স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ নতুন দিল্লিতে জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সপ্তদশ প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে যোগ দেন
Posted On:
28 SEP 2021 7:05PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী শ্রী অমিত শাহ আজ নতুন দিল্লিতে জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ)-এর সপ্তদশ প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে যোগ দেন। এবারের প্রতিষ্ঠা দিবসের মূল ভাবনা ‘হিমালয় অঞ্চলে বিপর্যয়ের প্রভাব প্রতিহত করা’। এই উপলক্ষে শ্রী শাহ এনডিএমএ-এর ‘আপদ মিত্র’ কর্মসূচির প্রশিক্ষণ বিবরণী এবং ‘আপদ মিত্র’ সহ কমন অ্যালার্টিং প্রোটোকল বা অভিন্ন সতর্কীকরণ বিধি সম্পর্কিত রণকৌশলগত নথিপত্র প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে বিভাগীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী নিত্যানন্দ রাই, শ্রী অজয় কুমার মিশ্র, শ্রী নিশিথ প্রামাণিক, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, এনডিএমএ-এর সদস্য ও আধিকারিকরা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রী শাহ বলেন, এনডিএমএ, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীগুলি গত ১৭ বছর ধরে দেশে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে আমূল পরিবর্তন এনেছে। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত এই প্রতিষ্ঠানগুলি সাধারণ মানুষকে সংবেদনশীল করে তুলতে সক্ষম হয়েছে। শ্রী শাহ আরও বলেন, ১৩০ কোটি মানুষের এই দেশে প্রতি রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন আবহাওয়া, পর্বত, মালভূমি বা দীর্ঘ উপকূলবর্তী এলাকা রয়েছে। তাই, প্রতিটি অঞ্চলে বিপর্যয়ের প্রভাবও ভিন্ন ভিন্ন। কিন্তু বিপর্যয়ের দরুণ জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলি গত ১৭ বছরে বড় ভূমিকা পালন করে এসেছে।
এনডিএমএ-এর নতুন দুটি উদ্যোগ – ‘আপদ মিত্র’ এবং অভিন্ন সতর্কীকরণ বিধি সম্পর্কে শ্রী শাহ বলেন, ‘আপদ মিত্র’ কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে এনডিএমএ বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশ্বের সেরা পন্থাপদ্ধতিগুলি সম্পর্কে আরও অনুসন্ধানমূলক কাজকর্ম চালাতে পারবে এবং তা থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে আগাম প্রস্তুতি নিতে সক্ষম হয়ে উঠবে। প্রকৃতপক্ষে এই ধরনের উদ্যোগ জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে এড়াতে সাহায্য করবে। শ্রী শাহ আরও বলেন, ‘আপদ মিত্র’ উদ্যোগ ২৫টি রাজ্যের ৩০টি বন্যাপ্রবণ জেলায় পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে রূপায়িত হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে ৫,৫০০ জন ‘আপদ মিত্র’কে তৈরি করা হচ্ছে যাতে তাঁরা বন্যাজনিত পরিস্থিতির ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেন। এই উপলক্ষে শ্রী শাহ ভারত সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ‘আপদ মিত্র’দের অভিনন্দন জানান। শ্রী শাহ বলেন, এনডিএমএ-এর গত ১৭ বছরে একাধিক প্রোটোকল ও আদর্শ পরিচালন বিধি তৈরি হয়েছে এবং এই পরিকল্পনা দেশের ৩৫০টি জেলায় রূপায়ণ করা হবে। বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ‘আপদ মিত্র’ কর্মসূচি বড় ভূমিকা নিতে পারে বলেও শ্রী শাহ অভিমত প্রকাশ করেন। ‘আপদ মিত্র’ স্বেচ্ছাসেবক ও তাঁদের পরিবারের মধ্যে আস্থার মানসিকতা গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে শ্রী শাহ জানান, এই লক্ষ্যে সরকার একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যেই ২৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ‘আপদ মিত্র’ কর্মসূচি রূপায়ণে এনডিএমএ-এর সঙ্গে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, শৈতপ্রবাহ ও তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতির ক্ষেত্রেও আমাদের কর্মপরিকল্পনা রূপায়ণ করে তা রূপায়ণ করতে হবে। তিনি বলেন, আগাম সতর্কীকরণ বার্তা দেওয়া গেলে এই ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে বহু মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এখন সমগ্র দৃষ্টিভঙ্গিতেই পরিবর্তন এসেছে। আগে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সরকার ত্রাণকেন্দ্রিক উদ্যোগ গ্রহণ করত। তখন বিপর্যয়ের পর মানুষের কাছে সাহায্য যেত। অসহায় এই সমস্ত মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তা, বাসস্থান, খাবার, পানীয় জল ও ওষুধের মতো ব্যবস্থা করা হত। কিন্তু এখন বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগাম সতর্কীকরণ, বিপর্যয়ের প্রভাব হ্রাস ও আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে যাতে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম করা যায়। তিনি বলেন, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমাদের এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে যাতে একজন মানুষেরও প্রাণহানি না হয়।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৬-তে জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার সূচনা করেছিলেন বলে উল্লেখ করে শ্রী শাহ জানান, এটিই ছিল দেশের প্রথম বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সুসংহত কর্মপরিকল্পনা। সেনডাই বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস কাঠামো অনুযায়ী এই কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে এর উদ্দেশ্যই ছিল, জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি কমানো। সরকার এখন বিপর্যয় ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত সংস্থা ও দপ্তরগুলিকে একত্রিত করে সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। শ্রী শাহ বলেন, ছোট কোনও গ্রামই হোক বা মহানগর অথবা প্রত্যন্ত কোনও জেলা বা উপকূলবর্তী শহর – সর্বত্রই বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। তিনি জানান, দেশের অনেক বড় শিল্প সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। বিপর্যয়ের মোকাবিলার ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থাগুলির পাশাপাশি বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিকে সামিল করার উদ্যোগ আগে কখনও নেওয়া হয়নি। তিনি এনডিআরএফ-এর প্রশংসা করে বলেন, গত দু’বছরে এই প্রতিষ্ঠানটি বিপর্যয় মোকাবিলা ও ত্রাণ সহায়তার ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় কাজ করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, তীব্র তাপপ্রবাহের মোকাবিলায় একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ‘আপদ মিত্র’ স্বেচ্ছাসেবকদের এই পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে যাতে তাঁরা সাধারণ মানুষকে তীব্র তাপপ্রবাহের হাত থেকে বাঁচাতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারেন। শ্রী অমিত শাহ বলেন, বিপর্যয়ের ঝুঁকি ও প্রভাব হ্রাস করার ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য পূরণে আরও দ্রুতগতিতে অগ্রসর হতে হবে এবং এই লক্ষ্য পূরণে আমি সকলকে শুভেচ্ছা জানাই।
CG/BD/DM/
(Release ID: 1759088)
Visitor Counter : 257