PIB Headquarters
azadi ka amrit mahotsav

ভারতের জাহাজ নির্মাণ শিল্পের পুনরুত্থান: নতুন দিগন্তে যাত্রা

Posted On: 14 OCT 2025 4:20PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, অক্টোবর ১৪, ২০২৫ 

 

মূল বিষয়গুলি

সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ ৬৯,৭২৫ কোটি টাকার জাহাজ নির্মাণ এবং সামুদ্রিক সংস্কার প্রকল্পগুলি উন্মোচন করা হয়েছে।

২৪,৭৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ সহ এই প্রকল্পটি আর্থিক সহায়তা, শিপ-ব্রেকিং ক্রেডিট নোট এবং জাতীয় স্তরে জাহাজ নির্মাণ মিশনের মাধ্যমে উৎপাদনকে উৎসাহিত করবে।

২৫,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ সহ এই তহবিলটি বিনিয়োগ এবং সুদে উৎসাহ দেবে।

মোট ১৯,৯৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ সহ এই প্রকল্পটি জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রগুলির জন্য মূলধন সহায়তা, ঝুঁকি কভারেজ এবং ক্ষমতা-নির্মাণ প্রদান করবে।

জাতীয় স্তরে জাহাজ নির্মাণকে উৎসাহিত করার জন্য বৃহৎ জাহাজগুলিকে পরিকাঠামো  প্রদান করা হয়েছে।

সংক্ষিপ্ত বিবরণ

ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে এবং প্রযুক্তির শক্তিতে চালিত হয়ে, ভারতের জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতির জন্য প্রস্তুত। ভারতের সামুদ্রিক ক্ষেত্র ঐতিহাসিকভাবেই এই উপমহাদেশকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত করার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসেবে কাজ করেছে, যেখানে শত শত বছরের সমুদ্রযাত্রা ও বাণিজ্য এর অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি করেছে। ভারতের জাহাজ নির্মাণের ঐতিহ্য সিন্ধু সভ্যতা পর্যন্ত পুরনো; বর্তমান গুজরাটের লোথালের মত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলির প্রমাণ থেকে জানা যায় যে সেখানে জাহাজঘাট ও সামুদ্রিক বাণিজ্য ছিল। লোথালের ডকটিকে  বিশ্বের প্রাচীনতম পরিচিত জোয়ার-ভাটার ডক হিসেবে মনে করা হয়।

জাহাজ নির্মাণ শিল্প, যাকে প্রায়শই "ভারী কারিগরি বিদ্যার জননী" বলা হয়, সেটি কর্মসংস্থান তৈরি, বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও কৌশলগত স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে একটি মূখ্য ভূমিকা পালন করে। ভারতের জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্র আর্থিক প্রভাব সৃষ্টি করে; প্রতিটি বিনিয়োগ কর্মসংস্থানকে ৬.৪ গুণ বাড়ায় এবং মূলধনের ১.৮ গুণ ফেরত দেয়, যা এর বৃদ্ধি ও উন্নয়নের চালিকা শক্তিকে প্রদর্শন করে। এই শিল্পটি দূরবর্তী, উপকূলীয় এবং গ্রামীণ অঞ্চলগুলিতে বৃহৎ আকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রাখে। এর উন্নয়ন ও প্রসারণকে আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি মূল চালক হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রে বৃদ্ধি ও উন্নয়ন

স্বাধীনতার পর, জাহাজ নির্মাণ শিল্পটি মূলত মাজাগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (মুম্বাই), গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (কলকাতা), এবং হিন্দুস্তান শিপইয়ার্ড লিমিটেড (বিশাখাপত্তনম)-এর মতো সরকারি ইউনিটগুলিতে কেন্দ্রীভূত ছিল। গত এক দশকে, এই ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলির প্রবেশের ফলে ভারতের শিপিং এবং সামুদ্রিক ক্ষেত্র উল্লেখযোগ্য রূপান্তর দেখেছে, যেখানে ক্রুজ পর্যটন, অভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহন এবং বন্দর পরিকাঠামোতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। কৌশলগত বিনিয়োগ, নীতি সংস্কার এবং বিস্তৃত জলপথগুলি সম্মিলিতভাবে পণ্য চলাচল, উপকূলীয় সংযোগ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগগুলিকে উৎসাহিত করেছে, যার ফলে এই ক্ষেত্রটি অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক সংহতির একটি মূল চালক হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত, ভারতের হাতে ১,৫৫২টি ভারতীয় পতাকাযুক্ত জাহাজ রয়েছে, যার মোট গ্রস টনেজ  হল ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার।

প্রধান সরকারি নীতি ও উদ্যোগসমূহ

জাহাজ নির্মাণ আর্থিক সহায়তা নীতি : সবুজ জ্বালানি বা হাইব্রিড প্রপালশন সিস্টেম ব্যবহারকারী জাহাজগুলির জন্য ২০–৩০% আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।

প্রথম প্রত্যাখ্যানের অধিকার : সরকারি টেন্ডারের মাধ্যমে জাহাজ কেনার ক্ষেত্রে ভারতীয় জাহাজ নির্মান কারখানাগুলি অগ্রাধিকার পায়। সংশোধিত অগ্রাধিকারের ক্রমে ভারত-নির্মিত, ভারতীয় পতাকাযুক্ত এবং ভারতীয় মালিকানাধীন জাহাজগুলিকে আয়ত্তে আনা হয়েছে।

সরকারি সংগ্রহের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার : 'মেক ইন ইন্ডিয়া অর্ডার, ২০১৭' অনুযায়ী ২০০ কোটি টাকার নিচে মূল্যের জাহাজগুলিকে শুধুমাত্র ভারতীয় শিপইয়ার্ড থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

গ্রিন টাগ ট্রানজিশন প্রোগ্রাম : কার্বন নির্গমন কমাতে পরিবেশবান্ধব টাগবোট  পরিচালনকে উৎসাহিত করে।

হরিৎ নৌকা নির্দেশিকা : অভ্যন্তরীণ জলপথের জাহাজগুলিতে সবুজ প্রযুক্তি গ্রহণের জন্য উৎসাহ যোগায়।

স্ট্যান্ডার্ড টাগ ডিজাইন: স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে এবং একতা  নিশ্চিত করতে প্রধান বন্দরগুলির ব্যবহারের জন্য পাঁচটি ভিন্ন প্রকারের নকশা প্রকাশ করা হয়েছে।

সমঝোতা স্মারক ও সহযোগিতা :
ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব, পরিকাঠামোগত সম্প্রসারণ এবং আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে তার জাহাজ নির্মাণ ও সামুদ্রিক ক্ষেত্রে ক্ষমতাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই প্রয়াসগুলির লক্ষ্য হল স্থানীয় উৎপাদনকে শক্তিশালী করা, বৈদেশিক বহরের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং এই সম্পূর্ণ ক্ষেত্র জুড়ে সুস্থায়ী বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা।

শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া এবং তেলের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা একটি যৌথ মালিকানার সংস্থা  তৈরির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে! লক্ষ্য একটি বিদেশি জাহাজের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা এবং জাতীয় ডকইয়ার্ডগুলোতে তৈরি ভারতীয় জাহাজের চাহিদা তুঙ্গে তোলা।

প্রধান বন্দরগুলি এবং উপকূলীয় রাজ্যগুলি যৌথ বিনিয়োগে জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্র গড়ে তোলার জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এর লক্ষ্য হল ২০৪৭ সালের মধ্যে  ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি জাহাজ নির্মাণকারী দেশের মধ্যে স্থান দেওয়া। এই কেন্দ্রগুলি জাহাজ নির্মান কারখানা, গবেষণা ও উন্নয়ন, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প, এবং সবুজ উদ্ভাবনকে একত্র করে সুস্থায়ী মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কাজ করবে।

কোচিন শিপইয়ার্ড এবং মাজাগাঁও ডক তামিলনাড়ুর সংস্থাগুলির সঙ্গে বড় আকারের জাহাজ নির্মাণ কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য সমঝোতা স্মারক  স্বাক্ষর করেছে। এর মধ্যে একটি ১৫,০০০ কোটি টাকার কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত, যার বার্ষিক সক্ষমতা হবে ১ মিলিয়ন গ্রস টনেজ  এবং এটি ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।

সাগরমালা ফাইন্যান্স কর্পোরেশন প্রধান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে, যাতে সবুজ জাহাজ নির্মাণ, নৌবহরের আধুনিকীকরণ এবং সামুদ্রিক ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন ধরনের তহবিল উন্মুক্ত করা যায়। এই পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু ক্ষেত্রের তহিবলকে দেশের মূলধনের সাথে মিশ্রিত করে একটি শক্তিশালী বিনিয়োগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

কোচিন শিপইয়ার্ড এবং এইচডি কোরিয়া শিপবিল্ডিং ভারতে বৃহৎ বাণিজ্যিক জাহাজ তৈরির জন্য অংশীদারিত্বে যুক্ত হয়েছে। এই উদ্যোগটি সিএসএল-এর নতুন ড্রাই ডক এবং কোচিতে পরিকল্পিত ৩,৭০০ কোটি টাকার একটি ফেব্রিকেশন সেন্টারের সাহায্যে সমর্থিত হবে। আশা করা হচ্ছে, এর ফলে হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প নির্ভর সরবরাহ শৃঙ্খল আরও শক্তিশালী হবে।

জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রের পুনরুত্থান 

সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রের জন্য সরকারের সাম্প্রতিক ঘোষণাগুলি জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি, দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের সুযোগ উন্নত করা এবং একটি বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা তৈরির উপর জোর দিয়েছে। এই পদক্ষেপগুলির লক্ষ্য হল আধুনিক পরিকাঠামো এবং নীতি সংস্কারের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং ভারতের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতাকে শক্তিশালী করা।

ভিত্তি ১: জাহাজ নির্মাণ আর্থিক সহায়তা প্রকল্প - 
এই প্রকল্পটি, যা একটি ভিত্তিস্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত, সেটির লক্ষ্য হল, ভারতের স্থানীয় জাহাজ নির্মাণ ক্ষমতা এবং সামুদ্রিক উদ্ভাবনকে একত্রিত করা। মোট ২৪,৭৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ-সহ, এটি দেশীয় অর্থাৎ স্থানীয় জাহাজ নির্মাণ ক্ষমতা এবং সামুদ্রিক উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করার জন্য একটি মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এটি ভারতের জাহাজ নির্মাণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে লক্ষ্যযুক্ত উৎসাহ, কৌশলগত মিশন এবং জীবনচক্রের সহায়তাকে অন্তর্ভুক্ত করে।

উপাদান ১: আর্থিক সহায়তা 

উদ্দেশ্য: ভারতীয় জাহাজ নির্মান কারখানাগুলির খরচের অসুবিধা দূর করতে এবং তাদের প্রতিযোগিতা করার ক্ষমতা বাড়াতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।

উৎসাহের কাঠামো :

১০০ কোটি টাকার নিচে মূল্যের জাহাজগুলির জন্য ১৫% সহায়তা।

১০০ কোটি টাকার উপরে মূল্যের জাহাজগুলির জন্য ২০% সহায়তা।

সবুজ, মিশ্র বা বিশেষ জাহাজগুলির জন্য ২৫% সহায়তা।

দেশীয় মূল্য সংযোজন : উৎসাহ পেতে হলে কমপক্ষে ৩০% দেশীয় মূল্য সংযোজন  প্রয়োজন, যা স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করবে।

আর্থিক বরাদ্দ : মোট ২০,৫৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদিত হয়েছে, যা ২০৩৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

উপাদান ২: শিপ-ব্রেকিং ক্রেডিট নোট

উৎসাহের মূল্য: ভারতীয় শিপইয়ার্ডে জাহাজ ভাঙা হলে, জাহাজটির স্ক্র্যাপ মূল্যের ৪০% সমপরিমাণ একটি ক্রেডিট নোট দেওয়া হবে।

ব্যবহার: এই নোটটি ভারতীয় জাহাজ নির্মাণ কারখানায় একটি নতুন জাহাজ তৈরির খরচের বিপরীতে ব্যবহার করা যাবে।

নমনীয়তা: এই নোটগুলি একত্রিত করা যাবে, হস্তান্তরযোগ্য হবে এবং ৩ বছরের জন্য বৈধ থাকবে।

বাজেট বরাদ্দ: এই প্রকল্পের জন্য মোট ৪,০০১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

উপাদান ৩: জাতীয় জাহাজ নির্মাণ মিশন

মিশনের নেতৃত্ব: সকল ক্ষেত্রে দেশীয় জাহাজ নির্মাণ উদ্যোগগুলির পরিচালনা ও তত্ত্বাবধান করা।

তহবিল ব্যবস্থাপনা: আবেদনগুলি মূল্যায়ন করা, দাবিগুলি যাচাই করা এবং সময়মতো তহবিল বন্টন নিশ্চিত করা।

সংগ্রহ সমন্বয় : চাহিদার সামগ্রিক হিসাব করা এবং কাঠামোবদ্ধ, কেন্দ্রীভূত সংগ্রহ প্রক্রিয়াকে সম্ভব করে তোলা।

বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব: দেশীয় ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিদেশি সহযোগিতাগুলি চিহ্নিত করা ও সহজতর করা।

প্রকল্পের মেয়াদ: ১০ বছরের মেয়াদ, তবে, প্রকল্পের সময়কালের পরেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দায়বদ্ধতাগুলি  পালন করা হবে।

ভিত্তি ২: সামুদ্রিক ক্ষেত্রে উন্নয়ন তহবিল (২৫,০০০ কোটি টাকা)

সামুদ্রিক উন্নয়ন তহবিলের লক্ষ্য হল ভারতের আমদানি - রপ্তানির বাণিজ্যের মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী করা। এই বাণিজ্য সামুদ্রিক পরিবহনের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল - পরিমাণের দিক থেকে ৯৫% এবং মূল্যের দিক থেকে ৬৫% বাণিজ্য এই মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর কৌশলগত গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও, এই ক্ষেত্রটি সাশ্রয়ী অর্থায়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে ক্রমাগত কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই বাধাগুলি দূর করা ভারতের সামুদ্রিক অর্থনীতির পূর্ণ সম্ভাবনাকে উন্মোচন করার জন্য অপরিহার্য।

উপাদান ১: সামুদ্রিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগ তহবিল 

তহবিলের পরিমাণ: প্রাথমিক বরাদ্দ হিসেবে ২০,০০০ কোটি টাকা।

অর্থায়ন ও বিনিয়োগকারী: ইকুইটি-ভিত্তিক অর্থায়ন এবং অতিরিক্ত বিনিয়োগকারী অবদান এই সামুদ্রিক বিনিয়োগ তহবিলের মূলধন কাঠামোকে শক্তিশালী করবে।

কৌশলগত ক্ষেত্রগুলি 

ভারতীয় শিপিং সক্ষমতা (টনেজ) বৃদ্ধি করা।

শিপইয়ার্ড, জাহাজ মেরামত সুবিধা এবং সহায়ক শিল্পগুলির বিকাশ করা।

বন্দর ও সংশ্লিষ্ট পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করা।

মোডাল শেয়ার উন্নত করার জন্য অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় জলপথ পরিবহনকে উৎসাহিত করা।

আর্থিক কাঠামো 

এটি একটি মিশ্র অর্থায়ন কাঠামো হিসেবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে সরকারি তহবিলের পাশাপাশি, বেসরকারি ক্ষেত্রে বিনিয়োগও একত্রিত করা যায়।

৪৯% মূলধন সরকার থেকে  কম সুদের হারে পাওয়া যাবে।

৫১% বাণিজ্যিক মূলধন বহুপাক্ষিক ঋণদাতা, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সার্বভৌম তহবিল থেকে সংগ্রহ করা হবে।

উপাদান ২: সুদে উৎসাহ দেওয়ার তহবিল

তহবিলের পরিমাণ: এই উদ্যোগের জন্য ৫,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

প্রকল্পের মেয়াদ: মোট ১০ বছর, অর্থাৎ ২০৩৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

উৎসাহভিত্তিক কাঠামো :

৩% পর্যন্ত সুদে উৎসাহ  প্রদান করা হবে।

এই উৎসাহ ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দেওয়া হবে।

এটি ভারতীয় শিপইয়ার্ডগুলিকে দেওয়া ঋণের উপর প্রযোজ্য হবে।

বাস্তবায়ন: মনোনীত বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলির  মাধ্যমে এটি সমন্বিত হবে।

ভিত্তি ৩: জাহাজ নির্মাণ উন্নয়ন প্রকল্প (১৯,৯৮৯ কোটি টাকা)

উন্নত পরিকাঠামো, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জাহাজ নির্মাণকে উৎসাহিত করার জন্য দীর্ঘমেয়াদী সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

জাহাজ নির্মাণ উন্নয়ন প্রকল্প 

জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রগুলির জন্য মূলধন সহায়তা:

গ্রিনফিল্ড ক্ষেত্র: ৯,৯৩০ কোটি টাকা

ব্রাউনফিল্ড সক্ষমতার সম্প্রসারণ : ৮,২৬১ কোটি টাকা

জাহাজ নির্মাণ ঝুঁকি কভারেজ: ১,৪৪৩ কোটি টাকা

সক্ষমতা উন্নয়ন উদ্যোগ: ৩০৫ কোটি টাকা

মোট তহবিল : ১৯,৯৮৯ কোটি টাকা

মেয়াদ : ১০ বছর (২০৩৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত)

ভিত্তি ৪: আইনি, নীতিগত এবং প্রক্রিয়াগত সংস্কার

আইনি, নীতিগত এবং প্রক্রিয়া সংস্কারের অংশ হিসেবে, বৃহৎ জাহাজগুলিকে পরিকাঠামোগত মর্যাদা  দেওয়া হয়েছে, যাতে সেগুলির জন্য সাশ্রয়ী অর্থায়ন সহজে পাওয়া যায়। একই সাথে, চাহিদার একত্রীকরণের  মাধ্যমে স্থানীয় জাহাজ নির্মাণকে উৎসাহিত করতে সমন্বিত প্রয়াস চলছে। সামুদ্রিক আইনগুলির আধুনিকীকরণ এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য একাধিক আইনগত আধুনিকীকরণও আনা হয়েছে।

আইনি, নীতিগত ও প্রক্রিয়া সংস্কার

বৃহৎ জাহাজের জন্য পরিকাঠামো মর্যাদা: 

দীর্ঘমেয়াদী, কম খরচের অর্থায়ন সহজ করার জন্য ২০২৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহৎ জাহাজগুলিকে পরিকাঠামোগত মর্যাদা  দেওয়া হয়েছে।

চাহিদার একত্রীকরণ : তেল ও গ্যাস রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির  মাধ্যমে চাহিদা একত্রীকরণের লক্ষ্য হল আগামী ১০ বছরে ভারতে ১১০-টিরও বেশি জাহাজ তৈরি করা।

আইনি সংস্কার আনা হয়েছে:

বিলস অফ লেডিং আইন, ২০২৫

ক্যারেজ অফ গুডস বাই সি আইন, ২০২৫

কোস্টাল শিপিং আইন, ২০২৫

মার্চেন্ট শিপিং আইন, ২০২৫

ইন্ডিয়ান পোর্টস আইন, ২০২৫

সংস্কারের প্রভাব 

এই সংস্কারগুলির লক্ষ্য হল, ভারতের শিপিং এবং বন্দর পরিকাঠামোকে বিশ্বমানের পর্যায়ে উন্নীত করা, যার ফলে জাহাজ নির্মাণ ও সামুদ্রিক ক্ষমতাতে উল্লেখযোগ্য কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ এবং সম্প্রসারণ ঘটবে। এগুলি জাহাজ সংখ্যা এবং বন্দরের পণ্য পরিচালন ক্ষমতারও  তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বৃদ্ধি ঘটাবে, যার মাধ্যমে এই ক্ষেত্রের সামগ্রিক প্রতিযোগিতা ক্ষমতা শক্তিশালী হবে।

উপসংহার 

ভারতের জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্র ধারাবাহিক প্রগতিশীল উদ্যোগ এবং নীতি সংস্কারের হাত ধরে বৃদ্ধির এক আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে প্রবেশ করছে। এই পদক্ষেপগুলির লক্ষ্য হল পরিকাঠামোকে আধুনিক করা, স্থানীয় উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা, যা দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করবে।

উদ্ভাবন, স্থায়িত্ব এবং দক্ষতা উন্নয়নের ওপর মনোযোগ দেওয়ার ফলে, এই ক্ষেত্রটি মেরিটাইম ইন্ডিয়া ভিশন ২০৩০-এর কৌশলগত লক্ষ্যগুলি পূরণ করার জন্য সুপ্রতিষ্ঠিত। এছাড়াও, এর সম্প্রসারণ বিকশিত ভারত ২০৪৭-এর বৃহত্তর জাতীয় আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে নিবিড়ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় অবদান রাখবে। শিল্প এবং সরকারের মধ্যে অবিচ্ছিন্ন সহযোগিতার মাধ্যমে, ভারতের জাহাজ নির্মাণ শিল্প দেশের সামুদ্রিক শক্তির একটি মূল ভিত্তি এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির চালক হতে চলেছে।

তথ্যসূত্র :

Press Information Bureau:

https://www.pib.gov.in/Pressreleaseshare.aspx?PRID=2035583

https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2168994

https://www.pib.gov.in/PressReleaseIframePage.aspx?PRID=2085228

https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2110319

https://www.pib.gov.in/PressReleseDetailm.aspx?PRID=2172488  

https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2170575

Click here for pdf file.

 

SSS/AS.......


(Release ID: 2179466) Visitor Counter : 3