तिथि:
02 DEC 2025 12:04PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
মূল বার্তা
* ভারতের প্রতিবন্ধী অধিকারের পরিকাঠামো ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছে এবং ২০১৬ সালের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার আইন সাম্য, মর্যাদা ও সার্বিক সহজলভ্যতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
* নতুন সুগম্য ভারত অ্যাপ, আইএসএল ডিজিটাল রিপোজিটরি (৩ হাজার ১৮৯-টি ই-কনটেন্ট ভিডিও-সহ), এবং আইএসএল প্রশিক্ষণের জন্য চ্যানেল ৩১, ইত্যাদি উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার প্রযুক্তিনির্ভর এক বাধামুক্ত ডিজিটাল ও শিক্ষাগত পরিবেশ গড়ে তুলছে।
* দিব্য কল্প মেলা’র মতো প্রধান কর্মসূচিগুলি দেশজুড়ে দিব্যাঙ্গ শিল্পী ও উদ্যোক্তাদের ক্রেতাদের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে এবং স্থানীয় পণ্যের বিকাশ গতিশীল করেছে।
এক অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহজলভ্য ভারতের লক্ষ্য
ভারতে বৈচিত্র্যকে জাতীয় পরিচয়ের ভিত্তি মনে করা হয় এবং এর মধ্যেই প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকারকে কেন্দ্র করে এক বলিষ্ঠ অভিযান চলছে। প্রত্যেক নাগরিককে প্রকৃত অন্তর্ভুক্তি ও স্বনির্ভরতার পরিসরে আনা সরকারের লক্ষ্য।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী দেশে ২ কোটি ৬৮ লাখ প্রতিবন্ধী মানুষ আছেন। এটি মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ২১ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ পুরুষ এবং ১ কোটি ১৮ লাখ নারী। ২০১৬ সালের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার আইন অনুযায়ী এমন দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক, মানসিক, বৌদ্ধিক বা সংবেদনগত কাঠিন্য যেগুলি সমাজে সমানভাবে অংশগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে, সেগুলিকে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
অগ্রগামী নীতি এবং গতিশীল কর্মসূচির ভিত্তিতে সরকার প্রতিবন্ধকতার কারণে বঞ্চনা রোধ করছে এবং প্রত্যেকের জন্য সুযোগ, সক্ষমতা ও সমাজে সক্রিয় অংশগ্রহণের পথ প্রসারিত করছে।
প্রতিবন্ধী অধিকারের জন্য ভারতের আইনগত ও নীতিগত পরিকাঠামো
ভারতের আইনগত ও নীতিগত পরিকাঠামো সক্রিয় ও গতিশীল পরিবেশ তৈরি করেছে। প্রবেশযোগ্যতা, শিক্ষা এবং ক্ষমতায়ন এখন শুধু লক্ষ্য নয়, বাস্তব সত্য।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সংক্রান্ত আইন, ২০১৬
এই আইনটি ২০১৬ সালে প্রণয়ন করা হয় এবং ১৯ এপ্রিল ২০১৭ থেকে কার্যকর হয়। এটি ১৯৯৫ সালের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আইনকে প্রতিস্থাপন করে। এই আইনে ২১ ধরনের প্রতিবন্ধকতাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় ও সকল রাজ্যসরকারকে প্রবেশযোগ্যতা, বৈষম্যহীণতা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আইনি দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি, একটি কেন্দ্রীভূত সনদপ্রদানের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সমাজে স্বাধীনভাবে বসবাসের অধিকারকে প্রাধান্য হয়েছে।
অটিজম, সেরিব্রাল প্যালসি, মানসিক-সহ একাধিক প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কল্যাণের জন্য জাতীয় ট্রাস্ট আইন, ১৯৯৯
এই আইনটি অটিজম, সেরিব্রাল প্যালসি, মানসিক-সহ একাধিক প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কল্যাণের জন্য একটি জাতীয় সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। তাদের সুরক্ষা, সহায়তা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজের নির্বিঘ্ন পরিচালনা এই আইনের উদ্দেশ্য।
রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া আইন, ১৯৯২
রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া বা আরসিআই প্রথমে ১৯৮৬ সালে একটি নিবন্ধিত সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯৩ সালে সংসদ প্রণীত আইনের মাধ্যমে এটি একটি স্বয়ংশ্বাসিত সংস্থায় পরিণত হয়। ১৯৯২ সালের আরসিআই আইন ২০০০ সালে সংশোধিত হয়। এই আইনের মাধ্যমে কাউন্সিলকে পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণের পাঠ্যসূচি মানসম্মত করা এবং পুনর্বাসন ও বিশেষ শিক্ষার ক্ষেত্রে যোগ্য বিশেষজ্ঞদের কেন্দ্রীয় তালিকার রক্ষণাবেক্ষণও কাউন্সিলের দায়িত্ব।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার আইন, ২০১৬ বাস্তবায়ন প্রকল্প (সিপিডিএ)
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার আইন, ২০১৬ বাস্তবায়ন প্রকল্প বা সিপিডিএ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন বিভাগ পরিচালিত একটি সমন্বিত কর্মসূচি। প্রবেশযোগ্যতা, অন্তর্ভুক্তি, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দক্ষতা উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রকল্পের মাধ্যমে আইনটির বাস্তবায়ন সম্ভব করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হয়।
সরকারের প্রধান উদ্যোগ ও কর্মসূচি
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশযোগ্যতা এবং অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
সুগম্য ভারত অভিযান
৩ ডিসেম্বর ২০১৫-এ শুরু হওয়া সুগম্য ভারত অভিযান অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রবেশযোগ্য সমাজ গঠনের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সবার অংশগ্রহণ, সবার উন্নয়ন, সবার বিশ্বাস- এই লক্ষ্য স্মরণ করে এই অভিযান দীর্ঘদিনের প্রবেশ-বাধা নির্মূল করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। পরিকাঠামো, পরিবহন ব্যবস্থা এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, এই তিন ক্ষেত্রে সর্বজনীন প্রবেশযোগ্যতা নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য।
ভারত রাষ্ট্রসংঘের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার বিষয়ক সম্মেলনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে প্রবেশযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ।
ডিজিটাল উপায়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত গঠনের পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন বিভাগ ২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক পার্পল ফেস্টে উন্নত সুগম্য ভারত অ্যাপ চালু করেছে।
* উন্নত অ্যাপটি ব্যবহারকারী-উপযোগী, এখানে প্রবেশযোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়ছে এবং এটি ভারতের ডিজিটাল প্রবেশযোগ্যতার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সহজেই তথ্য, সরকারি প্রকল্প ও প্রয়োজনীয় পরিষেবার সুবিধা নিতে পারবেন।
* অ্যাপে রয়েছে প্রবেশযোগ্যতার মানচিত্রন ব্যবস্থা। এতে জনগণই প্রবেশযোগ্যতা বিষয়ক তথ্যের উৎস হয়ে উঠবেন।
* প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত প্রকল্প, বৃত্তি, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্যও অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত।
* একটি অভিযোগ নিষ্পত্তি বিভাগ রয়েছে, যেখানে অনুপযুক্ত বা অপ্রবেশযোগ্য পরিকাঠামো সম্পর্কে সরাসরি অভিযোগ জানানো যায়। এতে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পায়। অ্যাপটি সহায়ক প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, একাধিক ভারতীয় ভাষায় উপলব্ধ এবং অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএসে পাওয়া যায়।
অ্যাসিস্ট্যান্স টু ডিজেব্ল্ড পার্সন্স ফর পারচেস অ্যান্ড ফিটিং অফ এইডস অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েন্সেস (এডিপি)
এডিপি প্রকল্পটি ১৯৮১ সালে চালু হয়। এর মূল লক্ষ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুস্থায়ী, বৈজ্ঞানিকভাবে নির্মিত এবং আধুনিক সহায়ক সরঞ্জাম প্রদান করে শারীরিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পুনর্বাসনে সহায়তা করা।
এই সরঞ্জাম প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আরও স্বনির্ভরভাবে জীবনযাপন করতে সাহায্য করে, প্রতিবন্ধকতার প্রভাব কমায় এবং ভবিষ্যৎ সমস্যা প্রতিরোধ করে। প্রকল্পের আওতায় প্রদত্ত সকল সরঞ্জাম মান ও নিরাপত্তার জন্য সঠিকভাবে প্রত্যয়ন করা আবশ্যক। প্রয়োজনে সহায়ক সরঞ্জাম প্রদানের আগে সংশোধনমূলক অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থাও করা হয়।
দীনদয়াল দিব্যাঙ্গন পুনর্বাসন প্রকল্প (ডিডিআরএস)
ভারত সরকারের এই প্রকল্পটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করা বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
১৯৯৯ সালে শুরু হয়ে ২০০৩ সালে সংশোধিত এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমান সুযোগ, ন্যায়, সামাজিক সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নের জন্য সক্ষম পরিবেশ গড়ে তোলা। প্রকল্পটি স্বেচ্ছাসেবীদের অংশগ্রহণকেও উৎসাহিত করে।
ন্যাশনাল দিব্যাঙ্গন ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এনডিএফডিসি)
ন্যাশনাল দিব্যাঙ্গন ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। ১৯৯৭ সালে 'নন প্রফিট' সংস্থা হিসেবে গঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি রাজ্যস্তরের সংস্থা এবং সরকারি ও আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাংকগুলির মাধ্যমে স্বনির্ভরতা ও আয়বর্ধক কর্মসূচির জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
এনডিএফডিসি দুটি প্রধান ঋণ-সহায়তা প্রকল্পের পরিচালনা করে
* দিব্যাঙ্গন স্বাবলম্বন যোজনা: ব্যক্তিগত স্তরের প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তাদের স্বল্পসুদের ঋণ প্রদান।
* বিশেষ মাইক্রোফাইন্যান্স যোজনা: স্বনির্ভর এবং যৌথ গোষ্ঠীর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর্থিক ক্ষমতায়ন।
আর্টিফিশিয়াল লিম্বস ম্যানুফ্যাকচারিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (অ্যালিমকো)
অ্যালিমকো একটি কেন্দ্রীয় সরকারি পিএসিউ। কোম্পানিজ অ্যাক্ট ২০১৩ অনুসারে নিবন্ধিত এই সংস্থা সমাজকল্যাণ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য সহায়ক সরঞ্জাম উৎপাদনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত। এটি সম্পূর্ণভাবে ভারত সরকারের মালিকানাধীন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ মানের সহায়ক সরঞ্জাম ন্যায্য মূল্যে প্রদান করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কাছে এডিপি প্রকল্পের সুবিধা আরও বিস্তৃতভাবে পৌঁছে দিতে অ্যালিমকো দেশজুড়ে বিভিন্ন জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলিতে প্রধানমন্ত্রী দিব্যাশা কেন্দ্র স্থাপন শুরু করেছে।
অ্যালিমকো বিভিন্ন ধরনের সহায়ক সরঞ্জাম উৎপাদন এবং সকল শ্রেণীর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রয়োজন মেটানোর উদ্দেশ্যে পরিচালিত দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান।
ইউনিক আইডি ফর পারসনস উইথ ডিজেবিলিটিজ (ইউডিআইডি)
ইউনিক আইডি ফর পারসনস উইথ ডিজেবিলিটিজ প্রকল্পের উদ্দেশ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের একটি জাতীয় তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা এবং প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি ইউনিক ডিজেবিলিটি আইডেনটিটি কার্ড (ইউডিআইডি) প্রদান করা। এই উদ্যোগটি স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং সরকারী সুবিধা প্রদানকে সহজ করে, একই সঙ্গে সারা দেশে সমতা বজায় রাখে। এছাড়া বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরে উপকারভোগীদের শারীরিক এবং আর্থিক অগ্রগতি পর্যবেক্ষণেও সহায়তা করে।
ইউডিআইডি প্রকল্পের লক্ষ্য ইউনিভার্সাল আইডি এবং প্রতিবন্ধিতা সনদ প্রদানের জন্য একটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল ব্যবস্থা তৈরি করা। এই ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে-
* কেন্দ্রীয় ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে সারা দেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তথ্য পাওয়া
* প্রতিবন্ধকতা সনদ বা ইউডিআইডি কার্ডের জন্য অনলাইন আবেদন (অফলাইন আবেদন গ্রহণের পর ডিজিটাইজ করা হয়)
* হাসপাতাল বা মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতার শতাংশ নির্ধারণের নিপুণ ব্যবস্থা
* প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ডুপ্লিকেট রেকর্ড দূরীকরণ
* প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অনলাইন নবীকরণ ও তথ্য আপডেট
* এমআইএস ভিত্তিক রিপোর্টিং পরিকাঠামো
* প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিভিন্ন সরকারি সুবিধা ও প্রকল্পের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা
* ভবিষ্যতে অতিরিক্ত প্রতিবন্ধকতার অন্তর্ভুক্তিকরণে সক্ষম একটি ব্যবস্থা নির্মাণ- বর্তমানে ২১-টি প্রতিবন্ধকতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং ভবিষ্যতে আপডেট হতে পারে
দিব্যাঙ্গন কার্ড বা ই টিকেটিং ফটো আইডেনটিটি কার্ড
দিব্যাঞ্জন কার্ড প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের রেল পরিচয়পত্র। এটি ট্রেনে ভ্রমণের সময় ছাড়ের সুযোগ দেয়। আবেদনকারীরা ভারতীয় রেলের দিব্যাঙ্গন পোর্টাল অথবা কেন্দ্রীয় সরকারের পরিষেবা পোর্টালের মাধ্যমে কার্ডের জন্য আবেদন বা নবীকরণ করতে পারেন। বৈধ প্রতিবন্ধকতা সনদ বা ছাড়ের সনদের ভিত্তিতে এই কার্ড প্রদান করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে ইউডিআইডি গ্রহণযোগ্য।
পিএম দক্ষ ডিইপিডি পোর্টাল
পিএম দক্ষ ডিইপিডি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন দপ্তরের তৈরি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। এটি প্রতিবন্ধী মানুষ, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, নিয়োগকারী সংস্থা এবং চাকরি প্রদানকারীদের জাতীয় দক্ষতা ও কর্মসংস্থান ব্যবস্থার আওতায় একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করে।
পোর্টালে দুটি প্রধান মডিউল রয়েছে
* দিব্যাঙ্গন দক্ষতা বিকাশ- এই মডিউলের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। এতে ইউডিআইডি ভিত্তিক নিবন্ধন, ২৫০-টিরও বেশি দক্ষতা প্রশিক্ষণ কোর্স, অনলাইন শেখার উপকরণ, প্রশিক্ষণে অংশীদার, পাঠ্যসামগ্রী এবং প্রশিক্ষকদের সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়।
* দিব্যাঙ্গন রোজগার সেতু- এই মডিউলটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে সংযুক্ত করে। এখানে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার জন্য তিন হাজারেরও বেশি নিয়োগের সুযোগ পাওয়া যায়। অ্যামাজন, ইউথ ফর জবস এবং গোদরেজ প্রপার্টিজের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও উন্নত করেছে।
জাতীয় ইনস্টিটিউট এবং কম্পোজিট রিজিওনাল সেন্টার (সিআরসি)
দেশে নয়টি জাতীয় ইনস্টিটিউট রয়েছে। এগুলি হল-
- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এমপাওয়ারমেন্ট অফ পারসনস উইথ ভিজ্যুয়াল ডিজেবিলিটিজ, দেরাদুন
- আলি ইয়াভার জং ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট ফর স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং ডিজেবিলিটিজ
- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এমপাওয়ারমেন্ট অফ পারসনস উইথ ইন্টেলেকচুয়াল ডিজেবিলিটিজ, সেকেন্দ্রাবাদ
- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর এমপাওয়ারমেন্ট অফ পারসনস উইথ মাল্টিপল ডিজেবিলিটিজ, চেন্নাই
- পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ফিজিক্যালি হ্যান্ডিক্যাপড, দিল্লি
- স্বামী বিবেকানন্দ ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ রিহ্যাবিলিটেশন ট্রেনিং অ্যান্ড রিসারচ, কটক
- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর লোকোমোটর ডিজেবিলিটিজ, কলকাতা
- ইন্ডিয়ান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার
- ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার
- অটল বিহারী বাজপেয়ী ডিজেবলড স্পোর্টস ট্রেনিং সেন্টার, গোয়ালিয়র
এই প্রতিষ্ঠানগুলি মূলত শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী-সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী মানুষের সহায়তা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে।
এছাড়া, বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ৩০-টি কম্পোজিট রিজিওনাল সেন্টার অনুমোদিত হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলি পুনর্বাসন পরিষেবা, পেশাদার প্রশিক্ষণ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও প্রয়োজন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পার্পল ফেস্ট ২০২৫- ভারতের অন্তর্ভুক্তির উৎসব
পার্পল ফেস্ট ভারতে অন্তর্ভুক্তি, প্রাপ্যতা এবং প্রতিবন্ধী মানুষের ক্ষমতায়নের সবচেয়ে বড় উৎসব। এই উৎসবে সারা দেশের দিব্যাঞ্জন, উদ্ভাবক, শিক্ষাবিদ এবং নীতিনির্ধারকরা একত্রিত হন। অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে সেরা প্রয়োগ, সহায়ক প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এখানে প্রদর্শিত হয়।
গোয়ায় আয়োজিত এ বছরের পার্পল ফেস্টে সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল এবং শিক্ষামূলক উদ্যোগ ঘোষণা করেছে
* সংস্কার করা সুগম্য ভারত অ্যাপ উন্নত প্রাপ্যতা প্ল্যাটফর্মটিতে স্ক্রিন রিডার সুবিধা, ভয়েস নেভিগেশন, বহুভাষিক ইন্টারফেস এবং সরাসরি অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রয়েছে
* শিক্ষায় প্রাপ্যতা তিনটি বড় উদ্বোধন
১. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আইইএলটিএস প্রশিক্ষণ হ্যান্ডবুক যা বিলিভ ইন দ্য ইনভিজিবল এর সহায়তায় তৈরি। এতে অভিযোজিত উপকরণ এবং ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ-ভিত্তিক ভিডিও সংযুক্ত রয়েছে
২. পূর্ব প্রশিক্ষণ স্বীকৃতি (আরপিএল), ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজে ব্যাখ্যাকর্মী সার্টিফিকেশন (সিসলি) অথবা এসওডিএ এবং কোডা শিক্ষার্থীদের জন্য দক্ষতা কোর্স। এই পরীক্ষায় ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ১৭-জন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন এবং সকলে সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করেন
৩. আমেরিকান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ এবং ব্রিটিশ সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ বিষয়ক বিশেষ মৌলিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারে শুরু হয়েছে। এর উদ্দেশ্য, পেশাদার ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহারকারীদের এএসএল এবং বিএসএলের মৌলিক ধারণা, ব্যাকরণ, বাক্যগঠন এবং শব্দভান্ডার শেখানো এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও সুযোগ সৃষ্টি করা
ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ বা আইএসএল-এর প্রসার
ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার ২০১৫ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন দপ্তরের অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি সারা দেশে আইএসএল উন্নয়নের প্রধান কেন্দ্র।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সরকার পিএম ই বিদ্যা চ্যানেল ৩১ প্রতিষ্ঠা করে। এটি ডিটিএইচ প্ল্যাটফর্মে শুধুমাত্র আইএসএল প্রশিক্ষণের জন্য নিবেদিত। শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, বিশেষ শিক্ষক এবং ব্যাখ্যাকর্মীরা এই চ্যানেলের প্রধান উপভোক্তা।
২০২৫ সালের সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ দিবসে আইএসএলআরটিসি বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল আইএসএল সংগ্রহ প্রকাশ করে। এতে মোট ৩১৮৯-টি ই কনটেন্ট ভিডিও যুক্ত হয়েছে। এগুলি শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী সম্প্রদায়ের জন্য সহজলভ্য।
ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ অভিধানে এখন ১০০০০-টির বেশি শব্দ রয়েছে। ডিজিটাল সংগ্রহে রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে ২২০০ শব্দতালিকার ভিডিও। ইতিহাস ভূগোল অর্থনীতি সমাজবিজ্ঞান-সহ অন্যান্য বিষয়ের ভিডিও এখানে পাওয়া যায়। আইএসএল এখন একটি স্বতন্ত্র শিক্ষাবিষয় হিসেবেও উঠে এসেছে এবং এক হাজারের বেশি নির্দেশনামূলক ভিডিও শিক্ষাদানকে সহজ করেছে।
এই প্রচেষ্টাকে সাহায্য করেছে প্রশস্ত অ্যাপ। বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রতিবন্ধকতা শনাক্তকরণ এবং স্ক্রিনিং এ এই অ্যাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখন পর্যন্ত ৯২ লক্ষের-ও বেশি শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক ধাপে স্ক্রিন করা হয়েছে।
২০২০ সালে ভারতীয় সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার এবং এনসিইআরটি একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। এর মাধ্যমে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবই এবং অন্যান্য শিক্ষাসামগ্রীকে আইএসএল এ অনুবাদ করার কাজ শুরু হয়। ২০২৬ সালের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা।
সমাপ্তি
ভারতে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক কাজের অগ্রগতি প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার এবং সম্ভাবনার প্রতি গভীর অঙ্গীকার প্রদর্শন করে। বিভিন্ন সংস্থা এবং উদ্যোগ অন্তর্ভুক্তি, সৃজনশীলতা এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিভা প্রদর্শন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে এই কার্যাবলী মানুষকে সক্ষম করে এবং সমাজকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলে।
তথ্যসূত্র
Click here to see pdf
****
SSS/RS/.......
(रिलीज़ आईडी: 2198096)
आगंतुक पटल : 7