প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

বাবা সাহেব পুরন্দরের শততম বর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মূল অংশ

Posted On: 13 AUG 2021 9:37PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ১৩ই আগস্ট, ২০২১

নমস্কার !
এই অনুষ্ঠানে আমাদের আর্শীবাদ করছেন পূজনীয় বাবা সাহেব পুরন্দরেজি, বাবা সাহেব সৎকার সমারোহ সমিতির সভাপতি সুমিত্রা তাই এবং শিব শাহীতে বিশ্বাসী বাবা সাহেবের সমস্ত অনুগামীরা !
শিবশাহীর বাবা সাহেব পুরন্দরেজিকে আমি প্রণাম জানাই এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যাতে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের আদর্শ অনুসরণ করার শক্তি আমাদের সকলকে দেন।
আমি বাবা সাহেব পুরন্দরেজিকে জীবনের শততম বর্ষে প্রবেশের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আমি আশাবাদী যে তাঁর আর্শীবাদ দীর্ঘ দিন ধরে আমরা পাবো এবং তিনি আরো অনেক দিন আমাদের পথ দেখাবেন। এই বিশেষ অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধেয়া সুমিত্রা তাইকে আমি অভিনন্দন জানাই। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আজ এই মহতী আয়োজনে যাঁরা বাবা সাহেবের আর্শীবাদ প্রত্যাশী, তাঁর প্রতি যাঁদের অগাধ শ্রদ্ধা রয়েছে, তাদের মধ্যে আমি রয়েছি। এই পবিত্র মুহুর্তে দেশজুড়ে বাবা সাহেবের ভক্তদের আমি অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
শতায়ু জীবন লাভ মানব জীবনে সব থেকে পরিশোধিত এবং ইতিবাচক দিক। বৈদিক যুগে মুনি ঋষিরা ১০০ বছর পার করে বহুদিন পর্যন্ত বাঁচতেন। তাঁরা বলতেন :
জীবেম শরদ: শতম ।।
বুধ্যেম শরদ: শতম ।।
রোহেম শরদ: শতম।।
অর্থাৎ আমি ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারি, ১০০ বছরের জন্য ভাবতে পারি, আরো ১০০ বছর এগিয়ে যেতে পারি। বাবা সাহেব পুরন্দরের জীবন থেকে আমাদের সন্ন্যাসীদের সম্পর্কে মহিমান্বিত ধারণাটি প্রতিফলিত হয়। যখন কেউ তার জীবনে যোগকে তপস্যার অংশ করেন, তখন বেশ কিছু জিনিস একই সঙ্গে ঘটে। বাবা সাহেবের শতবার্ষিকী উদযাপনের সঙ্গে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন একটি অদ্ভুত সমাপতন। আমার মনে হয়, বাবা সাহেব নিজেও উপলদ্ধি করছেন, যে তাঁর তপস্যার কারণে মা ভারতী সন্তুষ্ট হয়ে এই সমাপতন ঘটিয়েছেন।
ভাই ও বোনেরা,
স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষে আরো একটি সমাপতন আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আপনার সকলেই অবগত আছেন যে, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের, অমর আত্মার ইতিহাস নিয়ে লেখা শুরু হয়েছে। বাবা সাহেব পুরন্দরে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এধরণের নানা কাজ করছেন। সারা জীবন ধরে তিনি এই প্রয়াস চালান। শিবাজী মহারাজের জীবন ও ইতিহাস সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য বাবা সাহেবের অবদানের কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবো। আমি অত্যন্ত আনন্দিত, জাতির প্রতি তাঁর অবদানকে স্বীকৃতি দেবার জন্য ২০১৯ সালে তিনি পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হন। তদানিন্তন মহারাষ্ট্র সরকারও মহারাষ্ট্র ভূষণ পুরস্কার দিয়েছিল। মধ্যপ্রদেশেও শিবরাজজির সরকার ছত্রপতি শিবাজীর এই পরম ভক্তকে কালিদাস পুরস্কার দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
বন্ধুগণ,
ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের প্রতি বাবা সাহেব পুরন্দরেজির অগাধ ভক্তি রয়েছে, শিবাজী মহারাজ ভারতের ইতিহাসে একজন শ্রেষ্ঠ পুরুষ। কারণ ভারতের বর্তমান ভূগোলও তাঁর অমর কাহিনীতে প্রভাবিত। এটি আমাদের ইতিহাস, এটি আমাদের বর্তমান౼ আর আমাদের ভবিষ্যতের একটি বড় প্রশ্ন হল, যদি শিবাজী মহারাজ না থাকতেন, তাহলে আমাদের কি পরিস্থিতি হতো ? ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ ছাড়া ভারতের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস কল্পনা করা খুব কষ্টসাধ্য। তিনি তার সময়ে যে কাজ করেছিলেন, সেই কাজ তার সময়কালের পরও সকলকে উজ্জীবিত করে। শিবাজী মহারাজের ‘হিন্দাভী স্বরাজ’ পিছিয়ে পড়া ও বঞ্চিত সমাজ এবং স্বৈর শাসনের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ের আদর্শ উদাহরণ। বীর শিবাজীর আন্দোলন, তাঁর নৌশক্তির ব্যবহার এবং জল ব্যবস্থাপনার মতো যে কোনো বিষয় আজকের দিনে অনুপ্রেরণার উৎস। আর এর জন্য পুরো কৃতিত্বের ভাগীদার বাবা সাহেব, কারণ তিনিই স্বাধীন ভারতের নতুন প্রজন্মের কাছে শিবাজী মহারাজের আসল চিত্র তুলে ধরেন।
তাঁর লেখার মধ্যে এবং তাঁর রচিত বইগুলিতে শিবাজী মহারাজের প্রতি তার অটুট শ্রদ্ধা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়।
শিবাজী মহারাজের প্রতি প্রশ্নাতীত নিষ্ঠা তাঁর বিভিন্ন রচনা এবং পুস্তকে প্রতিফলিত। শিবাজী মহারাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনা বাবা সাহেব পুরন্দরের লেখনশৈলীর কারণে আমাদের মনে চিরস্থায়ী আসন করে নিয়েছে। আমার এখনও মনে পড়ে চার দশক আগে যে অনুষ্ঠানগুলি আপনারা আমেদাবাদে আয়োজন করতেন, সেগুলিতে আমি নিয়মিত অংশ নিতাম। বিশেষ করে বাবা সাহেবের ‘জনতা রাজা’ নাটকটি যখন মঞ্চস্থ হয়, সেই সময় আমি সেটি দেখতে পুণেতে পর্যন্ত গিয়েছিলাম।
সঠিকভাবে ইতিহাস যুব সম্প্রদায়ের কাছে যাতে পৌঁছায় এবং তাঁরা সেই ইতিহাস থেকে অনুপ্রাণিত হন বাবা সাহেব সব সময় তা চেষ্টা করেছেন। দেশের ইতিহাস রচনায় এই ভারসাম্যটির বড় প্রয়োজন। শিবাজীর প্রতি তার শ্রদ্ধা এবং সাহিত্যিক স্বত্ত্বা কখনই তার ইতিহাস বোধকে প্রভাবান্বিত করে নি। আমি দেশের তরুণ ইতিহাসবিদদের কাছে আবেদন জানাবো, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের আবহে যখন লেখা হবে, সেই সময় আপনাদের লেখার মধ্যে যেন প্রামাণ্য তথ্য থাকে।
বন্ধুগণ,
বাবা সাহেব পুরন্দর কেবল ইতিহাসের প্রকৃত তথ্য জানানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে নি, তিনি শিবাজী মহারাজের আদর্শে তার জীবন অতিবাহিত করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তিনি ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান যুগ নিয়েও ভাবনা চিন্তা করতেন।
গোয়ার মুক্তি সংগ্রাম থেকে শুরু করে দাদরা – নগর হাভেলীর স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত তিনি যে ভূমিকা পালন করেছেন, তা অনুকরণীয়। তার পরিবারও বিভিন্ন সামাজিক কাজ ও সঙ্গীত চর্চায় নিয়োজিত। আপনারা আজও “শিব - সৃষ্টি” নির্মাণ কাজে সংকল্পবদ্ধ। শিবাজী মহারাজ যে আদর্শের মাধ্যমে সারা জীবন ধরে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছেন, সেই আদর্শ আমাদের শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অনুপ্রাণিত করবে।
আমি মা ভবানীর চরণে এই বিশ্বাস নিয়ে বিনম্র প্রার্থনা জানাই, তিনি যাতে আপনার সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করেন, আপনার আর্শীবাদ আমরা যাতে ভবিষ্যতেও পাই। আরো একবার শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি।
ধন্যবাদ !

CG/CB/SFS



(Release ID: 1747882) Visitor Counter : 214