প্রতিরক্ষামন্ত্রক

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী যুবসম্প্রদায়কে উদ্ভাবন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা এবং নতুন নতুন সংস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন

Posted On: 24 FEB 2023 12:18PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

 ভারতকে আরও শক্তিশালী ও স্বনির্ভর করে তোলার জন্য সরকারের উদ্যোগে গতি আনতে দেশের যুবসম্প্রদায়কে উদ্ভাবন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা, নতুন নতুন সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং স্টার্টআপ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং। পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে শ্রী সিং যুবসম্প্রদায়কে রবীন্দ্রনাথের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি, শতাব্দী প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যকে পাথেয় করে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে দেশ সার্বিকভাবে উন্নতির এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছতে পারে।

শ্রী সিং ছাত্রছাত্রীদের বলেছেন, দলবদ্ধভাবে সকলকে কাজ করতে হবে। সাফল্যের পেছনে না দৌড়ে এবং ব্যর্থতায় মুহ্যমান না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সফল ব্যক্তিরা যাতে অহং বোধে প্রভাবিত না হন, সেদিকে তাঁদের সতর্ক থাকতে হবে। সকলকে একটি সুষম জীবনশৈলী অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, “চরিত্র গঠন, জ্ঞানার্জন এবং সম্পদের প্রতি সমান গুরুত্ব দিতে হবে। ভারতের বিকাশ যুবসম্প্রদায়ের মাধ্যমেই সম্ভব। আপনারা যত শক্তিশালী হবেন, দেশও ততটাই শক্তিশালী হয়ে উঠবে”।

তিনি ছাত্রছাত্রীদের বিশ্বভারতীর সৌরভ চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দর্শনের বাস্তব রূপ বলে অভিহিত করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রবীন্দ্রনাথের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রতিফলন। “ভারত ও বিশ্বের জ্ঞানচর্চার এক অনবদ্য মিশ্রণ বিশ্বভারতী। বিশ্বের নানাপ্রান্তের জ্ঞান প্রবাহকে ভারতীয় ভাবনায় জারিত করে এই প্রতিষ্ঠান সারা বিশ্বকে আলোকিত করেছে”।  

বিশ্বকবির জাতীয়তাবাদ এবং আন্তর্জাতিক মানবতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, এই মহান দার্শনিকের ভাবনাচিন্তা, দর্শন ও মূল্যবোধ ভারতীয় সমাজ ও রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাবিত করেছিল। যুগ যুগ ধরে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ সমবায় ও মানবকল্যাণের ভাবনায় বিকশিত হয়েছে। “ভারতীয় জাতীয়তাবাদ একটি সাংস্কৃতিক বহিঃপ্রকাশ। এটি কোনও ভৌগোলিক অঞ্চলের মধ্যে আবদ্ধ নয়। ভৌগোলিক অঞ্চলের আগে সচেতনতার বিষয়টি এখানে অগ্রাধিকার পায়, যার মূল কেন্দ্রে রয়েছে মানবকল্যাণ। ভারতীয় জাতীয়তাবাদ আসলে একটি সার্বিক অন্তর্ভুক্তিমূলক চেতনা, যা বিশ্বের কল্যাণে অনুপ্রাণিত। বিশ্বভারতী এই ভাবধারায় লালিত”।

শিল্পোন্নয়ন, আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে রবীন্দ্রনাথের ভাবনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী সিং বলেন, বিশ্বকবির ভবিষ্যৎ ভাবনা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। গুরুদেবের সেই ভাবনাকে অনুসরণ করে আজ ভারত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের মানোন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে দেশে উৎপাদিত সামগ্রী আন্তর্জাতিক মানের। “আজ ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মর্গান স্ট্যানলির সাম্প্রতিকতম প্রতিবেদন অনুসারে আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ হিসাবে ভারত বিবেচিত হবে। ২০৪৭ সালের মধ্যে অর্থনীতির নিরিখে আমরা শীর্ষস্থানে পৌঁছবো বলে আমি আশাবাদী। রবীন্দ্রনাথের প্রতি সেটিই হবে আমাদের যথার্থ শ্রদ্ধাঞ্জলি”।

সামাজিক পরিবর্তন, মহিলাদের ক্ষমতায়ন এবং বর্ণবৈষম্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের দূরদর্শিতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কবির লেখা গান শিক্ষাকে প্রসারিত করে। এই গানগুলি ভারতীয় উপাদানে সমৃদ্ধ।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও বলেন, মহান এই দার্শনিকের শিক্ষা বিষয়ে ভাবনা আজও সকলকে পথ দেখায়। “গুরুদেব বিশ্বাস করতেন, সত্য ও সুন্দরের কাছে পৌঁছনোর একমাত্র মাধ্যম হ’ল শিক্ষা, যা সমাজকল্যাণকে নিশ্চিত করে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, জ্ঞানলাভের মধ্যেই শিক্ষা সীমাবদ্ধ নয়, সমাজের স্বার্থে তাকে কাজে লাগাতে হবে। পাশ্চাত্যের ভাবনা হ’ল – একজন শিক্ষক একসঙ্গে ৪০-৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে পড়াবেন। কিন্তু, এই ব্যবস্থায় একটি শিশুর ব্যক্তিস্বত্ত্বা বিকশিত হয় না। প্রাচীন ভারতে গুরুকূলেও সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হ’ত না। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, নালন্দা ও তক্ষশীলার মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক ও ছাত্রের অনুপাত ছিল ১:৫। সরকারের ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষা নীতিতে শিশুদের ব্যক্তিস্বত্ত্বার বিকাশের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং শিক্ষক – শিক্ষার্থীর অনুপাত যথাযথ করার বিষয়টিকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে”।

 PG/CB/SB



(Release ID: 1902002) Visitor Counter : 133