তথ্যওসম্প্রচারমন্ত্রক

‘মুজিব – একটি জাতির রূপকার’ সিনেমাটির ট্রেলার কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রকাশিত


এই ছবিটি দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সৌহার্দ্যের উদাহরণ : শ্রী অনুরাগ ঠাকুর

ভারতীয় সৈনিকদের আত্মবলিদান আমরা সবসময় স্মরণ করি : ড. হাসান মাহমুদ

Posted On: 19 MAY 2022 10:58PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লী, ১৯ মে, ২০২২

 

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র, ‘মুজিব – একটি জাতির রূপকার’-এর ৯০টি সেকেন্ডের ট্রেলার প্রকাশ করেছেন। এই ছবিটির পরিচালক শ্রী শ্যাম বেনেগাল। 

এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে শ্রী অনুরাগ ঠাকুর বিস্তারিতভাবে জানান। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় এই ছবি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে এটি ভারতের উপহার।” ছবিটি নির্মাণের সময় বিভিন্ন প্রতিকূলতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারীর সময়ে ছবি তৈরির কাজ শুরু হয়। যখন বিশ্বে বিভিন্ন প্রতিবেশী রাষ্ট্র নিজেদের মধ্যে বিবাদে লিপ্ত সেই সময়ে সুন্দর প্রতিবেশীসুলভ একটি উদ্যোগ এই সিনেমা। এর মধ্য দিয়ে উভয় দেশ একে অন্যের ভূমিকার প্রশংসা করেছে। সিনেমা তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার জন্য শ্রী ঠাকুর, শ্রী মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে  ধন্যবাদ জানান।

শ্রী ঠাকুর আরও বলেন, ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ তম বার্ষিকীতে মার্শে দ্য ফিল্মে কান্ট্রি অফ অনারের সম্মান অর্জন করেছে ভারত। তাই ভারত ও বাংলাদেশের  সৌহার্দ্যর এই অনন্য নিদর্শনটির ট্রেলার প্রকাশের এটিই সব থেকে ভালো স্থান। তিনি ট্রেলার প্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানান। 

বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহামুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম ত্যাগ ও একটি দেশ গঠনের কথা এই চলচ্চিত্রের মূল বিষয়। শেখ হাসিনা এবং শ্রী মোদীর নেতৃত্বে দুটি দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বর্তমানে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ‘এই ছবির মধ্য দিয়ে উভয় দেশের সম্পর্কের শক্তি ও গভীরতা প্রতিফলিত’। ১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাহায্যের জন্য মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈনিকদের আত্মবলিদান বাংলাদেশীরা সর্বদা স্মরণে রাখবেন। 

এই চলচ্চিত্রটির সম্পর্কে বলতে গিয়ে ড. মাহামুদ জানান, একটি জাতিকে স্বাধীন করার সময় বঙ্গবন্ধু যে সংগ্রাম, বেদনা ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন এই ছবির মাধ্যমে তা প্রতিফলিত। ‘সারা বিশ্ব এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জানতে পারবে ফাঁসিকাঠে প্রাণ বিসর্জনের আশংকা সত্ত্বেও  বঙ্গবন্ধু কীভাবে তাঁর সংগ্রামে অবিচল ছিলেন, কীভাবে তিনি একটি নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বে দিয়েছেন। এই মহান মানুষের জীবন কথা তিন ঘণ্টায় তুলে ধরা সহজ কাজ নয়, কিন্তু ছবিটির কলাকুশলীরা এই কাজটি করে দেখিয়েছেন।’

শ্রী শ্যাম বেনেগাল রেকর্ড করা এক বার্তায় জানান, ‘ট্রেলার প্রকাশিত হল। দর্শকদের তা ভালো লাগবে বলে আমি আশাবাদী। এই ছবি তৈরি করতে গিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি দুই দেশের অভিনেতা, অভিনেত্রী ও কলাকুশলীদের সঙ্গে কাজ করার বিশেষ এক সুযোগ পেয়েছি। ভারত ও বাংলাদেশের মন্ত্রীদের অকুণ্ঠ সহযোগিতার জন্য আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।’

অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব শ্রী অপূর্ব চন্দ্র, ফ্রান্সে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত শ্রী জাভেদ আশরফ, ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিস্টার খোন্দকার মোহাম্মদ সালহা সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

মুজিব – একটি জাতির রূপকার চলচ্চিত্র সম্পর্কে- 

শ্রী শ্যাম বেনেগাল নির্দেশিত মুজিব – একটি জাতির রূপকার চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য ২০২০-র ১৪ই জানুয়ারি এনএফডিসি ও বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিএফডিসি) একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ভারত ও বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এই ছবির প্রযোজক। ১ কোটি মার্কিন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ছবিটি নির্মিত হচ্ছে। এখানে ভারত ও বাংলাদেশ ৪০:৬০ অনুপাতে অর্থ ব্যয় করেছে। মহান নেতার জন্ম শতবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ছবিটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কোভিড মহামারীর কারণে এটি মুক্তি পেতে দেরি হচ্ছে। ভারত ও বাংলাদেশে চারটি পর্বে বঙ্গবন্ধু - একটি জাতির রূপকার চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে। এবছরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।    

ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ ও নূসরৎ ইনরোজ তিষা। জাতির প্রতি ভালোবাসা এবং মুজিবকে সম্মান জানানোর তাগিদে তাঁরা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ টাকার বিনিময়ে এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। শুভ, শেখ মুজিবুর রহমানের যৌবন কালের অভিনয়টি  করেছেন। অন্যদিকে, মুজিবপত্নী শেখ ফাজিলাতুন্নেসা (রেণু)-র ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিষা। ছবিটিতে পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যার মধ্যেও বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বের মহান নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে তাঁর নীরব ভূমিকা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। 

ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এনএফডিসি)

কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ১৯৭৫ সালে ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন গড়ে তোলে। ভারতে ভালো সিনেমা তৈরির জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় ভালোমানের চলচ্চিত্র নির্মাণে আর্থিক প্রযোজনা এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে সাহায্য করা এনএফডিসি-র মূল কাজ।

বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিএফডিসি)

ইস্ট পাকিস্তান ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন হিসেবে ১৯৫৯ সালে যে সংস্থাটি গড়ে ওঠে ’৭১-এর স্বাধীনতালাভের পর সেটিই বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রতি বছর তেসরা এপ্রিল বিএফডিসি-র উদ্যোগে বাংলাদেশে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদযাপিত হয়। ১৯৫৯ সালের এই দিনে তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান ইস্ট পাকিস্তান ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন গড়ে তোলার জন্য একটি বিল উপস্থাপিত করেছিলেন।

 

CG/CB/SKD/



(Release ID: 1826880) Visitor Counter : 162