প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে হায়দরাবাদে স্কাইরুট-এর ইনফিনিটি ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
Posted On:
27 NOV 2025 12:30PM by PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে হায়দরাবাদে স্কাইরুট-এর ইনফিনিটি ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করলেন। ভাষণে তিনি বলেন, আজ মহাকাশ ক্ষেত্রে অগ্রগতির এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সাক্ষী থাকল সারা দেশ। বেসরকারি ক্ষেত্রের অংশগ্রহণ মহাকাশ প্রযুক্তির বিষয়ে দেশের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেছে। স্কাইরুট-এর ইনফিনিটি ক্যাম্পাস উদ্ভাবনা, যুবশক্তি, ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা এবং ঔদ্যোগিকতার ক্ষেত্রে ভারতের ক্রমিক সাফল্যের আরও একটি দৃষ্টান্ত। আগামীদিনে ভারত সারা বিশ্বে উপগ্রহ উৎক্ষেপণের প্রযুক্তিতে শীর্ষ দেশগুলির আসনে বসতে চলেছে। উদ্যোগপতি শ্রী পবন কুমার চন্দনা এবং শ্রী নাগা ভারত ডাকার সাফল্য কামনা করেন তিনি। এই দুই তরুণ উদ্যোগপতি সারা দেশকে গর্বিত করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ভারতের মহাকাশ অভিযান শুরু হয়েছিল সীমিত সম্পদ নিয়ে, কিন্তু এক্ষেত্রে উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল সীমাহীন – একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাই-সাইকেলে রকেটের যন্ত্রাংশ বহনের অধ্যায় অতিক্রম করে ভারত আজ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের নজর কাড়ছে। মহাকাশ প্রযুক্তি ও অভিযানের ক্ষেত্রে ইসরোর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ, কৃষি, সমুদ্র পরিসরে নজরদারি, নগর পরিকল্পনা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং সর্বোপরি জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মহাকাশ প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করতে বেসরকারি সংস্থার সামনে দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে এবং নতুন মহাকাশ নীতি প্রস্তুত করা হচ্ছে। প্রযুক্তি-নিবিড় স্টার্ট-আপগুলি যাতে ইসরোর পরিষেবা ব্যবহার করতে পারে সেজন্য তৈরি করা হয়েছে IN-SPACe। বিগত ৬-৭ বছরে এই কাজ অনেক দূর এগিয়েছে।
ভারতের তরুণ প্রজন্ম দেশের স্বার্থকে সবার ওপরে রেখে চলে এবং প্রতিটি সুযোগের সর্বোত্তম ব্যবহারে উদ্যোগী বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। মহাকাশ ক্ষেত্র বেসরকারি সংস্থার কাছে উন্মুক্ত হওয়ার পর জেন-জেড প্রজন্ম সুযোগের যথার্থ সদ্ব্যবহার করেছে বলে তাঁর মন্তব্য। তিনি বলেন, ভারতে ৩০০-রও বেশি মহাকাশ স্টার্ট-আপ সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির প্রসার ঘটাচ্ছে দ্রুতগতিতে। এইসব স্টার্ট-আপ-এর কর্মী সংখ্যা ও সম্পদ সীমিত থাকা সত্ত্বেও উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যয়ের সুবাদে অসাধারণ কাজ করে চলেছে তারা। এর ফলে, দেশে ‘বেসরকারি মহাকাশ বিপ্লব’-এর সূচনা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তিবিদরা যে উচ্চতায় পৌঁছচ্ছেন তা কয়েক বছর আগেও স্বপ্নের অতীত ছিল বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। এজন্যই মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত বিনিয়োগকারীদের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সামগ্রিকভাবেই স্টার্ট-আপ পরিসরে ভারত দ্রুত এগিয়ে চলেছে এবং এ দেশে গড়ে উঠেছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ পরিমণ্ডল – একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের সংস্থাগুলি এখন আর বড় শহরে সীমাবদ্ধ নেই। এমনকি গ্রামেও তৈরি হচ্ছে একের পর এক স্টার্ট-আপ সংস্থা। ভারতে নিবন্ধিত ১.৫ লক্ষ স্টার্ট-আপের মধ্যে অনেকগুলিই ইউনিকর্ন-এর মর্যাদা পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বর্তমানে শুধুমাত্র অ্যাপ বা পরিষেবা ব্যবহারকারীর পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, ডিপটেক এবং হার্ডওয়্যার নির্মাণের ক্ষেত্রেও দ্রুত এগিয়ে চলেছে এই দেশ। এক্ষেত্রে তিনি বিভিন্ন সেমি-কন্ডাক্টর ফেব্রিকেশন ইউনিট, চিপ ম্যানুফ্যাকচারিং কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করেন। বিষয়টি স্বনির্ভরতার দিশায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ভারত সারা বিশ্বের সরবরাহ শৃঙ্খলের অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
মহাকাশ ক্ষেত্রের পর পরমাণু ক্ষেত্রকেও বেসরকারি সংস্থার সামনে উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে ভারত এগিয়ে চলেছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। এর ফলে, ছোট মডিউলার চুল্লি, উন্নত রিঅ্যাক্টর এবং নবতর উদ্ভাবন ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করবে বলে তিনি আশাবাদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের গবেষণার সুফল মিলবে ভবিষ্যতে। তরুণ প্রজন্মকে গবেষণামুখী করে তুলতে গড়ে তোলা হয়েছে জাতীয় গবেষণা ফাউন্ডেশন। “এক দেশ, এক সদস্যতা” কর্মসূচির সুবাদে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের পত্রপত্রিকা এখন দেশের যে কোনো অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের নাগালের মধ্যে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে গবেষণা ও উদ্ভাবনমূলক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে দেশজুড়ে ১০ হাজার অটল টিঙ্কারিং ল্যাব তৈরি করা হয়েছে এবং আগামীদিনে এ ধরনের আরও ৫০ হাজার পরীক্ষণ কেন্দ্র গড়ে উঠতে চলেছে। কয়েক মাস আগে মহাকাশ দিবসে ভারতে একাধিক ইউনিকর্ন গড়ে উঠবে বলে তিনি যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন, তার বাস্তবায়নে খুব দেরি নেই – এমনটাই প্রমাণ করে দিয়েছে স্কাইরুট।
স্টার্ট-আপ, তরুণ প্রযুক্তিবিদ এবং উদ্যোগপতিদের সহায়তায় সরকার সব সময় প্রস্তুত বলে আবারও জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। ভূমি এবং মহাকাশ – সবক্ষেত্রেই একবিংশ শতাব্দী যাতে ভারতের শতাব্দী হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এই সমারোহে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জি কিষেণ রেড্ডি।
উল্লেখ্য, স্কাইরুটের ইনফিনিটি ক্যাম্পাস গড়ে উঠেছে ২ লক্ষ বর্গ ফুট এলাকার ওপর। সেখানে মহাকাশ উৎক্ষেপণ যানের নির্মাণ এবং পরীক্ষণ হবে। প্রতি মাসে এখানে তৈরি হবে কক্ষপথে উপগ্রহ স্থাপন করায় সক্ষম অন্তত একটি করে রকেট। বেসরকারি সংস্থা স্কাইরুটের প্রতিষ্ঠাতা আইআইটি-র প্রাক্তনী এবং ইসরোর প্রাক্তন বিজ্ঞানী পবন চন্দনা এবং ভরত ডাকা।
SC/AC/DM...
(Release ID: 2195299)
Visitor Counter : 9