প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে কাশী সংসদ সাংস্কৃতিক মহোৎসব ২০২৩-এর সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী

১৬টি অটল আবাসীয় বিদ্যালয়ের উদ্বোধন

“কাশী সংসদ সাংস্কৃতিক মহোৎসবের মতো প্রয়াস, সুপ্রাচীন এই শহরের সাংস্কৃতিক স্পন্দনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে”

“মহাদেবের আশীর্বাদে কাশী অভূতপূর্ব মাত্রায় উন্নয়নের সাক্ষী থাকছে”

“কাশী ও সংস্কৃতি একই শক্তির দুটি নাম”

“কাশীর প্রতিটি কোণে সঙ্গীতের মূর্চ্ছনা শোনা যায়, এটি হল নটরাজের নিজের শহর”

“২০১৪ সালে এখানে এসে কাশীর উন্নয়ন ও ঐতিহ্যের যে স্বপ্ন আমি দেখেছিলাম, তা এখন দিনে দিনে বাস্তবে রূপ পাচ্ছে”

“তার অন্তর্ভুক্তিমূলক চেতনার জন্যই বারাণসী শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে শিক্ষার কেন্দ্রস্থল হয়ে থেকেছে”

“আমি চাই কাশীতে টুরিস্ট গাইডদের সংস্কৃতি বিকাশলাভ করুক এবং এই টুরিস্ট গাইডরা বিশ্বের সব থেকে সম্মানিত ব্যক্তি হয়ে উঠুন”

Posted On: 23 SEP 2023 5:45PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি,  ২৩  সেপ্টেম্বর, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে রূদ্রাক্ষ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সম্মেলন কেন্দ্রে কাশী সংসদ সাংস্কৃতিক মহোৎসব ২০২৩-এর সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ১৬টি অটল আবাসীয় বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করেন। উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১ হাজার ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এগুলি নির্মিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কাশী সংসদ খেল প্রতিযোগিতায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য একটি পোর্টালেরও সূচনা করেন। কাশী সংসদ সাংস্কৃতিক মহোৎসবের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানের আগে প্রধানমন্ত্রী অটল আবাসিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। 

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাদেবের আশীর্বাদে কাশীর প্রতি মানুষের সম্ভ্রম ক্রমাগত বেড়ে চলেছে এবং শহরের উন্নয়নের জন্য প্রণয়ন করা নীতিগুলি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সাফল্যে কাশীর অবদান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই উপলক্ষে যাঁরা কাশীতে এসেছিলেন, তাঁরা তাঁদের সঙ্গে কাশীর সেবাপরায়ণতা, এর বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতি এবং সঙ্গীতের স্মৃতি তাঁদের সঙ্গে নিয়ে গেছেন। মহাদেবের আশীর্বাদে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন এমন অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাদেবের আশীর্বাদে কাশী অভূতপূর্ব মাত্রার উন্নয়নের সাক্ষী হচ্ছে। বারাণসীতে আজ তিনি যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের শিলান্যাস এবং ১৬টি অটল আবাসীয় বিদ্যালয়ের সূচনা করেছেন, তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এজন্য কাশী ও উত্তর প্রদেশের মানুষ এবং এই প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের পরিবারকে অভিনন্দন জানান। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে এখানকার সাংসদ হিসেবে তিনি উন্নয়নের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, এখন তা ধীরে ধীরে বাস্তব রূপ নিচ্ছে। কাশী সাংস্কৃতিক মহোৎসবে এতো মানুষ অংশগ্রহণ করায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের বহু প্রতিভার সঙ্গে পরিচয়ের সুযোগ পাওয়া গেছে। এই মহোৎসবের প্রথম সংস্করণেই প্রায় ৪০ হাজার শিল্পী অংশগ্রহণ করেছেন এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ এই উৎসব দেখতে এসেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। মানুষের সহযোগিতায় কাশী সংসদ সাংস্কৃতিক মহোৎসব আগামীদিনে এক স্বতন্ত্র পরিচয়ের অধিকারী হয়ে উঠবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশী এখন সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশী এবং সংস্কৃতি, একই শক্তির দুটি নাম। কাশী হল ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী। এই শহরের প্রতিটি কোণে সঙ্গীতের মূর্চ্ছনা শোনা যায়। এটি নটরাজের নিজের শহর। মহাদেবকে সমস্ত শিল্পের উৎস হিসেবে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভরত মুনির মতো প্রাচীন ঋষিরা এইসব শিল্পকে নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও আঙ্গিকের আকার দিয়েছিলেন। কাশীর স্থানীয় উৎসব ও উদযাপনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শহর সবসময় সঙ্গীত ও শিল্পে ডুবে রয়েছে। 

কাশীর গৌরবদীপ্ত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সংস্কৃতি ও আঞ্চলিক গান-বাজনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শহরে তবলা, সানাই, সেতার, সারেঙ্গি এবং বীনা’র মতো বাদ্যযন্ত্রের সংমিশ্রন ঘটেছে। বারাণসী শত শত বছর ধরে খেয়াল, ঠুংরি, দাদরা, চৈতী ও কাজরি বাদ্যযন্ত্রের শৈলী এবং গুরু-শিষ্য পরম্পরাকে সংরক্ষণ করেছে। এর মধ্যে দিয়েই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ভারতের সুরঋদ্ধ আত্মা বেঁচে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তেলিয়া ঘরানা, পিয়ারী ঘরানা এবং রামপুরা কবীর চৌরা মহল্লার সঙ্গীত শিল্পীদের উল্লেখ করে বলেন, বারাণসী সঙ্গীতের এমন সব দিকপালদের জন্ম দিয়েছে, যাঁরা বিশ্ব মঞ্চেও তাঁদের ছাপ রেখে গেছেন। বারাণসীর বেশ কয়েকজন বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞের সঙ্গে আলাপের সুযোগ পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। 

আজ চালু হওয়া কাশী সংসদ খেল প্রতিযোগিতার পোর্টালের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেল প্রতিযোগিতাই হোক বা কাশী সংসদ সাংস্কৃতিক মহোৎসব, কাশীতে এক নতুন ঐতিহ্যের সূচনা হল। এবার থেকে কাশী সংসদ জ্ঞান প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হবে বলে তিনি ঘোষনা করেন। তিনি বলেন, এর লক্ষ্য হল কাশীর সংস্কৃতি, রন্ধন প্রণালী ও শিল্প সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এই প্রতিযোগিতা কাশীর গ্রাম ও শহরাঞ্চলে বিভিন্ন স্তরে সংগঠিত হবে বলে তিনি জানান। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশীতে যাঁরা বাস করেন, তাঁরাই কাশী সম্পর্কে সব থেকে বেশি জানেন। এখানকার প্রত্যেক বাসিন্দাই কাশীর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার। এই জ্ঞানকে সঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী টুরিস্ট গাইডের ব্যবস্থার জোরদার করার প্রস্তাব দেন। এজন্য কাশী সংসদ টুরিস্ট গাইড প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি চান সারা বিশ্ব কাশী সম্পর্কে জানুক এবং কাশীর টুরিস্ট গাইডরা বিশ্বের সবথেকে সম্মানিত ব্যক্তিতে পরিণত হন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বজুড়ে বহু পণ্ডিত ব্যক্তি সংস্কৃত শিখতে কাশীতে আসেন। তাঁদের কথা মাথায় রেখে আজ ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অটল আবাসীয় বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই স্কুলগুলিতে শ্রমিক সহ সমাজের দুর্বলতর অংশের মানুষজনের সন্তানদের উচ্চমানের শিক্ষা দেওয়া হবে। কোভিডে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের শিশুদের বিনামূল্যে এই স্কুলগুলিতে ভর্তি করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, সাধারণ পড়াশোনা ছাড়াও এই স্কুলগুলিতে সঙ্গীত, শিল্প, কারুকৃতি, প্রযুক্তি এবং খেলাধুলার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী আদিবাসী সমাজের জন্য ১ লক্ষ একলব্য আবাসিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথাও জানান। তিনি বলেন, “নতুন শিক্ষানীতির মাধ্যমে সরকার চিন্তাধারাকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। স্কুলগুলি আধুনিক হয়ে উঠেছে, ক্লাসগুলি হয়ে উঠেছে স্মার্ট।” এই প্রসঙ্গে তিনি আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী প্রচারাভিযানের মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার স্কুলের আধুনিকীকরণের কথাও তুলে ধরেন। 

এই শহরের জন্য তাঁর প্রতিটি প্রয়াসে তিনি কাশীর মানুষের পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। 

পরিযায়ী শ্রমিকদের শিশুদের জন্য সব রাজ্যকে বাজেটে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক রাজ্য এই অর্থ রাজনৈতিক ও নির্বাচনী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। কিন্তু উত্তর প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যোগীর তত্ত্বাবধানে এটি সমাজের দরিদ্র অংশের শিশুদের ভবিষ্যতের জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে। আবাসিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যে এই বিদ্যালয়গুলি থেকে কাশীর গৌরব প্রতিফলিত হবে। 

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।  

AC/SD/NS



(Release ID: 1960100) Visitor Counter : 98