প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

জি২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

“আমাদের নিরন্তর প্রয়াসের ফলে গত ৯ বছরে ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে”

“ভারত লাল ফিতে থেকে লাল কার্পেটের দেশ হয়ে উঠেছে ”

Posted On: 24 AUG 2023 9:22AM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি,  ২৪  আগস্ট, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাজস্থানের জয়পুরে অনুষ্ঠিত জি২০ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রীদের বৈঠকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ভাষণ দেন। 

বৈঠকে উপস্থিত সবাইকে গোলাপী শহরে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন,  গতিশীল এবং এখানকার মানুষের উদ্যমের কারণে এই অঞ্চল বিশেষভাবে পরিচিত। তাঁর কথায়, বাণিজ্যের মাধ্যমে মত, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তির বিনিময় হয়, যা মানুষকে পরস্পরের কাছে টানে। শ্রী মোদী বলেন, “বাণিজ্য এবং বিশ্বায়ন দুনিয়ার লক্ষ লক্ষ মানুষকে চরম দারিদ্র থেকে তুলে এনেছে।” 

ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে তাঁর আস্থার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত খোলামেলা, সুযোগ সৃষ্টির নীতিতে বিশ্বাসী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক চেষ্টার ফলে ভারত এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে। ২০১৪ থেকে আমরা সংস্কার ও পরিবর্তনের যাত্রা শুরু করেছি।” প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা, ডিজিটাল ব্যবস্থার সম্প্রসারণ এবং উদ্ভাবনের বিভিন্ন দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, “আমরা এখন লাল ফিতের বাঁধন থেকে সরে এসে লাল কার্পেটের দেশে পরিনত হয়েছি। এবং সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করেছি।” মেক ইন ইন্ডিয়া এবং আত্মনির্ভর ভারতের মতো বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে উৎপাদন শিল্পে গতি এসেছে এবং দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আর্থিক শক্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। 

অতিমারী থেকে ভূ-রাজনৈতিক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে বিশ্বের অর্থনীতি একটা পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আস্থা অর্জনে জি২০ দেশগুলির দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। 

শ্রী মোদী বলেন, “পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির শক্তি অনস্বীকার্য।” এই প্রসঙ্গে তিনি এক কর নীতি জিএসটি-র কথা উল্লেখ করেন। এবং বলেন যে, এর ফলে রাজ্যগুলির মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনের ভিত্তি মজবুত হয়েছে। ভারতের ইউনিফায়েড লজিস্টিক প্ল্যাটফর্মের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে বাণিজ্যিক পরিবহন অনেক সুলভ ও স্বচ্ছ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “লেনদেন ব্যবস্থায় আমরা ইতিমধ্যে ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেস চালু করেছি। ডিজিটাল ব্যবস্থা এবং ই-কমার্সের ব্যবহার বাজারে নানা সুযোগ তৈরি করেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাণিজ্যিক নথিপত্রে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালুর ফলে সীমান্ত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা দূর করা সম্ভব হবে। সীমান্ত এলাকায় ই-কমার্সের ব্যবহার বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী ক্ষুদ্র ও বড় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার ওপর জোর দেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত খোলামেলা এবং বহুমাত্রিক বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। এই প্রসঙ্গে দ্বাদশ ডব্লুটিও মন্ত্রীস্তরীয় সম্মেলনে লক্ষ লক্ষ কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় গৃহীত সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন তিনি। বিশ্ব অর্থনীতিতে এমএসএমই-র প্রতি আরও গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, “এমএসএমই-তে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কর্মসংস্থান হয় এবং বিশ্বের জিডিপি-র ৫০ শতাংশই আসে এই ক্ষেত্র থেকে।” তাঁর কথায়, “আমাদের কাছে এমএসএমই-র অর্থ হল, ম্যাক্সিমাম সাপোর্ট টু মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজেস।" তিনি বলেন, এমএসএমই-কে সরকার সুসংহত করেছে। অনলাইন ব্যবস্থা চালুর ফলে ই-মার্কেট শক্তিশালী হচ্ছে। পরিবেশের ওপর এমএসএমই ক্ষেত্রের প্রভাব শূন্যতে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে চলেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, জি২০-র সভাপতি হিসেবে ভারত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি শৃঙ্খল গড়ে তোলার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়েছে। জয়পুরের এই সম্মেলন এমএসএমই ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা দূর করতে সহায়ক হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেন, গ্লোবল ট্রেড হেল্ক ডেস্ক-এর আধুনিকীকরণের ফলে বিশ্ব বাণিজ্যে এমএসএমই-র অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাবে। 

পরিশেষে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি পরিবারের মতো জি২০ সদস্য দেশগুলিকে মিলিতভাবে কাজ করার বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। 

 

AC/MP/NS



(Release ID: 1951999) Visitor Counter : 108