জলশক্তি মন্ত্রক
ভূগর্ভস্থ জলস্তর হ্রাস পাওয়া নিয়ে সংসদে প্রশ্ন
Posted On:
10 MAR 2025 5:54PM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ১০ মার্চ ২০২৫
জল রাজ্যের মালিকানাধীন বিষয়। ভূগর্ভস্থ জলসম্পদের সুস্থায়ী উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রাথমিক দায়িত্বভার রাজ্য সরকারের। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যকে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে রাজ্য সরকারের উদ্যোগকে সহায়তা করে। এই লক্ষ্যে জলশক্তি ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ভূগর্ভস্থ জলসম্পদের হ্রাস পাওয়া রোধে এবং সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৯ সাল থেকে দেশে জলশক্তি অভিযান (জেএসএ) রূপায়ণ করে আসছে। এর উদ্দেশ্য হল, সময় বেধে বৃষ্টির জল ধরে রাখা এবং জলসংরক্ষণ সংক্রান্ত উদ্যোগ হাতে নেওয়া। বর্তমানে দেশে ১৫১টি জলসঙ্কটাপন্ন জেলায় জেএসএ ২০২৪ রূপায়ণ করা হচ্ছে। জেএসএ-র তথ্যবোর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে দেশে বিগত চার বছরে ১.০৭ কোটি জলসংরক্ষণ কাঠামো গড়ে তোলার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ভূগর্ভস্থ জলপর্ষদ (সিজিডব্লুবি) প্রায় ২৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে নিয়ে জাতীয় অ্যাকুইফায়ার ম্যাপিং (এনএকিউইউআইএম) প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করেছে। এছাড়াও জেলাভিত্তিক অ্যাকুইফায়ার ম্যাপ এবং ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রাজ্য / জেলা ভিত্তিক কর্তৃপক্ষকে সেই পরিকল্পনার বিষয়ে অবগত করা হয়েছে।
ভূগর্ভস্থ জলকে কৃত্রিম উপায়ে প্রবেশ করানো সংক্রান্ত ২০২০-র যে মাস্টার প্ল্যানটি সিজিডব্লুবি তৈরি করেছে, তা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে দেওয়া হয়েছে, যাতে বৃষ্টির জল ধরে রেখে ভূগর্ভস্থ জলাধারে জলের সীমা বৃদ্ধি করা যায়। সেই লক্ষ্যে ১.৪২ কোটি কাঠামো গড়ে তোলার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে ১৮৫ বিলিয়ান কিউবিক মিটার জল সঞ্চয়ের জন্য কী পরিমাণ খরচ হতে পারে তারও নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। ভারত সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক দেশজুড়ে ২০১৫-১৬ সাল থেকে প্রতি বিন্দুতে অধীক শস্য (পিডিএমসি) প্রকল্প রূপায়ণ করে আসছে। এতে ক্ষুদ্র সেচের মাধ্যমে প্রাপ্য জলের যাতে সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার করা সম্ভব হয়, সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ২০১৫-১৬ সাল থেকে ২০২৪-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৪.৩৬ লক্ষ এলাকাকে ক্ষুদ্র সেচের আওতায় আনা হয়েছে।
ভারত সরকার মিশন অমৃত সরোবর প্রকল্পের সূচনা করেছে, যাতে দেশের প্রতিটি জেলায় অন্তত ৭৫টি জলাধারের উন্নয়ন এবং যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়। এপর্যন্ত ৬৯ হাজার অমৃত সরোবর দেশজুড়ে নির্মিত হয়েছে।
এছাড়াও এমজিএনআরইজিএস এবং পিএমকেএসওয়াই-ডব্লুডিসি প্রকল্পগুলির অধীন বৃষ্টির জল ধরে রাখা এবং জল সংরক্ষণের জন্য আধার গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ভূগর্ভস্থ জল ব্যবস্থাপনার উদ্যোগকে গণআন্দোলনের চেহারা দিতে কেন্দ্রীয় সরকার আরও বৃহত্তর সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণকে এই কাজে যুক্ত করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল ৭টি জেলায় ভাগে ভাগে অটল ভূজল যোজনার রূপায়ণ। এর মাধ্যমে গ্রামপঞ্চায়েত স্তরে সক্রিয় জনউদ্যোগের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জলসঞ্চয়ের কাজ করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার দেশজুড়ে ২০১৯ সাল থেকে জলশক্তি অভিযানের কাজ চালাচ্ছে, যে কাজে বিভিন্ন সম্প্রদায়কে যুক্ত করা হচ্ছে। এই কর্মসূচির অধীন দেশের বিভিন্ন জেলাগুলিতে স্থানীয় মানুষের কাছে জলসঞ্চয়ের ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতে তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা ও মত বিনিময় করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী গুজরাটের সুরাটে ২০২৪-এর ৬ সেপ্টেম্বর জলশক্তি অভিযানকে আরও গতি দিতে জল সঞ্চয় জন ভাগিদারী উদ্যোগের সূচনা করেন। এর মূল উদ্দেশ্য হল সংঘবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে প্রতিটি জলবিন্দুর সংরক্ষণকে সুনিশ্চিত করা। সমগ্র সমাজকে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। জেজেএম-এর অধীন জলের গুণগত মান নিয়ে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে একটি উদ্ভাবনী কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক গ্রামের ৫ জন ব্যক্তিকে চিহ্নত করে, যার অগ্রাধিকারের তালিকায় মহিলারা, তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে জলের গুণগত মান পরীক্ষার স্বার্থে ফিল্ড টেস্ট কিটস তুলে দেওয়া হয়। এপর্যন্ত দেশজুড়ে ২৪ লক্ষ মহিলা এই প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।
সার্বিক এই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এবং দেশজুড়ে বৃষ্টির জল সংরক্ষণে উদ্যোগ সচেতনতা গড়ে তোলায় জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭ সালে যেখানে ভূগর্ভস্থ জল রিচার্জের পরিমাণ ছিল ৪৩৩ বিলিয়ন কিউবিক মিটার, তা ২০২৪ সালে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪৬.৯০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার।
এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যসভায় আজ একথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি প্রতিমন্ত্রী শ্রী রাজভূষণ চৌধুরী।
SC/AB/AS
(Release ID: 2110204)
Visitor Counter : 8