প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী মধ্যপ্রদেশের ভোপালে রানী কমলাপতি স্টেশন থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করেছেন


ইন্দোরে রাম নবমীর দিন দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

“ভারতীয় রেলের ইতিহাসে স্বল্প সময়ের মধ্যে একই রেল স্টেশনে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয়বার সফর একটি বিরল ঘটনা”

“ভারত এখন নতুন ভাবনা ও উদ্যোগে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করছে”

“ভারতের উৎসাহ ও উদ্দীপনার প্রতীক বন্দে ভারত; এর মধ্য দিয়ে আমাদের দক্ষতা, প্রত্যয় এবং ক্ষমতা প্রদর্শিত হচ্ছে”

“তাঁরা ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন কিন্তু আমরা নাগরিকদের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাঁদের সন্তুষ্ট করতে দায়বদ্ধ”

“৬০০টি ‘এক স্টেশন, এক পণ্য’ বিক্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে এখান থেকে ১ লক্ষ কেনাকাটা হয়েছে”

“দেশের সাধারণ মানুষের জন্য সুবিধা প্রদান ভারতীয় রেলের সমার্থক হয়ে উঠেছে”

“আজ মধ্যপ্রদেশ নিরন্তর উন্নয়নের নতুন এক অধ্যায় রচনা করছে”

“এক সময়ে ‘বিমারু’র তকমা পাওয়া মধ্যপ্রদেশ আজ উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে”

“ভারতের দরিদ্র জনসাধারণ, ভারতের মধ্যবিত্ত, ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ, ভারতের দলিত – পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা ౼ প্রত্যেক ভারতবাসী আমার রক

Posted On: 01 APR 2023 5:11PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ০১ এপ্রিল, ২০২৩

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী  মধ্যপ্রদেশের ভোপালে রানী কমলাপতি স্টেশন থেকে আজ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রার সূচনা করেছেন। এর আগে তিনি রানী কমলাপতি থেকে নতুন দিল্লি গামী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঘুরে দেখেন এবং শিশু ও রেল কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ভাষণের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দোরে রাম নবমীর দিন একটি মন্দিরে দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। শ্রী মোদী আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী প্রথম বন্দে ভারত ট্রেন পাওয়ার জন্য মধ্যপ্রদেশের জনসাধারণকে অভিনন্দন জানান। এই ট্রেন দিল্লি ও ভোপালের মধ্যে যাতায়াতের সময় হ্রাস করবে। এর ফলে, যুবক-যুবতী এবং পেশাদাররা উপকৃত হবেন।  

শ্রী মোদী বলেন, আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান-স্থলে আসতে পেরে তিনি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মনে করছেন। রানী কমলাপতি রেল স্টেশন থেকে দিল্লির জন্য অত্যাধুনিক বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রার সূচনা করার সুযোগ পেয়ে তিনি আনন্দিত। ভারতীয় রেলের ইতিহাসে স্বল্প সময়ের মধ্যে একই রেল স্টেশনে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয়বার সফর –  একটি বিরল ঘটনা। আজকের এই অনুষ্ঠান আধুনিক ভারতের নতুন অধ্যায় ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ এক উদাহরণ। 

শ্রী মোদী বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। ছাত্রছাত্রীরা এই ট্রেনটির বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহী। “ভারতের উৎসাহ ও উদ্দীপনার প্রতীক বন্দে ভারত। এর মধ্য দিয়ে আমাদের দক্ষতা, প্রত্যয় এবং ক্ষমতা প্রদর্শিত হচ্ছে”।

প্রধানমন্ত্রী সাঁচী, ভীমবেটকা, ভোজপুর এবং উদয়গিরি গুহায় পর্যটনের ক্ষেত্রে এই ট্রেনের সুবিধার কথা উল্লেখ করেন। এর ফলে, সংশ্লিষ্ট পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে। ফলস্বরূপ, স্থানীয় মানুষদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং আয় বাড়বে। 

একবিংশ শতাব্দীর ভারতের নতুন ভাবনার কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, পূর্ববর্তী সরকারগুলি নাগরিকদের চাহিদা না মিটিয়ে তুষ্টিকরণের রাজনীতি করেছে। “তাঁরা ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু, আমরা নাগরিকদের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাঁদের সন্তুষ্ট করতে দায়বদ্ধ”। ভারতীয় রেলকে সাধারণ মানুষের পরিবহণের অন্যতম মাধ্যম বলে উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন করেন আগে রেলের মানোন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের কাজ কেনো করা হয়নি।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার সময়ে যে রেল ব্যবস্থা সরকার পেয়েছিল, সহজেই তার মানোন্নয়ন ঘটানো যেত। কিন্তু, কায়েমী রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে রেলের উন্নয়ন ঘটানো হয়নি। স্বাধীনতার এত দশক পার হওয়ার পরও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। বর্তমান সরকার ভারতীয় রেলকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ রেল নেটওয়ার্কে পরিণত করতে চায়। ২০১৪ সালের আগে ভারতীয় রেল সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচার করা হ’ত। সেই সময় প্রহরী বিহীন লেভেল ক্রসিং-গুলিতে প্রচুর দুর্ঘটনা ঘটতো। আজ ব্রডগেজ লাইনে কোনও প্রহরী বিহীন লেভেল ক্রসিং নেই। অতীতে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির খবর নিয়মিত পাওয়া যেত। বর্তমানে ভারতীয় রেল নিরাপদ ও সুরক্ষিত হয়ে উঠেছে। দেশে তৈরি ‘কবচ’ যাত্রীদের সুরক্ষা বৃদ্ধি করেছে। 

শ্রী মোদী বলেন, আজ সুরক্ষার বিষয়টি দুর্ঘটনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, রেল যাত্রার সময় যে কোনও জরুরি-ভিত্তিতে উদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হয়।  এর সুফল মহিলারা পাচ্ছেন। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতা, নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন চলা এবং টিকিটের কালোবাজারি বন্ধ করা গেছে।  

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্থানীয় শিল্পীদের থেকে উৎপাদিত পণ্য সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য ‘এক স্টেশন, এক পণ্য, উদ্যোগটি যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় রেল যাত্রীরা বিভিন্ন জেলার হস্তশিল্পীদের বিভিন্ন কাজ, রান্নার সরঞ্জা্ম, বস্ত্র, ছবি সহ নানা স্থানীয় সমগ্রী ক্রয় করতে পারছেন। ৬০০টি ‘এক স্টেশন, এক পণ্য’ বিক্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে এখান থেকে ১ লক্ষ কেনাকাটা হয়েছে।

শ্রী মোদী বলেন, “আজ দেশের সাধারণ মানুষের জন্য সুবিধা প্রদান ভারতীয় রেলের সমার্থক হয়ে উঠেছে”। রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণ, ৬ হাজারটি স্টেশনে ওয়াইফাই সংযোগ এবং ৯০০টি স্টেশনে সিসি টিভি বসানো হয়েছে। যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে বন্দে ভারত – এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ দেশের প্রতিটি প্রান্তে বন্দে ভারত ট্রেন চালানোর জন্য দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।  

এ বছরের বাজেটে রেলের জন্য রেকর্ড পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন। “যখন সদিচ্ছা থাকবে, উদ্দেশ্যও হবে স্পষ্ট এবং লক্ষ্য থাকবে স্থির, তখন নতুন পথের সন্ধান মিলবে”। গত ৯ বছরে রেল বাজেটে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১৪ সালের আগে মধ্যপ্রদেশের জন্য রেল বাজেটে বরাদ্দ থাকতো ৬০০ কোটি টাকা। এবারের বাজেটে মধ্যপ্রদেশ পেয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। 

রেলের আধুনিকীকরণের প্রসঙ্গে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেলপথের ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ এগিয়ে চলেছে। দেশের কোনও না কোনও অংশে এই কাজ সম্পন্ন হওয়ার খবর প্রতিদিনই আসছে। যে ১১টি রাজ্যে রেলপথের ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ হয়েছে, মধ্যপ্রদেশ তার মধ্যে অন্যতম। ২০১৪ সালের আগে প্রতি বছর ৬০০ কিলোমিটার রেলপথে বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ হতো। আর আজ তা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৬ হাজার কিলোমিটার হয়েছে।   

“মধ্যপ্রদেশ আজ নিরন্তর উন্নয়নের নতুন এক অধ্যায় রচনা করছে। কৃষি অথবা শিল্প প্রতিটি ক্ষেত্রেই মধ্যপ্রদেশ ভারতের শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়ক হয়েছে”। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এক সময়ে ‘বিমারু’র তকমা পাওয়া মধ্যপ্রদেশ আজ উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে। দরিদ্র মানুষদের জন্য আবাস নির্মাণে মধ্যপ্রদেশ এগিয়ে রয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজ্যের সাফল্য অব্যাহত। রাজ্যের কৃষকরা গম সহ বিভিন্ন শস্য উৎপাদনে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ে তুলছেন। শিল্প সংস্থাগুলি মানোন্নয়নের ফলে যুবক-যুবতীদের জন্য প্রচুর সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। 

শ্রী মোদী জনসাধারণকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আজ দেশের মধ্যে ও বাইরে তাঁর চরিত্র হননের জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করা হচ্ছে। “ভারতের দরিদ্র জনসাধারণ, ভারতের মধ্যবিত্ত, ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ, ভারতের দলিত – পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা౼ প্রত্যেক ভারতবাসী আমার রক্ষা কবচ হয়ে উঠেছেন”। তিনি দেশের উন্নয়নের জন্য সকলকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান। “উন্নত ভারতের জন্য মধ্যপ্রদেশের ভূমিকাকে আরও বৃদ্ধি করতে হবে। নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এই সিদ্ধান্তেরই অঙ্গ”। 

অনুষ্ঠানে মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী মঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান এবং রেলমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব উপস্থিত ছিলেন। 

 

প্রেক্ষাপট: 
দেশে রেল যাত্রার নতুন অভিজ্ঞতা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত হয়েছে। ভোপালের রানী কমলাপতি রেলস্টেশন এবং নতুন দিল্লির মধ্যে যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রার সূচনা হ’ল, সেটি একাদশতম পরিষেবা এবং দ্বাদশতম বন্দে ভারত ট্রেন। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি অত্যাধুনিক এই ট্রেনে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম এই ট্রেনে রেল যাত্রীরা আরামপ্রদ সফর করতে পারবেন। ট্রেনটি যে অঞ্চলে চলাচল করবে, সেখানে পর্যটন এবং আর্থিক উন্নয়নে গতি আসবে।   

 

PG/CB/SB



(Release ID: 1913633) Visitor Counter : 115