যুবওক্রীড়াবিষয়কমন্ত্রক
প্রধানমন্ত্রী পুদুচেরীতে ২৫তম জাতীয় যুব উৎসবের উদ্বোধন করেছেন
স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়ার উপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দেওয়ায় বিশ্বে স্টার্ট-আপ সংস্থা গড়ে তোলার নিরিখে প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে ভারত স্থান করে নিয়েছে : শ্রী অনুরাগ ঠাকুর
प्रविष्टि तिथि:
12 JAN 2022 4:43PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১২ জানুয়ারি, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী স্বামী আজ পুদুচেরীতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২৫তম জাতীয় যুব উৎসবের উদ্বোধন করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনটি জাতীয় যুবদিবস হিসাবে পালন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী ‘মেরে স্বপ্নো কা ভারত’ ও ‘আনসাং হিরোজ অফ ইন্ডিয়ান ফ্রিডম মুভমেন্ট’ বিষয়ের উপর নির্বাচিত রচনা প্রকাশ করেছেন। ১ লক্ষেরও বেশি যুবক-যুবতী এই দুটি বিষয়ের উপর রচনা লিখেছেন। তারই নির্বাচিত অংশ আজ প্রকাশ করা হ’ল। শ্রী মোদী এমএসএমই প্রযুক্তি কেন্দ্র ও ওপেন এয়ার থিয়েটারের ব্যবস্থাসম্পন্ন প্রেক্ষাগৃহ পেরুনথালাইভার কামরাজার মনিমন্ডপম্ – এর উদ্বোধন করেছেন। এমএসএমই প্রযুক্তি কেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২২ কোটি টাকা। পুদুচেরী সরকার প্রেক্ষাগৃহটি নির্মাণে ব্যয় করেছে ২৩ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর, শ্রী নারায়ণ রাণে, শ্রী ভানুপ্রতাপ সিং ভার্মা ও শ্রী নিশীথ প্রামাণিক এবং পুদুচেরীর উপ-রাজ্যপাল ডঃ তামিলিসাই সৌন্দরাজন, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী এন রঙ্গস্বামী, পুদুচেরীর মন্ত্রিসভার সদস্যরা ও সাংসদরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দেশবাসীকে জাতীয় যুবদিবসের অভিনন্দন জানান। স্বামী বিবেকানন্দের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি বলেন, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবে স্বামীজীর জন্মদিনটি নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। এ বছর শ্রী অরবিন্দের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী ও মহাকবি সুব্রমানিয়ান ভারতীর শততম মৃত্যু বার্ষিকী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পুদুচেরীর সঙ্গে এই দুই সন্ন্যাসীর একটি বিশেষ যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরা একে অন্যের সাহিত্যের অংশীদার এবং আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার শরিক”।
প্রাচীন ভারতের যুব ভাবনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজও সারা বিশ্ব ভারতের প্রতি আশাবাদী ও আস্থাশীল। ভারতের জনসংখ্যার সিংহভাগই যুব এবং ভারতের ভাবনা ও চেতনাও যুবমনস্ক। দেশের চিন্তন ও দর্শন সর্বদাই পরিবর্তনকে গ্রহণ করে। ভারতের প্রাচীনত্বের মধ্যে আধুনিকতার ছোঁয়া রয়েছে। প্রয়োজনে দেশের যুবসম্প্রদায় নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন। যখনই জাতীয় চেতনা বিভক্ত হয়, তখনই শঙ্করের মতো তরুণরা আবির্ভূত হন। তাঁরা আদি শঙ্করাচার্য হিসাবে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেন। অত্যাচারের সময় গুরুগোবিন্দ সিংজীর সাহিবজাদারা আত্মবলিদানে পিছপা হন না – এই মানসিকতা আজও আমাদের পথ দেখায়। স্বাধীনতার আন্দোলনে যখন আত্মবলিদানের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল, সেই সময় ভগৎ সিং, চন্দ্রশেখর আজাদ ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর মতো তরুণ বিপ্লবীরা এগিয়ে আসেন এবং দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন। যখন দেশের আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণের প্রয়োজন হয়, তখন ঋষি অরবিন্দ এবং সুব্রমানিয়ান ভারতীর মতো সন্ন্যাসীরা আবির্ভূত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের যুবসম্প্রদায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী। ভারতের জনসংখ্যার সিংহভাগ হলেন যুবক-যুবতী। তাই, এর সুফল আজ আমরা পাচ্ছি। ভারতের মানসিকতা যুবমনস্ক। তাই, উন্নয়নমূলক কাজে এর সুফল অনুভূত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ভারতের যুবসম্প্রদায় প্রযুক্তিকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত। একই সঙ্গে, তাঁদের চেতনায় রয়েছে গণতন্ত্র। আজ ভারতের যুবসম্প্রদায় কঠোর পরিশ্রমী। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাঁদের স্পষ্ট ধারণা রয়েছে। আর তাই, ভারত আজ যা বলে, সারা বিশ্ব সেটিকে আগামী দিনের ভাবনা বলে বিবেচনা করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় যুবসম্প্রদায় দেশের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে দ্বিধান্বিত হননি। আজ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। আর সেকাজ করবেন আমাদের যুবসম্প্রদায়। তিনি বলেন, পুরনো ধ্যানধারণার কারণে যুবসম্প্রদায়ের দক্ষতা প্রভাবিত হয় না, বরং যুবসম্প্রদায় নিজেরাই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে। তাঁরা নতুন নতুন চাহিদা তৈরি করেন। আজকের যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে ‘করতে পারি’ মানসিকতা রয়েছে, যা প্রতিটি প্রজন্মের কাজে অনুপ্রেরণার উৎস।
প্রধানমন্ত্রী যুবসম্প্রদায়ের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, আজ ভারতীয় যুবসম্প্রদায় বিশ্বকে সমৃদ্ধির পথ দেখাবে। তাঁরা সারা বিশ্বকে ইউনিকর্ন ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। ভারতে ৫০ হাজার নতুন শিল্পোদ্যোগ গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে মহামারীর সময়কালে গঠিত হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি নতুন শিল্পোদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী নতুন ভারতকে একটি মন্ত্র দিয়েছেন – প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জয়লাভ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধে বিজয়ী হতে হবে। তিনি অলিম্পিকস্ ও প্যারালিম্পিকস্ – এর ক্রীড়াবিদদের সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। একই সঙ্গে টিকাকরণ অভিযানে যুবসম্প্রদায়ের অংশগ্রহণকে নিজেদের দায়বদ্ধতার প্রতিফলন বলে বর্ণনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ছেলে ও মেয়েদের সমদৃষ্টিতে দেখে। আর এই ভাবনাতেই মেয়েদের যাতে আরও কল্যাণ হয়, তার জন্য বিয়ের বয়স বাড়িয়ে ২১ বছর করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এর ফলে, মেয়েরা তাঁদের কেরিয়ার তৈরি করতে অনেক সময় পাবেন। তাই, বিয়ের বয়স বাড়ানোর এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী তাঁদের প্রাপ্য স্বীকৃতি পাননি। আমাদের যুবসম্প্রদায়কে তাঁদের বিষয়ে গবেষণা করতে হবে, তাঁদের সম্পর্কে লিখতে হবে। এভাবে আগামী প্রজন্মকে আরও সচেতন করে তুলতে হবে। তিনি স্বচ্ছতা অভিযানে যুবসম্প্রদায়কে আরও বেশি করে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
ভারতীয় যুবসম্প্রদায়ের মানসিক গঠনকে শক্তিশালী করা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গঠনের কাজে তাঁদের সামিল করাই জাতীয় যুব উৎসবের উদ্দেশ্য। এটি সামাজিক, আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের একটি বৃহত্তম প্রয়াস। ভারতের নানা সংস্কৃতিকে ঐক্যবদ্ধ করে ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর ভাবনাকে সঞ্চারিত করা এই উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য।
কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী শ্রী অনুরাগ ঠাকুর প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় যুব দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন জাতীয় যুব দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়। স্বামীজী আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁর জীবন থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। স্বামী বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ভাবমূর্তিকে শক্তিশালী করেছেন। শ্রী ঠাকুর আরও বলেন, আজ দেশ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর যোগ্য নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে, তাঁর নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে আমাদের যুব সম্প্রদায় দেশকে নতুন দিশায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপনের মুহূর্তে স্বাধীনতা আন্দোলনে যে লক্ষ লক্ষ যুবক-যুবতী আত্মোৎসর্গ করেছিলেন তাঁদের কথা আমরা যেন ভুলে না যাই। আমাদের যুব সম্প্রদায়কে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, যাতে স্বাধীনতার শততম বর্ষে ভারত এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছতে পারে। মন্ত্রী বলেন, ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর দুর্বলতা রয়েছে। টোকিও অলিম্পিকস ও প্যারালিম্পিকসে আমাদের ক্রীড়াবিদরা দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ফিট ইন্ডিয়া অভিযান, ফিটনেজ কা ডোজ আধাঘন্টা রোজ ও খেলো ইন্ডিয়া কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে খেলাধুলো আজ আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী স্কিল ইন্ডিয়া কর্মসূচিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। এর ফলে দেশের কোটি কোটি যুবক-যুবতীর দক্ষতা বৃদ্ধি হবে। শ্রী মোদী স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া কর্মসূচির উপর গুরুত্ব দেওয়ায় আজ ভারত বিশ্বে স্টার্ট-আপ সংস্থা গড়ে তোলার নিরিখে প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার জন্য উদ্যোগী হতে হবে।
মন্ত্রী শ্রী অরবিন্দের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, কবি, দেশপ্রেমিক, দার্শনিক, মহাঋষি ও যোগগুরু ঋষি অরবিন্দের দেড়শোতম জন্মবার্ষিকী এ বছর উদযাপিত হবে। জাতীয় যুব উৎসবের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অলিম্পিকস ও প্যারালিম্পিকস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন, শিল্পোদ্যোগী এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ তাঁদের অভিজ্ঞতা যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ভাগ করে নেবেন।
পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী শ্রী এন রঙ্গস্বামী বলেছেন, এধরণের অনুষ্ঠান পুদুচেরিতে আয়োজন করায় তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন। তিনি বলেন, স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় পুদুচেরি ঋষি অরবিন্দ, মহাকবি ভারতী, ভি ভি এস আয়ারের মতো বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ বৃটিশ অত্যাচার থেকে রেহাই পাবার জন্য আত্মগোপন করেছিলেন। তিনি বলেন পণ্ডীচেরিকে জ্ঞানভূমি বা দেবভূমি বলে চিহ্নিত করা হয়। এই পবিত্র ভূমিতে কামরায় মণিমন্ডপম-এর উদ্বোধন করায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
CG/CB/SB/SKD
(रिलीज़ आईडी: 1789447)
आगंतुक पटल : 148