প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহদান প্রকল্পের ওপর আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রেখেছেন


১৩টি ক্ষেত্রে পিএলআই-এর মাধ্যমে সরকারের অঙ্গীকার প্রতিফলিত হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

পিএলআই-এর ফলে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সুবিধা হবে : প্রধানমন্ত্রী

Posted On: 05 MAR 2021 12:19PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লী, ৫ মার্চ, ২০২১

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শিল্পোৎসাহ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দপ্তর এবং নীতি আয়োগ আয়োজিত উৎপাদনভিত্তিক প্রকল্পের ওপর আয়োজিত ওয়েবিনারে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে শিল্প ও বাণিজ্যে গতি আনতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গত ৬-৭ বছরে মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচিকে বিভিন্ন পর্যায়ে সফল করে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরজন্য উৎপাদন শিল্পের চাঙ্গা হওয়া প্রয়োজন। আর তাই এই শিল্পে গতি আনতে হবে। বিশ্বজুড়ে কোনো দেশের উন্নয়ন তখনই ত্বরান্বিত হয় যখন সংশ্লিষ্ট দেশের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এরফলে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়ে।    

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের উদ্দেশ্য অত্যন্ত স্পষ্ট। ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং সব জিনিসের নিঁখুত উৎপাদন  হওয়া প্রয়োজন। শিল্পোৎসাহের জন্য সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করা, বিভিন্ন নিয়ম-কানুন শিথিল করা, বহুস্তরীয় পরিকাঠামো তৈরি করা, জেলাস্তরে রপ্তানী কেন্দ্র গড়ে তোলার মতো পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। সরকার বিশ্বাস করে প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হওয়ার পরিবর্তে ওই সমস্যাই আরও জটিল আকার ধারণ করে। তাই স্ব-নিয়ন্ত্রণ, স্ব-প্রত্যায়ন এবং স্ব-শংসায়নের ওপর প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন। ভারতে যেসমস্ত দেশীয় কোম্পানী বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করে তাদের বিশ্বের বাজারে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। আমাদের দেশে উৎপাদিত পণ্যগুলির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য এইসব পণ্যের ভালো গুণমান এবং দাম কম হতে হবে । শ্রী মোদী বলেছেন, ‘আমরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে আহ্বান জানাচ্ছি এবং আমাদের দেশের বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগের আহ্বান করছি।’  

পূর্ববর্তী সরকারের প্রকল্পগুলির সঙ্গে বর্তমান সরকারের প্রকল্পের পার্থক্যের তুলনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগে শিল্প সংস্থাগুলিকে উৎসাহ দানের জন্য ভর্তুকি দেওয়া হত। কিন্তু এখন সরকার কার্য-সম্পাদনের ওপর ভিত্তি করে প্রতিযোগিতামূলক আবহে নানা ধরণের উৎসাহ দিয়ে থাকে। প্রথমবারের মতো দেশে ১৩টি ক্ষেত্রকে উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহদান প্রকল্পের (প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনশেনটিভ-পিএলআই) আওতায় নিয়ে আসা হল। এই উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহ  প্রকল্পগুলির ফলে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাই উপকৃত হবে। গাড়ি ও ওষুধ শিল্পে পিএলআই-এর ফলে গাড়ির যন্ত্রাংশ, চিকিসা সরঞ্জামের যন্ত্রাংশ ও ওষুধের কাঁচামালের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে আধুনিকীকরণের জন্য উন্নত সেল ব্যাটারি, সৌরশক্তির জন্য ফটোভোল্টিক মডিউল এবং বিশেষ ধরণের ইস্পাত উৎপাদন করা হবে। একইভাবে বস্ত্রশিল্প ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে পিএলআই-এর ফলে সমগ্র কৃষি ক্ষেত্র লাভবান হবে। 

প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন ভারতের প্রস্তাবে সারা দিয়ে রাষ্ট্রসংঘ ২০২৩ সালকে আন্তর্জাতিক জোয়ার-বাজরা বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে যা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। ৭০টির বেশি দেশ ভারতের প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে এবং রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে এই প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। আমাদের কৃষকদের জন্য এরফলে বিরাট সুযোগ তৈরি হল। ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে জোয়ার-বাজরার পুষ্টিকর উপাদানগুলির বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে প্রচার চালাতে হবে। মানুষকে রোগ প্রতিরোধের জন্য দানাশস্যের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের কৃষকরা উপকৃত হবেন। কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে এই সুযোগ পুরোমাত্রায় কাজে লাগাতে প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন। 

এ বছরের বাজেটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, পিএলআই প্রকল্পগুলির জন্য ২ লক্ষ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। গড়পরতা হিসেবে ৫ শতাংশ উৎপাদনকে উৎসাহদানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এরফলে ভারতে আগামী ৫ বছরে ৫২ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য উৎপাদন হবে। এর মাধ্যমে দ্বিগুণ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পিএলআই সংক্রান্ত ঘোষণা দ্রুতহারে বাস্তবায়িত করতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের হার্ডওয়্যার ও টেলিকম শিল্পের সরঞ্জাম উৎপাদনে পিএলআই-এর ফলে বিপুল পরিমাণে এইসমস্ত পণ্য সামগ্রী উৎপাদিত হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ৪ বছরে ৩ লক্ষ কোটি টাকার হার্ডওয়্যার সামগ্রী উৎপাদন করবে। এরফলে ৫ বছরে দেশীয় মূল্যমানের শৃঙ্খলের নিরিখে বর্তমান ৫-১০ শতাংশের বদলে এইসব সামগ্রীর মোট পরিমাণ দাঁড়াবে ২০-২৫ শতাংশ। একইভাবে টেলিকম সরঞ্জাম উৎপাদন ৫ বছরে ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পাবে। এর মধ্যে আমরা ২ লক্ষ কোটি টাকা পণ্য সামগ্রী রপ্তানী করতে পারবো।   

ওষুধ শিল্পে আগামী ৫-৬ বছরে পিএলআই প্রকল্পের ফলে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে ওষুধ শিল্পে বিক্রির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩ লক্ষ কোটি টাকা এবং রপ্তানী বৃদ্ধিতে হবে ২ লক্ষ কোটি টাকা।  

প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেছেন যেভাবে ভারত  গোটা মানবজাতির সেবা করে আসছে তার ফলে বিশ্বে ভারত একটি বৃহৎ ব্র্যান্ড হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ভারতের দায়বদ্ধতা এবং পরিচিতি প্রতিনিয়ত নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে। আমাদের ওষুধ, চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা সামগ্রী বিশ্বজুড়ে আস্থা অর্জন করেছে। এই আস্থাকে সম্মান জানাতে, ওষুধ শিল্পকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার আহ্বান জানানো হয়েছে। শ্রী মোদী বলেছেন, মোবাইল ফোন ও বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের পিএলআই প্রকল্প গত বছর শুরু হয়েছে। এর ফলে মহামারী সত্ত্বেও গত বছর বৈদ্যুতিন সামগ্রী ও মোবাইল ফোন ৩৫ হাজার কোটি টাকার পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করেছে, ১৩০০ কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগকে আকর্ষণ করেছে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগে পিএলআই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করবে। সমগ্র মূল্য শৃঙ্খলে এই শিল্পোদ্যোগ সরবরাহকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শিল্প জগতকে পিএলআই প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করতে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে নতুন নতুন উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী গবেষণা ও উন্নয়নে শিল্প সংস্থাগুলিকে আরও সক্রিয় হতে পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়াও মানব সম্পদের মানোন্নয়ন ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের উপযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন ভারতে উৎপাদিত পণ্যের গুণমান সারা বিশ্বের নিরিখে সর্বোৎকৃষ্ট হওয়া প্রয়োজন। 

***

 

 

CG/CB/NS



(Release ID: 1702915) Visitor Counter : 188