নয়াদিল্লি, ২৫ জুন, ২০২৫

ভারত সরকারের সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন দপ্তর ২৬ জুন নতুন দিল্লির ডঃ আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রে মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার এবং অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী শ্রী বি এল ভার্মা সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। 

এই মন্ত্রক দেশে মাদকের ব্যবহার রোধ, সমস্যা মূল্যায়ণ, প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা, মাদক ব্যবহারকারীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য ছড়িয়ে দিতে সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণের কাজ করে থাকে। 

সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক নেশামুক্ত ভারত অভিযান শুরু করেছে। বর্তমানে দেশের সব জেলায় এই অভিযান চলছে। এর লক্ষ্য হল, তরুণদের মধ্যে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন, স্কুল এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত বার্তা পৌঁছে দেওয়া। 

এই অভিযানে বেশ কিছু সাফল্যও মিলেছে। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ১৫.৭৮ কোটিরও বেশি মানুষকে মাদক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫.২৬ কোটিরও বেশি যুবক-যুবতী এবং ৩.৩১ কোটির বেশি মহিলা রয়েছেন। ৪.৩১ লক্ষেরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই অভিযানের বার্তা শিশু ও যুবক-যুবতীদের কাছে পৌঁছে গেছে। এই অভিযানে ২০,০০০-এরও বেশি সুনিপুণ স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়েছে এবং তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই অভিযানে সামাজিক মাধ্যম ট্যুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নেশামুক্ত ভারত অভিযান মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনটি এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপটি গুগল প্লে-স্টোরে রয়েছে। এই অভিযানের ওয়েবসাইট http://nmba.dosje.gov.in-এ বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। ৯৯,৫৯৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১.৬৭ কোটিরও বেশি পড়ুয়া মাদকমুক্ত থাকার শপথ নিয়েছে। এছাড়াও যুবদের নেশামুক্ত রাখার জন্য একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নেশামুক্ত ভারত অভিযান সম্পর্কে গণসচেতনতা গড়ে তুলতে দ্য আর্ট অফ লিভিং, ব্রহ্মকুমারী, ইসকন-এর মতো একাধিক আধ্যাত্মিক/সমাজসেবামূলক সংস্থার সঙ্গে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। 

মাদকদ্রব্যের ব্যবহার ব্যাধির মতো। এ এমন একটি সমস্যা যা দেশের সামাজিক কাঠামোর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। যেকোনও মাদক দ্রব্যের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি কেবল তার স্বাস্থ্যের ওপরই প্রভাব ফেলে না, তার পরিবার এবং সমগ্র সমাজকেও ব্যাহত করে। এমন কিছু মাদকদ্রব্য রয়েছে, যা ব্যবহারের ফলে স্নায়ু, মানসিক, হৃদরোগের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি মাদক ব্যবহারকারী আত্মহত্যাও করতে পারে। তাই মাদকদ্রব্যের ব্যবহার এবং তার ওপর নির্ভরতাকে একটি মানসিক-সামাজিক চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা হিসেবে দেখা উচিত। 

উল্লেখ্য, প্রতি বছর ২৬ জুন মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার এবং অবৈধ পাচার বিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে পালিত হয়। সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের সাহায্যে জাতীয় মাদক চাহিদা হ্রাস কর্মপরিকল্পনা (এনএপিডিডিআর)-এর আওতায় সমস্ত রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং সকল এনজিও/স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে ১ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত নেশামুক্ত ভারত অভিযানের অধীনে সচেতনতামূলক কর্মসূচি আয়োজন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিভাগ দেশে এই অভিযানকে গণআন্দোলনের রূপ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

SC/SS/NS….