প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর

প্রধানমন্ত্রী হাজিরায় রো-পাক্স টার্মিনালের উদ্বোধন করেছেন


গুজরাটের হাজিরা এবং ঘোঘা-র মধ্যে রো-পাক্স ফেরি পরিষেবার সূচনা করেছেন

জাহাজ চলাচল মন্ত্রকের নতুন নামকরণ করা হলো বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জল পরিবহণ মন্ত্রক

Posted On: 08 NOV 2020 2:17PM by PIB Kolkata

নতুন দিল্লি, ০৮ নভেম্বর, ২০২০

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আজ হাজিরায় রো-পাক্স টার্মিনালের উদ্বোধন করেছেন এবং গুজরাট ও হাজিরা ঘোঘা-র মধ্যে রো-পাক্স ফেরি পরিষেবার সূচনা করেছেন। তিনি স্থানীয় পরিষেবা ব্যবহারকারীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন। এই অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী জাহাজ চলাচল মন্ত্রকের নাম পরিবর্তন করে বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জল পরিবহণ মন্ত্রক রেখেছেন।

 

এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজ গুজরাটবাসী তাঁদের দীপাবলি উপহার পেলেন। এই উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল সকলেই পাবেন। এর ফলে ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি হবে ও আরো দ্রুত যাতায়াত করা যাবে। হাজিরা এবং ঘোঘা-র মধ্যে রো-পাক্স পরিষেবার সূচনা হওয়ার ফলে সৌরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ গুজরাটের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো। এর ফলে ১০ থেকে ১২ ঘন্টার পরিবর্তে তিন থেকে চার ঘন্টার মধ্যে যাতায়াত করা যাবে। এতে সময় এবং অর্থ দুইই বাঁচবে। শ্রী মোদী বলেছেন, ৮০,০০০ রেল যাত্রী ও ৩০,০০০ ট্রাক বছরে এই নতুন পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবে

 

শ্রী মোদী আরও জানিয়েছেন, সৌরাষ্ট্র এবং সুরাটের মধ্যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার ফলে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন হবে। তিনি আরও বলেছেন, ফল, শাকসব্জি এবং দুধ সহজেই পরিবহণ করা যাবে এবং দূষণের মাত্রা কমবে। যেসমস্ত ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মচারী চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সাহসিকতার সঙ্গে এই পরিষেবা গড়ে তুলেছেন তিনি তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ভাবনগর ও সুরাটের মধ্যে নতুন এই জল পরিবহণের কারণে তিনি জনসাধারণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

 

প্রধানমন্ত্রী গত দুই দশকে যেভাবে গুজরাট জাহাজ চলাচলের সম্ভাবনাগুলিকে কাজে লাগাচ্ছে তার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, বন্দরমুখী উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে যা প্রতিটি গুজরাটির কাছে গর্বের বিষয়। রাজ্যের জাহাজ চলাচলকে উন্নত করার জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেছেন, জাহাজ নির্মাণ নীতি তৈরি করা হয়েছে এছাড়াও জাহাজ নির্মাণ পার্ক ও বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন টার্মিনাল, জাহাজ চলাচল ব্যবস্থাপনার উন্নতি এবং উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এই উদ্যোগগুলির ফলে বন্দর ক্ষেত্র নতুন দিশায় এগোচ্ছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলের পরিকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি সমগ্র অঞ্চলের আধুনিকীকরণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে গুজরাট সমৃদ্ধির প্রবেশ পথে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেছেন, গত দু’ দশকের বেশি সময় ধরে সুসংহত বন্দর গড়ে তোলার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার ফলে গুজরাটে চিরাচরিত বন্দর ব্যবস্থাপনার পরিবর্তনে উন্নত ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা হচ্ছে। এই উদ্যোগগুলির ফলে গুজরাট দেশের মধ্যে প্রধান সামুদ্রিক বাণিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। গত বছর দেশের মোট সামুদ্রিক বাণিজ্যের ৪০ শতাংশের বেশি গুজরাটে হয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সামুদ্রিক বাণিজ্যিক সংক্রান্ত পরিকাঠামো এবং ক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ গুজরাটে পুরোদমে হচ্ছে। গুজারাট মেরিটাইম ক্লাস্টার, গুজরাট মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি এবং দেশের প্রথম সিএনজি টার্মিনাল ভাবনগরে গড়ে তোলা হচ্ছে। গিফট সিটিতে গুজরাট মেরিটাইম ক্লাস্টার পোর্টস্ গড়ে তোলার ফলে সমুদ্র ভিত্তিক লজিস্টিকের চাহিদা বন্দরগুলি মেটাতে পারছে। এই ক্লাস্টারগুলি সরকার, শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সহযোগিতা বাড়াচ্ছে এবং এই ক্ষেত্রে আরও সম্ভাবনা গড়ে তুলছে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের প্রথম রসায়নিক টার্মিনাল গুজরাটের দাহেজে গড়ে তোলা হয়েছে। ভাবনগর বন্দরে দেশের প্রথম সিএনজি টার্মিনাল গড়ে তোলার পাশাপাশি তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের টার্মিনাল আগেই তৈরি করা হয়েছে। রো-রো টার্মিনালের ব্যবস্থা ভাবনগর বন্দরে করা হয়েছে। এছাড়াও তরল পদার্থ নিয়ে জাহাজ চলাচলের জন্য টার্মিনাল তৈরি করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, নতুন এই টার্মিনালগুলির পাশাপাশি ভাবনগর বন্দরের ক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ঘোঘা এবং দাহেজের মধ্যে ফেরি পরিষেবা আবারও শুরু করার জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রকল্পে অনেকগুলি সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে. যেগুলি আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সমাধান করা হবে। তিনি বলেছেন, গুজরাট মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি সামুদ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য প্রশিক্ষিত মানব সম্পদ এবং রপ্তানির জন্য উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। আজ এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামুদ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের আইন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন, সামুদ্রিক ব্যবসা বাণিজ্য, জাহাজ চলাচল ও লজিস্টিকস্-এর ওপর এমবিএ ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের সামুদ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে রাখার জন্য লোথাল-এ প্রথম জাতীয় সংগ্রহশালা তৈরি করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজকের রো-পাক্স ফেরি পরিষেবা ও সম্প্রতি সি প্লেন পরিষেবা জলসম্পদ ভিত্তিক অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার করেছে। দেশের নীল অর্থনীতি বা সমুদ্র ভিত্তিক অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মৎস্যজীবীদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হচ্ছে যাতে তাঁরা আধুনিক ট্রলার কিনতে পারেন এবং উন্নত দিক নির্দেশনা ব্যবস্থার মাধ্যমে আবহাওয়া ও জাহাজ চলাচলের পথের বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে পারেন। তিনি মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন এবং জানিয়েছেন, সরকার এই বিষয় নিয়ে গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে। সম্প্রতি মৎস্য ভিত্তিক বাণিজ্যকে প্রসারিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনা চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় মৎস্য পালনের জন্য পরিকাঠামো গড়ে তুলতে আগামী বছরগুলিতে ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আজ দেশজুড়ে বন্দরগুলির ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে এবং নতুন নতুন বন্দর দ্রুত তৈরি করা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, দেশে ২১ হাজার কিলোমিটার জল পথের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে, যার মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়ন হবে। সাগরমালা প্রকল্পের আওতায় দেশজুড়ে ৫০০টি প্রকল্পের কাজ চলছে। সড়ক এবং রেল পরিবহণের থেকে জল পরিবহণ অনেক সস্তা এবং এর মাধ্যমে পরিবেশ কম দূষিত হয়। অথচ ২০১৪ সালের পর থেকে এবিষয়ে সর্বাঙ্গীন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ স্থলবেষ্টির বিভিন্ন রাজ্যগুলিতেও আন্তর্দেশীয় জলপথ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ চলছে। বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে যাতে ভারত মহাসাগরে অভূতপূর্বভাবে আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে দেশের সামুদ্রিক ব্যবসা বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

 

প্রধানমন্ত্রী জাহাজ চলাচল মন্ত্রকের নাম পরিবর্তন করে বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জল পরিবহণ মন্ত্রক রেখেছেন। তিনি বলেছেন, বেশিরভাগ উন্নত রাষ্ট্রে জাহাজ চলাচল মন্ত্রক বন্দর ও জল পরিবহণের কাজও করে। এখন থেকে এই নামে আরও স্পষ্টতা আসায় কাজেরও সুবিধে হবে।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নীল অর্থনীতিকে দৃঢ় করার মধ্য দিয়ে আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের সুবিধে হবে, কারণ সামুদ্রিক ব্যবসা বাণিজ্যের লজিস্টিককে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। অন্যান্য দেশের থেকে আমাদের দেশে এক বন্দর থেকে অন্য বন্দরে পণ্য পরিবহণ ব্যয় সাপেক্ষ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, জল পরিবহণের মাধ্যমে লজিস্টিকসের ব্যয় কমানো যেতে পারে, আর তাই বাধাহীন জাহাজ চলাচলের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেছেন, লজিস্টিকস ক্ষেত্রে ব্যয় কমানোর জন্য দেশে বহু স্তরীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ চলছে। সড়ক, রেল, বিমান ও জাহাজ চলাচলের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ উন্নত করার জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। বহুস্তরীয় লজিস্টিকস পার্ক দেশে গড়ে তোলা হচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গেও এই ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করেন, এর ফলে দেশে লজিস্টিকস ক্ষেত্রে ব্যয় হ্রাস পাবে এবং আমাদের অর্থনীতিতে গতি আসবে।

 

প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণকে এই উৎসবের মরশুমে স্থানীয় পণ্য কেনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ছোট ছোট ব্যবসায়ী, কারিগর এবং গ্রামের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জিনিস কিনতে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই উদ্যোগগুলি নেওয়া হলে গ্রামের হস্ত শিল্পীদের বাড়িতে দীপাবলির আলো জ্বলে উঠবে।

***

 

CG/CB/SKD


(Release ID: 1671330) Visitor Counter : 245