শিল্পওবাণিজ্যমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

ভারতীয় কফির চাহিদা বাড়ছে বিশ্বে

Posted On: 20 JAN 2025 3:54PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২০ জানুয়ারি , ২০২৫

 

ভারতে কফির প্রচলন হয়েছিল কয়েক শতাব্দী আগে। কিংবদন্তি মহাসন্ত বাবা বুদান ১৬০০ সালে কর্ণাটকের পাহাড়ে এনেছিলেন ৭টি মোচা বীজ। বাবা বুদানগিরির আশ্রম প্রাঙ্গণে সাধারণভাবে পোঁতা ওই বীজ থেকেই অজান্তে শুরু হয়েছিল বিশ্বে প্রথম সারির কফি উৎপাদক দেশ হিসেবে ভারতের উত্থান। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতে কফির চাষ ক্রমশ সাধারণ কৃষিকাজ থেকে হয়ে উঠেছে শিল্প। এদেশের কফি এখন সারা বিশ্বে বন্দিত। বিশ্বে ভারত এখন সপ্তম বৃহত্তম কফি উৎপাদক দেশ। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রপ্তানির পরিমাণ পৌঁছেছে ১.২৯ বিলিয়ন ডলারে, যা ২০২০-২১-এর ৭১৯.৪২ মিলিয়ন ডলারের দ্বিগুণ। 

ভারতীয় কফির অনন্য স্বাদ, গন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক চাহিদা বেড়ে চলায় রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। ২০২৫-এ জানুয়ারির প্রথমার্ধেই ভারত ৯,৩০০ টনের বেশি কফি রপ্তানি করেছে। ক্রেতাদের মধ্যে অন্যতম ইতালি, বেলজিয়াম এবং রাশিয়া। ভারতের কফি উৎপাদনের প্রায় তিন চতুর্থাংশ অ্যারাবিকা এবং রোবাসটা বিন। এগুলি রপ্তানি করা হয় আনরোস্টেড বিন হিসেবে। এছাড়াও মূল্য যুক্ত পণ্য যেমন, রোস্টেড এবং ইন্সট্যান্ট কফির চাহিদাও বাড়ছে। ফলে রপ্তানিও বাড়ছে। 

কাফে সংস্কৃতির উত্থানের কারণে উচ্চ আয়ের মানুষের কাছে চায়ের বদলে কফির আকর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় ভারতে কফির ব্যবহার নিয়মিত বেড়েই চলেছে। এই ধারা প্রধানত লক্ষ্য করা গেছে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও। ঘরোয়া কফি বিক্রির পরিমাণ ২০১২-র ৮৪,০০০ টন থেকে বেড়ে ২০২৩-এ হয়েছে ৯১,০০০ টন। এর থেকে বোঝা যায়, মানুষের পানীয়ের অভ্যাসে পরিবর্তন ঘটেছে। দৈনন্দিন জীবনে কফি হয়ে উঠেছে অপরিহার্য। 

ভারতের কফি প্রথানত উৎপন্ন হয় পশ্চিম এবং পূর্বঘাট পর্বতে, যে অঞ্চল জীববৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত। উৎপাদনে এগিয়ে কর্ণাটক যেখানে ২০২২-২৩এ উৎপন্ন হয়েছিল ২,৪৮,০২০ মেট্রিক টন। এর পরেই আছে কেরল এবং তামিলনাড়ু। এই এলাকাগুলি ছায়ায় চাষের জন্য পরিচিত তাতে শুধু কফি শিল্পেরই উপকার হচ্ছে তা নয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। ফলে, এই জীববৈচিত্র্র্যপূর্ণ এলাকায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক হচ্ছে। 

কফি উৎপাদন বাড়াতে এবং দেশে-বিদেশে বর্ধিত চাহিদা পূরণ করতে কফি বোর্ড অফ ইন্ডিয়া একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড কফি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (আইসিডিসি)-র মাধ্যমে জোর দেওয়া হচ্ছে উৎপাদন বৃ্দ্ধিতে, অপ্রচলিত অঞ্চল সহ চাষের এলাকা বাড়াতে এবং কফি চাষ সুস্থায়িকরণ সুনিশ্চিত করতে। এই পদক্ষেপগুলি একটি সার্বিক রণকৌশলের অঙ্গ যাতে ভারতের কফি শিল্প শক্তিশালী হয়, বাড়ে উৎপাদন এবং বিশ্বে প্রতিযোগিতার মোকোবিলা করতে পারে। 

এই সাফল্যের একটি বড় উদাহরণ আরাকু ভ্যালি। যেখানে প্রায় ১,৫০,০০০ আদিবাসী পরিবার কফি বোর্ড এবং ইন্টিগ্রেটেড ট্রাইবাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (আইটিডিএ)-র সহযোগিতায় কফির উৎপাদন বাড়িয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। এই সাফল্যের পিছনে আছে গিরিজন কোঅপারেটিভ কর্পোরেশন (জিসিইসি)-এর দেওয়া ঋণ। এর থেকে বোঝা যায় কীভাবে কফি চাষ সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন করছে এবং আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্নকে সফল করতে সাহায্য করছে। 

এইসব উদ্যোগ, এবং তার সঙ্গে রপ্তানির জন্য উৎসাহভাতা ও লজিস্টিক সংক্রান্ত সহায়তা সব কিছু মিলে ভারতের কফি শিল্পের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। ঘরোয়া উৎপাদন এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামুখিনতার উন্নতি করতে এগুলি সাহায্য করেছে। আন্তর্জাতিক কফি বাজারে ভারতকে অগ্রগণ্য দেশ হিসেবে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছে। 


SC/AP/NS


(Release ID: 2094576) Visitor Counter : 10


Read this release in: English , Urdu , Hindi , Tamil