শ্রমওকর্মসংস্থানমন্ত্রক
বর্ষ শেষে পর্যালোচনা : শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক
Posted On:
31 DEC 2021 3:16PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৩১ই ডিসেম্বর, ২০২১
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক ২০২১ সালে একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে; ই-শ্রম পোর্টালের সূচনা, কর্মচারী ভবিষ্য নিধি সংগঠনকে আত্মনির্ভর ভারত যোজনায় যুক্ত করা এবং গুরুগ্রাম (মানেসার), শাহাজাহানপুর, হরিদ্বার, বিশাখাপত্তনম, মিরাট ও আসামে ইএসআইসি –র নতুন হাসপাতাল তৈরি বা পুরোনো হাসপাতালের সম্প্রসারণ।
ই-শ্রম পোর্টাল :
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র যাদব, দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী রামেশ্বর তেলীর উপস্থিতিতে ২৬শে আগস্ট ই-শ্রম পোর্টালের উদ্বোধন করেন। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য জাতীয় স্তরে একটি তথ্য ভান্ডার এই পোর্টালের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় আধার সংযুক্তিকরণ আবশ্যিক। ১৬ থেকে ৫৯ বছর বয়সী পরিযায়ী শ্রমিক, গিগ ওয়ার্কার, কৃষি শ্রমিক, এমজিএনআরইজিএ শ্রমিক, মৎস্যজীবী, দুগ্ধ ব্যবসায়ী, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ীকর্মী, হকার, গৃহস্থলীর কাজে সহায়ক - সহায়িকা, রিক্সা চালক এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের অন্যান্য শ্রমিকরা এই পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। ২০২১ –এর ২৮শে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৫,৫৩,৩৪,৫৪৬ জন এই পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করেছেন।
আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনা (এবিআরওয়াই) :
কোভিড – ১৯ মহামারীর কারণে আর্থ-সামাজিক সমস্যা হ্রাস করতে এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রক, ২০২০র ৩০শে ডিসেম্বর কর্মচারী ভবিষ্য নিধি সংগঠনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সৃষ্টির জন্য আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনার সূচনা করে। এই প্রকল্পে কোভিড পরবর্তী সময়ে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। ১৮ই ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এবিআরওয়াই –এর আওতায় ১,২০,৬৯৭ টি সংস্থার ৪২,৮২,৬৮৮ জন সুবিধাভোগী ২৯৬৬ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা পেয়েছেন।
ইডিএলআই প্রকল্প :
এমপ্লয়িজ ডিপোজিট লিঙ্কড ইন্স্যুরেন্স (ইডিএলআই) প্রকল্পের আওতায় কোনো কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে তার পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা করা হয়। ২৮শে এপ্রিল থেকে এই অর্থ সাহায্যের পরিমাণ ৬ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। ২০২০র ১৫ই ফ্রেব্রুয়ারী থেকে এবছরের ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত ৩৯,২৬৫টি সংস্থার ৮৮,২২৪ জন সুবিধাভোগীর পরিবারকে ২৪৭০ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত বিধি ২০২০ :
বিশেষজ্ঞ কমিটি :
২০২০র কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত পরিবেশ বিধির ১৮, ২৩ ও ২৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী কলকারখানা, বন্দর, নির্মাণ কাজে যুক্ত সংস্থাগুলির কর্মীদের সুরক্ষার জন্য কেন্দ্র, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি উল্লিখিত বিষয়গুলি নিয়ে খসড়া তৈরির পর বর্তমানে তাতে চূড়ান্ত রূপ দিচ্ছে।
সর্বভারতীয় সমীক্ষা :
একটি বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠীর পরামর্শক্রমে লেবার ব্যুরো দেশজুড়ে কয়েকটি সমীক্ষার কাজ করছে –
১) পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সর্বভারতীয় সমীক্ষা শুরু হয়েছে পয়লা এপ্রিল থেকে।
২) কর্মসংস্থান সংক্রান্ত ত্রৈমাসিক সমীক্ষা শুরু হয়েছে পয়লা এপ্রিল থেকে।
৩) গৃহস্থলীর কাজের যুক্ত কর্মচারীদের জন্য সর্বভারতীয় সমীক্ষা শুরু হয়েছে ২২শে নভেম্বর থেকে।
বিশিষ্ট পরিসংখ্যানবিদ ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এস পি মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী এই সমীক্ষার কাজে সাহায্য করছে। এই দলে ড. অমিতাভ কুন্ডু ছাড়াও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক, পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ন মন্ত্রক এবং নীতি আয়োগের আধিকারিকরা রয়েছেন। লেবার ব্যুরো, কর্মসংস্থান সংক্রান্ত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়কালে ত্রৈমাসিক সমীক্ষার ফলাফল তৈরি করেছে, যা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র যাদব প্রকাশ করেছেন।
কোভিড – ১৯ –এর ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা :
আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথভাবে একটি ত্রিপাক্ষিক আলোচনার আয়োজন করে। কোভিড – ১৯ মহামারীর ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে কিভাবে বেরিয়ে আসা যায়, তার জন্য ১০ই ডিসেম্বর একটি আলোচনা চক্রের আয়োজন করা হয়। কোভিড – ১৯ মহামারীর ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ভারতীয় প্রেক্ষাপটে সব শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং একটি স্থিতিশীল ও স্থিতিস্থাপক পরিবেশ গড়ে তোলা নিয়ে এখানে আলোচনা হয়েছে।
কর্মচারী ভবিষ্য নিধি তহবিলের সুবিধাভোগীদের জন্য ইএসআইসি-র হাসপাতালের সুবিধে না পেলে তালিকাভুক্ত হাসপাতাল থেকে চিকিৎসার সুযোগ :
কর্মচারী ভবিষ্য নিধি প্রকল্পটি আরো প্রসারিত হওয়ায় নতুন নতুন অঞ্চলের সুবিধাভোগীরা এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছেন। সমস্ত সুবিধাভোগী যাতে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পান, তার জন্য মন্ত্রক, উদ্যোগী হয়েছে। ইএসআই –এর সুবিধাভোগীদের ১০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে কোনো ইএসআই হাসপাতাল না থাকলে, তারা এখন থেকে ইএসআই তালিকাভুক্ত যে কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারবেন। এর জন্য সুবিধাভোগীকে ইএসআই ই-পেহেচান কার্ড / স্বাস্থ্য পাশবই এবং আধার বা সরকার স্বীকৃত কোনো পরিচয় পত্র থাকতে হবে। এর সাহায্যে সুবিধাভোগীরা নগদবিহীন চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন।
বীমাকৃত সুবিধাভোগীদের জন্য ইএসআইসি কোভিড – ১৯ ত্রাণ প্রকল্প :
বীমাকৃত ব্যক্তি যদি কোভিডের কারণে মারা যান, তাহলে তার পরিবারের সদস্যদের সাহায্যের জন্য কর্মচারী রাজ্য় বীমা নিগম তেসরা জুন থেকে ইএসআইসি কোভিড – ১৯ রিলিফ প্রকল্পের সূচনা করেছে। এই প্রকল্পে মৃত ব্যক্তির পরিবারকে গড় আয়ের ৯০ শতাংশ অর্থ দেওয়া হবে। এছাড়াও আগে সুবিধাভোগীদের কমপক্ষে ৭০ দিন কাজ করলে এধরণের সুবিধা পাওয়ার যে সংস্থান ছিল, বর্তমানে তা কোভিড – ১৯ এ সংক্রমিতদের ক্ষেত্রে কমিয়ে ৩৫ দিন করা হয়েছে। মৃত ব্যক্তির স্বামী বা স্ত্রী প্রতিবছর ১২০ টাকার মাধ্যমে চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। কর্মচারী রাজ্য বীমা নিগম উত্তরাখন্ডের হরিদ্বারে এবং অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে একটি হাসপাতাল তৈরি করছে, যেখানে ৫০টি সুপার স্পেশালিটি বেড থাকবে। দপ্তরের মন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দ্র যাদব , বীমাকৃত ব্যক্তিদের বয়স ৪০ অতিক্রম করলে বছরে একবার করে হেলথ চেক আপের একটি কর্মসূচির সূচনা করেছেন। আমেদাবাদ, ফরিদাবাদ, হায়দ্রাবাদ এবং কলকাতায় ইএসআইসি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই সুযোগ পাওয়া যাবে।
এছাড়াও গুরুগ্রামের মানেসর, মিরাট ও তিনসুকিয়ায় নতুন নতুন হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলি এবং পানকিতে নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের শাজাহানপুরে ইএসআইসি –র ৩০ শয্যার একটি হাসপাতাল তৈরির জন্য ভূমি পুজো করা হয়েছে। এছাড়াও ইএসআইএর প্রকল্পের সুবিধে দেশের ৫২টি জেলায় প্রসারিত করা হয়েছে। এর ফলে ২,৩১,৪৯৫ জন কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ইএসআইএর সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় এলেন। ফলে বর্তমানে দেশে ৫৯২টি হাসপাতালে ইএসআই –এর সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।
কর্মপ্রার্থী এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারীদের একটি অভিন্ন মঞ্চে নিয়ে আসার লক্ষ্যে ন্যাশনাল কেরিয়ার সার্ভিস পোর্টাল উদ্যোগী হয়েছে। এই পোর্টালে ২৮শে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১ কোটি ৩৪ লক্ষ কর্মপ্রার্থী তাদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। এছাড়াও ১ লক্ষ ৭০ হাজার কর্মচারীও এই পরিষেবায় যুক্ত হয়েছেন। পোর্টালটিতে ২ লক্ষ ২১ হাজার কর্মখালির বিজ্ঞাপন দেওয়া আছে। ২০১৫ সালে এই পোর্টাল শুরু হওয়ার পর ৯০ লক্ষেরও বেশি শূন্য পদের বিজ্ঞাপন এখানে দেওয়া হয়েছে।
CG/CB/SFS
(Release ID: 1786852)