PIB Headquarters
ভোজ্য তেল নিয়ে জাতীয় প্রকল্প
ভারতের ভোজ্য তেল ব্যবস্থা মজবুত করার উদ্যোগ
प्रविष्टि तिथि:
08 DEC 2025 1:22PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫
মূল বিষয়
নীতি আয়োগের একটি প্রতিবেদন (আগস্ট ২০২৪) অনুযায়ী, চালের তুষের তেল, রেড়ি বীজ, কুসুম ফুল, তিল এবং নাইজার-এর উৎপাদনে ভারত বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে।
ভোজ্য তেল সম্পর্কিত জাতীয় মিশন (NMEO)-র লক্ষ্য হল, দেশের তৈলবীজ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং ভোজ্য তেল উৎপাদনে আত্মনির্ভরতা অর্জন করা।
NMEO–OP (অয়েল পাম)-র লক্ষ্য, ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ৬.৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে তেল পামের চাষ এবং ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে অপরিশোধিত পাম তেলের উৎপাদনের পরিমাণ ২৮ লক্ষ টনে বৃদ্ধি করা।
২০২৫ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত দেশে ২.৫০ লক্ষ হেক্টর জমিতে পাম চাষ হয়েছে, ফলে দেশে তেল পামের মোট চাষের ক্ষেত্র ৬.২০ লক্ষ হেক্টরে পৌঁছেছে। অপরিশোধিত পাম তেলের (CPO) উৎপাদন ২০১৪-১৫ সালের ১.৯১ লক্ষ টন থেকে বেড়ে ২০২৪-২৫ সালে ৩.৮০ লক্ষ টনে উন্নীত হয়েছে।
NMEO-OS (তৈলবীজ)-এর লক্ষ্য হলো ক্লাস্টার-ভিত্তিক হস্তক্ষেপ এবং উন্নত বীজ ব্যবস্থার মাধ্যমে ২০৩০-৩১ সালের মধ্যে তৈলবীজ উৎপাদন ৩৯ মিলিয়ন টন থেকে বাড়িয়ে ৬৯.৭ মিলিয়ন টন করা।
ভূমিকা ও ক্ষেত্রটির সংক্ষিপ্ত বিবরণ
ভারতে ভোজ্য তেল খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য, এবং তৈলবীজ লক্ষ লক্ষ কৃষকের জীবিকার মূল ভিত্তি। এটি পুষ্টি ও কৃষকদের আয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও, দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে ছাপিয়ে গেছে। ২০১৪-০৫ থেকে ২০২২-২৩ সালের মধ্যে গ্রামীণ ও শহুরে উভয় ক্ষেত্রেই মাথাপিছু ব্যবহার দৃষ্টান্তমূলকভাবে বেড়েছে। ২০২৩-২৪ সালে মোট উৎপাদন ছিল ১২.১৮ মিলিয়ন টন, যা দেশের চাহিদার মাত্র ৪৪ শতাংশ মেটাতে সক্ষম। যদিও ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তৈলবীজ উৎপাদক, তবুও ভোজ্য তেলের ঘাটতি মেটাতে আমদানির ওপর যথেষ্ট নির্ভরশীলতা রয়েছে। আমদানির নির্ভরতা ২০১৫-১৬ সালের ৬৩.২% থেকে ২০২৩-২৪ সালে ৫৬.২৫% এ কমলেও, সামগ্রিক ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে দেশের ভোজ্য তেলের প্রয়োজনীয়তার ওপর চাপ এখনও অনেক বেশি।
ভারতের ভোজ্য তেল পরিকাঠামোয় পরিবর্তনশীল প্রবণতা
১৯৯০-এর দশকে 'হলুদ বিপ্লবের' সময় ভারত ভোজ্য তেলে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছিল, যা মূলত সরকারি মূল্য সমর্থন নীতির কারণে হয়েছিল। কিন্তু WTO চুক্তির ফলে সেই সমর্থন তুলে নেওয়া হয়। এর ফলে, অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে ছাপিয়ে তেলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় আমদানিও তীব্রভাবে বৃদ্ধি পায়, যা ২০২৩-২৪ সালে মোট চাহিদার প্রায় ৫৬% ছুঁয়েছে। এই আমদানি নির্ভরতা বৈদেশিক মুদ্রার উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং ভোক্তাদের আন্তর্জাতিক মূল্যের ওঠানামার মুখে ফেলে দেয়।বিশ্বের ভোজ্য তেলের বাজারে ভারত চতুর্থ স্থানে থাকলেও, দেশের তৈলবীজ উৎপাদনে ফলনের বড় ঘাটতি এবং চাষের ক্ষেত্র সীমিত থাকার কারণে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
এই নির্ভরশীলতা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং কৃষিক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা উভয়ের জন্যই প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, যার ফলস্বরূপ ভারত সরকার ভোজ্য তেল উৎপাদন ক্ষেত্রে দেশের তৈলবীজ পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করতে এবং আত্মনির্ভরতার লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভোজ্য তেল সম্পর্কিত জাতীয় মিশন (NMEO) চালু করেছে।
ভারতের ভোজ্য তেল ও তৈলবীজ উৎপাদন
নীতি আয়োগের প্রতিবেদন "আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যের দিকে ভোজ্য তেলের বৃদ্ধিতে গতি আনার পথ ও কৌশল" (২৮ আগস্ট, ২০২৪-এ প্রকাশিত) অনুসারে :
দেশে খাদ্যশস্যের পর কৃষিক্ষেত্রে তৈলবীজই দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদন ও আয়তনের স্থান অধিকার করে। নয়টি প্রধান তৈলবীজ মোট চাষযোগ্য জমির ১৪.৩% জুড়ে থাকে। তবে, তৈলবীজ চাষের প্রায় ৭৬% বৃষ্টি-নির্ভর হওয়ায় উৎপাদন আবহাওয়ার উপর নির্ভরশীল। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও মহারাষ্ট্র একত্রে দেশের মোট তৈলবীজ উৎপাদনের ৭৭.৬৮%-এর বেশি সরবরাহ করে।
আমদানিনির্ভরতা ও কম উৎপাদনশীলতার এই দ্বৈত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার জন্য ভোজ্য তেল সম্পর্কিত জাতীয় মিশন (NMEO) শুরু করা হয়েছে :
১. NMEO - অয়েল পাম (২০২১): পাম চাষ এবং অপরিশোধিত পাম তেল উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য।
২. NMEO - তৈলবীজ (২০২৪): প্রথাগত তৈলবীজ শস্যের উৎপাদনশীলতা, বীজের গুণমান এবং বাজার সংযোগ উন্নত করার লক্ষ্য।
ভোজ্য তেল সম্পর্কিত জাতীয় মিশন - পাম তেল
পাম তেল উৎপাদন পরিচিতি
পামতেল প্রতি হেক্টরে সবচেয়ে বেশি ভেজিটেবল অয়েল উৎপাদনকারী শস্য। এটি পাম তেল ও পাম কার্নেল তেল - এই দু'ধরনের তেল তৈরি করে, যা রান্না ও শিল্প উভয় কাজেই ব্যবহৃত হয়। ঐতিহ্যবাহী তৈলবীজের তুলনায় পাম তেলের ফলন ৫ গুণ বেশি। ভারতের মোট পাম তেল উৎপাদনের ৯৮% আসে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানা থেকে। এছাড়া কর্ণাটক, কেরালা, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, ছত্তিশগড় ইত্যাদি রাজ্যেও এর চাষ হয়। সম্প্রতি উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিও বড় আকারে পাম চাষ শুরু করেছে।
ভোজ্য তেল সম্পর্কিত জাতীয় মিশন - পাম তেল
দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা বৃদ্ধি এবং আমদানির খরচ কমাতে, কেন্দ্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় ভোজ্য তেল মিশন - অয়েল পাম (NMEO-OP) ২০২১ সালে অনুমোদিত হয়। এর লক্ষ্য হল চাষের এলাকা বাড়িয়ে এবং অপরিশোধিত পাম তেল উৎপাদন বৃদ্ধি করে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বাড়ানো ও আমদানিনির্ভরতা কমানো।
এই মিশনের জন্য ১১,০৪০ কোটি টাকার আর্থিক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এটি পাম চাষীদের উপকার, পুঁজি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে কৃষকদের আয় বাড়াতে সাহায্য করবে। বিশেষ করে, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং অন্যান্য পাম-উৎপাদনকারী রাজ্যগুলির কৃষি জলবায়ুগত সম্ভাবনার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
এই মিশনের মূল লক্ষ্য - বীজ বাগান ও নার্সারি স্থাপন করে লক্ষ্য অনুযায়ী চারাগাছের দেশীয় যোগান নিশ্চিত করা। এছাড়া, তাজা ফলের গোছার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, ড্রিপ সেচের অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো, এবং কম ফলনশীল শস্যের জমিকে পাম চাষে নিয়ে আসা এর কৌশল। চাষ শুরুর প্রথম চার বছরের গর্ভকালীন সময়ে আন্তঃফসল চাষের মাধ্যমে কৃষকদের অর্থনৈতিক আয় নিশ্চিত করাও এর একটি লক্ষ্য।
এই মিশনের দুটি প্রধান দিক রয়েছে:
১. কৃষকদের তেলের দামের নিশ্চয়তা : আন্তর্জাতিক অপরিশোধিত পাম তেলের দামের ওঠানামা থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে ভারত সরকার প্রথমবারের মতো তাজা ফলের গোছার জন্য একটি নিশ্চিত মূল্য দিচ্ছে।
২. সহায়তা বৃদ্ধি: পাম চাষের চারা রোপণের জন্য দেওয়া আর্থিক সাহায্য প্রতি হেক্টরে ১২,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৯,০০০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া, রক্ষণাবেক্ষণ, আন্তঃফসল চাষ এবং পুরনো বাগানগুলির পুনরুজ্জীবনের (প্রতি চারা ২৫০টাকা) জন্যেও যথেষ্ট সহায়তা বাড়ানো হয়েছে।
মিশনের লক্ষ্যমাত্রা
মিশনের লক্ষ্য - ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ৬.৫ লক্ষ হেক্টর জমিতে পাম তেল চাষ করা।
অপরিশোধিত পাম তেলের উৎপাদন ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে ১১.২০ লক্ষ টনে এবং ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে ২৮ লক্ষ টনে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।
২০২৫-২৬ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর প্রতি ব্যক্তির ১৯.০০ কেজি ভোগের মাত্রা বজায় রাখার জন্য গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
২০২৫ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত NMEO-OP-র আওতায় ২.৫০ লক্ষ হেক্টর এলাকা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যা দেশে পাম তেলের মোট চাষের ক্ষেত্রকে ৬.২০ লক্ষ হেক্টরে নিয়ে এসেছে। CPO উৎপাদন ২০১৪-১৫ সালের ১.৯১ লক্ষ টন থেকে বেড়ে ২০২৪-২৫ সালে ৩.৮০ লক্ষ টনে উন্নীত হয়েছে।
মিশনের বাস্তবায়ন
NMEO-OP-র বাস্তবায়ন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরের একটি কাঠামো মেনে চলে। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ বিভাগ হল, কেন্দ্রীয় নোডাল কর্তৃপক্ষ, যা রাজ্য কৃষি বিভাগ এবং অন্যান্য সংস্থাগুলির সঙ্গে কাজ করে।বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কেন্দ্র, রাজ্য ও মনোনীত ব্যাঙ্কের মধ্যে একটি ত্রি-পক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এসক্রো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তহবিল নিয়ন্ত্রিত হয়। এই প্রকল্পের খরচ সাধারণ রাজ্যগুলির জন্য ৬০:৪০ (কেন্দ্র:রাজ্য), উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জন্য ৯০:১০, এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য ১০০% কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে ভাগ করে নেওয়া হয়।
ভোজ্য তেল সম্পর্কিত জাতীয় মিশন - তৈলবীজ
ভারতে তৈলবীজ উৎপাদনের পরিচিতি
ভারত বিশ্বে মোট তৈলবীজ উৎপাদনের প্রায় ৫-৬% যোগান দেয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তৈলবীজ ও সংশ্লিষ্ট পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ২৯,৫৮৭ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত ভারতের তৈলবীজ উৎপাদন ৪২.৬০৯ মিলিয়ন টন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
নয়টি প্রধান তৈলবীজ দেশের মোট চাষযোগ্য জমির ১৪.৩% জুড়ে থাকে এবং কৃষি রপ্তানির প্রায় ৮% এর উৎস। রেড়ি, কুসুম ফুল, তিল ও নাইজার উৎপাদনে ভারত বিশ্বে প্রথম। দেশের মোট তৈলবীজ উৎপাদনের ৭৭% এর বেশি আসে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্র থেকে।
ভোজ্য তেল মিশন - তৈলবীজ
ভোজ্য তেল উৎপাদনে আত্মনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে, ২০২৪ সালে ১০,১০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত বছরের জন্য (২০২৪-২৫ থেকে ২০৩০-৩১) জাতীয় ভোজ্য তেল মিশন - তৈলবীজ অনুমোদিত হয়েছে।
এই মিশনটি প্রধান তৈলবীজ শস্যের (যেমন সর্ষে, চিনাবাদাম, সয়াবিন ইত্যাদি) উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দ্বিতীয় উৎস (যেমন তুলোর বীজ, নারকেল, চালের তুষ ইত্যাদি) থেকে তেল সংগ্রহের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে।
এই মিশনটি মূলত ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য ICAR/KVK-এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রদর্শনী আয়োজন করে উন্নত ফলনশীল বীজ এবং চাষের উন্নত প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছে।
মিশনের লক্ষ্য
মিশনের লক্ষ্যগুলি হল:
১. নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার: ফলনের ঘাটতি মেটাতে দ্রুত ফলনশীল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ব্যবহার করা।
২. দ্রুত প্রচার: সমবায়, এফপিও এবং বেসরকারি ক্ষেত্রের মাধ্যমে উন্নত বীজ ও প্রযুক্তির দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়া।
৩. চাষের ক্ষেত্র বাড়ানো: বিশেষ করে পূর্বের রাজ্যগুলির পতিত জমিতে চাষের প্রসার এবং আন্তঃফসল চাষকে উৎসাহিত করা।
৪. গুণগত মানসম্পন্ন বীজের সরবরাহ বৃদ্ধি: গুণগত মানের বীজ নিশ্চিত করতে বীজ উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটি দূর করা।
৫. বাজারের সুযোগ বাড়ানো: কৃষকদের প্রক্রিয়াকরণকারীদের সঙ্গে যুক্ত করে বাজারে প্রবেশাধিকার ও ভালো দাম নিশ্চিত করা।
৬. দ্বিতীয় শ্রেণির তৈলবীজের সংস্থান: নির্দিষ্ট সহায়তার মাধ্যমে দ্বিতীয় শ্রেণির তৈলবীজ এবং বৃক্ষজাত তেলের উৎপাদনকে সমর্থন করা।
মিশনের লক্ষ্য:
২০৩০-৩১ সালের মধ্যে তৈলবীজ চাষের এলাকা ২৯ মিলিয়ন হেক্টর থেকে বাড়িয়ে ৩৩ মিলিয়ন হেক্টর করা। প্রাথমিক তৈলবীজ উৎপাদন ৩৯ মিলিয়ন টন থেকে বাড়িয়ে ৬৯.৭ মিলিয়ন টন করা। ফলন প্রতি হেক্টরে ১,৩৫৩ কেজি থেকে বাড়িয়ে ২,১১২ কেজি করা।
NMEO-OP-এর সঙ্গে এই মিশনটির লক্ষ্য হল ২০৩০-৩১ সালের মধ্যে মোট ভোজ্য তেল উৎপাদন ২৫.৪৫ মিলিয়ন টন করা, যা দেশের আনুমানিক চাহিদার প্রায় ৭২% মেটাবে।
এছাড়াও, ধান ও আলুর পতিত জমি ব্যবহার করে, আন্তঃফসল চাষকে উৎসাহিত করে এবং শস্য বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৪০ লক্ষ হেক্টর জমিতে তৈলবীজ চাষ বাড়ানো এই মিশনের অন্যতম লক্ষ্য।
মিশনের মূল উপাদানসমূহ
NMEO-OS-এর অধীনে, সারা দেশে ১০০ লক্ষ হেক্টরের বেশি জমিতে ৬০০-র বেশি ভ্যালু চেইন ক্লাস্টার চিহ্নিত করা হয়েছে, যা FPO এবং সমবায়গুলির মাধ্যমে পরিচালিত। এই ক্লাস্টারগুলিতে কৃষকরা বিনামূল্যে গুণমানসম্পন্ন বীজ, প্রশিক্ষন এবং আবহাওয়া/পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ পাচ্ছেন। এছাড়াও, মিশন ফসল তোলার পরের পরিকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করছে। উন্নত বীজ সময়মতো নিশ্চিত করতে, 'সাথী' পোর্টালের মাধ্যমে ৫ বছরের জন্য বীজ পরিকল্পনা চালু করা হয়েছে। বীজ উৎপাদন পরিকাঠামো উন্নয়নে ৬৫টি নতুন বীজ কেন্দ্র এবং ৫০-টি বীজ মজুত করার ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্যকর ব্যবহারের জন্য ভোজ্য তেল সম্পর্কিত সঠিক খাদ্য নির্দেশিকা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ অভিযান চালানো হচ্ছে।
মিশনের বাস্তবায়ন
সাধারণ রাজ্য, দিল্লি ও পুদুচেরির ক্ষেত্রে ৬০:৪০ (কেন্দ্র:রাজ্য), উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ও পাহাড়ি রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে ৯০:১০, এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে ১০০% কেন্দ্রীয় তহবিলের আর্থিক বিন্যাসে NMEO-OS সমস্ত রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বাস্তবায়িত হবে। অবিচ্ছিন্ন তথ্য সংগ্রহ এবং ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই গোষ্ঠীগুলি, বিশেষ করে কৃষি সখীরা, কৃষি ম্যাপার প্ল্যাটফর্মে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও হালনাগাদ করার জন্য নিযুক্ত হচ্ছেন।
কৃষি সখী হলেন, একজন কমিউনিটি এগ্রিকালচার সার্ভিস প্রোভাইডার, যিনি গ্রামীণ এলাকায় কৃষিভিত্তিক পরিষেবা যেখানে দুর্লভ বা ব্যয়বহুল, সেখানে শেষ স্তর পর্যন্ত সহায়তা নিশ্চিত করেন। তিনি স্থিতিশীল কৃষিকাজ সম্পর্কে সচেতনতা প্রচার করেন ও সমাজের সক্ষমতা বৃদ্ধি করেন, একই সাথে কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য কৃষি পণ্যের একত্রীকরণ এবং বাজারজাতকরণে সহায়তা করেন।
কৃষি ও কৃষক কল্যাণ বিভাগের তৈরি একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম 'কৃষি ম্যাপার' ব্যবহার করে একটি ব্যাপক তথ্য ট্র্যাকিং এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই ব্যবস্থা মিশনের সমস্ত কার্যকলাপের সঠিক ও সঠিক সময়ের ট্র্যাকিং নিশ্চিত করে, যার ফলে, তৃণমূল স্তরে আরও কার্যকর বাস্তবায়ন এবং উন্নত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয়।
ভারতে তৈলবীজের জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন
ভারতীয় কৃষি গবেষণা পরিষদ দেশীয়ভাবে তৈলবীজের জন্য উচ্চ ফলনশীল জাত তৈরি করতে পাঁচটি অল ইন্ডিয়া কোঅর্ডিনেটেড রিসার্চ প্রোজেক্ট চালাচ্ছে। গত ১১ বছরে (২০১৪-২০২৫)-এর ফলস্বরূপ নয়টি বার্ষিক তৈলবীজ শস্যের ৪৩২-টি উচ্চ-ফলনশীল জাত/হাইব্রিড বাণিজ্যিক চাষের জন্য বিজ্ঞপ্তিভুক্ত হয়েছে। দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন উদ্ভাবিত জাতগুলির পূর্ণ সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে বীজ প্রতিস্থাপন হার (SRR) এবং বৈচিত্র্য প্রতিস্থাপন হার (VRR) বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
VRR: এটি পরিমাপ করে যে কৃষকরা কত ঘন ঘন নতুন শস্যের জাত গ্রহণ করছেন। ফসলের উৎপাদনশীলতায় জেনেটিক সুবিধা অর্জনের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
SRR: এটি হল কোনো ফসলের মোট চাষযোগ্য এলাকার সেই শতাংশ, যেখানে কৃষক দ্বারা সংরক্ষিত বীজের পরিবর্তে শংসাপত্রপ্রাপ্ত বা গুণমান সম্পন্ন বীজ ব্যবহার করা হয়।
২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত, বিভিন্ন তৈলবীজের প্রায় ১,৫৩,৭০৪ কুইন্টাল ব্রীডার বীজ উৎপাদন করা হয়েছে এবং তা সরকারি/বেসরকারি বীজ সংস্থাগুলিকে সরবরাহ করা হয়েছে, যাতে তারা সেগুলিকে কৃষকদের জন্য প্রমাণিত গুণমানের বীজে রূপান্তরিত করতে পারে।
এছাড়াও, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর) তৈলবীজের ওপর স্থাপিত বীজ কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে কৃষকদের কাছে গুনমনসম্পন্ন তৈলবীজের বীজ সরবরাহ বাড়ানোর কাজে যুক্ত রয়েছে।
তৈলবীজ উৎপাদনে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলার জন্য অন্যান্য উদ্যোগসমূহ
তৈলবীজ উৎপাদনে দেশকে স্বনির্ভর করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে:
প্রধানমন্ত্রী অন্নদাতা আয় সংরক্ষণ অভিযান
(PM-AASHA): এই প্রকল্পের অধীনে ২০২৫-২৬ অর্থবছর পর্যন্ত তৈলবীজ শস্যকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কেন্দ্রীয় সংস্থা (যেমন NAFED ও NCCF)-এর মাধ্যমে রাজ্য স্তরের সংস্থা দ্বারা সংগ্রহ করার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা : এই যোজনাটি ফসল রোপণ থেকে ফসল কাটার পর পর্যন্ত তৈলবীজসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক বীমা সুরক্ষা প্রদান করে।
আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি: সস্তা ভোজ্য তেলের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে সরকার অপরিশোধিত ভোজ্য তেলের ওপর কার্যকর আমদানি শুল্ক ৫.৫% থেকে বাড়িয়ে ১৬.৫% করেছে এবং পরিশোধিত তেলের ওপর শুল্ক ১৩.৭৫% থেকে বাড়িয়ে ৩৫.৭৫% করেছে। এটি দেশীয় উৎপাদকদের জন্য একটি অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করতে সাহায্য করবে।
ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (MSP) বৃদ্ধি: কৃষকদের জন্য আরও ভালো আয় নিশ্চিত করতে প্রধান তৈলবীজ শস্যগুলির (যেমন সয়াবিন, সর্ষে, চিনাবাদাম ইত্যাদি) ন্যূনতম সহায়ক মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়েছে।
উপসংহার
জাতীয় ভোজ্য তেল মিশন ভারতের ভোজ্য তেল ক্ষেত্রকে আমদানিনির্ভরতা থেকে আত্মনির্ভর ভারতে রূপান্তরিত করার অঙ্গীকারকে মূর্ত করে। পাম চাষের প্রসার, ঐতিহ্যবাহী তৈলবীজের ফলন বৃদ্ধি, নিশ্চিত মূল্য ব্যবস্থা, উন্নত বীজ প্রযুক্তি এবং কাঠামোগত বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই মিশনটি একটি স্থিতিশীল ও প্রতিযোগিতামূলক দেশীয় ভোজ্য তেল সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে। আমদানির ওপর নির্ভরতা কমানোর ফলে, বৈদেশিক মুদ্রা যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনই এটি কৃষকদের উন্নত আয়, উন্নত উপকরণ এবং বাজার সংযোগের সুযোগ দিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। সংক্ষেপে, NMEO হল, ভারতের কৃষি পরিবর্তনের মূল ভিত্তি, যা উৎপাদনশীলতার ঘাটতি পূরণ করে, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এবং ভোজ্য তেল উৎপাদনে দেশকে সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
তথ্যসূত্র
Department of Agriculture and Farmers Welfare, Oilseeds Division
Ministry of Agriculture and Farmers Welfare
https://nmeo.dac.gov.in/Default.aspx
https://dfpd.gov.in/edible-oil-scenario/en
https://agriwelfare.gov.in/Documents/AR_Eng_2024_25.pdf
https://nfsm.gov.in/Guidelines/NMEO-OPGUIEDELINES.pdf
https://nmeo.dac.gov.in/nmeodoc/NMEO-OSGUIEDELINES1.pdf
https://www.pib.gov.in/PressReleseDetail.aspx?PRID=2090654
https://www.pib.gov.in/Pressreleaseshare.aspx?PRID=1746942
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2149708
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2061646
https://www.pib.gov.in/PressReleasePage.aspx?PRID=2149701
https://sansad.in/getFile/annex/267/AU3864_DVk2Lb.pdf?source=pqars
https://agriwelfare.gov.in/Documents/Time_Series_3rdAE_2024_25_En.pdf
https://www.gcirc.org/fileadmin/documents/Bulletins/B26/B26%205RKGupta.pdf
https://sansad.in/getFile/loksabhaquestions/annex/183/AS212_LDDIUr.pdf?source=pqals
https://desagri.gov.in/wp-content/uploads/2025/11/Agricultural-Statistics-at-a-Glance-2024_%E0%A4%95%E0%A5%83%E0%A4%B7%E0%A4%BF-%E0%A4%B8%E0%A4%BE%E0%A4%82%E0%A4%96%E0%A5%8D%E0%A4%AF%E0%A4%BF%E0%A4%95%E0%A5%80-%E0%A4%8F%E0%A4%95-%E0%A4%9D%E0%A4%B2%E0%A4%95-2024.pdf
Niti Aayog
https://www.niti.gov.in/sites/default/files/2024-08/Pathways_and_Strategy_for_Accelerating_Growth_in_Edible_Oil_towards_Goal_of_Atmanirbharta_August%2028_Final_compressed.pdf
ICMR
https://www.nin.res.in/downloads/DietaryGuidelinesforNINwebsite.pdf
To access Krishi mapper and SATHI portal
https://krishimapper.dac.gov.in/
https://seedtrace.gov.in/ms014/
Click here to see PDF
SSS/AS...
(रिलीज़ आईडी: 2200675)
आगंतुक पटल : 4