ক্রেতা, খাদ্যএবংগণবন্টনমন্ত্রক

অভুক্ত অবস্থায় কোন দরিদ্র মানুষ এখন ঘুমোন নাঃ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা শুরু হওয়ার পর সুবিধাভোগীরা আগের থেকে প্রায় দ্বিগুণ রেশন পাচ্ছেন : প্রধানমন্ত্রী
মহামারীর সময়ে ৮০ কোটির বেশি মানুষ বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন, এরজন্য ব্যয় হচ্ছে ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি : প্রধানমন্ত্রী
শতাব্দীর মধ্যে বৃহত্তম মহামারী সত্ত্বেও কোনো নাগরিক অভুক্ত নেই : প্রধানমন্ত্রী
আজ দরিদ্র মানুষদের ক্ষমতায়ণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 03 AUG 2021 3:37PM by PIB Kolkata

নতুনদিল্লি, ৩রা আগস্ট, ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় করেছেন। এই প্রকল্পের বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে রাজ্যে একটি গণ অংশীদারিত্ব কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছে।
এই উপলক্ষ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গুজরাটের লক্ষ লক্ষ পরিবার প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন। এই রেশন পাওয়ার ফলে দরিদ্র মানুষদের দূর্দশা কমছে এবং তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হচ্ছে। দরিদ্র মানুষরা বুঝতে পারছেন যে দূর্যোগই আসুক না কেন, দেশ তাদের পাশেই রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন স্বাধীনতার পর প্রায় প্রত্যেক সরকার দরিদ্র মানুষদের স্বল্পমূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে। বছরের পর বছর স্বল্পমূল্যে রেশন দেওয়ার জন্য সুযোগ এবং অর্থবরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এর প্রভাব ছিল সীমাবদ্ধ। দেশের খাদ্য মজুত করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সেই অনুপাতে অভুক্ত থাকা এবং অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের সংখ্যা কমেনি। এর পিছনে অন্যতম কারণ হল যথাযথভাবে বন্টন করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়নি। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটানোর জন্য ২০১৪ সালের পর থেকে উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোটি কোটি ভুয়ো সুবিধাভোগীদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে এবং রেশন কার্ডকে আধারের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে শতাব্দীর সর্ববৃহৎ দুর্যোগের মধ্যে লকডাউনের সময় যখন ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হয়েছে, মানুষের জীবিকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে সেই পরিস্থিতিতে কোনো নাগরিক যাতে অভুক্ত না থাকেন তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সারা বিশ্ব প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যয় করে মহামারীর সময় ৮০ কোটির বেশি মানুষকে রেশন দেওয়া হয়েছে।
শ্রী মোদী আজ বলেছেন, ২ টাকা কেজি দরে গম, ৩ টাকা কেজি দরে চালের পাশাপাশি প্রত্যেক সুবিধাভোগীকে ৫ কেজি গম বা আটা বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প চালু হওয়ার আগে রেশন কার্ডধারীরা যতটা পরিমাণ খাদ্যশস্য পেতেন বর্তমানে তারা তার দ্বিগুণ পরিমাণ খাদ্যশস্য পাচ্ছেন। দীপাবলি পর্যন্ত এই প্রকল্প চালু থাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো দরিদ্র মানুষ এখন অভুক্ত অবস্থায় ঘুমাতে যান না। পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে লাভবান হন তার জন্য এক দেশ এক রেশন কার্ড ব্যবস্থাকে কার্যকর করার জন্য গুজরাট সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তিনি সেই উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ পরিকাঠামোর জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। এর ফলে সহজ জীবনযাত্রার নতুন সংজ্ঞা তৈরি হচ্ছে। দরিদ্র মানুষদের ক্ষমতায়নকে আজ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ২ কোটির বেশি দরিদ্র পরিবার বাড়ি পেয়েছেন। ১০ কোটি পরিবার শৌচালয় পেয়েছেন। একইভাবে জনধন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাঁদের ক্ষমতায়ণ ঘটেছে।
এক নজরে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা
মহামারীর ফলে দরিদ্র মানুষরা যে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন সেই পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য করতে কেন্দ্র, প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার মাধ্যমে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় থাকা ৮০ কোটির বেশি সুবিধাভোগীকে বিনামূল্যে প্রতি মাসে ৫ কেজি খাদ্যশস্য বিতরণ করছে। এছাড়াও অন্তোদয় অন্ন যোজনা, প্রায়োরিটি হাউস হোল্ডারর্স রেশন কার্ড যাদের রয়েছে তারা আগে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য পেতেন তার সঙ্গে অতিরিক্ত এই খাদ্যশস্য পাবেন। অন্তোদয় অন্ন যোজনায় প্রতি পরিবার মাসে ৩৫ কেজি এবং প্রায়োরিটি হাউস হোল্ডারর্স রেশন কার্ডে প্রত্যেকে মাসে ৫ কেজি করে খাদ্যশস্য পান। এর ফলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি থেকে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার মাধ্যমে প্রায় দ্বিগুণ খাদ্যশস্য সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনায় ২০২০ সালে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত খাদ্যশস্য বিতরণ করা হবে। কিন্তু মহামারী চলতে থাকায় এই যোজনার সময়কাল ২০২০র জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা এ বছর মে ও জুন মাসে আবারও সূচনা হয়। পরবর্তীকালে এর সময়সীমা জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় গুজরাটে এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্র বিনামূল্যে ৭২ লক্ষ সুবিধাভোগীকে ১৩ লক্ষ ৬০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সরবরাহ করেছে। প্রত্যেকে মাথাপিছু ৫ কেজি করে খাদ্যশস্য পেয়েছেন। একইভাবে এ বছর মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পে ১১ লক্ষ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য গুজরাটের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। মে থেকে জুলাই পর্যন্ত বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের ৯৫.৫ শতাংশ বন্টন করা হয়েছে।
গুজরাটে প্রযুক্তি ভিত্তিক গণবন্টন ব্যবস্থা রয়েছে। রাজ্যে আধারের সঙ্গে ৯৯.৫ শতাংশ রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণের কাজ শেষ হয়েছে। এখানে সবথেকে বেশি স্বচ্ছতার সঙ্গে খাদ্যশস্য বন্টন করা হয়। ১৭ হাজার বৈদ্যুতিন পয়েন্ট অফ সেলিং যন্ত্রের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যের দোকান থেকে উপভোক্তাদের খাদ্যশস্য দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের স্বপ্ন পূরণে প্রযুক্তি ভিত্তিক যে সংস্কার গ্রহণ করা হয়েছে তার অঙ্গ হিসেবে দেশজুড়ে এক রেশন কার্ড ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। গুজরাট এই প্রকল্পে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সে রাজ্যে প্রতিমাসে ৪২ হাজার লেনদেন পরিযায়ী সুবিধাভোগীদের জন্য করা হচ্ছে। এক দেশ এক রেশন কার্ড ব্যবস্থার প্রচলনের পর রাজ্যে প্রায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার লেনদেন হয়েছে।

CG/CB/NS


(Release ID: 1741982)