প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
বিহারের সিওয়ানে ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী
Posted On:
20 JUN 2025 3:04PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২০ জুন, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বিহারের সিওয়ানে ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন। উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাবা মহেন্দ্রনাথ, বাবা হংসনাথ, মাতা ভবানী এবং মা অম্বিকা ভবানীর উদ্দেশে। দেশরত্ন ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ এবং লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণের স্মৃতিচারণা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিহারের সিওয়ান দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, গণতান্ত্রিক কাঠামো এবং সংবিধানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এই ভূমির সন্তান ব্রজকিশোর প্রসাদ কাজ করে গেছেন মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে।
আজ যেসব প্রকল্পের সূচনা হ’ল, সেগুলি সিওয়ান, সাসারাম, বক্সার, মোতিহারি, বেতিয়া এবং আরা অঞ্চলের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা নেবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এইসব উদ্যোগের সুবাদে দরিদ্র, দলিত, মহাদলিত এবং অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তাঁর সাম্প্রতিকতম বিদেশ সফরে সারা বিশ্বের নেতাদের কাছ থেকে ভারতের দ্রুত বিকাশ সম্পর্কে তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক বক্তব্য শুনেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। বিশ্বের তৃতীয় অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভারতের যাত্রায় বিহার বড় ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এই রাজ্যে বেহাল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চিত্র যেভাবে পাল্টে গেছে, তা এখানকার মানুষেরই অবদান বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। আগের আমলে ভুল নীতির জন্যই এই রাজ্যের বহু মানুষকে অন্য জায়গায় কাজ খুঁজতে যেতে হ’ত বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। বর্তমানে শ্রী নীতিশ কুমারের নেতৃত্বে বিহার বিকাশের পথে ফিরে এসেছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ১০-১১ বছরে এই রাজ্যে প্রায় ৫৫ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক তৈরি হয়েছে। ১.৫ কোটি বাড়িতে বিদ্যুৎ ও জলসংযোগ পৌঁছে গেছে। রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে ৪৫ হাজার সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র। এই বিকাশ যাত্রায় যাতে কোনও মহল বাধা সৃষ্টি না করতে পারে, সেজন্য মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দীর্ঘ সময়ে দেশে দারিদ্র্য দূরীকরণের শ্লোগানই শুধু শোনা যেত। কিন্তু, বাস্তবে এক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে বিগত দশকে। এই সময়ে ২৫ কোটি ভারতীয় দারিদ্র্যের গ্রাস থেকে মুক্ত হয়েছেন।
বর্তমান সরকার আবাসন সহ রেশন, বিদ্যুৎ ও জল পরিষেবা নিখরচায় কিংবা খুবই কম খরচে দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে চলেছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, শুধুমাত্র সিওয়ান জেলাতেই ৪.৫ লক্ষ পরিবার নলবাহিত জলসংযোগ পেয়েছেন। জোরদার করা হচ্ছে নিকাশি ব্যবস্থাপনারও।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় সংবিধান সকলের সমান সুযোগের কথা বলে। সেই অনুযায়ী, ‘সকলের সঙ্গে সকলের বিকাশ’ – এর মন্ত্রে এগিয়ে চলেছে তাঁর সরকার। কিন্তু, আগে দেশের বদলে পারিবারিক উন্নতিতেই বেশি জোর দেওয়া হ’ত। এই পরিবারবাদী রাজনীতির কঠোর বিরোধিতা করেছেন সংবিধানের অন্যতম রূপকার ডঃ বি আর আম্বেদকর। সম্প্রতি ডঃ আম্বেদকরের আলোকচিত্র অসম্মানিত হওয়ার ঘটনা ক্ষমার অযোগ্য বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এজন্য একটি রাজনৈতিক দলকে তীব্র কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিহারের মানুষ বাবাসাহেবের অসম্মান মেনে নেবেন না বলে তিনি নিশ্চিত।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিহারের রাজ্যপাল শ্রী আরিফ মহম্মদ খান, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতিশ কুমার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রাজীব রঞ্জন সিং, শ্রী জিতন রাম মাঞ্জি, শ্রী গিরিরাজ সিং, শ্রী চিরাগ পাসওয়ান প্রমুখ।
আজ প্রধানমন্ত্রী বিহারে যেসব প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন, তার মধ্যে রয়েছে - ৪০০ কোটি টাকার বৈশালী - দেউরিয়া রেল প্রকল্প। পাটলিপুত্র ও গোরখপুরের মধ্যে (ভায়া মুজফফরপুর ও বেতিয়া) বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেন তিনি। এছাড়াও, “মেক ইন ইন্ডিয়া – মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড” কর্মসূচিকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে মারহৌরা প্ল্যান্টে তৈরি অত্যাধুনিক লোকোমোটিভের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই কারখানায় তৈরি ইঞ্জিন রপ্তানী হবে গিনি প্রজাতন্ত্রে। নমামি গঙ্গে কর্মসূচির আওতায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে রূপায়িত ৬টি নিকাশি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রেরও উদ্বোধন হ’ল তাঁর হাতে। এছাড়াও, বিহারের বিভিন্ন শহরের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বেশ কয়েকটি নিকাশি ও জল প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন তিনি। বিহারে ৫০০ এমডব্লিউএইচ ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেমের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পটি রূপায়িত হচ্ছে মুজাফফরপুর, মোতিহারি, বেতিয়া, সিওয়ান এবং আরও কয়েকটি শহরের ১৫টি গ্রিড সাব-স্টেশনে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (শহর) – এর আওতায় ৫৩ হাজার ৬০০রও বেশি প্রাপককে প্রথম কিস্তির অর্থ প্রদান করেন তিনি। এছাড়াও, ঐ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬ হাজার ৬০০টি বাড়ির চাবি তুলে দেন প্রাপকদের হাতে।
SC/AC/SB
(Release ID: 2138053)