স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ নতুন দিল্লিতে বিজ্ঞান ভবনে সুপ্রশাসন সপ্তাহের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন

Posted On: 25 DEC 2021 6:47PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি,  ২৫ ডিসেম্বর,  ২০২১
 
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ নতুন দিল্লিতে বিজ্ঞান ভবনে সুপ্রশাসন সপ্তাহের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন। এই উপলক্ষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডাঃ জিতেন্দ্র সিং, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, বিভিন্ন দপ্তরের সচিব সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। 
 
এই উপলক্ষে শ্রী শাহ বলেন, আজ ২৫ ডিসেম্বর তারিখ আরও একটি দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনটির সঙ্গে ভারতের দু-জন মহান ব্যক্তিত্বের স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, এঁরা সার্বিক কল্যাণে স্বাধীনতার জন্য এবং দেশকে এক নতুন পথের দিশা দেখাতে সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন। পণ্ডিত মদন মোহন মালব্যের কথা উল্লেখ করে শ্রী শাহ বলেন, স্বাধীনতার আগে সারা বিশ্বের সামনে ভারতের মহান ঐতিহ্যকে অক্ষুন্ন রাখতে তিনি নিরলস কাজ করেছেন। সারা বিশ্বের সামনে তিনি ভারতের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, পুরাতাত্ত্বিক জ্ঞান, বিজ্ঞান ও বেদের গণিত চর্চাকে তুলে ধরেছিলেন। শ্রী শাহ বলেন, সমস্ত বিষয়ের সুরক্ষা ও প্রচার কেবল ভারতের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং সারা বিশ্বের কাছেই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ভারতের এই বিষয়গুলির সঙ্গে অনেক সমস্যার সমাধানসূত্র নিহিত রয়েছে। মদন মোহন মালব্য প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজ ভারতরত্ন পণ্ডিত মালব্যের জন্মতিথি। প্রক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর আজ জন্মতিথি। শ্রী বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, তখন দেশের স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত এমন একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যা বছরের পর বছর পড়েছিল। শ্রী বাজপেয়ী দেশের মানুষের কাছে এমন এক দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন যা ভবিষ্যতে সরকারি ব্যবস্থা কেমন ভাবে পরিচালিত হবে তার ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিহিত ছিল। 
 
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের বর্ষে প্রধানমন্ত্রী সুপ্রশাসন সপ্তাহ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই সুপ্রশাসনিক ব্যবস্থার ধারণাকে শ্রী মোদী প্রথম দিল্লির বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন। আজ এই ব্যবস্থা দেশের জেলায় ও গ্রামগুলিতেও পৌঁছে গেছে। পক্ষান্তরে সমস্ত সরকারি কাজকর্মে সুপ্রশাসনের প্রভাব পড়েছে। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৪-তে প্রধানমন্ত্রী পদে শ্রী মোদী যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন দেশের মানুষ প্রথমবার এটা উপলব্ধি করেছিলেন যে, এই সরকার কেবল সরকারি কাজকর্ম পরিচালনার জন্য ক্ষমতায় আসেনি, বরং দেশের আমূল পরিবর্তনই এই সরকারের লক্ষ্য। প্রত্যেকের মনে এই প্রশ্ন ছিল যে, স্বরাজ বা স্বাধীনতা তো অর্জিত হয়েছে, কিন্তু সুরাজ্য বা সুপ্রশাসন কখন মিলবে। স্বাধীনতার পর গত সাত দশকে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ধীরে ধীরে কমে এসেছে। গণতন্ত্রের সাফল্যের সুফল মানুষের কাছে তখনই পৌঁছোবে যখন আমরা স্বরাজকে সুপ্রশাসনিক ব্যবস্থায় পরিবর্তন করতে পারবো। শ্রী মোদী একেবারে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত সুপ্রশাসনিক ব্যবস্থাকে পৌঁছে দিয়ে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে, সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ক্রমশ বেড়েছে। এখন থেকে ২৫ বছর পর দেশ যখন স্বাধীনতার শতবার্ষিকী উদযাপন করবে, তখন সাধারণ মানুষ এটা কল্পনা করতে পারবেন আমাদের দেশের প্রকৃত আদল কেমন হবে। এই দেশ ২২টি সরকারকে দেখেছে এবং তারপর আমরা এখন এই পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সুপ্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা হল উন্নয়নের এমন এক মডেল, যা সর্বজনীন ও সর্বব্যাপী হবে। দেশে এমন কোন এলাকা থাকবে না যেখানে উন্নয়নের সুফল পৌঁছোবে না। দেশে এমন কোন ব্যক্তি থাকবেন না যাকে উন্নয়নের মডেলে সামিল করা হবে না। প্রকৃতপক্ষে এটাই সর্বজনীন ও সর্বব্যাপী উন্নয়নের আদর্শ। সুপ্রশাসনিক ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষ আশা করেন সেখানে কোন দুর্নীতি থাকবে না, সরকারি কাজকর্ম হবে স্বচ্ছ ও সৎ, মৌলিক সমস্যাগুলির সমাধানে সকলেই আন্তরিক হবেন, দায়বদ্ধতার সঙ্গে থাকবে সংবেদনশীলতা, সৃজনশীলতার পাশাপাশি স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। সর্বোপরি এই মানসিকতাই সরকার ও সরকারি কাজকর্মে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে তুলবে। 
 
শ্রী শাহ বলেন, একটা সময় ছিল যখন উন্নয়নের বিষয়টিকে ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অবশ্য এনিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্কও হয়েছে। কিন্তু মোদী সরকার এরকম যাবতীয় তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের ৭ বছরের মেয়াদে আমরা যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর করে প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই অগ্রগতি করেছি। বর্তমান মোদী সরকার এমন এক স্বচ্ছ নীতি গ্রহণ করেছে যা যাবতীয় তর্ক-বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছে এবং সর্বজনীন উন্নয়ন বাস্তবায়িত হয়েছে। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের আগে ৮০ কোটি দরিদ্র মানুষের কাছে বড় প্রশ্ন ছিল যে, প্রধানমন্ত্রী ও সরকার ক্ষমতায় আসবে ও যাবে, কিন্তু তাতে আমার কি উন্নতি হবে। ২০১৪-র আগে দেশে ৬০ কোটি এমন মানুষ ছিলেন যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছিল না। শুধু তাই নয়, দেশের অর্থনীতিতে তাদের কোন ভূমিকা বা অবদান ছিল না। সাধারণ মানুষের মনে এরকম একটা ধারণা ছিল যে, সরকার বড় বাজেট পেশ করবে, সাধারণ মানুষের কল্যাণের কথা বলবে, কিন্তু এই কল্যাণের সুফল আমি কতটা পাবো। ২০১৪-র আগে কোটি কোটি মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ ও শৌচাগার ছিল না। তিন কোটি এমন পরিবার ছিল যেখানে বিদ্যুতের সংযোগ পর্যন্ত ছিল না। এমনকি, ১৪ কোটি মানুষের রান্নার গ্যাস সংযোগও ছিল না। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছিল। গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষরা নিজেদের অসহায় বলে ভাবতেন। তাদের কাছে তখন ভগবান ছাড়া আর সহায় কেউ ছিল না। শ্রী শাহ বলেন, দরিদ্র এই মানুষের কাছে স্বাধীনতার কোন অর্থই ছিল না, কারণ নিজের পরিবারের একজনকে হারাতে দেখে তারা নিঃসহায় বোধ করতেন। 
 
শ্রী শাহ বলেন, মোদী সরকার প্রথমবার দেশে দুই কোটি দরিদ্র মানুষকে বাড়ি প্রদানের লক্ষ্য স্থির করেছিল। দেশে প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ ও শৌচাগার নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। দেশে ১৪ কোটি পরিবারে রান্নার গ্যাস সংযোগ পৌঁছে দিয়ে মোদী সরকার মহিলাদের স্বাস্থ্যের মানোন্নয়ন ঘটিয়েছে। ২০২২-সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিটি পরিবারে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার যে লক্ষ্য ধার্য হয়েছে তাও পূরণ হতে চলেছে। আজ একজন দরিদ্র মানুষকে যে কোন গুরুতর অসুস্থতায় চিকিৎসার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় মোদী সরকার প্রায় দুই বছর ৮০ কোটি মানুষকে ২৫ কেজি করে নিখরচায় খাদ্যশস্য বন্টন করেছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক, যারা উন্নয়ন থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন আজ তাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। 
 
স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মোদী সরকার কর্মসূচি রূপায়ণের পন্থা-পদ্ধতি পাল্টে দিয়েছে। আগে সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হত, কিন্তু এখন সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এমন অনেক কাজ করা হয়েছে যেখানে দুর্নীতির চিরতরে অবসান ঘটেছে। প্রথমতঃ প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর বা ডিবিটি চালু হয়েছে। আগে ৬০ কোটি দরিদ্র মানুষকে কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের জন্য মিডিলম্যান বা মধ্যস্থতাকারীদের কাছে যেতে হত। কিন্তু আজ সাধারণ মানুষের অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ পৌঁছে যাচ্ছে। মোদী সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে দুর্নীতির ওপর আঘাত হেনেছে। কালো টাকার বিরুদ্ধেও একাধিক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বেআইনি সম্পত্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ভুয়ো সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে আইনি অভিযান গ্রহণ করা হয়েছে। ইন্সপেক্টর রাজ ব্যবস্থার অবসানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আর এগুলি সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আন্তরিক উদ্যোগের ফলেই। শ্রী শাহ বলেন, সাত বছর ক্ষমতায় থাকার পর আমরা আজ একথা জনগণের কাছে দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি যে, এই সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের কোন অবকাশই নেই। পক্ষান্তরে এই সরকার স্বচ্ছাতার এক বিরল দৃষ্টান্ত। 
 
শ্রী শাহ বলেন, সরকারের নীতি-কর্মসূচিগুলি এমন ভাবে গ্রহণ করা হয়েছে যাতে বুনিয়াদি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা যায়। প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান আরও সহজ হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে সারা বিশ্বেই টিকাকরণ কর্মসূচি চলছে। কিন্তু এমন কোন দেশ নেই যেখানে টিকাকরণের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ইলেক্ট্রনিক সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি টিকাগ্রহিতাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন। কো-উইন অ্যাপের মাধ্যমে ভারত যে অসাধ্য সাধন করেছে বিশ্বের অন্য কোন দেশ তা করতে পারেনি। প্রযুক্তির সাহায্যে দেশে যোগ্য ১৩০ কোটি মানুষের টিকাকরণ হয়েছে। এখন সারা বিশ্ব এটা প্রত্যক্ষ করছে যে, মোদী সরকার কিভাবে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে সমস্যার সমাধান করছে। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি দেখা দেওয়ার সময় বহু মানুষের জীবনে বড় সমস্যা এসেছিল, বিশেষ করে যারা দিনমজুর তাদের কাছে। সারা বিশ্বে এমন কোন সরকার নেই যারা এধরণের সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজে বের করেছে। কিন্তু ভারত ১৩০ কোটির জনসংখ্যা নিয়ে ৮০ কোটি মানুষকে কোভিড মহামারীর শেষ সময় পর্যন্ত মাসিক ২৫ কেজি করে নিখরচায় খাদ্যশস্য বন্টন করেছে। আর, এধরণের উদ্যোগকেই প্রগতিশীল এবং সংবেদনশীল হিসেবে বর্ণনা করা যায়। তিনি বলেন, কেবল খাদ্যশস্য বন্টনই নয়, ১৩০ কোটি মানুষকে নিখরচায় টিকা দেওয়া হয়েছে। তাই আজ আমরা একথা জোর দিয়ে বলতে পারি যে, আমাদের নাগরিকদের আমরা সুরক্ষাকবচ দিয়েছি, যা আদতে সংবেদনশীল সরকারের পরিচায়ক। 
 
শ্রী শাহ বলেন, চার দশকের বেশি সময় ধরে এক পদ এক পেনশনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু মোদী সরকার এই সমস্যার সমাধান করেছে। তিনি আরও জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে কৃষকদের ঋণ মুকুব করা হয়েছে। প্রত্যেকবার নির্বাচনের সময় ঋণ মুকুবের দাবি উঠেছে। কিন্তু বারবার ঋণ মুকুব করতে গিয়ে ব্যাঙ্কগুলির ওপর আর্থিক বোঝা বেড়েছে। এরফলে অনুৎপাদন সম্পদের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রী শাহ বলেন, দরিদ্র এক কৃষকের সাধারণ ভাবে বছরে ছয় থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তার প্রয়োজন হয়। কিন্তু মোদী সরকার ঋণ মুকুবের পরিবর্তে কৃষকদের বার্ষিক ছয় হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে তাদের ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনই না পড়ে।  
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সুপ্রশাসনিক ক্ষেত্রে মোদী সরকার একাধিক অভিনব কর্মসূচি কার্যকর করেছে, যাতে সৃজনশীলতার সঙ্গে কর্মসূচি রূপায়ণ ও তার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী করা যায়। স্বাধীনতার পর প্রথমবার মোদী সরকার ড্রোন নীতি প্রণয়ন করেছে। মহাকাশ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণে আগে কোন নীতি ছিল না। কিন্তু আমরা মহাকাশ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছি, যাতে দেশকে বিশ্ব মহাকাশ ক্ষেত্রে অগ্রণি গন্তব্যে পরিণত করা যায়। শ্রী শাহ বলেন, এরকম সিদ্ধান্ত কেবল এই ব্যক্তিই নিতে পারেন, যিনি সুপ্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর সর্বোচ্চ আস্থা রাখেন। শ্রী মোদী এই আস্থা রেখেছেন। আর একারণেই বহুবার তাঁকে তিক্ততার স্বাদ অনুভব করতে হয়েছে। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে। পক্ষান্তরে সাধারণ মানুষের প্রতিও সরকারের বিশ্বাস বেড়েছে। যুবসম্প্রদায়ের কল্যাণ ও ক্ষমতায়ণের কথা উল্লেখ করে শ্রী শাহ বলেন, মোদী সরকার সেল্ফ অ্যাটেস্টেড বা স্ব-প্রত্যয়ণের সুবিধা দিয়েছেন। এর ফলে, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি পদে ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে দুর্নীতির জড় দূর করা গেছে। শ্রী শাহ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর সময় শ্রী মোদী জনতা কার্ফিউ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। শ্রী মোদীর এই আহ্বান সাড়া দিয়ে সাধারণ মানুষ ১২ ঘন্টা বাড়ির ভিতরে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা অনুশাসন মেনে চলতে পারি এমন উদাহরণ রয়েছে। তাই এবার সময় এসেছে আরও একবার তা করে দেখানোর। সাধারণ মানুষ তাঁর এই আবেদনে আস্থা রেখে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মর্যাদাই দেখিয়েছেন। শ্রী শাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষের প্রতি বিশ্বাস রাখেন, পক্ষান্তরে সাধারণ মানুষও তাঁকে বিশ্বস্ত মনে করেন। আর ঠিক একারণেই মানুষ গত ২০ বছর ধরে তাঁকে বারবার জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। 
 
শ্রী শাহ আরও বলেন, সুপ্রশাসনের ক্ষেত্রে কার্যকর নীতি এবং প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনায় প্রযুক্তির বড় ভূমিকা রয়েছে। শ্রী মোদী এই লক্ষ্যেই কাজ করেছেন, যাতে সরকারি হস্তক্ষেপকে ন্যূনতম করা যায়। রাজ্য সরকারগুলির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রশাসনিক ক্ষেত্রে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ই-প্রশাসনিক নাগরিক সনদ, জাতীয় ই-পরিষেবা প্রদান মূল্যায়ন ব্যবস্থা এবং সুপ্রশাসন সূচক। শ্রী মোদী মিশন কর্মযোগী অভিযানের সূচনা করেছেন। তৃণমূলস্তর পর্যন্ত কর্মসূচির বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হলে সুপ্রশাসন কখনই গড়ে তোলা সম্ভব নয়। আর এই লক্ষ্যেই মিশন কর্মযোগী অভিযান গ্রহণ করা হয়েছে। 
 
শ্রী শাহ বলেন, দক্ষতা বৃদ্ধি কমিশন এবং জাতীয় নিয়োগ এজেন্সি গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার জন্য সিপিগ্রাম চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮৭টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক / দপ্তর এবং ৩৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সিপিগ্রাম কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আগে কেবল দুই লক্ষ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অভাব-অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হত। এখন ১২ লক্ষ অভাব-অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। অভাব-অভিযোগের নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এটি বড় সাফল্য, যা এক সংবেদনশীল সরকারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। 
 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মোদী সরকার সুপ্রশাসনের লক্ষ্যে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। নির্বাচিত সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, আইন ও শর্তাবলি প্রণয়ন করে। কিন্তু এগুলি কার্যকর করার দায়িত্ব আধিকারিকদের। তাই তাদের সাধারণ মানুষের মানসিকতাকে উপলব্ধি করে তৃণমূলস্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। তিনি বলেন, সংবিধানেও আধিকারিকদের প্রতি আস্থার এক বড় জায়গা রয়েছে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কেবল পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় আসেন। পাঁচ বছর পর সাধারণ মানুষ সিদ্ধান্ত নেন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কোন সরকারকে শাসন ক্ষমতায় রাখা উচিত। কিন্তু, আধিকারিকরা ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত সরকারি কাজে জনসেবায় নিযুক্ত থাকেন। তাই, অবসর গ্রহণ পর্যন্ত তারা এই কাজের সুযোগ পান। স্বাভাবিক ভাবে নির্বাচিত সরকারের তুলনায় নীতি-কর্মসূচি রূপায়ণের প্রাথমিক দায়িত্ব আধিকারিকদের ওপরেই বেশি পড়ে। শ্রী শাহ আধিকারিকদের কেবল আইন ও শাসন ব্যবস্থা অনুসরণ করার পাশাপাশি আইনের প্রকৃত মমার্থ উপলব্ধি করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, আইন ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে যত বেশি অনুভূতিপ্রবণ হওয়া যাবে, কাজকর্মের রূপায়ণ তত বেশি সুদৃঢ় হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ন্যাস্ত দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজকর্মে মানোন্নয়নে আধিকারিকদের বড় ভূমিকা রয়েছে। তাই আমার বিশ্বাস সুপ্রশাসনের মূল অর্থ কর্তব্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনেই নিহিত রয়েছে।  
 
 
CG/BD/AS/


(Release ID: 1785208) Visitor Counter : 618