প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী পিএম গতি শক্তির সূচনা করেছেন


প্রধানমন্ত্রী প্রগতি ময়দানে নতুন প্রদর্শশালা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেছেন

“আত্মনির্ভর ভারত গড়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আগামী ২৫ বছরের ভারতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে”

“ভারতের জনসাধারণ, ভারতীয় শিল্প, ভারতীয় ব্যবসা, ভারতীয় উৎপাদক, ভারতীয় কৃষকরা গতি শক্তির এই বৃহৎ অভিযানের কেন্দ্রে রয়েছেন”

“আমরা নির্দিষ্ট সময়ে কোনো প্রকল্প শেষ করার কর্মসংস্কৃতি যেমন গড়ে তুলেছি এখন নির্ধারিত সময়ের আগে প্রকল্পের কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে”

“সার্বিকভাবে সরকারি উদ্যোগের সঙ্গে সরকারের যৌথ শক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে”

“সামগ্রিক প্রশাসনের সম্প্রসারিত ধারণা হলো গতিশক্তি”

Posted On: 13 OCT 2021 1:50PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি,  ১৩ অক্টোবর, ২০২১

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ পিএম গতিশক্তি – ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান ফর মাল্টি মডেল কানেক্টিভিটির সূচনা করেছেন। তিনি নতুন দিল্লির প্রগতি ময়দানে নতুন প্রদর্শশালা কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেছেন। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী নীতীন গড়করি, শ্রী পীযুষ গোয়েল, শ্রী হরদীপ সিং পুরি, শ্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল, শ্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, শ্রী আর কে সিং ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, উপরাজ্যপাল, রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। শিল্প জগতের থেকে আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান শ্রী কুমার মঙ্গলম বিড়লা, ট্র্যাকটর অ্যান্ড ফার্ম ইক্যুপমেন্টের সিএমডি শ্রীমতী মালিকা শ্রীনিবাসন, টাটা স্টিলের কর্ণধার শ্রী টিভি নরেন্দ্রন, সিআইআই-এর সভাপতি এবং রিভিগো-র সহ প্রতিষ্ঠাতা শ্রী দীপক গর্গ অনুষ্ঠানে  তাঁদের বক্তব্য পেশ করেন।  

উপস্থিত সকলের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অষ্টমীর পূণ্যলগ্নে দেবী শক্তির উপাসনা করা হয়। আজ এই পবিত্র তিথিতে দেশের উন্নয়নের গতিও নতুন শক্তি পেতে চলেছে। আত্মনির্ভর ভারত গড়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আগামী ২৫ বছরের ভারতের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। আত্মনির্ভরতার যে শপথ ভারত নিয়েছে তাকে পিএম গতি শক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্লান  বাস্তবায়িত করবে। “এই মাস্টারপ্লান একবিংশ শতাব্দির ভারতকে গতি শক্তি যোগাবে”।   

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভারতের জনসাধারণ, ভারতীয় শিল্প, বাণিজ্য, উৎপাদক এবং কৃষকরা গতিশক্তির এই বিশেষ অভিযানের কেন্দ্রে রয়েছেন। ভারতের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একবিংশ শতাব্দীর সময়োপযোগীর ভারত গড়ার শক্তি যোগাবে এবং তাদের যাত্রা পথে যেসব বাধা আসবে তা দূর করবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিগত বছরগুলিতে “কাজ চলিতেছে” এই বিজ্ঞপ্তিটি আস্থা ভঙ্গের প্রতীক হয়ে উঠেছে। প্রগতির জন্য গতি, ইচ্ছা শক্তি ও যৌথ উদ্যোগের প্রয়োজন। একবিংশ শতাব্দীর ভারত পুরনো ব্যবস্থাপনা এবং ধ্যান ধারণাকে ত্যাগ করছে। তিনি বলেন – 
“আজকের মন্ত্রক হলো – 
প্রগতির জন্য কাজ 
প্রগতির জন্য সম্পদ
প্রগতির জন্য পরিকল্পনা
প্রগতির জন্য কর্ম পরিচালনা
আমরা আজ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করার কর্মসংস্কৃতি যেমন গড়ে তুলেছি এখন আমরা নির্ধারিত সময়ের আগে সেই কাজ শেষ করার জন্য উদ্যোগী হয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দেশে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের অগ্রাধিকারের তালিকায় পরিকাঠামো নির্মাণ ছিল না। তাঁরা তাঁদের ইস্তেহারেও এই বিষয়টি উল্লেখ করতেন না। এখন পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল দেশের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো কেন গড়ে তোলা হচ্ছে তা নিয়ে সমালোচনা করছে। আজ সারা পৃথিবী জুড়ে স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা প্রমাণিত। এর ফলে অর্থনৈতিক কর্ম তৎপরতা বৃদ্ধি পায়, বেশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়।   

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ম্যাক্রো প্ল্যানিং বা বৃহৎ পরিকল্পনা এবং মাইক্রো ইনপ্লিমেনটেশন বা তৃণমূল স্তরে তার বাস্তবায়নের সময় বিরাট পার্থক্য দেখা যায়। সমন্বয়ের অভাব, যথাযথ তথ্য না পাওয়া, এককভাবে ভাবনা-চিন্তা এবং কাজ করার ফলে এই সমস্যা দেখা দেয়। ফল হিসেবে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অর্থের অপচয় হয়। এক্ষেত্রে শক্তি বৃদ্ধি না পেয়ে তা বিভক্ত হয়ে যায়। পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টারপ্লান এই সমস্যার সমাধানে কাজ করবে এবং সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করবে। 

প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে ২০১৪ সালের কথা স্মরণ করেন। সেই সময় তিনি যখন দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন তখন শত শত প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছিল না। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে বকেয়া সেইসব প্রকল্পগুলিকে একটি মঞ্চে নিয়ে আসা হয় এবং বিভিন্ন বাধা বিপত্তি সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখন সমন্বয়ের অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হওয়ার সমস্যা দূর হয়েছে। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সরকারের সার্বিক উদ্যোগের পাশাপাশি সমষ্টিগত শক্তির সাহায্যে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর ফলে যেসব প্রকল্প আগে শেষ হওয়ার কথা ছিল সেগুলি এখন সম্পূর্ণ হচ্ছে। পিএম গতিশক্তি মাস্টারপ্লান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে যুক্ত করবে এবং বাস্তবায়নের বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে। “এটি হলো সামগ্রিক প্রশাসনের সম্প্রসারিত ভাবনা।” 

প্রধানমন্ত্রী পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, ১৯৮৭ সালে ভারতে প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু হয়। ২৭ বছর পর ২০১৪ সালে ১৫ হাজার কিলোমিটার প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপ লাইন বসানোর কাজ শেষ হয়। আজ দেশজুড়ে ১৬ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ গ্যাসের পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। আগামী ৫-৬ বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।   

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের আগের ৫ বছরে দেশে মাত্র ১,৯০০ কিলোমিটার রেল পথের দ্বিতীয় লাইন বসানো হয়েছিল। বিগত ৭ বছরে ৯ হাজার কিলোমিটারের বেশি রেল পথে দ্বিতীয় লাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৪ সালের আগের ৫ বছরে দেশে মাত্র ৩ হাজার কিলোমিটার রেল পথের  বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ সম্পন্ন হয়। গত ৭ বছরে ২৪ হাজার কিলোমিটারের বেশি রেল পথের বৈদ্যুতিকীকরণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০১৪ সালের আগে মাত্র ২৫০ কিলোমিটার পথে মেট্রো রেল চলাচল করতো। আজ দেশে ৭০০ কিলোমিটার পথে মেট্রো রেল চলাচল করে এবং আরও ১ হাজার কিলোমিটার পথে মেট্রো রেলের কাজ চলছে। ২০১৪-র আগের ৫ বছরে মাত্র ৬০টি পঞ্চায়েতে অপটিক্যাল ফাইবারের সংযোগ বসানো হয়। গত ৭ বছরে দেশে দেড় লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতকে অপটিক্যাল ফাইবারের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের কৃষক ও মৎস্যজীবীদের আয় বাড়াতে পরিকাঠামোগত বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে দেশে মাত্র ২টি মেগা ফুড পার্ক ছিল, আজ দেশে ১৯টি মেগা ফুড পার্ক কাজ করছে। অদূর ভবিষ্যতে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ৪০ করা হবে। ২০১৪ সালে দেশে মাত্র ৫টি জলপথ ছিল, আজ ১৩টি জলপথে পরিবহণের কাজ চলছে। বন্দরগুলিতে ২০১৪ সালে জাহাজের পণ্য ওঠা-নামার কাজে ৪১ ঘণ্টা সময় লাগতো। বর্তমানে তা কমে ২৭ ঘণ্টা হয়েছে। দেশে এখন এক দেশ এক গ্রিড ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আজ দেশজুড়ে ৪ লক্ষ ২৫ হাজার সার্কিট কিলোমিটার বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন রয়েছে। ২০১৪ সালে ৩ লক্ষ সার্কিট কিলোমিটার লাইন ছিল। 

প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে ভারত একদিন বিশ্বের বাণিজ্যিক রাজধানী হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য অনবদ্য, তাই সেই লক্ষ পূরণে অনবদ্য উদ্যোগ নিতে হবে। একাজে পিএম গতিশক্তি সহায়ক হবে। মানুষ আজ জনধন, আধার, মোবাইল – জেএএম ত্রয়ী প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারের প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছেন, একইভাবে পিএম গতিশক্তি পরিকঠামো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের কাজে সহায়ক হবে।

 

CG/CB/SKD/



(Release ID: 1763623) Visitor Counter : 424