প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

ইকোনমিক টাইমস বিশ্ব নেতৃত্ব ফোরামে প্রধানমন্ত্রী ভাষণের বঙ্গানুবাদ

Posted On: 31 AUG 2024 10:39PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ৩১ অগাস্ট, ২০২৪

 

নমস্কার।

শুভ সন্ধ্যা।

ইকোনমিক টাইমস বিশ্ব নেতৃত্ব ফোরামে এই পর্বের বৈঠকে যোগ দিয়ে অনেক পরিচিত মুখের দেখা পেয়ে ভালো লাগছে। ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে সমগ্র বিশ্ব যখন স্থির নিশ্চিত, সেই সময়ে এই ফোরামেও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে আমার স্থির বিশ্বাস। 

বন্ধুগণ,

ভারত এক অনন্য সাফল্যের কীর্তি রচনা করছে। আমাদের আর্থিক সংস্কারের প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে পরিলক্ষিত হচ্ছে। ভারত সমস্ত সম্ভাবনাকে ছাপিয়ে গেছে। উদাহরণ স্বরূপ গত ১০ বছরে বিশ্ব অর্থনীতিতে যেখানে ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে, সেই একই সময়ে দাঁড়িয়ে আমাদের অর্থনীতি প্রসার লাভ করেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। এই সুস্থায়ী বৃদ্ধি আমরা অর্জন করেছি। আমাদের প্রতিশ্রুতি মতো এই সুস্থায়ী বৃদ্ধির সাফল্যকে আমরা ভবিষ্যতেও এগিয়ে নিয়ে যাবো। 

বন্ধুগণ,

বিগত বছরগুলিতে কোটি কোটি ভারতবাসীর জীবনে আমরা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটাতে সমর্থ হয়েছি। অসংখ্য নাগরিকের জীবনের গতিপথ আমাদের সরকার বদলে দিয়েছে। এদেশের মানুষদের সুশাসন দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সংস্কার সাধন ও কাজের মধ্য দিয়ে রূপান্তর ঘটানোই আমাদের মন্ত্র এবং এই ভাবধারাই যে আমাদের অনুপ্রাণিত করছে, এবং ভারতের মানুষ তা প্রত্যক্ষ করছেন। বিগত দশক জুড়ে রাষ্ট্রের সাফল্য কীর্তি তারা প্রত্যক্ষ করায় দেশের মানুষ আজ এক নবোদিত আস্থাভাবে পূর্ণ। দেশের অগ্রগতি, আমাদের নীতি এবং সিদ্ধান্তের ফলে তাদের নিজেদের মধ্যে নতুন করে আস্থাবোধ জন্ম নিয়েছে। আমরা বিশ্বক্ষেত্রে পর্যালোচনা করলে দেখবো বহু সংখ্যক দেশে এবছর নির্বাচন হয়েছে এবং একটা পরিবর্তনের দিকে তার গতিমুখ লক্ষ্য করা গেছে। অনেক সরকারই চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে। কিন্তু ভারত সম্পূর্ণ বিপরীত পথ নিয়েছে। ভারতের জনগণের রায়ে সম্পূর্ণ বিপরীত ধারা দেখা গেছে। ৬০ বছরে এই প্রথমবার ভারতীয় ভোটদাতারা পর পর তিনবারের জন্য একটি সরকারের সপক্ষে রায় দিয়েছেন। ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষী যুব সম্প্রদায় এবং মহিলারা ধারাবাহিকতা, রাজনৈতিক সুস্থায়িত্ব এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ভারতের জনগণের জন্য কোনো কৃতজ্ঞতা জানানোই যথেষ্ট নয়।

বন্ধুগণ,

আজ ভারতের অগ্রগতি নিয়ে সারা বিশ্বজুড়ে হেড লাইন হচ্ছে। পরিসংখ্যান গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা মানুষের জীবনযাত্রাকে বিভিন্ন বিষয়ে কিভাবে প্রভাবিত করছে সেদিকটা দেখাও অনুরূপ গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের ভবিষ্যৎ তার রূপান্তরের মধ্যেই নিহিত। বিগত দশকে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র সীমার উপরে তুলে আনা হয়েছে। ফলে তারা নব মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় গড়ে উঠেছেন। বিশ্বের যে কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে দ্রুততার সঙ্গে এই রূপান্তর এক কথায় অভূতপূর্ব। ভারতে তা সম্ভব হয়েছে দরিদ্রদের প্রতি সরকারের মানসিকতার পরিবর্তনের ফলে। দরিদ্র সম্প্রদায়ের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা এবং সহিষ্ণুতা আমাদের থেকে অনেক বেশি। তবে, তাদের চলার পথে অনেক বাধা রয়েছে। ব্যাঙ্কের সুযোগ থেকে শুরু করে তাদের জীবনে ন্যূনতম সাচ্ছন্দ্যের অভাব রয়েছে। ফলে আমরা দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের পথকে বেছে নিয়েছি। আমরা তাদের জীবনের চলার পথে বাধাগুলোকে সরিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। তার ফলশ্রুতি প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। এক দশক আগে যাদের ব্যাঙ্ক আমানত ছিল না, আজ তারা তাদের আমানত থেকে ডিজিটাল লেনদেন করছেন। এক সময়ে যারা ব্যাঙ্কের সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন, আজ কোনো রকম জামানত গ্যারান্টি ছাড়াই ব্যাঙ্ক ঋণ পাচ্ছেন এবং নিজেরাও উদ্যোগপতি হয়ে উঠছেন। এক সময়ে যারা বিশ্বজুড়ে পরিবর্তনের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অচেতন ছিলেন আজ তাদের কাছে মোবাইল সংযোগ রয়েছে এবং ফলে তারা এখন অনেক বেশি সচেতন নাগরিক হয়ে উঠছেন। 

দারিদ্রাবস্থার সঙ্গে সংগ্রামের ফলে তাঁদের মধ্যে উন্নতি করার একটা খিদে রয়েছে। নিজেদের সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তারা চান। তাঁদের এই আকাঙ্ক্ষা নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রেরণা যোগাচ্ছে। তাঁদের সৃষ্টিশীল চেতনা নতুন উদ্ভাবনের শক্তি যোগাচ্ছে। তাঁদের দক্ষতা, শিল্পের নতুন গতিপথ নির্ণয় করছে। তাঁদের চাহিদাকে ঘিরে গড়ে উঠছে বাজারে নতুন চাহিদার দিক এবং তাঁদের ক্রমবর্ধমান আয় বাজারের চাহিদায় নতুন শক্তি যোগাচ্ছে। ভারতের এই নব মধ্যবিত্ত শ্রেণী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। 

বন্ধুগণ,

নির্বাচনের ফল ঘোষণার সময়ে আমি বলেছিলাম যে, আমাদের সরকারের এই তৃতীয় পর্বে সরকার তিনগুণ গতিতে কাজ করবে। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে চাই, আমাদের সংকল্প আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের মতো সরকারও নতুন আশা এবং সংকল্পে ভরপুর। তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়ার পর ১০০ দিন এখনও হয়নি। তা সত্ত্বেও আমরা আমাদের বাহ্যিক পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণে পূর্ণ আত্মশক্তি নিয়োগ করেছি। আমাদের সামাজিক পরিকাঠামোর প্রসার ঘটছে এবং দ্রুততার সঙ্গে সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গত তিন মাসে দরিদ্র, কৃষক, যুব সম্প্রদায় এবং মহিলাদের সার্থে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দরিদ্রদের জন্য নতুন ৩ কোটি গৃহ নির্মাণের প্রস্তাব মঞ্জুর করা হয়েছে। ইউনিফায়েড পেনশন ঘোষণা করা হয়েছে। ১ লক্ষ কোটি টাকার কৃষি পরিকাঠামোর প্রসার ঘটানো হচ্ছে। ১০০টি প্রজাতির উন্নতনামের শস্য বীজ বাজারজাত করা হয়েছে এবং ২ লক্ষ কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রী প্যাকেজ চালু করা হয়েছে। এতে প্রত্যক্ষভাবে ৪ কোটিরও বেশি তরুণ সম্প্রদায় উপকৃত হচ্ছেন। এছাড়াও ১০০ দিনের মধ্যে সাধারণ পরিবারের ১১ লক্ষ গ্রামীণ মহিলা লাখপতি হয়ে উঠেছেন। মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতায়নের এই এক অসাধারণ সাফল্যের দিক। 

বন্ধুগণ,

গতকাল আমি মহারাষ্ট্রের পালঘরে ছিলাম। সেখানে ৭৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে বাদাবন বন্দর গড়ে তুলতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। কেবলমাত্র তিনদিন আগে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১২টি নতুন শিল্প শহর গড়ে তোলার প্রস্তাব আমরা অনুমোদন করেছি। এছাড়াও ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে ৮টি হাইস্পিড করিডর অনুমোদন করা হয়েছে। ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পুনে, থানে এবং ব্যাঙ্গালোর মেট্রো ব্যবস্থার সম্প্রসারণ অনুমোদন করা হয়েছে। এরই মাঝে লাদাখে বিশ্বের অন্যতম উচ্চ টানেল নির্মাণের কাজও শুরু হয়ে গেছে। 

বন্ধুগণ,

আমাদের কাছে কেবল দৈর্ঘ্য, প্রস্থ উচ্চতার বৃদ্ধির থেকেও পরিকাঠামো অনেক বড় বিষয়। এর ফলে ভারতীয় নাগরিকদের জীবনধারণের স্বাচ্ছন্দ্যের উন্নতিসাধন সম্ভব। অতীতে রেল কোচ নির্মাণ করা হতো, কিন্তু এখন আমরা বন্দে ভারতের মতো আধুনিক ট্রেন চালু করেছি, যা গতি এবং স্বাচ্ছন্দ্য দুইই দেয়। আজ সকালেই আমি তিনটি নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের যাত্রা সূচনা করেছি। আগে সড়ক নির্মিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আজ আমরা আধুনিক এক্সওয়ে পরিকাঠামো গড়ে তুলছি। বিমানবন্দর আগেও ছিল, আজ আমরা দেশের টু টিয়ার, থ্রি টিয়ার শহরগুলির সাথে বিমান যোগসূত্র গড়ে তুলছি। আমরা প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান চালু করেছি, যার মাধ্যমে দেশজুড়ে সরকার এবং সরকারি কাজে গতির সঞ্চার হয়। এইসব প্রয়াসের ফলে অনেক নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, যা আমাদের অর্থনীতি এবং শিল্পের সহায়ক হিসেবে দেখা দিচ্ছে। 

বন্ধুগণ,

একুশ শতকের তৃতীয় দশক ভারতের কাছে বাধা ঠেলে এগিয়ে যাওয়ার দশক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। দেশজুড়ে কারা এতে উপকৃত হবেন? উপকৃত হবো আমরা প্রত্যেকেই। ভারতীয় অর্থনীতির অংশীদার এবং বেসরকারি শিল্প ক্ষেত্রের মানুষ এতে উপকৃত হবেন। উন্নত ভারত গড়ে তোলায় গতি সঞ্চারের ক্ষেত্রে মূল স্তম্ভ হিসেবে কারা কাজ করবেন, তা নিয়ে আমি খানিকটা আলোচনা করছি। এই স্তম্ভগুলি কেবলমাত্র ভারতের সমৃদ্ধিকেই বোঝায় না, তা বিশ্ব সমৃদ্ধিরও পরিপূরক শক্তি। আজ ভারতের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সুযোগ সম্প্রসারিত হচ্ছে। সরকার প্রতিটি প্রয়াসের ক্ষেত্রে সমর্থন যোগাচ্ছে। দীর্ঘস্থায়ী দিশা পথের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে চলেছি। 

বন্ধুগণ,

প্রত্যেক ভারতীয় চান ভারতকে এক বিশ্ব নির্মাণ হাব হিসেবে দেখতে। ভারতকে নিয়ে বিশ্বেরও এখন একই প্রত্যাশা। আজ আপনারা দেশজুড়ে এই লক্ষ্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করছেন। আমাদের এমএসএমই ক্ষেত্র অভূতপূর্ব সমর্থন পাচ্ছে। শহরগুলিতে এখন প্লাগ অ্যান্ড প্লে শিল্প পার্ক স্থাপিত হচ্ছে, গড়ে উঠছে শিল্প করিডর। ক্রিটিক্যাল ধাতু উৎপাদনে প্রসার ঘটানো হচ্ছে। ভারতে উৎপাদন ভিত্তিক ভর্তুকির সাফল্য কোনো অংশে কম নয়। 

বন্ধুগণ,

ঔপনিবেশিক শাসনকালের পূর্বে ভারতের সমৃদ্ধির মূল ভিত্তি ছিল উন্নত জ্ঞান ভান্ডার, ঐতিহ্য ও সংস্কার। উন্নত ভারতেরও ভিত্তি একই। আমাদের মধ্যে কে চান না যে ভারত জ্ঞান, দক্ষতা, উদ্ভাবন, গবেষণার ভান্ডার হয়ে উঠুক। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য শিল্প এবং শিক্ষা ক্ষেত্রের মধ্যে অংশীদারিত্বের প্রসার ঘটাচ্ছে সরকার। এবারের বাজেটে এই অগ্রাধিকারের দিকটি প্রবলভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। ১ লক্ষ কোটি টাকার গবেষণা তহবিল গড়ে তোলার পিছনেও তা ভাবধারা হিসেবে কাজ করেছে। বিশ্বের প্রথমসারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্যাম্পাস ভারতে খোলার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যাতে আমাদের মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের বিদেশ পড়তে না পাঠিয়ে বিদেশের সেইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ তারা দেশে বসেই পান তার ব্যবস্থা করা, এতে আর্থিক সাশ্রয় সম্ভব। উদাহরণ স্বরূপ স্বাধীনতার পর সাত দশকে ভারতে এমবিবিএস এবং এমডি-তে আসনের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮০ হাজার, এতে করে চিকিৎসা শিক্ষার জন্য ছাত্রদের বিদেশে যেতে হতো। তবে, গত ১০ বছরে আমরা দেশজুড়ে নতুন প্রায় ১ লক্ষ এমবিবিএস এবং এমডি আসন তৈরি করেছি। এখন ভারতে ১ লক্ষ ৮০ হাজারেরও বেশি এমবিবিএস এবং এমডি আসন রয়েছে। লালকেল্লার প্রাকার থেকে আমি ঘোষণা করেছিলাম, ভারতে আগামী ৫ বছরে চিকিৎসা ক্ষেত্রে ৭৫ হাজার নতুন আসন যোগ করা হবে। ভারত অচিরেই স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিশ্ব হাব হিসেবে গড়ে উঠবে। 

বন্ধুগণ, 

ভারত বিশ্বের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে গড়ে ওঠার স্বপ্ন দেখে। বিশ্বজুড়ে প্রতি খাবার টেবিলে ভারতীয় খাদ্য জায়গা করে নেবে বলে আমরা জাতীয় সংকল্প নিয়েছি। আজ জৈব এবং প্রাকৃতিক চাষবাসে জোর দেওয়া হয়েছে। সামুদ্রিক খাবার এবং দুগ্ধজাত পণ্যের গুণগত মানোন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। আপনাদের স্মরণে আছে, গত বছর সারা বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক মিলেট বর্ষ উদযাপন করা হয়েছে। ভারতই তার পথ দেখিয়েছে। ভারত মোটাদানা শস্যের সর্ববৃহৎ উৎপাদক। প্রকৃতি এবং মানুষ উভয়ের স্বার্থেই এটি এক অসাধারণ গুণসম্পন্ন খাদ্য। ভারত বিশ্বের প্রথমসারির ফুড ব্র্যান্ডের নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে দেখলে আমি খুশি হবো। 

বন্ধুগণ, 

গ্রীণ এনার্জী উন্নত ভারতের আর এক শক্তিশালী স্তম্ভ। জি২০ শিখর সম্মেলনে ভারতের সাফল্য আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন। সেখানে আমাদের গ্রীণ হাইড্রোজেনের উদ্যোগ সমস্ত অংশগ্রহণকারী দেশের সমর্থন কুড়িয়েছে। ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০ লক্ষ টন গ্রীণ হাইড্রোজেন উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ। এছাড়াও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত ৫০০ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার লক্ষ্য রেখেছে।

বন্ধুগণ,

বিগত বছরগুলিতে প্রযুক্তিই আমাদের উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। এখন প্রযুক্তির পাশাপাশি ভারতের উন্নয়নের আরও একটি মূল স্তম্ভ হয়ে উঠছে পর্যটন। ভারত বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের প্রথমসারির পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে চায়। ভারতের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। আমাদের সমুদ্রতট এবং ছোট দ্বীপগুলিতে অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। ‘দেখো আপনা দেশ, পিপলস চয়েজ’ এই প্রচারাভিযানের উদ্দেশ্য হলো ভারতের সব থেকে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলির তালিকা তৈরিতে জনমত সংগ্রহ। পর্যটনের মাধ্যমে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগও প্রসারিত হবে।

বন্ধুগণ, 

রূপান্তরের এই কর্মযজ্ঞে প্রত্যেকের সক্রিয় অংশগ্রহণে জোর দেওয়া হচ্ছে। আমাদের জি২০ সভাপতিত্বকালে আফ্রিকার ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে গ্লোবাল সাউথে আমরা গলা তুলেছি। আজ আমরা এমন এক বিশ্ব দেখতে চাই, যেখানে সমস্ত দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সুনিশ্চিত হবে, বিশেষত গ্লোবাল সাউথের মতো দেশগুলিতে। আগামী বছরগুলিতে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলি বিশ্বে সব থেকে সম্ভাবনার ক্ষেত্র হয়ে উঠবে, কারণ এই অঞ্চলেই সর্ববৃহৎ সংখ্যক মানুষের বাস। বিশ্ব বন্ধুর ভাবধারাকে তুলে ধরে ভারত এইসব দেশগুলির উদ্দীপিত কণ্ঠ হয়ে উঠছে। 

বন্ধুগণ, 

২০৪৭-এর মধ্যে ভারতকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার সংকল্প নিয়েছি আমরা। আমরা জানি যে, এই যাত্রাপথে আপনারাও সক্রিয় যোগদান করতে চান। আমরা চাই ভারতের বেশি সংখ্যক কোম্পানি বিশ্ব ব্র্যান্ড হয়ে উঠুক। আমাদের ইচ্ছা বিশ্বস্তরের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ভারত নেতৃত্ব দিক। আপনাদের যাবতীয় সহায়তা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আপনাদের সংকল্প আরও বেশি উদ্ভাবনী হয়ে উঠুক। আমাদের প্রতিশ্রুতি যেমন সংস্কারের, আপনাদের প্রতিশ্রুতি হোক কিছু করে দেখানোর। এক সুস্থায়ী নীতি প্রদানের লক্ষ্যে আমাদের প্রতিশ্রুতি। আপনাদের সংকল্প হয়ে উঠুক সদর্থক কর্মসম্পাদনের মধ্য দিয়ে। আমাদের সংকল্প উচ্চ হারে বৃদ্ধির। আপনাদের সংকল্প হয়ে উঠুক উন্নত গুণমানের উপর আলোকপাত করা। আমরা উভয়েই একত্রে রাষ্ট্রের জন্য সাফল্যের কীর্তি রচনা করে যাবো। 

আজকের ভারত বিশ্বের কাছে এক বৃহৎ সম্ভাবনাময় দেশ। আজকের ভারত সম্পদ উৎপাদনে গুরুত্ব দেয়। একটি শক্তিশালী ভারত সমস্ত মানুষের স্বার্থে যথাযথ উন্নয়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে। বিশ্ব সমৃদ্ধির ক্ষেত্র রচনা করতে পারে সমৃদ্ধ ভারত। আমরা উদ্ভাবন, অন্তর্ভুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মন্ত্রকে স্মরণে রাখবো। দেশ ও বিদেশের প্রত্যেক ভারতীয় এবং ভারতকে সমর্থন করেন এমন প্রত্যেকটি মানুষকে আমি বলবো এ যাত্রাপথে চলুন আমরা সকলে পা মেলাই। আমরা ভারতকে এক উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলব, কারণ বিশ্বের সমৃদ্ধি, সমৃদ্ধ ভারতের সঙ্গে এক সূত্রে বাঁধা। আমার বিশ্বাস আমরা এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারবো। এই বিশ্বাসের সঙ্গেই আপনাদের সকলকে আমি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

আপনাদের ধন্যবাদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণ হিন্দিতে।

 

PG/AB/SKD


(Release ID: 2052001) Visitor Counter : 50