প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

কৃত্রিম মেধা সংক্রান্ত বার্ষিক বিশ্ব অংশীদারিত্ব সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 12 DEC 2023 7:13PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির ভারত মণ্ডপমে কৃত্রিম মেধা সংক্রান্ত বার্ষিক বিশ্ব অংশীদারিত্ব সম্মেলন বা গ্লোবাল পার্টনারশিপ অন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (GPAI) শিখর সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল AI এক্সপো-ও ঘুরে দেখেন। GPAI হল একটি বহুমাত্রিক – অংশীদারিত্ব ভিত্তিক উদ্যোগ যার ২৯-টি সদস্য দেশ গুরুত্বপূর্ণ নানা ক্ষেত্রে AI-সম্পর্কিত তাত্ত্বিক এবং প্রয়োগিক অনুশীলনের মধ্যে সংযোগ গড়ে তুলতে চায়। ভারত ২০২৪ সালে GPAI-এর প্রধান পরিচালক।

সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বিশেষভাবে উদ্যোগী, সেই সন্ধিক্ষণে আগামী বছর ভারত জিপিএআই শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবে – এই বিষয়টি অত্যন্ত আনন্দের। কৃত্রিম বুদ্ধমত্তার ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুটি দিকই  উঠে আসছে এবং এক্ষেত্রে প্রতিটি দেশকে সুবিবেচনা প্রসূত সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন। এআই শিল্পক্ষেত্রের কুশীলবদের সঙ্গে আলাপচারিতা এবং জিপিএআই শীর্ষ সম্মেলন সম্পর্কে মত বিনিময়ের কথা স্মরণ করেন তিনি। তিনি বলেন যে, এআই ছোট - বড় নির্বিশেষে প্রতিটি দেশের উপর প্রভাব ফেলেছে এবং এই ক্ষেত্রটি নিয়ে এগোতে হবে সাবধানতার সঙ্গে। জিপিএআই শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনা মানবতাকেন্দ্রিক হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,  মানবসম্পদ এবং ধারণার দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত আজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে বিশেষ ভূমিকায় আসীন। এই বিষয়ে ভারতীয় তরুণ তরুণীরা দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছেন এবং এখানে একটি প্রাণবন্ত উদ্ভাবনা পরিমণ্ডল তৈরি হয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রদর্শনীর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তরুণ প্রজন্ম প্রযুক্তির মাধ্যমে ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের চেষ্টায় নিয়োজিত। প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি চালু হওয়া এআই কৃষি চ্যাটবট-এর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন - যা কৃষকদের কৃষিকাজের বিভিন্ন দিকগুলিতে সহায়তা করবে। স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং ধারাবাহিক উন্নয়নী লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের বিষয়টিও তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের মন্ত্র হচ্ছে সকলের সঙ্গে সকলের বিকাশ। সকলের উন্নয়নের জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ চায় এই দেশ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত একটি জাতীয় কর্মসূচি চালু করা হবে এবং খুব শীঘ্রই এআই মিশনের সূচনা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। এই উদ্যোগ স্টার্টআপ ক্ষেত্রে সহায়ক হবে এবং কৃষি, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে কৃত্রিম মেধার প্রয়োগ বাড়াবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদী। টিয়ার ২ এবং টিয়ার ৩ শহরগুলিতে শিক্ষাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত দক্ষতার প্রসারের উদ্যোগের কথাও  উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে। ভারতের জাতীয় এআই পোর্টালের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এআইআরএডব্লুএটি (AIRAWAT) উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন এবং বলেন, এই মঞ্চ খুব শীঘ্রই সব গবেষণাগার, শিল্প পরিসর ও স্টার্টআপের জন্য মুক্ত করে দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্মাণে এআই-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। মানুষকে সংযুক্ত করার ক্ষমতা থাকায় এই প্রযুক্তি শুধু অর্থনৈতিক বিকাশ নয়, সামাজিক ন্যায়ের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত ইতিবাচক হয়ে উঠতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ এই লক্ষ্যেই পরিচালিত হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। বিগত দশকে প্রযুক্তির সুফল পাওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য প্রকট থাকায় সামাজিক অসাম্য বেড়েছে বলে তিনি সাবধান করে দেন।

যেকোনও ইতিবাচক প্রবণতাকে ধরে রাখতে গেলে নমনীয়, স্বচ্ছ এবং বিশ্বাসযোগ্যতার বাতাবরণ তৈরি করা দরকার বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। কৃত্রিম মেধার জয়যাত্রায় প্রতিটি দেশের সক্রিয় অংশগ্রহণের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।

কৃত্রিম মেধার সম্ভাব্য নেতিবাচক দিকগুলি সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রী সাবধান করে দিয়েছেন। একবিংশ শতকে মানুষের বিকাশ যাত্রার অন্যতম এই প্রকৌশলের দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রয়োগ ধ্বংসের রাস্তা খুলে দিতে পারে বলেও তাঁর মন্তব্য। এ প্রসঙ্গে তিনি ডিপ ফেক, সাইবার অপরাধ, তথ্য চুরি এবং জঙ্গি সংগঠনগুলির কাছে এআই প্রকৌশল পৌঁছে যাওয়ার মতো মারাত্মক দিকগুলি সম্পর্কে সতর্ক করে দেন। এজন্যই জি-২০ গোষ্ঠীর পরিচালকের দায়িত্বে থাকার সময় ভারতের উদ্যোগে প্রস্তাবিত ননতুন দিল্লি ঘোষণাপত্রের প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী – যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গীর কথা বলা হয়েছে, বিশেষ করে উল্লেখ করা হয়েছে দক্ষিণ বিশ্বের দেশগুলির বিষয়টি।  সারা বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ন্যায়সঙ্গত প্রয়োগ সংক্রান্ত একটি বিধি কাঠামো অনুসৃত হওয়া উচিত বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত কোনও প্রকৌশলের বাণিজ্যিকীকরণের আগে তার যথাবিহিত পরীক্ষণের গুরুত্বও তুলে ধরেন নরেন্দ্র মোদী।

সরকরার পক্ষের অংশীদারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্যাদির বিশ্লেষণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বাঞ্ছনীয় এবং এই সব তথ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রকৌশলের প্রয়োগের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায় কিনা তাও খতিয়ে দেখতে হবে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলার ওপরেও তিনি জোর দেন।

স্থানীয় ভাষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রকৌশলের প্রয়োগ এবং কৃত্রিম মেধা ব্যবহার করে প্রাচীন ভাষার সংরক্ষণ ও প্রচলনের ওপরেও প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি সংস্কৃত জ্ঞানভাণ্ডারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।

এই সম্মেলন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আদান প্রদানে বিশেষ কার্যকর হয়ে উঠবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৈদ্যুতিন ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব-সহ দেশ বিদেশের প্রতিনিধিরা।

১২-১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ দু-দিনের এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা যোগ দিয়েছেন। 

 

********

SSS/ AC/SG


(Release ID: 2178993) Visitor Counter : 9