প্রতিরক্ষামন্ত্রক
ভারতীয় নৌবাহিনী সমুদ্র সেতু অভিযান সম্পূর্ণ করেছে
Posted On:
08 JUL 2020 6:33PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৮ জুলাই, ২০২০
কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন বিদেশ থেকে ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার অঙ্গ হিসেবে ভারতীয় নৌবাহিনী ৫ই মে থেকে সমুদ্র সেতু অভিযান সূচনা করেছিল। এই অভিযানে ৩ হাজার ৯৯২ জন ভারতীয় নাগরিককে সাফল্যের সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এর পরই ভারতীয় নৌবাহিনী সমুদ্র সেতু অভিযান শেষ করেছে। এই ৫৫ দিনে ভারতীয় নৌবাহিনী ২৩ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি যাত্রা করেছে। এই অভিযানে ভারতীয় নৌবাহিনীর জলস্বা, ঐরাবত, শার্দুল এবং মগর্ নামে চারটি জাহাজ যুক্ত ছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী এর আগে ২০০৬ সালে বেইরুট থেকে ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধারের জন্য ‘সকুন্’ এবং ২০১৫ সালে ইয়েমেন থেকে ভারতীয়দের উদ্ধারের জন্য ‘রাহাত’ অভিযান পরিচালনা করে ছিল।
কোভিড-১৯ মহামারীর জেরে নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সময় জাহাজে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থাপনা এবং ঘেরা পরিবেশের কারণে জাহাজে উপস্থিত নাবিকদের উপর বিশেষ প্রভাব পড়েছিল। তা সত্ত্বেও এই কঠিন সময় ও পরিস্থিতিতে ভারতীয় নৌবাহিনী বিদেশে আটকে থাকা নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার মত কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিল।
তবে এই অভিযানে ভারতীয় নৌবাহিনীর সামনে সর্বাধিক যে সমস্যাটি ছিল তা হল ,জাহাজে ফিরিয়ে আনার সময় যাত্রীদের মধ্যে যাতে কোনোভাবেই সংক্রমণ না ছড়িয়ে পড়ে তার উপর লক্ষ্য রাখা। এর জন্য নৌবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল এবং যথাযথ পরিকল্পনা নিয়েছিল। জাহাজে ওঠার আগে নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। এমনকি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্ত নিয়মাবলী মেনে চলা হয়। এই নিয়ম অনুসরণ করেই ভারতীয় নৌবাহিনী সমুদ্র সেতু অভিযানের মাধ্যমে ৩ হাজার ৯৯২ জন নাগরিককে নিরাপদে স্বদেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। সমুদ্র সেতু অভিযানে ভারতীয় নৌবাহিনী নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সমস্ত নিয়মাবলী মেনে চলে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। এই অভিযানের জন্য ব্যবহৃত জাহাজগুলিতে ‘অন বোর্ড ক্লিনিক’ বা ‘সিক বে’ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এছাড়াও কোভিড-১৯ প্রতিরোধ সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যবস্থাও রাখা ছিল। মহিলা যাত্রীদের সুবিধার্থে মহিলা নার্সিং কর্মী এবং মহিলা আধিকারিক রাখা হয়ে। সমুদ্র সেতু অভিযান চলাকালীন ভারতীয় নৌবাহিনীর জলস্বা, ঐরাবত, শার্দুল এবং মগর জাহাজ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে চলে। জলস্বা গত ৮ই মে মালে থেকে ৬৯৮ জন ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে রওনা হয়। ১০ই মে কোচি বন্দরে এসে পৌঁছয়। মগর্ ১০ই মে মাল-এ ২০২ জন ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে রওনা হয়। ১২ই জাহাজটি কোচিতে এসে পৌঁছয়। জলস্বা ১৫ই মে মাল-এ থেকে ৫৮৮ জন ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে রওনা দেয়। ১৭ই মে কোচিতে এসে পৌঁছয়। জলস্বা পয়লা জুন কলম্ব থেকে ৬৮৬ জন ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে রওনা দেয়। দোসরা জুন তুতিকোরিন-এ এসে পৌঁছয় জাহাজটি। ৫ই জুন জলস্বা মাল-এ থেকে ৭০০ জন ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে রওনা দেয়। দুদিন পর ৭ই জুন তুতিকোরিন-এ এসে পৌঁছয় জাহাজটি। ৮ই জুন শার্দুল বন্দর আব্বাস থেকে ২৩৩ জন ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে রওনা দেয়। ১১ই জুন পোর বন্দরে এসে পৌঁছয় জাহাজটি। ঐরাবত ২০ জন ১৯৮ জন ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে রওয়না দেয়। ২৩শে জুন তুতিকোরিন-এ এসে পৌঁছয় জাহাজটি। জলস্বা ২৫শে জুন বন্দর আব্বাস থেকে ৬৮৭ জন ভারতীয় নাগরিককে নিয়ে রওনা দেয়। ১লা জুলাই তুতিকোরিন-এ এসে পৌঁছয় জাহাজটি।
সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে ভারতীয় নাগরিকদের সহায়তা প্রদানের জন্য নৌবাহিনী সর্বদা প্রয়াস চালিয়ে গেছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর আইএল-৩৮ এবং ডোর্নিয়র বিমানের মাধ্যমে সারা দেশে চিকিৎসক এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কিত বিভিন্ন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্ত ছিল। ভারতীয় কর্মীরা পিপিই- ‘নবোরক্ষক’, হাতে তাপমাত্রা মাপার সেন্সর যন্ত্র , থ্রি-ডি প্রিন্টেড মুখ ঢাকার বর্ম, সহজে বহনযোগ্য অক্সিজেন ম্যানিফোল্ড, স্ট্রেচার, ভেন্টিলেটর, ব্যাগের জীবাণুনাশক স্প্রে ইত্যাদি তৈরি করেছে।
সমুদ্র সেতু অভিযানের মাধ্যমে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি কেশরি নৌ জাহাজের মাধ্যমে মিশন সাগর-এর আওতায় ৫৮০ টন খাদ্য সামগ্রী এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম (আয়ুর্বেদ ওষুধ সহ) মালদ্বীর, মরিশাস, মাদাগাসকার, কোমোরোস দ্বীপে পৌঁছে দিয়েছে। এছাড়াও এই মিশনের অঙ্গ হিসেবে মরিশাস ও কোমোরোস দ্বীপে একটি করে চিকিৎসকের দল পাঠানোও হয়েছে।
সমুদ্র সেতু অভিযান চলাকালীন ৩ হাজার ৯৯২ জন ভারতীয় নাগরিককে নির্দেশ অনুসারে বিভিন্ন বন্দরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল এবং সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের হাতে তাদের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী বিদেশ, স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ মন্ত্রক এবং ভারত সরকার এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে হাত হাত মিলিয়ে এই অভিযান চালিয়েছে।
CG/SS/SKD
(Release ID: 1637424)
Visitor Counter : 345