উপ-রাষ্ট্রপতিরসচিবালয়
পরিবেশ-বান্ধব ভবন নির্মাণে অর্থ কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের কর ছাড়ের উৎসাহ দেওয়া উচিৎ - উপ-রাষ্ট্রপতি
Posted On:
15 DEC 2020 1:11PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০
উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু আজ অর্থ কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনগুলিকে পরিবেশ-বান্ধব ভবন নির্মাণের জন্য উৎসাহ দিতে আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই ধরনের ভবন নির্মাণের জন্য কর ছাড়ের মতো বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া উচিৎ। শ্রী নাইডু সমস্ত রাজ্যগুলিকে পরিবেশ-বান্ধব ভবনের অনুমোদন দেওয়ার জন্য 'এক জানালা' ব্যবস্থার অনলাইন পোর্টাল চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন।
গ্রিন রেটিং ফর ইন্টিগ্রেটেড হ্যাবিট্যাট অ্যাসেসমেন্ট – ‘গৃহ’-এর দ্বাদশ সম্মেলনের ভার্চ্যুয়াল উদ্বোধন করে উপ-রাষ্ট্রপতি বলেছেন, পরিবেশ-বান্ধব ভবন নির্মাণের আন্দোলনে ভারতের নেতৃত্ব দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। হায়দ্রাবাদে গৃহ কাউন্সিল আয়োজিত এই সম্মেলনে উপ-রাষ্ট্রপতি আরও বলেছেন, বেসরকারি এবং সরকারি - উভয় ক্ষেত্রেরই পরিবেশ-বান্ধব ভবন নির্মাণে উদ্যোগী হওয়া উচিৎ। মানুষের মধ্যে পরিবেশ-বান্ধব ভবনের ধারণা কম থাকায় এ বিষয়ে নিবিড় প্রচারের ওপর তিনি জোর দিয়েছেন।
ওয়ার্ল্ড গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের তথ্য উদ্ধৃত করে শ্রী নাইডু বলেছেন, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যে কার্বন নিঃসরণ ঘটে তা গোটা বিশ্বের মোট হিসেবে ৩৯ শতাংশ। এক্ষত্রে এই ধরনের বাড়ি তৈরির কাজে এমন কিছু পদ্ধতি নেওয়া উচিৎ যাতে কার্বন নিঃসরণ কম হয়।
আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকে সমস্ত ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ বলে উল্লেখ করে শ্রী নাইডু স্থিতিশীল উন্নয়নের জন্য এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এবং এক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণে বাড়িগুলি সবথেকে বড় উৎস বলে উল্লেখ করে শ্রী নাইডু বলেছেন, পরিবেশ-বান্ধব এবং জ্বালানি ও সম্পদ সাশ্রয়ী উদ্যোগের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে এক্ষেত্রে উদ্যোগী হতে হবে। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতে তাদের গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিবেশ-বান্ধব উদ্যোগ নেওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শ্রী নাইডু বলেছেন, প্রত্যেকটি বাড়ির ক্ষেত্রে পরিবেশ-বান্ধব নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। শুধু তাই নয়, নতুন বাড়ির পাশাপাশি পুরনো বাড়িগুলিকেও পরিবেশ-বান্ধব করে তুলতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
আমাদের প্রাচীন সভ্যতার মূল্যবোধের কথা উল্লেখ করে উপ-রাষ্ট্রপতি বলেছেন, পরিবেশের সঙ্গে সম্প্রীতি বজায় রেখে থাকার শিক্ষা আমরা আমাদের প্রাচীন সভ্যতা থেকেই পেয়েছি। হাজার হাজার বছর আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা পরিবেশ-বান্ধব বাড়ি তৈরি করতেন অথচ দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে বর্তমান যুগে আমরা সেই পদ্ধতি মেনে চলি না। আজ আমাদের বাড়িতে চড়ুইপাখি বাসা বাঁধতে পারে না।
জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে শ্রী নাইডু অর্থনৈতিক বিকাশ এবং পরিবেশ রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অর্থনীতি এবং বাস্তুতন্ত্র তখনই সহাবস্থান করতে পারে যখন আমরা প্রকৃতিকে সম্মান জানাই।
বর্তমান বছরটিতে কোভিড-১৯ মহামারী এবং বন্যা, খরা সহ বেশ কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে শ্রী নাইডু এই বছরটিকে বিপর্যয়ের বছর বলে চিহ্নিত করেছেন। তাই, উন্নয়নের জন্য চিন্তাভাবনার বিষয়ে নতুনভাবে পরিকল্পনা করতে হবে, যাতে আমাদের নিজেদের জীবদ্দশার পরেও আমরা পৃথিবীর জন্য ইতিবাচক কিছু দিয়ে রাখতে পারি।
২০৫০ সালের মধ্যে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক বড় এবং ছোট ছোট শহরে বসবাস করবেন বলে উল্লেখ করে শ্রী নাইডু বলেছেন এর ফলে আবাসন ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রভাব পড়বে। এর জন্য পরিবেশ-বান্ধব বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
ছাদ ঠান্ডা করার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ভারতের ৬০ শতাংশ বাড়ির ছাদ ধাতু, অ্যাসবেসটস এবং কংক্রিটের তৈরি। ফলে, এইসব বাড়িগুলির মধ্যে তাপ আটকে থাকে যার ফলে শহরাঞ্চলগুলি তাপের দ্বীপভূমিতে পরিণত হয়। বাড়ির ছাদ এমনভাবে তৈরি করা উচিৎ যাতে ঘরের ভিতরের তাপমাত্রা ২-৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড কম থাকে। এর জন্য বাড়ির ছাদে চাল ব্যবহার করা যেতে পারে যা শহরাঞ্চলের নিম্ন আয়ের বাড়িগুলিতে এবং বস্তি এলাকার জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসূ। জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশ্ব জুড়ে উষ্ণায়নও বেড়েছে। তিনি বলেছেন, বাড়ির ছাদ ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থাপনা নীতি অনুসরণ করলে বাড়িগুলি ঠান্ডা থাকবে এবং এর ফলে এই ধরনের যন্ত্রের ওপর নির্ভরতা কমবে। এক্ষেত্রে চুনের মাধ্যমে রং করা, বাড়ির বাইরে প্রতিফলিত আস্তরণ তৈরি করলে সূর্যের তাপ বাড়িতে ঢুকতে পারবে না।
আলো এবং বাতাস যাতে ঘরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ঢুকতে পারে তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শ্রী নাইডু বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে, বাড়ির মধ্যে ভালোভাবে বায়ু চলাচল করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যুরো অফ এনার্জি এফিশিয়েন্সি-র জ্বালানি সংরক্ষণের নীতির কথা উল্লেখ করে উপ-রাষ্ট্রপতি বলেছেন, তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ এই নীতিগুলি মেনে চলছে। কিন্তু দেশ জুড়ে সর্বত্র একই ধরণের নীতি মেনে চলা হচ্ছে না। তিনি সকলকে পরামর্শ দিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে স্থাপত্যবিদ, প্রযুক্তিবিদ, সরকারি আধিকারিক সহ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিৎ যাতে জ্বালানি সাশ্রয়ী ভবন তৈরি করা যায়।
‘গৃহ' সংস্থাটির কাজের ভূমিকার প্রশংসা করে শ্রী নাইডু বলেছেন, ভারতে পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই সংস্থা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে। গৃহ কাউন্সিলের মান নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগেরও তিনি প্রশংসা করেছেন। এই অনুষ্ঠানে উপ-রাষ্ট্রপতি গৃহ কাউন্সিলের তিনটি বৈদ্যুতিন প্রকাশনার উদ্বোধন করেছেন। এগুলি হল – ভবন নির্মাণের ওপর ৩০টি কাহিনী, শ্বাশত ম্যাগাজিন এবং কাউন্সিলের ভার্শান ২০১৯ ম্যানুয়াল।
কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরী, গৃহ কাউন্সিলের সভাপতি ডঃ অজয় মাথুর এবং কাউন্সিলের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শ্রী সঞ্জয় শেঠ ভার্চ্যুয়ালি অন্যান্যদের সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।
***
CG/CB/DM
(Release ID: 1680773)
Visitor Counter : 627