প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

যৌথ বিবৃতি: ভারত-ইইউ বাণিজ্য ও প্রযুক্তি পরিষদের দ্বিতীয় বৈঠক, নয়া দিল্লি (২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫)

Posted On: 28 FEB 2025 6:25PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

 


ভারত-ইইউ বাণিজ্য ও প্রযুক্তি পরিষদ (TTC)-এর দ্বিতীয় বৈঠক ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের পক্ষ থেকে বৈঠকটিতে সহ-সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শ্রী পীযূষ গোয়েল এবং ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সহ-সভাপতিত্ব করেন টেক সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রের জন্য নির্বাহী সহ-সভাপতি মিস হেনা ভিরক্কুনেন, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক ও স্বচ্ছতা কমিশনার মি. মারোস সেফকোভিচ এবং স্টার্টআপস, গবেষণা ও উদ্ভাবন কমিশনার মিস একাতেরিনা জাহারিয়েভা।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লেয়েন এপ্রিল ২০২২-এ ভারত-ইইউ TTC প্রতিষ্ঠা করেন, যা বাণিজ্য, আস্থাশীল প্রযুক্তি ও নিরাপত্তার মিলনস্থলে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক মঞ্চ। বিশ্বের দুই বৃহৎ ও প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, উন্মুক্ত বাজার অর্থনীতি, অভিন্ন মূল্যবোধ ও বহুত্ববাদী সমাজের ভিত্তিতে একটি স্বাভাবিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে।

উভয় পক্ষই বিশ্বব্যাপী ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গভীরতা ও কৌশলগত মিলের গুরুত্বকে স্বীকার করেছে। বৈঠকে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সুস্থায়ী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি প্রসারে অভিন্ন স্বার্থের উপর জোর দেওয়া হয়। সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, স্বচ্ছতা এবং বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের নীতিগুলির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধার বিষয়টিও পুনরায় গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হয়। TTC উভয় পক্ষের এই অভিন্ন উপলব্ধিকে প্রতিফলিত করে যে বাণিজ্য ও প্রযুক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় অর্থনীতির উন্নতি ঘটানো সম্ভব। একইসঙ্গে নিরাপত্তাজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়ও যৌথ উদ্যোগ অপরিহার্য।

প্রথম TTC বৈঠক হয়েছিল ব্রাসেলসে, ১৬ মে ২০২৩ তারিখে। পরে ২৪ নভেম্বর ২০২৩-এ ভার্চুয়াল মোডে একটি ‘স্টক-টেকিং’ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তিনটি কার্যকরী দলের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।

কার্যকরী দল ১: কৌশলগত প্রযুক্তি, ডিজিটাল শাসন ও ডিজিটাল সংযোগ

ভারত ও ইইউ অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তিতে মানবকেন্দ্রিক ডিজিটাল রূপান্তরের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। AI, সেমিকন্ডাক্টর, হাই-পারফরম্যান্স কম্পিউটিং এবং 6G-এর মতো বিশ্বাসযোগ্য ডিজিটাল প্রযুক্তি উন্নয়নে যৌথ গবেষণা ও উদ্ভাবনে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উভয় পক্ষই ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (DPI)-এর আন্তঃক্রিয়াশীলতার উপর গুরুত্ব দিয়েছে, যা মানবাধিকার, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মেধাস্বত্বের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

সেমিকন্ডাক্টর খাতে যৌথ গবেষণা, চিপ ডিজাইন, সুস্থায়ী উৎপাদন প্রযুক্তি এবং প্রতিভা উন্নয়নে সহযোগিতার রূপরেখা চূড়ান্ত হয়েছে। AI-কে নিরাপদ, দায়িত্বশীল ও মানবকেন্দ্রিকভাবে ব্যবহারের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকারও করা হয়েছে।  ‘ভারত 6G অ্যালায়েন্স’ ও  ‘6G স্মার্ট নেটওয়ার্কস অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন’-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

কার্যকরী দল ২: পরিচ্ছন্ন ও সবুজ প্রযুক্তি

ভারত (২০৭০) ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (২০৫০)-এর নির্ধারিত নেট-০ নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি উন্নয়ন ও গবেষণার গুরুত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যৌথ গবেষণা প্রকল্প চালু হবে ইলেকট্রিক  গাড়ির ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার, সামুদ্রিক প্লাস্টিক দূষণ ও বর্জ্য-থেকে-হাইড্রোজেন প্রযুক্তি নিয়ে। এর জন্য প্রায় ৬০ মিলিয়ন ইউরো যৌথ বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া, ইভি চার্জিং মানকরণ, হাইড্রোজেন-সম্পর্কিত নিরাপত্তা মান এবং বর্জ্যজল প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তির বাজারে প্রবেশের মতো ক্ষেত্রেও সহযোগিতার পথ খোলা হয়েছে।

কার্যকরী দল ৩: বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও স্থিতিস্থাপক মূল্য শৃঙ্খল

ভারত ও ইইউ বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আরও ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। বর্তমানে চলমান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA), বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি (IPA) এবং ভৌগোলিক নির্দেশক চুক্তির সঙ্গে এই আলোচনাগুলি পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে।

কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যালস ও পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে মূল্য শৃঙ্খল শক্তিশালী করার জন্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু সহনশীল কৃষি, ফসল বৈচিত্র্যকরণ, API সরবরাহ শৃঙ্খলে স্বচ্ছতা, এবং সোলার ও হাইড্রোজেন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিশেষভাবে চিহ্নিত হয়েছে।

উভয় পক্ষ WTO-র প্রয়োজনীয় সংস্কার, বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন এবং CBAM (Carbon Border Adjustment Mechanism)-এর বাস্তবায়ন নিয়ে গঠনমূলক আলোচনার অঙ্গীকার করেছে।

উভয় পক্ষ TTC-কে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থার নির্দেশক হিসেবে বিবেচনা করেছে এবং আগামী এক বছরের মধ্যে তৃতীয় বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

SC/TM


(Release ID: 2160160) Visitor Counter : 7