স্বাস্থ্যওপরিবারকল্যাণমন্ত্রক
অর্থ ব্যবস্থায় স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত টিকাকরণ গুরুত্বপূর্ণ : ডঃ ভি কে পল
দৈনিক অন্ততপক্ষে ১ কোটি টিকাকরণ আমাদের লক্ষ্য: ডঃ এন কে অরোরা
টিকাকরণ অভিযানের সাফল্যে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ
“টিকার যোগানে কোনও সমস্যা হবে না, আগামী মাসেই ২০-২২ কোটি টিকার ডোজ সরবরাহ করা হবে”
Posted On:
22 JUN 2021 9:31AM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২২ জুন, ২০২১
নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য ডঃ ভি কে পল জানিয়েছেন, কোভিড টিকাকরণ সম্পর্কিত সংশোধিত নীতি-নির্দেশিকা কার্যকর হওয়ার প্রথম দিনেই ভারতে প্রায় ৮১ লক্ষ টিকাকরণ হয়েছে।
বিপুল সংখ্যায় টিকাকরণের ক্ষেত্রে ভারতের সক্ষমতার ইঙ্গিত
ডিডি নিউজ-এর সঙ্গে কথা বলার সময় ডঃ পল জানান, সংশোধিত টিকাকরণ নীতি-নির্দেশিকার প্রথম দিনেই যে বিপুল সংখ্যায় টিকা দেওয়া হয়েছে তা থেকে ভারতের দৈনিক এবং সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ব্যাপক হারে টিকাকরণের সক্ষমতাই প্রকাশ পায়। তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে পরিকল্পনা ও সুসমন্বয়ের ফলেই টিকাকরণের ক্ষেত্রে এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে টিকাকরণের বিষয়টি মিশন মোড ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে।”
“করোনার তৃতীয় ঢেউ আসবে কি আসবে না তা আমাদের ওপর নির্ভরশীল”
ডঃ পল স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, যদি কোভিড আদর্শ আচরণগুলি যথাযথভাবে মেনে চলা যায় এবং বৃহৎ সংখ্যক মানুষের টিকাকরণ সম্ভব হয় তাহলে করোনার তৃতীয় ঢেউ আটকানো সম্ভব। তিনি বলেন, “আমরা যদি কোভিড আদর্শ আচরণ মেনে চলি এবং ঠিক সময়ে টিকা নিই, তাহলে কেন তৃতীয় ঢেউ ঠেকানো যাবে না? এমন অনেক দেশ রয়েছে যেখানে দ্বিতীয় ঢেউ আসেনি; তাই, আমরা যদি কোভিড আদর্শ আচরণগুলি মেনে চলতে পারি তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তৃতীয় ঢেউ এড়ানো সম্ভব।”
জনজীবনে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনতে দ্রুততার সঙ্গে টিকাকরণ গুরুত্বপূর্ণ
নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য জোর দিয়ে বলেন, অর্থ ব্যবস্থা এবং দৈনন্দিন কাজকর্মকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে দ্রুতগতিতে টিকাকরণ জরুরি। তাঁর মতে, “আমাদেরকে দৈনন্দিন কাজকর্ম চালিয়ে যেতে হবে, সামাজিক জীবন ও সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে হবে, বিদ্যালয়গুলি খুলতে হবে, ব্যবসায়িক কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হবে, এমনকি আমাদের অর্থনীতির প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে; আমরা যদি এই কাজগুলি করতে সক্ষম হই তবে তখনই আমরা দ্রুততার সঙ্গে টিকাকরণ করতে পারব।”
“টিকাকরণের ফলে জীবন বাঁচানো যাচ্ছে, তাই টিকা নেওয়ার এটাই সেরা সময়”
ডঃ পল বলেন, আমাদের টিকাগুলি অসুরক্ষিত এটা ভাবা বড় ভুল হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিশ্বে সমস্ত টিকাকেই আপৎকালীন ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দেশের টিকাগুলির ক্ষেত্রেও এর কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ প্রায় থেমে এসেছে এবং কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার এটাই সেরা সময়।”
ডঃ পল জানান, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকাকরণের সিদ্ধান্ত কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় প্রমাণিত হয়েছে। খুব অল্প সংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যথায় হাসপাতালে আমাদের চিকিৎসা পরিকাঠামো ব্যবস্থা দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় পুরোপুরি ভেঙে পড়ত। তাই আমার অনুরোধ, টিকা নিয়ে সংক্রমণের হাত থেকে মানুষের জীবন রক্ষা করুন।
দৈনিক ১.২৫ কোটি টিকা দেওয়ার সক্ষমতা ভারতের রয়েছে
ভারতে টিকাকরণ সম্পর্কিত জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা গোষ্ঠীর সভাপতি ডঃ এন কে অরোরা ডিজি নিউজ-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে যোগ দিয়ে বলেন, সংশোধিত টিকাকরণ কর্মসূচি কার্যকর করার প্রথম দিনেই বড় সাফল্য মিলেছে। তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্যই হল দৈনিক অন্ততপক্ষে ১ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া। তাই, দৈনিক ভিত্তিতে ১ কোটি ২৫ লক্ষ কোভিড টিকার ডোজ দেওয়ার ক্ষমতা ভারতের রয়েছে।
ডঃ অরোরা আরও বলেন, বিপুল হারে টিকাকরণের লক্ষ্য পূরণে বেসরকারি ক্ষেত্রের সক্রিয় অংশগ্রহণ সমান জরুরি। সংশোধিত টিকাকরণ কর্মসূচির প্রথম দিনেই বেসরকারি ক্ষেত্রের সাফল্যের বিষয়টি আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে। ভারত অতীতে কিভাবে টিকাকরণের ক্ষেত্রে সফল হয়েছে সে সম্পর্কে ডঃ অরোরা জানান, এটা অভাবনীয় কিছু নয় কারণ, আমরা এক সপ্তাহে ১৭ কোটি শিশুকে টিকা দিয়েছি। তাই, ভারত যখন কোনও সিদ্ধান্ত নেয় তখন তা সাফল্যের সঙ্গে অর্জন করে। তাই ভারতের কোভিড-১৯ টিকাকরণ কর্মসূচি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে যেখানে সারা দেশের সমস্যা নিরসনে সবপক্ষই একযোগে এগিয়ে এসেছে।
টিকাকরণ সম্পর্কে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর করতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা জরুরি
টিকাকরণ সম্পর্কে বিভ্রান্তি ও ভুল ধারণা দূর করতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতার গুরুত্বের ওপর ডঃ অরোরা জোর দিয়ে বলেন, টিকাকরণের ভীতি দূর করতে জন-ভাগিদারি ও জনজাগরণ এখন অত্যন্ত জরুরি। তাই টিকাকরণের জন্য দ্বিধামুক্ত হয়ে এগিয়ে আসার বিষয়টি এখন জনগণের ওপরই নির্ভর করছে। তিনি আরও জানান, টিকাকরণ সম্পর্কে যাবতীয় বিভ্রান্তি দূর করতে আশা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সচেতনতামূলক প্রচারের কাজে লাগানো হচ্ছে।
টিকার যোগান নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না
টিকার যোগান নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলেও ডঃ অরোরা আশ্বস্ত করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আগামী মাসে আমাদের হাতে আরও ২০-২২ কোটি টিকার ডোজ আসবে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ব্যবস্থা আরও সম্প্রসারিত করা হয়েছে যাতে দেশের প্রতিটি কোণায় টিকাকরণ অভিযান চালানো যায় এবং পার্বত্য অঞ্চল হোক বা আধিবাসী অধ্যুষিত এলাকা – সর্বত্রই ব্যাপক টিকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
কোভিশিল্ড টিকার দুটি ডোজের মধ্যে বর্তমান সময়ের ব্যবধান পরিবর্তনের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই
কোভিশিল্ড টিকার দুই ডোজের মধ্যে সময়ের ফারাক সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ডঃ অরোরা জানান, এখনই টিকার দুই ডোজের মধ্যে সময়ের ফারাক কমানোর কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। এ সম্পর্কে, “আমরা ন্যাশনাল ভ্যাক্সিন ট্র্যাকিং সিস্টেমের আওতায় বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছি। এমনকি, টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কেও তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে। অঞ্চল-ভিত্তিক টিকার প্রভাব নিরূপণ করা হচ্ছে। এই সমস্ত দিকগুলি বিবেচনায় রেখেই কোভিশিল্ড টিকার দুই ডোজের মধ্যে সময়ের ফারাক পরিবর্তনের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মনে করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্যই হল টিকার প্রতিটি ডোজের সর্বাধিক কার্যকারিতা সমানভাবে যাতে প্রত্যেক টিকা গ্রহীতা পান।”
CG/BD/DM/
(Release ID: 1729415)
Visitor Counter : 394