প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
জাতীয় পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত শিক্ষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভাষণ দিয়েছেন
Posted On:
04 SEP 2025 10:02PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে জাতীয় পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত শিক্ষকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। ভারতীয় সমাজে শিক্ষকদের প্রতি যে সম্মান জানানো হয়, তার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষকরা দেশ গঠনের কাজে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। তাঁদের সম্মান জানানো শুধুমাত্র একটি প্রথা নয়, বরং বলা চলে, সারা জীবন ধরে যে অধ্যবসায় তাঁরা দেখিয়ে থাকেন, তার প্রতি স্বীকৃতিদান।
প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কারের জন্য যে সমস্ত শিক্ষকরা নির্বাচিত হয়েছেন তাঁদের সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি বলেছেন, এই নির্বাচন তাঁদের কঠোর পরিশ্রম এবং একনিষ্ঠভাবে শিক্ষাদানের স্বীকৃতি। শিক্ষকরা শুধু বর্তমানের নন, ভবিষ্যতের দেশ গড়ার কাজেও নিয়োজিত। জাতীয় সেবায় তাঁদের অবদান সর্বোচ্চ। এ বছরের পুরস্কার প্রাপকদের পাশাপাশি, দেশজুড়ে লক্ষ লক্ষ শিক্ষকরা শিক্ষার জন্য যারা তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের সকলকে শুভেচ্ছা জানান তিনি । এই পেশায় তাঁদের অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে। দেশ গড়ার কাজে এইসব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদানের জন্য তিনি তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাও নিবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রী ভারতের উন্নয়নে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। এ দেশের গুরু-শিষ্য পরম্পরাকে পবিত্র এক সম্পর্ক বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন গুরু শুধু শিক্ষাদানই করেন না, জীবনের পথ প্রদর্শকের ভূমিকাও পালন করেন। “আমরা উন্নত ভারত গড়ার পথে এগিয়ে চলেছি। এই পরম্পরা আমাদের শক্তি। আপনাদের মতো শিক্ষকরা এই ঐতিহ্যকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আপনারা শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীদের অক্ষরের সঙ্গে পরিচিতিই ঘটান না, দেশের তরুণ প্রজন্মকে দেশ গঠনের কাজে অনুপ্রাণিত করেন।”
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, শক্তিশালী রাষ্ট্র ও সমাজ গঠন করার কাজে শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরাই ভিত গড়ার কাজটি করেন। পাঠক্রমে কখন পরিবর্তন আনতে হবে, সেই প্রয়োজনীয়তা শিক্ষকরাই উপলব্ধি করেন। “দেশ গঠনের কাজে এই একই ভাবনা নিয়ে সংস্কার সাধিত হচ্ছে। সংস্কারের এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং তা যুগোপযোগী হবে। আমাদের সরকারের এ এক দৃঢ় অঙ্গীকার।”
প্রধানমন্ত্রী দিল্লির লালাকেল্লার প্রাকার থেকে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তুলতে যে সংগঠিত সংস্কারের কথা উল্লেখ করেছিলেন, সেই বিষয়টি তাঁর ভাষণে আবারও স্থান পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি আপনাদের কথা দিয়েছিলাম যে দেওয়ালি এবং ছট পুজোর আগে জনগণ দ্বিগুণ উৎসাহে তা পালন করার রসদ পাবেন। এই ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে জিএসটি পরিষদ এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জিএসটি এখন আগের থেকে আরও সরল করা হয়েছে। বলা যায়, জিএসটি-র এখন মূলত দুটি ধাপ – ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ। নবরাত্রির প্রথম দিনে, ২২ সেপ্টেম্বর, সোমবার, নতুন এই হার কার্যকর হবে।” নবরাত্রির প্রথম দিনে দেশের কোটি কোটি পরিবার বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আরও ব্যয়সাশ্রয়ী মূল্যে কিনতে পারবেন। বিভিন্ন জিনিসপত্রের ওপর করের হার কমানোর ফলে এ বছরের ধনতেরাস আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
শ্রী মোদী বলেন, স্বাধীন ভারতে অর্থনীতিতে সবথেকে বড় সংস্কার ছিল জিএসটি। দেশকে বহু কর ব্যবস্থার জটিল এক প্রক্রিয়া থেকে জিএসটি মুক্ত করেছিল। একবিংশ শতাব্দীর ভারতে জিএসটি-র নতুন সংস্কারকে কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম ‘জিএসটি ২.০’ হিসেবে বর্ণনা করছে, যা আসলে উন্নয়ন ও সহায়তার ক্ষেত্রে ডবল ডোজ বলা চলে। এই সংস্কারের ফলে সাধারণ পরিবারগুলির অর্থ সাশ্রয় বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে অর্থনীতির গতি শক্তিশালী হবে। “এই উদ্যোগ দরিদ্র, নব্য-মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, কৃষক, মহিলা, ছাত্রছাত্রী ও যুব সম্প্রদায়ের জন্য সুবিধাজনক হবে। তরুণ যেসব পেশাদার নতুন কাজ পেয়েছেন, যানবাহনের ওপর কর হ্রাস করায় তাঁরাও উপকৃত হবেন। বিভিন্ন পরিবারের বাজেট সাশ্রয় হবে, ফলস্বরূপ জীবনের মানোন্নয়ন হবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এনডিএ সরকার কর ব্যবস্থার এই পরিবর্তনমূলক সংস্কার গ্রহণ করার ফলে ভারতীয় পরিবারগুলির আর্থিক বোঝা যথেষ্ট কমবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের আগে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়কালে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর ওপর প্রচুর করের বোঝা ছিল। টুথপেস্ট, সাবান, রান্নার বাসনপত্র, বাইসাইকেল, এমনকি শিশুদের লজেন্সের ওপরও ১৭-২৮ শতাংশ কর চাপানো ছিল। হোটেলে বেসিক সার্ভিসের ওপর যথেষ্ট কর ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হত বিভিন্ন রাজ্যের লেভি। “যদি সেই একই কর ব্যবস্থা আজও বহাল থাকত, তাহলে ১০০ টাকা খরচ করলে তার মধ্যে ২০-২৫ টাকা কর বাবদ দিতে হত। অন্যদিকে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার এই ধরনের পণ্য ও পরিষেবাগুলির ওপর করের হার মাত্র ৫ শতাংশ ধার্য করেছে। দেশের লক্ষ লক্ষ পরিবার এর প্রত্যক্ষ সুবিধা পাচ্ছেন।”
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন, এই সংস্কারগুলির মধ্য দিয়ে ভারতীয় পরিবারগুলির – মধ্যবিত্ত, কৃষক, মহিলা এবং তরুণ পেশাদারদের যাতে অর্থ সঞ্চয় হয়, জীবনযাত্রা সহজ হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকারের একনিষ্ঠ অঙ্গীকার প্রতিফলিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০১৪ সালের আগে চিকিৎসা করানোর সময় বিপুল অর্থ ব্যয় হত। বিভিন্ন রোগ নির্ধারণের কিটের ওপর কংগ্রেস সরকার ১৬ শতাংশ কর ধার্য করেছিল। বর্তমানে এই হার কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর নাগরিকরা ব্যয়সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন। “আগের সরকারের সময়কালে বাড়ি বানানো খুব ব্যয়সাপেক্ষ ছিল। সিমেন্টের ওপর ২৯ শতাংশ এবং এসি ও টিভির মতো অ্যাপ্লায়েন্সের ওপর ৩১ শতাংশ কর ধার্য করা হত। আমাদের সরকার এই হার কমিয়ে ১৮ শতাংশ করেছে। ফলে, লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাপনে সুবিধা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগের কর ব্যবস্থায় কৃষকরাও যথেষ্ট সমস্যায় পড়তেন। ট্র্যাক্টর, সেচের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং পাম্পিং সেটের ওপর ১২-১৪ শতাংশ হারে কর নেওয়া হত। আজ এইসব জিনিসগুলির মধ্যে বেশিরভাগকেই করমুক্ত করা হয়েছে অথবা কোনো কোনো সামগ্রীর ওপর ৫ শতাংশ হারে কর নেওয়া হচ্ছে। ফলে, কৃষিকাজে ব্যয় হ্রাস হয়েছে এবং গ্রামাঞ্চলে জীবনযাত্রা সহজ হয়েছে। সরকারের এই সংস্কারমুখী উদ্যোগ আসলে দেশের মানুষের ওপর করের বোঝা কমানো, কৃষকের ক্ষমতায়ন এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটানোর অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বস্ত্রশিল্প, হস্তশিল্প এবং চর্মশিল্পে জিএসটি-র হার কমায় সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের কর্মীদের সুবিধা হবে। এর সুফল যেমন কর্মী এবং শিল্পোদ্যোগীরা পাবেন, পাশাপাশি জামাকাপড় ও জুতোর দাম কমবে। “স্টার্ট-আপ, এমএসএমই এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সরকারের কর হ্রাসের সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবিধা হবে, পরিচালনগত ক্ষেত্রে নমনীয়তা বৃদ্ধি পাবে।” সুস্থ থাকার ওপর বর্তমান সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই, জিম, স্যালোন এবং যোগ-এর মতো ক্ষেত্রে জিএসটি-র হার কমানো হয়েছে। ফলে, দেশের যুব সম্প্রদায় সুস্থ থাকতে আরও উৎসাহিত হবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিকশিত ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই সংস্কার যথেষ্ট কার্যকর হবে, যেখানে যুব সম্প্রদায়ের চাহিদা, শিল্পোদ্যোগ এবং স্বাস্থ্য পরিষেবাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
শ্রী মোদী জিএসটি-র সর্বশেষ সংস্কারকে ভারতের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, দেশের উদীয়মান অর্থনীতিতে এই সংস্কার “পঞ্চরত্ন”-এর ভূমিকা পালন করবে। “প্রথমত, কর ব্যবস্থাকে যথেষ্ট সরল করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ভারতবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে। তৃতীয়ত, পণ্যের ব্যবহার এবং আর্থিক প্রবৃদ্ধি আরও শক্তিশালী হবে।
চতুর্থত, সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে। এর ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে। পঞ্চমত, সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভাবনা আরও শক্তিশালী হবে – যা বিকশিত ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে অংশীদারিত্ব আরও বাড়বে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর সরকারের নীতি হল “নাগরিক দেব ভবঃ”। প্রত্যেক ভারতবাসীর কল্যাণসাধন করাই এই সরকারের অঙ্গীকার। এ বছর জিএসটি-র হার কমানোর পাশাপাশি, আয়করের হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হয়েছে। বর্তমানে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করলে কর দিতে হবে না। করদাতারা এই সব উদ্যোগগুলির সুফল পাবেন।
শ্রী মোদী বলেন, ভারতে মুদ্রাস্ফীতি যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জনমুখী সরকারের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। এর ফলে ভারতের উন্নয়নের হার প্রায় ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। বিশ্বের প্রথম সারির দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে ভারত স্থান করে নিয়েছে। এই অভূতপূর্ব সাফল্য আসলে ১৪০ কোটি ভারতবাসীর শক্তি ও অধ্যবসায়ের প্রতীক।
প্রধানমন্ত্রী আবারও জোর দিয়ে বলেন, তাঁর সরকার ভারতকে আত্মনির্ভর করে তুলতে সংস্কারের ধারা অব্যাহত রাখবে। “আত্মনির্ভর ভারত শুধুমাত্র একটি স্লোগান নয়, এটি অঙ্গীকারবদ্ধ এক আন্দোলন।” তিনি দেশের সমস্ত শিক্ষককে প্রত্যেক ছাত্রের মধ্যে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার মানসিকতার বীজ বপনের আহ্বান জানান। স্বনির্ভর ভারত গড়ে তুলতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহজ-সরল ভাষায় তার ব্যাখ্যা ছাত্রছাত্রীদের কাছে করার আহ্বান জানান তিনি। একটি দেশ যদি অন্য রাষ্ট্রের অপর নির্ভরশীল হয়, তাহলে সেই দেশ দ্রুত উন্নতি করতে পারে না। এই বিষয়টি ছাত্রছাত্রীদের বোঝানোর আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পরামর্শ দেন, আমদানি করা পণ্যসামগ্রী ব্যবহারের পরিবর্তে বিকল্প দেশীয় পণ্যসামগ্রী ব্যবহার করতে তাঁর যেন ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করেন। তিনি জানান, ভারতবর্ষ প্রতি বছর ভোজ্যতেল আমদানির জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করে। দেশের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হয়ে ওঠা প্রয়োজন।
মহাত্মা গান্ধীর স্বদেশী ভাবনাকে জাগ্রত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান প্রজন্মের দায়িত্ব হল সেই ভাবনাকে সফল করে তোলা। প্রত্যেক ছাত্রের নিজেকে প্রশ্ন করা উচিত, “আমি কিভাবে নিজের দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারি? দেশের চাহিদার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশ আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। আর তাই, প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে ভাবতে হবে, আমি আমার দেশকে কি দিতে পারি, দেশের চাহিদা পূরণে আমি কেমনভাবে সহায়তা করতে পারি?”
প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে উদ্ভাবন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহের প্রশংসা করেন। সফল চন্দ্রযান অভিযান লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশ শুক্লা মহাকাশ অভিযান শেষে ফিরে আসার পর তাঁর স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কিভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল, সেই প্রসঙ্গও তিনি উত্থাপন করেন। শিক্ষক-শিক্ষিকারা তরুণদের শিক্ষাদানের পাশাপাশি, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে সাহায্য করে থাকেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শ্রী মোদী জানান, বর্তমানে অটল ইনোভেশন মিশন এবং অটল টিঙ্কারিং ল্যাবের মাধ্যমে নানা ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে ১০ হাজার গবেষণাগার গড়ে উঠেছে। সরকার তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য আরও ৫০ হাজার পরীক্ষাগার নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছে। “এই উদ্যোগগুলির সাফল্য শিক্ষকদের অধ্যবসায়ের কারণে সম্ভব হয়েছে, কারণ তাঁরা পরবর্তী উদ্ভাবক প্রজন্মকে লালিত করেন।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ডিজিটাল জগতের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত করার জন্য যুব সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। সম্প্রতি সংসদে অনলাইন গেমিং নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ছাত্রছাত্রী ও পরিবারগুলিকে আর্থিকভাবে আকর্ষণীয় অথচ ক্ষতিকারক বিভিন্ন প্রচার থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই ক্ষতিকারক বিষয়গুলি সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের অবগত করতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গেমিং বাজারে ভারতের উপস্থিতি বাড়াতে তাঁর সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। এ দেশের চিরায়ত বিভিন্ন খেলাধূলা এবং উদ্ভাবনমূলক স্টার্ট-আপগুলিকে সহায়তা করতে হবে। “ছাত্রছাত্রীদের গেমিং এবং ডিজিটাল পদ্ধতির বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানাতে হবে। সরকার বিভিন্ন শিল্প সংস্থায় যুব সম্প্রদায়ের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
শ্রী মোদী ‘ভোকাল ফর লোকাল’ অভিযানে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। ভারতের গর্ব ও আত্মসম্মানের জন্য দেশীয় পণ্যসামগ্রীর ব্যবহার বাড়াতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্যোগী হতে হবে। স্কুলের বিভিন্ন প্রোজেক্টে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ পণ্যসামগ্রী ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাড়িতে, দেশে তৈরি পণ্যসামগ্রী ব্যবহারে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করতে হবে। ছাত্রছাত্রী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের এই বিষয়ে উৎসাহিত করার জন্য নানা রকমের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি, যাতে শৈশবেই তাদের মধ্যে দেশে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী ব্যবহারে আগ্রহ তৈরি হয়। শিল্পকলা বিষয় নিয়ে স্কুলে যে ক্লাস হয় সেখানে দেশে তৈরি পণ্যসামগ্রী ব্যবহারে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহিত করতে হবে। এইভাবে তারা ভারতে তৈরি পণ্য ব্যবহারে সারা জীবন আগ্রহী হবে।
প্রধানমন্ত্রী স্কুলগুলিকে ‘স্বদেশী সপ্তাহ’ এবং ‘স্থানীয় পণ্য দিবস’ পালনে উদ্যোগী হতে পরামর্শ দেন। ছাত্রছাত্রীরা তাদের পরিবারের কাছ থেকে স্থানীয় স্তরে উৎপাদিত বিভিন্ন ব্যবহৃত পণ্যসামগ্রীর বিষয়ে সকলকে অবহিত করবে। ঐ পণ্যগুলি কারা তৈরি করেছে, এগুলি আসলে কোথাকার জিনিস, এই বিষয়ে তাদের খোঁজখবর নিতে উৎসাহিত করতে হবে। “ছাত্রছাত্রী এবং স্থানীয় কারিগর ও হস্তশিল্পীদের মধ্যে মতবিনিময়ের সুযোগ তৈরি করতে হবে। এর ফলে দেশে তৈরি বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর গুরুত্ব সম্পর্কে তারা বুঝতে পারবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে যে পণ্যসামগ্রী উৎপাদিত হয়ে আসছে, সে সম্পর্কে তারা জানতে পারবে। জন্মদিনে স্থানীয় স্তরে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী উপহার হিসেবে দেওয়ার জন্য উৎসাহ দিতে হবে। এর মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত হবে। যুব সম্প্রদায়ের শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ গড়ে উঠবে এবং তাঁদের ব্যক্তিগত সাফল্য যে দেশের উন্নতি সঙ্গে যুক্ত, সেই বিষয়টি তাঁরা উপলব্ধি করতে পারবে।”
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, শিক্ষক-শিক্ষিকারা দেশ গঠনের কাজে নিষ্ঠা ভরে তাঁদের ভূমিকা পালন অব্যাহত রাখবেন। পরিশেষে, জাতীয় পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত শিক্ষকদের তিনি আবারও অভিনন্দন জানান।
SC/CB/DM
(Release ID: 2164273)
Visitor Counter : 2