প্রধানমন্ত্রীরদপ্তর
azadi ka amrit mahotsav

প্রধানমন্ত্রী যক্ষ্মামুক্ত ভারত অভিযানের পর্যালোচনা করেছেন

Posted On: 13 MAY 2025 8:32PM by PIB Kolkata

নয়াদিল্লি, ১৩ মে, ২০২৫

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে তাঁর বাসভবন ৭ নম্বর লোক কল্যাণ মার্গে জাতীয় যক্ষ্মা নির্মূলকরণ অভিযান (ন্যাশনাল টিবি এলিমিনেশন প্রোগ্রাম - এনটিইপি) সম্পর্কে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন।

২০১৪ সালে যক্ষ্মা রোগীদের দ্রুত শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের প্রশংসা করেছেন তিনি। ভারত থেকে এই রোগ নির্মূল করতে যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, সে বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি দেশজুড়ে বিভিন্ন সফল কৌশল কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন।

শ্রী মোদী সম্প্রতি শেষ হওয়া ১০০ দিনের যক্ষ্মামুক্ত ভারত অভিযানের পর্যালোচনা করেন। এই অভিযানে ১২ কোটি ৯৭ লক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এঁদের মধ্যে ৭ লক্ষ ১৯ হাজার জন যক্ষ্মা আক্রান্ত, যাঁদের মধ্যে ২ লক্ষ ৮৫ হাজার আক্রান্তের কোনো উপসর্গ ছিল না। এই অভিযানে ১ লক্ষের বেশি নতুন ‘নি-ক্ষয় মিত্র’ যোগদান করেছেন। দেশজুড়ে সরকার এবং সমাজের সার্বিক প্রয়াসের মাধ্যমে এক জন-ভাগীদারি মডেলের সাহায্যে এটি কার্যকর হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী গ্রামাঞ্চল এবং শহরাঞ্চলের যক্ষ্মা রোগীদের বিভিন্ন লক্ষণের পর্যালোচনার ওপর গুরুত্ব দেন। এছাড়াও, তাঁরা কে কোন পেশায় যুক্ত, সেই বিষয়টিকেও বিবেচনায় রাখতে হবে। এর ফলে, যাঁদের দ্রুত পরীক্ষা করে চিকিৎসার প্রয়োজন, তাঁদের শনাক্ত করতে সুবিধা হবে। নির্মাণ কর্মী, খনি, বস্ত্রশিল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমিকদের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ‘নি-ক্ষয় মিত্র’দের যক্ষ্মা রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে এবং সহজ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে যক্ষ্মা রোগীদের শনাক্তকরণের কাজে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবেন।

শ্রী মোদী বলেন, নিয়মিত চিকিৎসা করলে যক্ষ্মা থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব। তাই, ভয় না পেয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

তিনি জন-ভাগীদারির মাধ্যমে স্বচ্ছতা অভিযান বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেন। এর ফলে, যক্ষ্মা নির্মূল করতে সুবিধা হবে। প্রত্যেকে যাতে যথাযথ চিকিৎসা পান, তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যক্তিস্তরে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যক্ষ্মা রোগের বিষয়ে একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে ২০১৫ সালে প্রতি ১ লক্ষ নাগরিকদের মধ্যে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩৭। ২০২৩ সালে তা ১৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ১৯৫-এ পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক স্তরে যে হারে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা কমছে, ভারতে তার দ্বিগুণ হারে এই সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এটি অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। এই সময়কালে প্রতি ১ লক্ষ নাগরিকের হিসেবে যক্ষ্মা রোগে মৃতের সংখ্যা ২৮ থেকে হ্রাস পেয়ে ২২-এ পৌঁছেছে। আবার, মোট আক্রান্তের ৮৫ শতাংশের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির সাফল্য প্রতিফলিত হচ্ছে।

শ্রী মোদী যক্ষ্মা রোগ শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর পর্যালোচনা করেন। এর মধ্যে নিউক্লিক অ্যাসিড অ্যামপ্লিফিকেশন টেস্টিং ল্যাব বা ন্যাট-এর সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি রয়েছে। বর্তমানে যক্ষ্মা রোগ শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো বৃদ্ধি পেয়ে দেশজুড়ে ৮,৫৪০টি পরীক্ষাগার গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও, ৮৭টি পরীক্ষাগারে শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও, ৫০০টি কৃত্রিম মেধা পরিচালিত এক্স-রে মেশিন সহ ২৬,৭০০টি মেশিন কেনা হয়েছে। আরও ১ হাজারটি মেশিন শীঘ্রই কাজে লাগানো হবে। বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগীদের শনাক্ত করা, তাদের চিকিৎসা এবং আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দিরে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা করা সহ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিষেবার বিকেন্দ্রিকরণ করা হয়েছে।  

যক্ষ্মা রোগীদের শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে কৃত্রিম মেধার সাহায্যে বহনযোগ্য এক্স-রে-এর ব্যবহার, যক্ষ্মার ওষুধ যাতে কার্যকর হয়, তার জন্য স্বল্পমেয়াদি চিকিৎসার ব্যবস্থা, দেশীয় পদ্ধতিতে শনাক্তকরণের নতুন নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন, প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ সহ বিভিন্ন নতুন নতুন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। খনি অঞ্চল, চা বাগিচা, নির্মাণ ক্ষেত্র, শহরের বস্তি এলাকায় যক্ষ্মা রোগীদের দ্রুত শনাক্ত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘নি-ক্ষয় পোষণ যোজনা’য় ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২৮ লক্ষ যক্ষ্মা রোগীর অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ পাঠানো হয়েছে। ২০২৪ সালে এই প্রকল্পে উৎসাহভাতা বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। ‘নি-ক্ষয় মিত্র’ উদ্যোগের আওতায় ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ‘নি-ক্ষয় মিত্র’ ২৯ লক্ষ ৪৪ হাজার খাদ্যসামগ্রীর বাস্কেট সরবরাহ করেছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী শ্রী জগৎ প্রকাশ নাড্ডা, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব ডঃ পি কে মিশ্র, প্রধান সচিব-২ শ্রী শক্তিকান্ত দাস, উপদেষ্টা শ্রী অমিত খারে, স্বাস্থ্য সচিব সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

 

SC/CB/DM


(Release ID: 2128579)