প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে ১২,১০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী

পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন – সোননগর পণ্যবাহী ট্রেন করিডোরের সূচনা

জাতীয় মহাসড়ক-৫৬ –র বারাণসী-জৌনপুর শাখার চার লেনে সম্প্রসারণ

বারাণসীতে একগুচ্ছ প্রকল্পের সূচনা

মণিকর্ণিকা ও হরিশচন্দ্র ঘাটের সংস্কার প্রকল্পের শিলান্যাস

কারসারার সিআইপিইটি ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের হোস্টেলের ভিত্তিপ্রস্তব স্থাপন

সুবিধাভোগীদের মধ্যে পিএম স্বনিধি প্রকল্পের ঋণ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ-এর বাড়ির চাবি এবং আয়ুষ্মান প্রকল্পের কার্ড বিতরণ

“কাশীর প্রাচীন আত্মাকে সংরক্ষিত রেখে তার নতুন দেহ প্রদানের যে সংকল্প আমরা নিয়েছিলাম, আজকের প্রকল্পগুলি তারই অঙ্গ”

“সরকার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে সরাসরি আলাপচারিতা ও মতবিনিময়ের নতুন প্রথা শুরু করেছে, অর্থাৎ ‘সরাসরি সুবিধার পাশাপাশি সরাসরি প্রতিক্রিয়া’”

“যাঁরা সুবিধা পাচ্ছেন তাঁরা হলেন সামাজিক ন্যায় ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রকৃত নিদর্শন”

“প্রধানমন্ত্রী আবাস এবং আয়ুষ্মানের মতো প্রকল্পগুলি একাধিক প্রজন্মকে প্রভাবিত করে”

“গরিবদের আত্মসম্মান সুনিশ্চিত করা মোদীর অঙ্গীকার”

“গরিব কল্যাণ হোক বা পরিকাঠামো, আজ অর্থের যোগানের কোনো অভাব নেই”

Posted On: 07 JUL 2023 8:01PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ৭ জুলাই, ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে ১২,১০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশন – সোননগর পণ্যবাহী ট্রেন করিডোর, বৈদ্যুতিকীকরণ অথবা ডাবল লাইনে রূপান্তরিত হওয়া তিনটি রেললাইন, জাতীয় মহাসড়ক-৫৬ –র বারাণসী-জৌনপুর শাখা চার লেনে সম্প্রসারণ এবং বারাণসীর আরও একগুচ্ছ প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী একগুচ্ছ রেল প্রকল্প, ১৫টি সড়কের নির্মাণ ও সংস্কার, ১৯২টি গ্রামীণ পানীয় জল প্রকল্প, মণিকর্ণিকা ও হরিশচন্দ্র ঘাটের সংস্কার, ধর্মীয় মাহাত্ম্য আছে এমন ৬টি ঘাটে ভাসমান পোশাক পরিবর্তন ঘর সহ জেটি, কারসারার সিআইপিইটি ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের হোস্টেল নির্মাণ প্রভৃতি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি প্রকল্পের ঋণ, প্রধানমন্ত্রী আবাসযোজনা গ্রামীণ-এর আওতায় নির্মিত বাড়ির চাবি এবং আয়ুষ্মান ভারত কার্ড সুবিধাভোগীদের হাতে তুলে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র শ্রাবণ মাসের সূচনায় বাবা বিশ্বনাথ ও মা গঙ্গার আশীর্বাদে এবং বারাণসীর মানুষের উপস্থিতিতে জীবন ধন্য হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার শিব ভক্ত এখন বাবার মাথায় জল দিতে আসছেন। এবারে এই শহরে রেকর্ড সংখ্যক তীরযাত্রী আসবেন, তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। কাশীর বাসিন্দাদের আতিথেয়তার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা কাশীতে আসেন তাঁরা সবসময়েই সুখী মনে পূর্ণ হৃদয়ে ফিরে যান। জি২০ প্রতিনিধিদের স্বাগত জানানোর জন্য এবং উপাসনাস্থলগুলির প্রাঙ্গণ পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য তিনি কাশীর মানুষের প্রশংসা করেন।

যেসব প্রকল্পের আজ সূচনা ও শিলান্যাস হল সেগুলির প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশীর প্রাচীন আত্মাকে সংরক্ষিত রেখে নতুন দেহ প্রদানের যে অঙ্গীকার করা হয়েছিল, এই প্রকল্পগুলি তারই অঙ্গ।

বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলাপচারিতার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে সরকারি প্রকল্পের সঙ্গে তৃণমূল স্তরের কোনো সংযোগ ছিল না। বর্তমান সরকার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময়ের নতুন প্রথা শুরু করেছে, অর্থাৎ এখন ‘সরাসরি সুবিধার পাশাপাশি সরাসরি প্রতিক্রিয়া।’ এতে সরকারি দপ্তর এবং আধিকারিকদের কাজের মান উন্নততর হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরে গণতন্ত্রের সত্যিকারের সুফল প্রকৃত অর্থেই সঠিক মানুষজনের কাছে পৌঁছচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এখন প্রতিটি প্রকল্পের সুফল প্রান্তিকতম মানুষটির কাছেও পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে, সেজন্যই এই সুবিধাভোগীরা সামাজিক ন্যায় ও ধর্মনিরপেক্ষতার জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। এতে কমিশনভোগী, দালাল এবং দুর্নীতিগ্রস্তরা বিলুপ্ত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৯ বছরে সরকার কোন একটি পরিবার বা কোন একটি প্রজন্মের জন্য কাজ করেনি, সরকারের কাজে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও প্রভাবিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ৪ কোটি পরিবারকে পাকা বাড়ি দেওয়া হয়েছে, ৪ লক্ষ পাকা বাড়ি আজই উত্তরপ্রদেশে তিনি সুবিধাভোগীদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এই বাড়িগুলি মালিকদের মনে নিরাপত্তা ও আত্মবিশ্বাসের সঞ্চার করেছে। বাড়ির মালিকানা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মহিলাদের নামে হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলি ওই মহিলাদের জীবনে আর্থিক সুরক্ষা এনে দিয়েছে।

আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিখরচায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুবিধা পাওয়াই এক একমাত্র সুফল নয়। গরিব মানুষ চিকিৎসার খরচ যোগাতে ঋণের জালে পড়ে সর্বস্বান্ত হন। পরবর্তী প্রজন্মকেও তার যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। আয়ুষ্মান যোজনা গরিব মানুষদের সেই দুর্ভাগ্যের হাত থেকে বাঁচিয়েছে। ১ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষের মধ্যে আজ আয়ুষ্মান কার্ড বিতরণ করা হয়েছে।  

৫০ কোটি জন ধন অ্যাকাউন্ট এবং সমান্তরাল জামিন ছাড়াই মুদ্রা ঋণ যোজনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো জাতির সম্পদের উপর সব থেকে বেশি অধিকার গরিব এবং বঞ্চিতদেরই। এই দুটি প্রকল্প গরিব, বঞ্চিত, দলিত, অনগ্রসর, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং মহিলা উদ্যোক্তাদের বিশেষ উপকারে এসেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন।

স্বনিধি যোজনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগের সরকারগুলি পথ বিক্রেতাদের সমস্যার প্রতি কোনো নজর দেয়নি, তাঁদের কেবল হেনস্থাই করে গেছে। স্বনিধি প্রকল্পে এপর্যন্ত ৩৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ উপকৃত হয়েছেন, আজই বারাণসীতে ১ লক্ষ ২৫ হাজারেরও বেশি সুবিধাভোগীকে ঋণ দেওয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, গরিবদের আত্মসম্মান সুনিশ্চিত করা মোদীর অঙ্গীকার।

আগের আমলের অসততা এবং তার জেরে বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যাপ্ত অর্থের অভাবের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গরিব কল্যাণ হোক বা পরিকাঠামো, আজ আর অর্থের যোগানের কোনো অভাব নেই। করদাতারা একই আছেন, ব্যবস্থাপনাও একই রয়েছে, কেবল সরকার বদলে গেছে। সরকারের সদিচ্ছা থাকায় তার ফলও চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে কেলেঙ্কারি আর কালোবাজারির খবরই সবসময় চোখে পড়ত, এখন তার জায়গা নিয়েছে নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস। পূর্বাঞ্চলীয় পণ্যবাহী করিডোরের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল, অথচ ২০১৪ সাল পর্যন্ত এর আওতায় ১ কিলোমিটার রেল লাইনও বসেনি। গত ৯ বছরে এই প্রকল্পের বড় অংশের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, সেখান দিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলও করছে। আজ উত্তরপ্রদেশে সোননগর ও দীনদয়াল উপাধ্যায় জংশনের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন করিডোর উদ্বোধনের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে শুধু পণ্যবাহী ট্রেনের গতিই বাড়ছে না, দেশের পূর্বাঞ্চলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হচ্ছে।

দেশে দ্রুতগামী ট্রেনের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫০ বছর আগে প্রথম রাজধানী এক্সপ্রেস চলেছিল, সেটি মাত্র ১৬টি রুটে চলত। ৩০-৩৫ বছর আগে শতাব্দী এক্সপ্রেস চলতে শুরু করে, এটি বর্তমানে ১৯টি রুটে চলাচল করে। অথচ মাত্র ৪ বছরের মধ্যেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ২৫টি রুটে চলাচল করছে। আজ উত্তরপ্রদেশে আরও দুটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ট্রেন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সবাই আরও বেশি বন্দে ভারত ট্রেন চাইছেন। আগামী দিনে বন্দে ভারত দেশের প্রতিটি প্রান্তকে সংযুক্ত করবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশীতে গত ৯ বছরে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপুল উন্নতি হয়েছে, এর জেরে প্রভূত কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। কাশীতে আসা তীর্থযাত্রী ও পর্যটকের সংখ্যা ১ বছরের মধ্যে ১২ গুণ বেড়ে ৭ কোটি হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, এর ফলে রিক্সা চালক, দোকানদার, ধাবা ও হোটেলের কর্মী, বেনারসী শাড়ির সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা – সকলেই উপকৃত হয়েছেন।

আজকের প্রকল্পগুলির জন্য প্রধানমন্ত্রী সকলকে অভিনন্দন জানান। বাবা বিশ্বনাথের আশীর্বাদে কাশীর উন্নয়ন যাত্রা এইভাবেই চলতে থাকবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।

উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রীমতী আনন্দীবেন প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ, দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য ও শ্রী ব্রজেশ পাঠক, কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রী শ্রী মহেন্দ্রনাথ পান্ডে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক এস পি সিং বাঘেল প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

CG/SD/SKD/ ReleaseID: 1938030/ 08 July, 2023/ W 1212



(Release ID: 1938348) Visitor Counter : 96