আইনওবিচারমন্ত্রক
azadi ka amrit mahotsav

আদালতে কম্পিউটার

Posted On: 08 AUG 2024 1:02PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ৮ আগস্ট ২০২৪

 

জাতীয় ই-গভর্ন্যান্স পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে ই-কোর্টস মিশন মোড প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে ভারতীয় বিচার বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে। ভারতীয় বিচার বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রূপায়ণের জন্য জাতীয় নীতি এবং কর্মপরিকল্পনার ভিত্তিতে। এই প্রকল্প রূপায়ণ করছে বিচার দপ্তর ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের ই-কমিটির সঙ্গে সমন্বয় রেখে। 

ই-কোর্টস মিশন মোড প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের রূপায়ণ হয়েছিল ২০১১ থেকে ১৫-র মধ্যে। নজর দেওয়া হয়েছিল প্রাথমিক বিষয়গুলির ওপর যেমন – কম্পিউটার হার্ডওয়্যার স্থাপন, ইন্টারনেট যোগাযোগ এবং ই-কোর্টস প্ল্যাটফর্ম কার্যকর করার ওপর। ৯৩৫ কোটি টাকার আর্থিক বরাদ্দের মধ্যে খরচ হয়েছিল ৬৩৯.৪১ কোটি টাকা। 

এই পর্বে নিম্নলিখিত উদ্যোগগুলি নেওয়া হয়েছিল :

১. ১৪,২৪৯টি জেলা এবং নিম্ন আদালতে কম্পিউটার বসানো হয়। 

২. ল্যান স্থাপিত হয়েছিল ১৩,৬৮৩টি আদালতে, হার্ডওয়্যার দেওয়া হয়েছিল ১৩,৪৩৬টি আদালতে এবং সফ্টওয়্যার বসানো হয়েছিল ১৩,৬৭২টি আদালতে। 

৩. ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছিল ১৪,৩০৯ জন বিচার বিভাগীয় আধিকারিককে এবং সব হাইকোর্টে ব্যবস্থাপনার অনুশীলন পরিবর্তন সম্পূর্ণ করা হয়েছিল। 

৪. ১৪ হাজারের বেশি বিচার বিভাগীয় আধিকারিককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল UBUNTU-Linux ব্যবহারে।

৫. ৩,৯০০-র বেশি আদালত কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল কেস ইনফর্মেশন সিস্টেম (সিআইএস)-এ। 
৬. ৪৯৩টি আদালত প্রাঙ্গণ এবং তার সঙ্গে যুক্ত ৩৪৭টি কারাগারের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছিল। 

ই-কোর্টস মিশন মোড প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় রূপায়িত হয় ২০১৫ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে। যাতে মূলত নজর দেওয়া হয় জেলা ও নিম্ন আদালতগুলিকে আইসিটি নির্ভর করে তোলার ওপর এবং একাধিক নাগরিক কেন্দ্রিক উদ্যোগে। ১৬৭০ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে খরচ হয় ১৬৬৮.৪৩ কোটি টাকা। ২০২৩ পর্যন্ত ১৮,৭৩৫টি আদালতকে কম্পিউটারের আওতায় আনা হয়েছে। আইনি ব্যবস্থায় দক্ষতা এবং স্বচ্ছতা বাড়াতে আইনি প্রক্রিয়ার ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থাকে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে নিম্নলিখিত উদ্যোগগুলি নেওয়া হয়েছে :

১. ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (WAN) প্রকল্পের অধীন সারা ভারতে মোট আদালত প্রাঙ্গণের ৯৯.৪% (নির্দিষ্ট ২৯৯২-এর মধ্যে ২৯৭৭)-তে ১০এমবিপি থেকে ১০০এমবিপি ব্র্যান্ডউইদ গতির যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। 

২. ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিড (এনজেডিজি) হল একটি নির্দেশ, রায় এবং মামলার তথ্য ভাণ্ডার। ই-কোর্টস প্রকল্পের অধীনে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। এতে দেশের সব কম্পিউটারাইজড জেলা এবং নিম্ন আদালতের মামলা এবং রায় সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য পাওয়া যায়। ০১.০৮.২০২৪ পর্যন্ত ২৬.০৬ কোটি মামলা এবং ২৬.৯১ কোটি নির্দেশ বা রায় সম্পর্কে জানতে পারবেন মামলাকারীরা।

৩. ফ্রি অ্যান্ড ওপেন সোর্স সফ্টওয়্যার (এফওএসএস)-এর ভিত্তিতে কেস ইনফর্মেশন সফ্টওয়্যার (সিআইএস) তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে জেলা আদালতগুলিতে সিআইএস ন্যাশনাল কোর ভার্সন ৩.২ রূপায়িত হচ্ছে এবং হাইকোর্টে রূপায়িত হচ্ছে সিআইএস ন্যাশনাল কোর ভার্সন ১.০। 

৪. সাতটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে আইনজীবী এবং মামলাকারীদের এসএমএস-এর মাধ্যমে মামলা এবং তৎসংক্রান্ত বিষয়ে চটজলদি তথ্য দিতে। প্রতিদিন ২ লক্ষ এসএমএস পাঠানো হয়, ই-মেল পাঠানো হয় ২ লক্ষ ৫০ হাজার। এছাড়া আইনজীবীদের (৩০.০৬.২০২৪ পর্যন্ত ২.৪৭ কোটি ডাউনলোড) জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ এবং বিচারপতিদের (৩০.০৬.২০২৪ পর্যন্ত ২০,৩৬২ ডাউনলোড) জন্য জাসটিস অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। 

৫. ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে আদালতে শুনানির ব্যবস্থায় ভারত বিশ্বে অগ্রগন্য। ৩০.০৬.২০২৪ পর্যন্ত ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে জেলা ও নিম্ন আদালতগুলিতে ২ কোটি ৩৫ লক্ষ ৬৪ হাজার ৭৩১টি মামলা এবং হাইকোর্টগুলিতে ৮৭ লক্ষ ৮ হাজার ৭২৭টি মামলার শুনানি হয়েছে। ৪.০৬.২০২৪ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে ৭ লক্ষ ৫৪ হাজার ৪৪৩টি শুনানি হয়েছে। 

৬. গুজরাট, গুয়াহাটি, ওড়িশা, কর্ণাটক, ঝাড়খন্ড, পাটনা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড এবং সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের সাংবিধানিক বেঞ্চে মামলার লাইভ স্ট্রিমিং শুরু হয়েছে। ফলে, সংবাদ মাধ্যম এবং অন্য আগ্রহী ব্যক্তিরা মামলা শুনতে পাবেন। 

৭. ২১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ২৮টি ভার্চুয়াল কোর্ট কার্যকর করা হয়েছে। ৩০.০৬.২০২৪ পর্যন্ত ৫৬ লক্ষের বেশি ট্রাফিক সংক্রান্ত মামলায় ৫৭৯.৪০ কোটি টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে। 

৮. আধুনিক বৈশিষ্ট্য সহকারে নতুন ই-ফাইলিং ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এর জন্য হাইকোর্টগুলিকে দেওয়া হয়েছে খসড়া ই-ফাইলিং বিধি। ৩০.০৬.২০২৪ পর্যন্ত ২৫টি হাইকোর্ট ই-ফাইলিং-এর মডেল বিধি গ্রহণ করেছে। 

৯. মামলার ই-ফাইলিং-এর জন্য প্রয়োজন কোর্ট ফি, জরিমানা ইত্যাদির জন্য ইলেক্ট্রনিক পেমেন্ট ব্যবস্থা। ২২টি হাইকোর্ট তাদের আওতাভুক্ত অঞ্চলে ই-পেমেন্ট চালু করেছে। ৩০.০৬.২০২৪ পর্যন্ত ২৪টি হাইকোর্টের জন্য কোর্ট ফি আইন সংশোধিত করা হয়েছে। 

১০. ডিজিটাল বৈষম্য ঘোচাতে ১,০৭২টি ই-সেবা কেন্দ্র চালু হয়েছে। মামলাকারীরা অনলাইন ই-কোর্ট পরিষেবা পেতে এটির সাহায্য পাবেন। নিরক্ষর মানুষ এর সুযোগ নিতে পারবেন, সময় বাঁচবে, বহু দূর থেকে যাতায়াত করতে হবে না, খরচাও কমবে। 

১১. একটি নতুন ‘জাজমেন্ট সার্চ’ পোর্টাল চালু হয়েছে। এই পরিষেবা পাওয়া যাবে বিনামূল্যে। 

১২. এনজেডিজি-র মাধ্যমে তৈরি তথ্য ভান্ডারের কার্যকর ব্যবহার করতে এবং মানুষের কাছে তথ্য পৌঁছে দিতে ‘জাসটিস ক্লক’ নামে এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড বসানো হয়েছে। ২৫টি হাইকোর্টে ৩৯টি ‘জাসটিস ক্লক’ বসানো হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ১৩.০৯.২০২৩-এ ই-কোর্টস প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের অনুমোদন করেছে। ২০২৩ থেকে ৪ বছরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৭,২১০ কোটি টাকা। ই-কোর্টস তৃতীয় পর্যায়ের লক্ষ্য পুরোপুরি ডিজিটাল অনলাইন এবং কাগজহীন আদালত তৈরি করা, যেখানে সমস্ত নথির ডিজিটাইজেশন করা হবে। বকেয়া এবং চালু মামলার রেকর্ড রাখা হবে ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে, অত্যাধুনিক তথ্য ভাণ্ডার তৈরি হবে ক্লাউডের মাধ্যমে যাতে চাইলে সহজেই যেকোন তথ্য পাওয়া যায়। দেশের সমস্ত আদালতে ই-সেবা কেন্দ্র স্থাপন করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। 

তৃতীয় পর্যায়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৮২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে খরচ হয়েছে ৭৬৮.২৫ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা। দেওয়া হয়েছে ৪৬৫.৭৪ কোটি টাকা।

কলকাতা হাইকোর্টের অধীনে পশ্চিমবঙ্গে ৮২৭টি এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ১৪টি আদালতে ই-কোর্টস চালু হয়েছে। 

আজ রাজ্যসভায় এক লিখিত জবাবে এই তথ্য জানিয়েছেন আইন ও বিচার মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল। 

 

PG/AP/AS



(Release ID: 2043437) Visitor Counter : 26