প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
যুব শক্তির দক্ষতা ও শিক্ষাকে কাজে লাগাতে আয়োজিত বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বঙ্গানুবাদ
Posted On:
25 FEB 2023 11:16AM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
বন্ধুগণ,
এই স্বাধীনতার অমৃতকালে ভারতের দুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হল দক্ষতা এবং শিক্ষা। উন্নত ভারতের দূরদৃষ্টি নিয়ে আমাদের যুবসমাজ দেশের অমৃত যাত্রায় নেতৃত্ব প্রদান করছে। সেজন্য অমৃতকালের প্রথম বাজেটে দেশের যুবসমাজকে এবং তাঁদের ভবিষ্যতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যেন ব্যবহারিক প্রয়োগ-ভিত্তিক, শিল্পোদ্যোগ-কেন্দ্রিক হয়ে ওঠে – তার ভিত্তি এবারের বাজেট শক্তিশালী করে তুলছে। অনেক বছর ধরে আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রটি নানারকম অনমনীয়তার শিকার ছিল। আমরা একে বদলানোর চেষ্টা করেছি। আমরা শিক্ষা ও দক্ষতাকে যুবসমাজের কর্মক্ষমতা এবং আগামী দিনের চাহিদা অনুসারে পুনর্বিন্যাস করেছি। নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে শিক্ষা ও দক্ষতা উভয়ের উপর সমান জোর দেওয়া হয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এই প্রচেষ্টায় আমাদের শিক্ষকদের অনেক সমর্থন পেয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের অতীতের বোঝা থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে অনেক সাহস পেয়েছি। তাদের এই ভূমিকা আমাদের সরকারকে শিক্ষা ও দক্ষতার ক্ষেত্রে আরও সময়োপযোগী সংস্কার আনতে উৎসাহ যুগিয়েছে।
বন্ধুগণ,
নতুন প্রযুক্তি, নতুন ধরনের শ্রেণীকক্ষ নির্মাণেও সাহায্য করছে। বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীর সময় এই নতুন ধরনের ক্লাস রুমের অভিজ্ঞতাও আমরা পেয়েছি। সেজন্য আজ সরকার এ ধরনের পদ্ধতি ও উপাদানগুলিকে গুরুত্ব দিচ্ছে, যাতে ‘এনি হয়ার অ্যাক্সেস অফ নলেজ’ বা যেখানে খুশি জ্ঞান লাভের সম্ভাবনা সুনিশ্চিত হতে পারে। আজ আমাদের ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ‘স্বয়ম’ – এর সদস্য সংখ্যা ৩ কোটি। ভার্চ্যুয়াল ল্যাবস্ এবং ন্যাশনাল ডিজিটাল লাইব্রেরীতেও জ্ঞান লাভের অনেক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ডিটিএইচ চ্যানেলগুলির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা স্থানীয় ভাষাগুলিতে পড়াশুনার সুযোগ পাচ্ছে। আজ দেশে এরকম অনেক ডিজিটাল এবং প্রযুক্তি-ভিত্তিক উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এই সমস্ত উদ্যোগকে ন্যাশনাল ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির মাধ্যমে আরও সংহত করে তোলা হবে। এই ধরনের ভবিষ্যৎমুখী পদক্ষেপ আমাদের শিক্ষা, আমাদের দক্ষতা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সম্পূর্ণ পরিসরকে পরিবর্তিত করে তুলতে পারে। এখন আর আমাদের শিক্ষকদের ভূমিকা সীমাবদ্ধ থাকবে না। এখন আমাদের শিক্ষকদের জন্য গোটা দেশ, গোটা বিশ্ব একটি শ্রেণীকক্ষের মতো হয়ে উঠবে। এই সম্ভাবনা শিক্ষকদের জন্য নতুন নতুন সুযোগের দরজা খুলবে। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্যও এখন সারা দেশ থেকে শিক্ষণ উপাদানের অনেক ধরনের বৈচিত্র্য, অনেক প্রকারের বিশেষত্ব, স্থানীয় বিবর্তনের মতো অনেক নতুন নতুন বিষয়কে রাখা যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা হ’ল – এর মাধ্যমে আমাদের গ্রাম ও শহরের স্কুলগুলির মধ্যে যে বিশাল তফাৎ ছিল, তা দূর হবে। সকল ছাত্রছাত্রী সমান সুযোগ পাবে।
বন্ধুগণ,
আমরা দেখেছি যে, অনেক দেশ ‘অন দ্য জব লার্নিং’ বা কাজের মাধ্যমে শিক্ষাকে বিশেশ গুরুত্ব দেয়। বিগত বছরগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণীকক্ষের বাইরে ব্যবহারিক শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ইন্টার্নশিপস্ এবং অ্যাপ্রেন্টিশিপস্ বা শিক্ষানবিশি–র উপর গুরুত্ব দিয়েছে। আজ ন্যাশনাল ইন্টার্নশিপ পোর্টালে প্রায় ৭৫ হাজার কর্মদাতা যুক্ত রয়েছেন। তাদের মাধ্যমে ইন্টার্নশিপের প্রায় ২৫ লক্ষ পদ তৈরি হয়েছে। এর ফলে, আমাদের যুবক-যুবতীদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট শিল্পোদ্যোগগুলিও অত্যন্ত লাভবান হবে। আমি দেশের শিল্পোদ্যোগ ও শিক্ষার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলিকে অনুরোধ জানাবো যে, আপনারা সকলে যত বেশি সম্ভব এই পোর্টালকে ব্যবহার করুন। আমাদের সকলকে মিলেমিশে দেশে ইন্টার্নশিপের সংস্কৃতিকে আরও সম্প্রসারিত করতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমি এটা মনে করি যে, শিক্ষানবিশি আমাদের যুবসম্প্রদায়কে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করে। আমরা ভারতে শিক্ষানবিশিকেও উৎসাহ যোগাচ্ছি। এর ফলে, আমাদের শিল্পোদ্যোগগুলিও যথাযথ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী গোষ্ঠীকে সহজভাবেই চিহ্নিত করতে পারবে। সেজন্য এবারের বাজেটে প্রায় ৫০ লক্ষ যুবক-যুবতীর জন্য ন্যাশনাল অ্যাপ্রেন্টিশিপ প্রোমোশন স্কিম বা জাতীয় শিক্ষানবিশি উন্নয়ন প্রকল্প– এর মাধ্যমে ছাত্র বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থাৎ, আমরা শিক্ষানবিশির জন্য আবহ গড়ে তুলছি। আর অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রেও শিল্পোদ্যোগগুলির সহায়ক ভূমিকা পালন করছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের শিল্পোদ্যোগগুলি এগিয়ে এসে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করবে।
বন্ধুগণ,
আজ ভারতকে বিশ্ব একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসাবে দেখছে। সেজন্য আজ ভারতে বিনিয়োগ করার জন্য বিশ্বের অনেক বিনিয়োগকারী উৎসাহিত। এক্ষেত্রে দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদল অত্যন্ত উপযোগী ভূমিকা পালন করবে। এবারের বাজেটে তাই আমরা বিগত বছরগুলিতে যেমনভাবে দক্ষতা উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই ক্রমকেই এগিয়ে নিয়ে গেছি।‘ প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা ৪.০’ আগামী বছরগুলিতে দেশের লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতীকে ‘স্কিল’, রি-স্কিল’ এবং আপ-স্কিল’ করাবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জনজাতির মানুষ, দিব্যাঙ্গ ও মহিলাদের প্রয়োজন অনুসারে ‘ট্রেলার মেড প্রোগ্রামস্’ – এর রচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এতে ‘ইন্ডাস্ট্রি ৪.০’ – এর মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্স, আইওটি এবং ড্রোনের মতো অনেক ক্ষেত্রে কাজ করার উপযোগী মানবসম্পদ তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য ভারতে কাজ করা আরও সহজ হয়ে উঠবে। ভারতে বিনিয়োগকারীদের ‘রি-স্কিলিং’ – এর জন্য অতিরিক্ত শক্তি ও সম্পদ খরচ করতে হবে না। এবারের বাজেটে ‘পিএম বিশ্বকর্মা কৌশল সম্মান যোজনা’র কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের পারম্পরিক কারিগর, হস্তশিল্পী, অন্যান্য শিল্পীদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হবে। পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা এই কারিগরদের নতুন বাজার সৃষ্টিতে সাহায্য করবে। আর এক্ষেত্রে তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের আরও ভাল দামও তাঁরা পাবেন।
বন্ধুগণ,
ভারতে শিক্ষা ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে পরিবর্তনের স্বার্থে শিক্ষা ক্ষেত্র ও শিল্পোদ্যোগগুলিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে, তাঁদের মধ্যে পার্টনারশিপ গড়ে ওঠার অনেক প্রয়োজন রয়েছে। এগুলির মাধ্যমে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী, গবেষণা সম্ভব হবে এবং এই গবেষণার জন্য শিল্পোদ্যোগগুলির পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত অর্থ প্রদান করা হবে। এবারের বাজেটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য যে ৩টি সেন্টার অফ এক্সেলেন্স বা উৎসর্গ কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলির মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রি অ্যাকাডেমিয়া পার্টনারশিপ শক্তিশালী হবে। এটাও ঠিক করা হয়েছে যে, মেডিকেল কলেজ এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের গবেষণা ও উন্নয়ন টিমগুলির জন্যও আইসিএমআর ল্যাবগুলির সুবিধা প্রদান করা হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, দেশে গবেষণা ও উন্নয়নের বাস্তু ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে আমরা যে পদক্ষেপগুলি নিয়েছি, সেগুলির মাধ্যমে আমাদের বেসরকারি ক্ষেত্র সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে।
বন্ধুগণ,
বাজেটে যতগুলি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেগুলির মাধ্যমে আমাদের সরকারের সম্পূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গীও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আমাদের জন্য শিক্ষা ও দক্ষতা নিছকই এগুলির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক কিংবা বিভাগ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। প্রত্যেক ক্ষেত্রে তাদের জন্য সম্ভাবনা রয়েছে। এই ক্ষেত্রটি আমাদের অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান আকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে। দক্ষতা ও শিক্ষার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমার অনুরোধ যে, ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে যে সুযোগগুলি তৈরি হচ্ছে, সেগুলিকে আপনারা নিবিড়ভাবে অধ্যয়ন করুন। এর মাধ্যমে, আমাদের এসব ক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ তৈরি করতে সুবিধা হবে। এখন যেমন আপনারা ভারতে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়া অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত খবরগুলি দেখছিলেন ও শুনছিলেন, তা থেকে স্পষ্ট হয় যে ভারতে পরিবহণ এবং পর্যটন শিল্প কতটা সম্প্রসারিত হচ্ছে। এটা কর্মসংস্থানের অনেক বড় মাধ্যমও হয়ে উঠেছে। সেজন্য আমাদের দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্রগুলি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকেও তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি চাই, যে যুবসম্প্রদায় দক্ষতা উন্নয়ন মিশনের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত হয়েছেন, তাঁদেরকেই আমরা যেন ‘আপডেটেড ডেটাবেস’ তৈরি করি। কারণ, এরকম অনেক যুবক-যুবতী হয়তো রয়েছেন, যাঁদের দক্ষতা উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসার পর আমাদের এই প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ যেন পিছিয়ে না পড়ে, সেজন্য আমাদের এখন থেকেই মিলেমিশে আরও অনেক কাজ করতে হবে।
বন্ধুগণ,
আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এখানে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলাপ-আলোচনা হবে। আরও ভালো পরামর্শ পাওয়া যাবে, আরও ভালো সমাধান সুনিশ্চিত হবে। আর একটি নতুন সংকল্প হিসাবে নতুন নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে আমাদের নবীন প্রজন্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রটিকে আপনাদের ভাবনাচিন্তার মাধ্যমে সমৃদ্ধ করুন। আপনাদের সংকল্পের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যান। সরকার আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার জন্য প্রস্তুত। আপনাদের সকলকে আজকের এই ওয়েবিনারের সাফল্যের জন্য আমার পক্ষ থেকে অনেক অনেক শুভকামনা। ধন্যবাদ।
PG/SB/SB
(Release ID: 1902642)
Visitor Counter : 219
Read this release in:
Kannada
,
Assamese
,
English
,
Urdu
,
Hindi
,
Marathi
,
Manipuri
,
Punjabi
,
Gujarati
,
Odia
,
Tamil
,
Telugu
,
Malayalam